আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম মুফতি সাহেব!
নিম্নের বিষয়গুলোর সমাধান কুরআন ও হাদীসের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
زادك الله علما و بارك فيه وجزاك خيرا في الدارين. آمين
স্ত্রী যদি স্বামীর পিতা-মাতার সাথে (পিতার মালিকানাধীন ঘর/ শ্বশুর বাড়িতে) এক ঘরে থাকতে না চায়, পৃথক ঘর দাবী করে, তাহলে স্বামী কি তাকে বাধ্য করতে পারবে? স্ত্রীর এমন দাবি করাতে কি সে গুনাহগার হবে?
তারিখ: ২৫/০৩/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
হাফেজ মাওলানা সাজ্জাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, আপনার প্রশ্নের বর্ণনা মতে, ঘর দ্বারা যদি একই রুম বা কক্ষ বোঝায় তাহলে একই কক্ষে সম্মিলিতভাবে বসবাস করা জায়েজ নেই।
এক্ষেত্রে স্ত্রী বাধ্য করা প্রয়োজন নেই বরং স্বামীরই দায়িত্ব হল পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করা।
পরামর্শ: যদি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে একই ঘরে থাকতে হয়, তাহলে মাঝখানে পর্দা বা হার্ড বোর্ড জাতীয় দিয়ে পৃথক করা যেতে পারে, যাতে আড়াল হয়।
স্ত্রীর জন্যে পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করা। এটা স্ত্রীর অধিকার। এজন্য স্ত্রীর স্বামীকে বাধ্য বা পিড়াপীড়ি করতে পারবেন এবং কোন গুনাহ নেই। দলিল:
أَسْكِنُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ سَكَنتُم مِّن وُجْدِكُمْ
তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেরূপ ঘরে তোমরা বাস কর তাদেরকেও সেরূপ ঘরে বাস করতে দেবে। (সূরা তালাক ০৬)
প্রশ্ন: ক। স্ত্রীর জন্যে পৃথক ঘর বা বাসস্থান বলতে কি বুঝায়?
উত্তর: ক। উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ফুকাহায়ে কেরামগণ লিখেছেন,
فالمسكن الخاص حق للزوجة، وأقل ما يصدق عليه ذلك: حجرة مستقلة المخرج والمدخل والمرافق، كالمطبخ ومكان قضاء الحاجة
অর্থাৎ ব্যক্তিগত বাসস্থান স্ত্রীর অধিকার, এবং এটির জন্য সর্বনিম্ন যেটি প্রযোজ্য তা হল: একটি পৃথক রুম, প্রস্থান এবং প্রবেশের পথ এবং সুযোগ-সুবিধা, যেমন রান্নাঘর এবং টয়লেট বা বাথরুম, নিজেকে উপশম করার জায়গা ।
فإذا توفر ذلك في منزلك الصغير في دار والدك، فلا يلزمك إجابة زوجتك في طلب النقلة، فضلا عن الشروع في بناء بيت مستقل، فهذا لا يلزمك على أية حال، وإنما الواجب عليك هو توفير سكن بالوصف الذي أشرنا إليه، سواء ببنائه أو إجارته أو غير ذلك.
অর্থাৎ এটি নির্ধারিত হয় যে বাসস্থানটি তার জন্য উপযুক্ত হবে, তারপর যদি স্বামী স্ত্রীর জন্য এই ধরণের আবাসন সরবরাহ করে, এমনকি যদি তা তার পিতার বাড়িতে বা অন্য কোন স্থানে থাকে, তাহলে তার তা আছে, এবং স্ত্রীর অস্বীকার করার অধিকার নেই, বরং তাকে অবশ্যই তাকে মানতে হবে। তাদের তৃপ্তি , উচ্চতা এবং নীচে, যদি সুবিধাগুলি আলাদা করা হয়, দুটি বাসস্থান। সূত্র: ফিকহুল উসরাতিল মুসলিমা; ফাতওয়া নং-৩৯৮৮০৯
সারকথা হলো, স্ত্রীর জন্য আলাদা আবাসস্থল যদি শ্বশুর বাড়িতেই করা সম্ভব হয়, তাহলে আলাদা বাড়ি করতে স্বামী বাধ্য নয়। এক্ষেত্রে স্বামীকে পীড়াপীড়ি করলে স্ত্রী অন্যায় হবে।
তবে হাকিমুল উম্মাহ হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. এর পরামর্শ মোতাবেক পারিবারিক ঝগড়া- দ্বন্দ্ব মীমাংসা নিমিত্তে পৃথক বাড়ি, সংসার হওয়াই উচিত, উত্তম।
- والله اعلم بالصواب