আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৪২৫৬: কুরআনের যিনি অনুবাদ করলেন,তিনি সকল শব্দের অর্থ পাইলেন কিন্তূ সালাত,নবী,আমানু এসব শব্দের বাংলা করলেন না কেন?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩২৫৬: 

আসসালামু আলাইকুম। কুরআনের যিনি অনুবাদ করলেন,তিনি সকল শব্দের অর্থ পাইলেন কিন্তূ সালাত,নবী,আমানু এসব শব্দের বাংলা করলেন না কেন?

তারিখ:২৫/০৬/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 জনাব আরিফ সিরাজগঞ্জ থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, কুরআনের অনুবাদকগণ যেমন — সালাত (صلاة), নবী (نبي), আমানু (آمنوا) — এসব শব্দের বাংলা অনুবাদ না করে আরবিতেই রেখে দিয়েছেন কারণ এগুলোর পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ অর্থ বাংলা ভাষায় একক শব্দে প্রকাশ করা কঠিন, কিংবা বাংলা প্রতিশব্দ দিয়ে মূল আরবি শব্দের গভীরতা ও প্রেক্ষাপট বোঝানো যায় না। কারণ-



১. সালাত (صلاة):

"সালাত" শব্দটি সাধারণভাবে আমরা নামাজ অর্থে বুঝি, কিন্তু কুরআনে সালাতের অর্থ শুধুমাত্র নামাজ নয়:


দোয়া (رحمة): যেমন, إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَـٰٓئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِيِّ – এখানে "يصلون" মানে দোয়া বা প্রশংসা।


নিয়মিত ইবাদত, বিনয়, আনুগত্যের প্রতীকও সালাত।


যদি শুধু “নামাজ” বলি, তাহলে কিছু আয়াতে ভুল বোঝা যেতে পারে। এজন্য অনেকে “সালাত” শব্দ রেখে দেন।



২. নবী (نبي):

নবী শব্দের সাধারণ বাংলা “বার্তাবাহক” বা “দূত” হলেও, তা কুরআনের "نبي" শব্দের গভীরতা প্রকাশ করে না।


নবী হলেন, যাঁকে আল্লাহ ওহি দিয়ে নির্দেশ দেন, পথ দেখান, তিনি শুধুই বার্তাবাহক নন — তিনি আদর্শ, নেতা, বিচারক, শাসক, শিক্ষাদানকারীও।


"রসূল" ও "নবী" শব্দের মধ্যে পার্থক্যও আছে, যেটা অনুবাদে হারিয়ে যায়।

এজন্য অনেকে শব্দটি হুবহু রেখে দেন।


৩. আমানু (آمنوا):

বাংলা করলে হয়: “যারা ঈমান এনেছে” বা “যারা বিশ্বাস করে”।


কিন্তু "ঈমান" শব্দটি শুধু “বিশ্বাস” নয় — এতে আছে:


ভিতর থেকে স্বীকার, প্রকাশে আনুগত্য, এবং আচরণে অনুসরণ।


কুরআনের ভাষায় ঈমান মানে শুধু মানা নয়, মানার ফলেও জীবনের পরিবর্তন।


“যারা ঈমান এনেছে” বললে অনেক সময় সেটা কাঙ্ক্ষিত অর্থ বহন করে না, তাই অনেক অনুবাদক “آمنوا” শব্দটিই রেখে দেন।


সারকথা হলো,  এই শব্দগুলো শুধু ধর্মীয় পরিভাষা নয়, বরং ভাব-গভীরতা, বিশুদ্ধতা এবং কুরআনিক পরিপ্রেক্ষিত বহন করে, যেগুলো সরাসরি বাংলা করলে তা হারিয়ে যেতে পারে।

তাই অনেক অনুবাদে এসব শব্দ হুবহু রেখে, পাশে বা পাদটীকায় অর্থ বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয় — যেন পাঠক শব্দের মূল রূপ বুঝে তার প্রেক্ষাপটে গভীরতা ধরতে পারেন।



  والله اعلم بالصواب

আমলের ফজিলত-২৬: সূরা ইখলাসের ফজিলত (কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।)

No Comments

 




6643 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ: أَنَّ رَجُلًا سَمِعَ رَجُلًا يَقْرَأُ: {قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ} [الإخلاص: 1] يُرَدِّدُهَا، فَلَمَّا أَصْبَحَ جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، وَكَأَنَّ الرَّجُلَ يَتَقَالُّهَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إِنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ القُرْآنِ»


৬১৮৮। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) ......... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, কোন এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ পাঠ করতে শুনলেন, তিনি তা বারংবার পাঠ করছিলেন। প্রভাত হলে তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খেদমতে হাযির হলেন এবং এ সম্পর্কে তার কাছে উল্লেখ করলেন, উক্ত ব্যক্তি যেন উক্ত সূরা তিলাওয়াতকে কম গুরত্ব দিচ্ছিলেন। তখন নবী (ﷺ) বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই এ সূরা কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।


Narrated Abu Sa`id Al-Khudri:


A man heard another man reciting: Surat-ul-Ikhlas (The Unity) ’Say: He is Allah, the One (112) and he was repeating it. The next morning he came to Allah’s Messenger (ﷺ) and mentioned the whole story to him as if he regarded the recitation of that Sura as insufficient On that, Allah’s Messenger (ﷺ) said, "By Him in Whose Hand my soul is! That (Sura No. 112) equals one-third of the Qur’an."


—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬১৮৮ (আন্তর্জাতিক নং ৬৬৪৩)

জিজ্ঞাসা-১২৫০৪: আজান - ইকামতে "আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ" সময় দরুদ পাঠ করা কি ওয়াজিব? দলিল ভিত্তিক সমাধান দিলে উপকৃত হতাম।

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৫০৪

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। 

সম্মানিত মুফতি সাহেব। আমরা জানি প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম শুনলে প্রথমবার দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব। তাহলে আজান - ইকামতে  "আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ" সময় দরুদ পাঠ করা কি ওয়াজিব?  দলিল ভিত্তিক সমাধান দিলে উপকৃত হতাম। জাযাকাল্লাহু খয়রান। 

তারিখ:  ২৩/০৩/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

মাওলানা সাইফুল ইসলাম, ভোলা  থেকে।


   জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো,

আপনি ঠিকই বলেছেন যে আমাদের প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শুনলে প্রথমবার দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব।


কিন্তু আজান ও ইকামতে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ সময় দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব নয়।


এটা হাদিস, সাহাবি, তাবেয়িদের আমল দ্বারা প্রমাণিত নয় এবং  ফুকাহায়ে উম্মতের সিদ্ধান্ত নয়। দলিল:



হাদিস নং-০১

باب مَا يَقُولُ إِذَا سَمِعَ الْمُؤَذِّنَ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ الْمُؤَذِّنُ " .

 আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসলামা .... আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনবে তখন মুআযযিনের উচ্চারিত শব্দের অনুরূপ উচ্চারণ করবে।

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৫২২ (আন্তর্জাতিক নং ৫২২),  মুআযযিনের আযানের জবাবে যা বলতে হয় অধ্যায়

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)


شرح ألفاظ الأحاديث:

" إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ ": أي صوت المؤذن بالأذان.

" فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ": الفاء تدل على التعقيب فتكون لمتابعة عقب كل كلمة، " مِثْلَ مَا يَقُولُ " أي مثل كل جملة يتلفظ بها المؤذن من أذكار الأذان، والمراد المشابهة بالألفاظ لا في النغمة ورفع الصوت، ويستثنى من ألفاظ الأذان الحيعلتين فإن المتابع يقول " لا حول ولا قوة إلا بالله " كما في حديث عمر بن الخطاب صلى الله عليه وسلم


হাদীসের শব্দ বিশ্লেষণঃ

"যখন তোমরা আযান শুনতে পাবে " ঃ অর্থাৎ মুয়াযযিনের মুখ নিসৃত আযানের ধ্বনি যখন তোমরা শুনতে পাবে। 


 "তিনি যেভাবে বলছেন, তোমরাও তার অনুরূপ বলবে"/ তাঁর বাক্যানুরূপ তোমরাও সেভাবে উচ্চারণ করবে।ঃ 

বাক্যস্থ ''ফা" অব্যয়টি কোন যুগপৎ ঘটনার পরম্পরতা নির্দেশ করে। যার অর্থ হলো, মুয়াযযিন সাহেব আযানের একটি বাক্য শেষ করা মাত্রই তাঁর অনুকরণে হুবহু সেই বাক্যটি উচ্চারণ করতে হবে। তবে এখানে উদ্দেশ্য হলো, মুয়াজ্জিন সাহেবের মুখ নিসৃত আযানের বাক্যমালার অনুসরণ করা। তার অনুকরণে সুর- ধ্বনি- তাল- লয় ইত্যাদির অনুসরণ নয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে আযানের শব্দ চয়নিকা হতে "হাইয়া আলাস সালাহ " ও "হাইয়্যা আলাল ফালাহ" বলার সময় তার অনুকরণে বাক্যদ্বয় বলা যাবেনা। বরং বলতে হবে, "লা হাওলা ওয়ালা কুউয়াতা ইল্লা বিল্লাহ"। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস একথারই নির্দেশ করে। সূত্র: শারহুল হাদিস, ইজা সামিতুমুন নিদা-১/২০১৮; শায়েখ আবদুল্লাহ ইবনে হামুদ আল-ফারিহ


হাদিস নং-০২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ حَيْوَةَ، وَسَعِيدِ بْنِ أَبِي أَيُّوبَ، وَغَيْرِهِمَا، عَنْ كَعْبِ بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَىَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَىَّ صَلاَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوا اللَّهَ لِيَ الْوَسِيلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لاَ تَنْبَغِي إِلاَّ لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِيَ الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ " .

 মুহাম্মাদ ইবনে সালামা আল মুরাদী (রাহঃ) ... আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুল কে বলতে শুনেছেন, তোমরা যখন মু’আযযীনকে আযান দিতে শুনবে, তখন সে যা বলে তাই বলবে। তারপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ করবে। কারণ যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার বিনিময়ে তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করেন। পরে আল্লাহর কাছে আমার জন্য ওসীলার দুআ করবে। ওসীলা হল জান্নাতের একটি বিশেষ স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কোন এক বান্দাকে দেয়া হবে। আমি আশা করি যে, আমিই হব সেই বান্দা। যে আমার জন্য ওসীলার দুআ করবে, তার জন্য আমার শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৩৫ (আন্তর্জাতিক নং ৩৮৪)


হাদীসের ব্যখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুআজ্জিন আযানের মধ্যে যে সকল শব্দ বলে থাকে আযানের জবাবেও সে সকল শব্দ বলে জবাব দেয়া সুন্নাত। অবশ্য মুসলিম শরীফের ৭৩৬ নং হাদীসে বর্ণিত আছে যে, হযরত উমার রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, মুআজ্জিন যখন حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ বলেছেন তার জবাবে তিনি لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِالله বলেছেন। সুতরাং এ হাদীসে বর্ণিত শব্দ দ্বারাও আযানের জবাব দেয়া যেতে পারে। আবার পূর্ববর্ণিত হাদীস এবং ঐ অর্থে বর্ণিত আবু দাউদ: ৫২৪ নং হাদীস অনুযায়ী حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ এর জবাবে উক্ত শব্দ দুটিও ব্যবহার করা যেতে পারে। মুসতাদরাকে হাকেম-২০০৪, আদ-দুআ লিততবারানী-৪৫৮ এবং ইবনুছ্‌ছুন্নী সংকলিত আমালুল ইয়াওমি ওয়াল্লাইলা কিতাবের-৯৮ নং হাদীসে স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে, মুআজ্জিন حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ বললে তার জবাবে তোমরা حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ বলবে। এসকল হাদীস থেকে যে দুই প্রকার জবাব প্রমাণিত হয় হানাফী মাযহাবেও সে আমল গ্রহণ করা হয়েছে। (শামী: ১/৩৯৭) 

এ হাদীসের আলোকে আরো বলা যেতে পারে যে, মুআজ্জিন যখন الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ বলবে তখন শ্রোতারাও অনুরূপ বলবে। অবশ্য বিজ্ঞ উলামায়ে কিরাম এ ক্ষেত্রে ভিন্ন জবাবের কথাও বলেছেন। ইমাম নববী রহ. বলেন قَالَ سَامِعُهُ صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ অর্থাৎ মুআজ্জিন যখন خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ বলবে তখন শ্রোতা صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ বলবে। (আল্ মিনহাজ-৪/৮৮, দারম্ন এহইয়াইত তুরাস, বৈরম্নত থেকে প্রকাশিত) خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ এর জবাবে صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ বলাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৯৭)


হাদিস নং -০৩

حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو جَعْفَرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ جَهْضَمٍ الثَّقَفِيُّ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسَافٍ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا قَالَ الْمُؤَذِّنُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . فَقَالَ أَحَدُكُمُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . ثُمَّ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ثُمَّ قَالَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ . قَالَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ . ثُمَّ قَالَ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ . قَالَ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ . ثُمَّ قَالَ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ . قَالَ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ . ثُمَّ قَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . قَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . ثُمَّ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . مِنْ قَلْبِهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ " .

অর্থ:  ইসহাক ইবনে মানসূর (রাহঃ) ... উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, মু’আযযিন যখন اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ বলে তখন তোমাদের কেউ যদি اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ বলে। তারপর মু-আযযিন যখন أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ বলে, তখন সেও أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ বলে। অতঃপর মু’আযযিন যখন أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ বলে, তখন সেওأَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ বলে। পরে মু’আযযিন যখন حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ বলে, তখন সে لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ বলে। এরপর মু’আযযিন যখন اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ বলে, তখন সেও اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ বলল। তারপর মু’আযযিন যখন لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ বলে, তখন সেও لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ বলল-এসবই যদি সে বিশুদ্ধ অন্তরে বলে থাকে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।


সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৩৬ (আন্তর্জাতিক নং ৩৮৪)


হাদিস/আসার নং-০৪

عَنْ عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ، قَالَ: دَخَلْنَا عَلَى مُعَاوِيَةَ فَنَادَى الْمُنَادِي، فَقَالَ: اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ. فَقَالَ مُعَاوِيَةُ: ” اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ. قَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ. قَالَ: وَأَنَا أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ. قَالَ: أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ. قَالَ: وَأَنَا أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ ” قَالَ يَحْيَى: وَأَخْبَرَنِي بَعْضُ أَصْحَابِنَا أَنَّهُ لَمَّا قَالَ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، قَالَ: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، ثُمَّ قَالَ مُعَاوِيَةُ: هكذا سَمِعْتُ نَبِيَّكُمْ يَقُول

ঈসা বিন তালহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি মুয়াবিয়া রাঃ এর দরবারে হাজির হলাম। তখন মুয়াজ্জিন আজান দিচ্ছিল। মুয়াজ্জিন বলছিল “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। তখন মুয়াবিয়া রাঃ বলেন, “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। মুয়াজ্জিন বলল, “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। তখন মুয়াবিয়া রাঃ বললেন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। মুয়াজ্জিন বলল, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। মুয়াবিয়া রাঃ বললেন, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ।


ইয়াহইয়া বলেন, আমাকে কতিপয় সাহাবাগণ জানিয়েছেন যে,মুয়াজ্জিন যখন হাইয়্যা আলাস সালাহ বলেন, তখন তিনি বলতেন লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ”। তারপর মুয়াবিয়া রাঃ বলেন, এভাবে আমি তোমাদের নবীকে (আজানের জবাবে) বলতে শুনেছি। [সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১২৩৮, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪১৪, আলমু’জামুল কাবীর লিততাবারানী, হাদীস নং-৭৩৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৯২৮]



 সারকথা হলো, আজান ও ইকামতে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ সময় দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব/সুন্নাহ নয়।


মুয়াজ্জিন যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলবে শ্রোতাগণও আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলবে। এ সাথে অন্য কিছু যোগ করা ওলামায়ে দ্বীন বিদআত বলেছেন।


  1. والله اعلم بالصواب


জিজ্ঞাসা-১৩২৫৫: আসসালামু আলাইকুম। "মহিলা যদি স্বামীর হক সঠিকভাবে জানতো, তাহলে তার দুপুর অথবা রাতের খাবার খেয়ে শেষ না করা পর্যন্ত তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো।" এই হাদিস শরিফটির আরবি ইবারত দরকার ছিল ‌

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩২৫৫: 

আসসালামু আলাইকুম।  "মহিলা যদি স্বামীর হক সঠিকভাবে জানতো, তাহলে তার দুপুর অথবা রাতের খাবার খেয়ে শেষ না করা পর্যন্ত তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো।" এই হাদিস শরিফটির আরবি ইবারত দরকার ছিল ‌

তারিখ:২৩/০৬/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  আখতারুজ্জামান দিনাজপুর থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, আপনার বর্ণনা মোতাবেক হাদিস শরীফটি নিম্নরূপ:


٩٣٩٠ - لَوْ تَعْلَمُ المَرْأَةُ حَقَّ الزَّوْجِ لَمْ تَقْعُدْ مَا حَضَرَ غَدَاؤُهُ وَعَشَاؤُهُ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْهُ

(طب) عن معاذ.

[حكم الألباني]

 (صحيح) انظر حديث رقم: ٥٢٥٩ في صحيح الجامع

الجامع الصغير وزيادته ١/‏٩٣٩٠ — الجلال السيوطي (ت ٩١١)


হজরত মুআজ বিন জাবাল রা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "মহিলা যদি স্বামীর হক সঠিকভাবে জানতো, তাহলে তার দুপুর অথবা রাতের খাবার খেয়ে শেষ না করা পর্যন্ত তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো।" এই হাদিস শরিফটির আরবি ইবারত দরকার ছিল । তাখরিজ: জামেউস সগির-৯৩৯০


নোট: হাদিস শরিফ টির সনদ সহিহ।


  والله اعلم بالصواب

পিডিএফ ডাউনলোড-১১৯: যে গল্পে হৃদয় জুড়ে ৯ম খণ্ড -মাওলানা মফিজুল ইসলাম হাফি

No Comments

 


কিতাবটি পাঠ বা ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন

পিডিএফ ডাউনলোড-১১৮: তাসফিরে মাআরেফুল কুরআন ৪র্থ খণ্ড -মুফতি শফি রহ.

No Comments

 


কিতাবটি পাঠ বা ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন

জিজ্ঞাসা-১২৫০২: হালাল রুজি উপার্জন ফরজ ইবাদতের পরে একটি ফরজ" এটা কি হাদীস? হাদীস হলে কোন কিতাবের?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৫০২

আসসালামু আলাইকুম। " হালাল রুজি উপার্জন ফরজ ইবাদতের পরে একটি ফরজ" 

এটা কি হাদীস? হাদীস হলে কোন কিতাবের,?

তারিখ:  ২/০৩/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ফরিদপুর  থেকে


   জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো,

হ্যাঁ, এটি হাদিস। নিম্নে তা তাখরিজসহ উল্লেখ করা হলো।


عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شعب الْإِيمَان


আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ অন্যান্য ফরয কাজ আদায়ের সাথে হালাল রুযী-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরয। তাখরিজ: বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান-৮৩৬৭

 

  1. والله اعلم بالصواب


Stylo

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে করে যোগাযোগ করুন। জাযাকাল্লাহু খাইর