আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৪৯২: জুমুআ' মসজিদে মূল জামাআ' তশুরুর আগে জামাআ'ত করা যাবে কি না।

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৪৯২:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

১। জুমুআ' মসজিদে মূল জামাআ' তশুরুর আগে জামাআ'ত করা যাবে কি না।


২। মা মারা গিয়েছে, নানী বেচে আছে। এক্ষেত্রে সন্তানরা সম্পদের ওয়ারিশ হবে কি না।

 তারিখ:  ১০/০৩/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা মো:মিজানুর রহমান কুমিল্লা থেকে

   জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর আপনার প্রশ্নের আলোকে দুটি ভাগে ভাগ করছি।


প্রশ্ন: ১। জুমার মসজিদে মূল জামাআ' তশুরুর আগে জামাআ'ত করা যাবে কি না।


প্রথম কথা হলো, ফিকহি হানাফির মতে, শর্তসহ দ্বিতীয় জামাআত জায়েজ। আর মূল জামাআতের আগে জামাআত আরও নিষেধ তা সহজেই অনুমেয়। দলিল:


والمفتى به من قول الحنفية ومن وافقهم: كراهة الجماعة قبل جماعة الإمام الراتب - لا سيما لمن كان له عذر - وعليه فالصلاة صحيحة مع الكراهة؛ لأن الأصل فى الصلاة الصحة حتى يقوم دليل على البطلان ولم يقم، والافتيات على الإمام أمر خارج عن الصلاة فلا ي


আর হানাফীদের কথা এবং তাদের সাথে যারা একমত পোষণ করেছেন তাদের থেকে এর উপর ফতোয়াঃ নিয়মিত ইমামের জামাতের আগে জামাত করা মাকরুহ তাহরিমি, বিশেষ করে যাদের ওজর আছে - এবং সে অনুযায়ী নামায মাকরুহ এর আদায় হবে। সূত্র: হাল তাজুযু সালাতাল জামাআতি ফিল মাসজিদিল কবলা আয় ইউজিনুল ইমামা-১৪/২০২০

المسجد إذا كان له إمام راتب ، فجماعته هي الأصل ، فلا يجوز لأحد أن يقيم جماعة قبل جماعة الإمام الراتب ؛

.


অর্থাৎ যদি মসজিদে নিয়মিত ইমাম থাকে তবে এর জামাত হচ্ছে মূলনীতি।কারুর জন্য নিয়মিত ইমামের জামাতের আগে জামাত করা জায়েয নয়। দলিল:


حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَوْسِ بْنِ ضَمْعَجٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يُؤَمُّ الرَّجُلُ فِي سُلْطَانِهِ وَلاَ يُجْلَسُ عَلَى تَكْرِمَتِهِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ 

অর্থ: হান্নাদ (রাহঃ) ...... আবু মাসঊদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির কতৃত্বাধীন স্থানে বিনা অনুমতিতে তার উপর ইমামতি করা যায় না এবং বিনা অনুমতিতে তার আসনেও বসা যাবে না। তাখরিজ: জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৭২ (আন্তর্জাতিক নং ২৭৭২)

নোট: (আবু ঈসা বলেন) হাদীসটি হাসান-সহীহ।

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)


প্রশ্ন: ২।  মা মারা গিয়েছে, নানী বেচে আছে। এক্ষেত্রে সন্তানরা সম্পদের ওয়ারিশ হবে কি না?


উত্তর: ২। মা মারা যাওয়ার কারণে নাতি -নাতনী ওয়ারিশ হবে না। কারণ, মা সম্পত্তির মালিক হওয়ার আগেই মারা গিয়েছেন। দলিল: 


هَذَا بَاب فِي بَيَان إِرْث ابْن ابْن الرجل إِذا لم يكن لَهُ ابْن لصلبه.

وَقَالَ زَيْدٌ: ولَدُ الأبْناءِ بِمَنْزِلَةِ الوَلَدَ إذَا لَمْ يَكُنْ دُونَهُمْ وَلَدٌ ذَكَرٌ ذَكَرُهُمْ كَذَكَرِهِمْ، وأُنْثاهُمْ كأُنْثاهُمْ يَرِثُونَ كَمَا يَرِثُونَ ويَحْجُبُونَ كَما يَحْجُبُونَ، وَلَا يَرِثُ ولَدُ الابِنِ مَعَ الابِنِ.


ঔরশজাত সন্তানের অনুপস্থিতিতে নাতীদের মীরাসপ্রাপ্তির বিধান।


নাতী / দৌহিত্র/ পৌত্র/প্রপৌত্রগণ ওয়ারিশের সম্পত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিজ ঔরশজাত সন্তানের মতো। তবে শর্ত হলো তাদের অধঃস্তনে কোন পুত্র সন্তান না থাকা লাগবে। দৌহিত্রগণ বিধানগতভাবে ঔরশজাত পুত্র সন্তানের মতো হিসাব করে মীরাস প্রাপ্তহবে, আর দৌহিত্রীগণ বিধানগতভাবে ঔরশজাত কন্যা সন্তানের মতো হিসাব করে মীরাস প্রাপ্ত হবে। অনুরূপভাবে যে সকল উত্তরাধিকার বিদ্যমান থাকার কারণে ঔরশজাত পুত্র-কন্যা সন্তানগণ মীরাস প্রাপ্তি থেকে ( সম্পূর্ণরূপে অথবা কিয়দাংশ হতে) বঞ্চিত হয়ে থাকে, সেসকল ক্ষেত্রে দৌহিত্র- দৌহিত্রীগিণও মীরাসপ্রাপ্তির (সম্পূর্ণ / আংশিক) অধিকার হারাবেন।

প্রকাশ থাকে যে, ঐরশজাত সন্তানের উপস্থিতিতে দৌহিত্রগণ মীরাসী সম্পত্তির অধিকার লাভ করবেননা। সূত্র: উমদাতুল কারি-২৩/২৩৮; আহকামুল কুরআন লিলজাসসাস-২/১০১


তবে, এক্ষেত্রে একটি পদ্ধতি আছে, তিনি ইচ্ছা করলে মায়ের পাওনার পরিমাণ বা কিছু কম বেশি (তা অবশ্যই যেন মোট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের অধিক না হয়।) অসীয়ত করে যেতে পারতেন। তাহলে বঞ্চিত নাতী/নাতনীরা কিছু পেয়ে যাবে।

 

 

  1. والله اعلم بالصواب