জিজ্ঞাসা-১২৫৭০:
আসসালামু আলাইকুম। সাহু সিজদা করার নিয়ম দলিলসহ জানতে চাই
তারিখ: ২৯/০৪/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আব্দুল মান্নান কুমিল্লা থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ভুলের কারণে যে দুটি সিজদাহ দেওয়া হয়ে থাকে, তাকে সিজদাহ সাহু বলা হয়ে থাকে। সিজদাহ সাহু ভুলকে সংশোধন করে। এটা সালামের আগে ও সালামের পরে, দুভাবে দেওয়া জায়েজ।
তবে কখন উত্তম এ নিয়ে ইমামদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো।
প্রশ্ন: ক। সিজদা সাহু সালামের আগে না পরে?
উত্তর: ক। ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক ইমাম হাসান বসরি রহ. , অধিকাংশ সাহাবা, তাবেয়িদের মতে সাহু সিজদা সালামের পরে।
আর অপর পক্ষে ইমাম শাফিয়ি , ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর এক মতে সাহু সিজদা সালামের পূর্বে । সূত্র: কিতাবুল ফিকহি আলাল মাজাহিবিল আরবাআ -১/৪১৭
প্রশ্ন: খ। ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালেক রহ এর মতের দলিল কি?
উত্তর: খ। ইমামদ্বয়ের দলিল নিম্নরূপ:
হাদিস নং -০১
حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سل
আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪
হাদিস নং -০২
حدثنا أبو الوليد، حدثنا شعبة، عن الحكم، عن إبراهيم، عن علقمة، عن عبد الله رضي الله عنه: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى الظهر خمساً، فقيل له: أزيد في الصلاة؟ فقال: وما ذاك؟ قال: صليت خمساً، فسجد سجدتين بعد ما سلم.
আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর পাঁচ রাকাত পড়েন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, নামায কি বাড়ানো হয়েছে? তিনি বললেন, কী হয়েছে? প্রশ্নকারী বলল, আপনি পাঁচ রাকাত পড়েছেন। অতপর তিনি সালাম ফিরানোর পর দুটি সেজদা করেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৬
প্রশ্ন: গ। ইমাম শাফিয়ি এবং ইমাম আহমদ রহ. এর দলিল কি?
উত্তর: গ। ইমামদ্বয়ের দলিল নিম্নরূপ:
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِحْدَى صَلاَتَىِ الْعَشِيِّ ـ قَالَ مُحَمَّدٌ وَأَكْثَرُ ظَنِّي الْعَصْرَ ـ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ قَامَ إِلَى خَشَبَةٍ فِي مُقَدَّمِ الْمَسْجِدِ فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهَا وَفِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ ـ رضى الله عنهما ـ فَهَابَا أَنْ يُكَلِّمَاهُ وَخَرَجَ سَرَعَانُ النَّاسِ فَقَالُوا أَقَصُرَتِ الصَّلاَةُ وَرَجُلٌ يَدْعُوهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ذُو الْيَدَيْنِ فَقَالَ أَنَسِيتَ أَمْ قَصُرَتْ فَقَالَ " لَمْ أَنْسَ وَلَمْ تُقْصَرْ ". قَالَ بَلَى قَدْ نَسِيتَ. فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَكَبَّرَ، ثُمَّ وَضَعَ رَأْسَهُ فَكَبَّرَ فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَكَبَّرَ.
হাফ্স ইবনে উমর (রাহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বিকালের কোন এক নামাযে দু’ রাকা’আত আদায় করে সালাম ফিরালেন। মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমার প্রবল ধারণা, তা ছিল আসরের নামায। তারপর মসজিদের একটি কাষ্ঠ খণ্ডের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং উহার উপর হাত রাখলেন। মুসল্লীগণের ভিতরে সামনের দিকে আবু বক্র (রাযিঃ) ও উমর (রাযিঃ)ও ছিলেন। তাঁরা উভয়ে তাঁর সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছিলেন। তাড়াহুড়া-কারী মুসল্লিগণ বেরিয়ে পড়লেন। তারা বলাবলি করতে লাগলেন, নামায কি কমিয়ে দেয়া হয়েছে? কিন্তু এক ব্যক্তি, যাকে নবী (ﷺ) যূল ইয়াদাইন ডাকতেন, জিজ্ঞাসা করল আপনি কি ভুলে গেছেন, না কি নামায কমিয়ে দেওয়া হয়েছে? তিনি বললেনঃ আমি ভুলিনি আর নামাযও কম করা হয়নি। তখন তিনি দু’ রাকা’আত নামায আদায় করে সালাম ফিরালেন। তারপর তাক্বীর বলে সিজ্দা করলেন, স্বাভাবিক সিজ্দার ন্যায় বা তার চেয়ে দীর্ঘ। তারপর মাথা উঠিয়ে আবার তাক্বীর বলে মাথা রাখলেন অর্থাৎ তাক্বীর বলে সিজ্দায় গিয়ে স্বাভাবিক সিজ্দার মত অথবা তার চাইতে দীর্ঘ সিজ্দা করলেন। এরপর মাথা উঠিয়ে তাক্বীর বললেন। তাখরিজ: সহীহ বুখারী, হাদীস নং নং ১২২৯
প্রশ্ন: ঘ। সিজদা সাহু সালামের আগে না পরে উত্তম?
উত্তর: ঘ। আমি পূর্বেও উল্লেখ করেছি যে, সেজদা সাহু নামাযের সালাম ফিরানোর পরে ও আগে উভয়ভাবেই করা যাবে। তবে সর্বোত্তম হল পরে করা। কারণ এ ব্যাপারে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং বড় বড় সাহাবী-তাবেয়ীর আমল বা ফতোয়াও এ অনুযায়ীই ছিল। যেমন,
হাদিস/আসার নং -০১
حدثنا ابن عيينة، عن منصور، عن إبراهيم، عن علقمة: أن عبد الله سجد سجدتي السهو بعد السلام، وذكر أن النبي صلى الله عليه وسلم فعله.
অর্থ: আলকামা থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. সেজদা সাহু সালামের পরে করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৪৪৭৫
নোট: ইমাম নিমাবী রহ. (১৩২২হি.) ‘আছারুস সুনান’ কিতাবে (পৃ. ২৯৬) বলেন, إسناده صحيح ‘এর সনদ সহীহ’।
হাদিস/আসার নং -০২
حدثنا سليمان بن شعيب، قال: ثنا عبد الرحمن بن زياد قال: ثنا شعبة، قال: حدثني عكرمة بن عمار اليمامي، عن ضمضم بن جوس الحنفي، عن عبد الرحمن بن حنظلة بن الراهب ১[1].: أن عمر بن الخطاب رضي الله عنه صلى صلاة المغرب، فلم يقرأ في الركعة الأولى شيئاً. فلما كانت الثانية قرأ فيها بفاتحة القرآن وسورة مرتين، فلما سلم سجد سجدتي السهو.
অর্থ: আবদুল্লাহ ইবনে হানযালা ইবনে রাহিব থেকে বর্ণিত, উমর ইবনে খাত্তাব রা. মাগরিবের নামায পড়েন। কিন্তু প্রথম রাকাতে একেবারেই কুরআন পাঠ করেননি। দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা দু’বার পড়েন। যখন সালাম ফিরালেন তখন দুটি সেজদা করলেন। -শরহু মাআনিল আছার ১/৭২৪
তাবেয়িদের আমল -০৩
عن ابن جريج قال: قلت لعطاء: متى يسجد سجدتي السهو؟ قال: حين يسلم.
ইবনে জুরায়জ থেকে বর্ণিত, আমি আতা (ইবনে আবী রাবাহ) রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম- সেজদা সাহু কখন করা হবে? বললেন, যখন সালাম ফিরাবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৩৫০৫
তাবেয়িদের আমল -০৪
عن معمر، عن الحسن وقتادة قالا: سجدتي السهو بعد التسليم.
মা‘মার থেকে বর্ণিত, হাসান (বছরী) ও কাতাদা রাহ. বলেন, সেজদা সাহু সালাম ফিরানোর পরে হবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৩৪৫৪
প্রশ্ন: ঙ। সিজদা সাহুর পর পুনরায় তাশাহূদ পড়ার কোন নস আছে কি?
উত্তর: ঙ। হ্যাঁ অবশ্যই নস আছে। সেজদা সাহু করার পর আবার তাশাহহুদ পড়া হবে এবং সালাম ফিরানো হবে। এটা একাধিক হাদীস এবং সাহাবী-তাবেয়ীর আমল ও ফতোয়া দ্বারা প্রমাণিত। দলিল:
হাদিস নং -০১
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُلَيَّةَ، - قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، - عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى الْعَصْرَ فَسَلَّمَ فِي ثَلاَثِ رَكَعَاتٍ ثُمَّ دَخَلَ مَنْزِلَهُ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ الْخِرْبَاقُ وَكَانَ فِي يَدَيْهِ طُولٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَذَكَرَ لَهُ صَنِيعَهُ . وَخَرَجَ غَضْبَانَ يَجُرُّ رِدَاءَهُ حَتَّى انْتَهَى إِلَى النَّاسِ فَقَالَ " أَصَدَقَ هَذَا " . قَالُوا نَعَمْ . فَصَلَّى رَكْعَةً ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ .
. ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আসরের নামায তিন রাকআত পড়ে সালাম ফিরালেন। তারপর নিজ গৃহে প্রবেশ করলেন। তখন খিরবাক নামক জনৈক ব্যক্তি যার হাত দু’টি কিছুটা লম্বা ছিল। তাঁর উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়ালেন। এবং ‘হে আল্লাহর রাসুল’ বলে সম্মোধন করে বিষয়টি সম্পর্কে তাকে জানালেন। তিনি চাঁদর হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে রাগান্বিত হয়ে বেরিয়ে এলেন। লোকদের নিকট এসে বললেন, এই লোকটি কি সত্য বলছে? তারা বলল, জী হ্যাঁ। তারপর তিনি এক রাকঅত আদায় করে সালাম ফিরালেন এবং দুটি সিজদা (সাহু) করে পূনরায় সালাম ফিরালেন। তাখরিজ:সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৭৪
হাদিস নং -০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، قَالَ صَلَّى بِنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ فَلَمَّا صَلَّى رَكْعَتَيْنِ قَامَ وَلَمْ يَجْلِسْ فَسَبَّحَ بِهِ مَنْ خَلْفَهُ فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنْ قُومُوا فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلاَتِهِ سَلَّمَ وَسَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ وَسَلَّمَ وَقَالَ هَكَذَا صَنَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দির রহমান (রাহঃ) .... যিয়াদ ইবনে ইলাকা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ মুগীরা ইবনে শু’বা (রাযিঃ) একদিন আমাদের নিয়ে নামায আদায় করলেন। দুই রাকআতের পর তিনি না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। পিছনে যারা ছিলেন তারা (তাকে সতর্ক করার জন্য) সুবহানাল্লাহ পাঠ করলেন। তিনি তাদেরকে দাঁড়াতে ইশারা করলেন। নামায শেষে তিনি সালাম ফিরিয়ে সিজদা সাহু করলেন এবং পরে যথারীতি সালাম ফিরিয়ে বললেনঃ রাসূল (ﷺ)-ও এরূপ করেছিলেন।
নোট:
ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান-সহীহ। এই হাদীসটি মুগীরা ইবনে শু’বা রাদিয়াল্লাহু আনহ নবী (ﷺ) থেকে একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে। তাখরিজ: জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬৫
নোট: ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন,
هذا حديث حسن صحيح ‘
এই হাদীস হাসান সহীহ’।
হাদিস নং -০৩
حُصَيْنٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَلَّمَ فِي ثَلاَثِ رَكَعَاتٍ مِنَ الْعَصْرِ فَقَامَ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ الْخِرْبَاقُ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي التَّشَهُّدِ فِي سَجْدَتَىِ السَّهْوِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ يَتَشَهَّدُ فِيهِمَا وَيُسَلِّمُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَيْسَ فِيهِمَا تَشَهُّدٌ وَتَسْلِيمٌ وَإِذَا سَجَدَهُمَا قَبْلَ السَّلاَمِ لَمْ يَتَشَهَّدْ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ قَالاَ إِذَا سَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ قَبْلَ السَّلاَمِ لَمْ يَتَشَهَّدْ .
. মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াহইয়া (রাহঃ) ..... ইমরান হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (ﷺ) একবার তাদের নিয়ে নামায আদায় করলেন। এতে তাঁর সাহু (ভুল) হয়ে গেল। অনন্তর তিনি সিজদা সাহু করলেন। এরপর তাশাহ্হুদ পাঠ করে সালাম ফিরালেন। তাখরিজ: তিরমিযী -৩৯৫
নোট:
ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান-গারীব-সহীহ। আবু কিলাবার চাচা আবুল মুহাল্লাব থেকে ইবনে সিরীন অপর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবুল মুহাল্লাবের নাম হ’ল আবদুর রহমান ইবনে আমর। কেউ কেউ বলেনঃ মুআবিয়া ইবনে আমর। আবদুল ওয়াহহাব আস-সাফাকী, হুশায়ম এবং আরো একাধিক রাবী খালিদ আল-হাযযা আবু কিলাবা সূত্রে ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর হাদীসটি আরো দীর্ঘ করে বর্ণনা করেছেন। এতে আছেঃ রাসূল (ﷺ) আসরের নামাযে তিন রাকআতের পর সালাম দিয়ে ফেলেছিলেন। তখন খিরবাক নামক এক ব্যাক্তি দাঁড়ালেন...
সিজদা সাহু-এর পর তাশাহ্হুদ পাঠ করার বিষয়ে ইমামদের মতবিরোধ রয়েছে। কতক আলিম বলেনঃ তাশাহ্হুদ পাঠ করে পরে (শেষ) সালাম দিবে। কোন কোন আলিম বলেনঃ সিজদা সাহু-এর পর আর তাশাহ্হুদ ও সালাম নেই। সালামের পূর্বে সিজদা সাহু করলে তাশাহ্হুদ পাঠ করতে হবে না। এ হ’ল ইমাম আহমদ ও ইসহাক (রাহঃ)-এর অভিমত।
সারকথা হলো, সিজদাহ সাহু ভুলকে সংশোধন করে। এটা সালামের আগে ও সালামের পরে, দুভাবে দেওয়া জায়েজ।
তবে সালামের পরে উত্তম, যা দলিল দ্বারা প্রমাণিত। আর আমাদের দেশে যেটা প্রচলন রয়েছে, এটাও শরিয়ত মোতাবেক, উত্তম। সুতরাং এ বিষয় নিয়ে সমাজে ফেতনা ফ্যাসাদ, বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়। উম্মাহকে আমল করার সুযোগ দেওয়া। মুস্তাহাব নিয়ে দ্বন্দ্ব করে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হারাম।
শেষ কথা হলো, ফিকহি হানাফির মতে নামাযের শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ডান দিকে সালাম ফিরানোর পর দুটি সিজদা করবে । অতঃপর আত্তাহিয়্যাতু , দরূদ শরীফ ও দোয়া মাছুরা পাঠ করে উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক