জিজ্ঞাসা-১২৩৯০:
আসসালামু আলাইকুম। আমার একটা জিজ্ঞাসা হলো, নফল রোজা অবস্থায় সহবাস করলে তার কাফ্ফারা আছে কি? তারিখ: ২২/১২/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
হাফেজ মাওলানা নূরুল হক সুদান থেকে
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর কথা হলো, নফল রোজা নষ্ট/ভেঙ্গে ফেললে কাফফারা দিতে হবে না। তবে কাজা আদায় করতে হবে। এ বিষয়ে
هو قول أبي حنيفة ومالك؛ أن من شرع في صوم يوم تطوعاً يلزمه إتمامه، وإذا أفطر لعذر من الأعذار فيجب عليه قضاؤه،
অর্থাৎ এটি আবু হানিফা ও মালিকের উক্তি ; যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় রোজা রাখা শুরু করে তার জন্য তা পূর্ণ করা ওয়াজিব, এবং যদি সে কোনো অজুহাতের কারণে রোজা ভঙ্গ করে, তবে তাকে অবশ্যই তা কাযা করতে হবে।
ইমামদ্বয়ের দলিল:
পবিত্র কুরআন থেকে দলিল:
আয়াত নং -০১
وَلاَ تُبْطِلُوا أَعْمَالَكُمْ “(محمد: آية 33)،
অর্থ: আর তোমরা তোমাদের আমলসমূহ নষ্ট/বাতিল করো। সূরা মুহাম্মাদ -৩৩
ব্যাখ্যা: আমল বিভিন্নভাবে নষ্ট হতে পারে, তার মধ্যে একটি হল শুরু করে আবার ছেড়ে দেওয়া।
আয়াত নং -০২
Surah Al-Hadid, Verse 27:
وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ابْتِغَاءَ رِضْوَانِ اللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا
আর বৈরাগ্য, সে তো তারা নিজেরাই উদ্ভাবন করেছে; আমি এটা তাদের উপর ফরজ করিনি; কিন্তু তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যে এটা অবলম্বন করেছে। অতঃপর তারা যথাযথভাবে তা পালন করেনি। সূরা হাদিদ -২৭
ব্যাখ্যা: এ আয়াতে ইশারাতুন নস দ্বারা বোঝা যায়, নফল আমল শুরু করলে তা পুরো করা উচিত।
হাদিসে নববি:
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ أُهْدِيَ لِي وَلِحَفْصَةَ طَعَامٌ وَكُنَّا صَائِمَتَيْنِ فَأَفْطَرْنَا ثُمَّ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا أُهْدِيَتْ لَنَا هَدِيَّةٌ فَاشْتَهَيْنَاهَا فَأَفْطَرْنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ عَلَيْكُمَا صُومَا مَكَانَهُ يَوْمًا آخَرَ
অর্থ: ‘আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমার ও হাফসার জন্য কিছু খাবার হাদিয়া স্বরূপ আসে। এ সময় আমরা উভয়ে রোজাদার ছিলাম। কিন্তু (খাবার পাওয়াতে) আমরা রোজা ভেঙ্গে তা খেয়ে ফেলি। এরপর রাসূল (ﷺ) হাজির হলে, আমরা তাঁকে বলি, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নিশ্চয়ই আমাদের জন্য কিছু খাবার হাদিয়া স্বরূপ আসে, আর আমাদের তা খেতে ইচ্ছা হওয়াতে আমরা রোজা ভেঙ্গে খেয়ে ফেলেছি। রাসূল (ﷺ) বলেন, ক্ষতি নেই। তোমাদের উভয়ের জন্য অন্য কোনোদিন কাযা রোযা রাখতে হবে।’ তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ- ২৪৫৭
সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে উক্ত ব্যক্তি শুধু কাযা আদায় করবে। কাফফারা আদায় করতে হবে না । সূত্র: আল জাওহারাতুন নিয়ারাহ-১ খণ্ড,১৪১ পৃ. ফাতহুল কাদির- ২ খণ্ড,৩৬৫ পৃ.
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক