আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।
জিজ্ঞাসা-১২৬১০: দোয়া করার একটি সুন্নত হল নিজে পক্ষ থেকে শুরু করা

জিজ্ঞাসা-১২৬১০: দোয়া করার একটি সুন্নত হল নিজে পক্ষ থেকে শুরু করা

No Comments

  জিজ্ঞাসা-১২৬১০:

 

আসসালামু আলাইকুম ওযসসালামু

দোয়া করার ক্ষেত্র প্রথমে নিজের জন্য এর পর অন্যদের জন্য দোয়া করবে?

এ ক্ষেত্রে কুরআন ও হাদীসের নির্দেশনা কি?

আবুল কালাম আজাদ ফরিদপুর

তারিখ:  ০৩/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ফরিদপুর থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো


দোয়া করার একটি আদব/ সুন্নত/ মুস্তাহাব হলো নিজের থেকে শুরু করা। দলিল:


আয়াত নং -০১

Surah Nooh, Verse 28:

رَّبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَلَا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلَّا تَبَارًا

হে আমার পালনকর্তা! আপনি আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যারা মুমিন হয়ে আমার গৃহে প্রবেশ করে-তাদেরকে এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করুন এবং যালেমদের কেবল ধ্বংসই বৃদ্ধি করুন। সূরা নুহ-২৮



হাদিস নং -০১

حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو قَطَنٍ، عَنْ حَمْزَةَ الزَّيَّاتِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا ذَكَرَ أَحَدًا فَدَعَا لَهُ بَدَأَ بِنَفْسِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ وَأَبُو قَطَنٍ اسْمُهُ عَمْرُو بْنُ الْهَيْثَمِ .

 উবাই ইবনে কা’ব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন কারো আলোচনা করতেন এবং তার জন্য দুআ করতেন তখন নিজেকে দিয়ে শুরু করতেন।


হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। আবু কাতন (রাহঃ) এর নাম হল আমর ইবনুল হায়ছাম। তাখরিজ:

জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ৩৩৮৫ (আন্তর্জাতিক নং ৩৩৮৫)


তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)



হাদিস নং -০২

حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا نَقُولُ فِي الصَّلاَةِ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم السَّلاَمُ عَلَى اللَّهِ السَّلاَمُ عَلَى فُلاَنٍ . فَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ " إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلاَمُ فَإِذَا قَعَدَ أَحَدُكُمْ فِي الصَّلاَةِ فَلْيَقُلِ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ فَإِذَا قَالَهَا أَصَابَتْ كُلَّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ثُمَّ يَتَخَيَّرُ مِنَ الْمَسْأَلَةِ مَا شَاءَ " . " .

যুহাইর ইবনে হারব, উসমান ইবনে আবি শাঈবা ও ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) (ﷺ)-এর পিছনে নামায পড়ার সময় (বৈঠকে) বলতাম, السَّلاَمُ عَلَى اللَّهِ السَّلاَمُ عَلَى فُلاَنٍ (আল্লাহর উপর সালাম, অমুকের উপর সালাম) একদিন রাসূল (ﷺ) (ﷺ) আমাদের বললেন, আল্লাহর নামই সালাম। তোমাদের কেউ যখন নামাযে বসে সে যেন বলেঃ


التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ

যাবতীয় মান-মর্যাদা, প্রশংসা এবং পবিত্রতা আল্লাহর জন্য। হে নবী, আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর শান্তি নেমে আসুক। যখন সে একথাগুলো বলে তখন তা আল্লাহর প্রতিটি নেক বান্দার কাছে পৌঁছে যায়, সে আসমানেই থাক অথবা জমীনে।


পরে বলবে أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল।” এরপর তার যা মন চায় দুআ করবে। তাখরিজ: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৮২ (আন্তর্জাতিক নং ৪০২-১)


ব্যাখ্যা:  এ হাদিস শরীফের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ বলেন,


قالَ الحافظ ابن حجر العسقلاني - رحمه الله - :

قوله ( السلام علينا ) استُدل به على استحباب البداءة بالنفس في الدعاء ، ، وأصله في مسلم ، ومنه قول نوح وإبراهيم عليهما السلام ، كما في التنزيل ." فتح الباري " ( 2 / 314 ) .

অর্থাৎ অত্র হাদিসে (الاسلام علينا) আসসালামু আলাইনা শব্দ দ্বারা প্রমাণিত হয় দোয়াতে নিজে দ্বারা শুরু করা মুস্তাহাব। সূত্র: ফাতহুল বারী -২/৩১৪


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক

জিজ্ঞাসা-১২৬০৮: মুসলমান, ইয়াহূদি এবং খৃস্টান ধর্মের বড় দিন কবে থেকে এবং কেন পালন করা হয়?

জিজ্ঞাসা-১২৬০৮: মুসলমান, ইয়াহূদি এবং খৃস্টান ধর্মের বড় দিন কবে থেকে এবং কেন পালন করা হয়?

No Comments

  জিজ্ঞাসা-১২৬০৮:

 

মুহতারাম মুফতি সাহেব আসসালামু আলাইকুম। মহান আল্লাহ পাক আপনাকে সুস্থ রাখুন এবং আপনার এলেমে বরকত দান করুন। আমার জানার বিষয় হল মুসলমানদের জন্য শুক্রবার শ্রেষ্ঠ দিন, ইহুদিদের জন্য শনিবার বড় দিন, খ্রিস্টানদের জন্য রবিবার বড়দিন কিভাবে হল? কবে থেকে হল? কেন হল? তার ইতিহাস জানতে চাই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আসসালামুয়ালাইকুম রাহমাতুল্লাহ।

তারিখ:  ০২/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

  মাওলানা  আনোয়ার হোসেন, সিলেট থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো

এ বিষয়ে আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন, 

الجُمعة فيها مَعنى الاجتماع، والاجتماع لابُدَّ فيه من عدد، ويوم الجُمعة عيد أسبوعي للمسلمين، كما أن السَّبت عيدٌ لليهود، والأحد عيد للنَّصارى، وله 32 خصوصية، كما في زاد المعاد لابن القيم، نقل ابن حجر في الفتح 26 منها.

অর্থাৎ শুক্রবারের একত্রিত এর অর্থ আছে, এবং একত্রিত এর একটি সংখ্যা থাকতে হবে, এবং শুক্রবার হল মুসলমানদের জন্য একটি সাপ্তাহিক ঈদ, ঠিক যেমন শনিবার হল ইহুদীদের জন্য একটি উৎসব, এবং রবিবার হল খ্রিস্টানদের জন্য একটি উৎসব। সূত্র: ফাতহুল বারী- ২৬ পৃ.


যাইহোক আপনার প্রশ্নের আলোকে আলোচনাকে তিনভাগে ভাগ করছি। 


প্রশ্ন: ক। মুসলমানদের জন্য শুক্রবার শ্রেষ্ঠ দিন কবে থেকে হলো এবং কেন হলো: 


উত্তর: ক। শুক্রবারের গুরুত্ব পৃথিবীর সৃষ্টির লগ্ন থেকে,এ দিনে হজরত আদম আঃ কে সৃষ্টি করা এবং এ দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। দলিল:


وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ، - يَعْنِي الْحِزَامِيَّ - عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ أُدْخِلَ الْجَنَّةَ وَفِيهِ أُخْرِجَ مِنْهَا وَلاَ تَقُومُ السَّاعَةُ إِلاَّ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ " .

কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেছেন, সূর্য উদয়ের দিবসগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমআর দিবস। সে দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়। তাকে ঐ দিন জান্নাতে প্রবেশ করান হয়। তাঁকে তা থেকে ঐ দিন বের করা হয়। আর কিয়ামতও হবে জুমআর দিবসেই।


—সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮৫০ (আন্তর্জাতিক নং ৮৫৪-২)

০১. জাহিলি যুগে শুক্রবার: 

ويوم الجمعة كان يُسمى في الجاهلية يوم العَروبة، “بفتح العين” والعروبة معناها الرحمة، وجاء في “الروْض الأنُف” للسهيلي على سيرة ابن هشام، أن كعب بن لؤي ـ أحد أجداد النبي ـ صلى الله عليه وسلم ـ هو أول من جمَع يوم العَروبة ولم تُسم العروبة الجمعة إلا منذ جاء الإسلام في قول بعضهم وقيل: هو أول من سمَّاها الجمعة، فكانت قريش تجتمع إليه في هذا اليوم، فيخطبهم ويُذَكِّرهم بمبعث النبي ـ صلى الله عليه وسلم ـ ويُعْلِمهُم أنه من ولده، ويأمرهم باتِّباعه والإيمان به، وقد ذكر الماوردي هذا الخبر عن كعب في كتاب الأحكام السلطانية

অর্থাৎ আর শুক্রবারকে জাহিলিয়াতে বলা হয়েছে, ইয়াওমুল আরুবা, "আইনের উপর যবর" এবং আরুবা অর্থ রহমত, এবং এটি ইবনে হিশামের জীবনীতে আল-সুহাইলির "আল-রাউদ আল-আনফ" এ এসেছে যে, কাব বিন লুয়াই - নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিতামহদের একজন - আরুবার দিনে প্রথম সমবেত হন। ইসলাম না আসা পর্যন্ত আরুবাকে শুক্রবার বলা হত না, কারো কারো মতে তাদের, এবং বলা হয়েছিল: তিনিই সর্বপ্রথম এটিকে শুক্রবার বলে ডাকেন, তাই এই দিনে কুরাইশরা তাঁর কাছে সমবেততাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিশন স্মরণ করিয়ে দিতেন । - এবং তাদের জানান যে তিনি তার পুত্র থেকে ছিলেন, এবং তিনি তাদের তাকে অনুসরণ করতে এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের নির্দেশ দেন এবং আল-মাওয়ারদী উল্লেখ করেছেন যে কাব সম্পর্কে এই খবরটি আল-আহকাম আল-সুলতানিয়া গ্রন্থ। সূত্র: ইবনুল আসির -১/৩৫৯; ইবনে হিশাম -১/১৯৯-১০২


২. মক্কায় জুমাআর নামাজ ফরজ হয়েছিল, কিন্তু আদায় করেছে মদিনায়:  

কোন কোন বর্ণনা পাওয়া যায়, মক্কায় জুমাআর সালাত ফরজ হয়। তবে সনদ দুর্বল। দলিল:

وصلاة الجمعة فُرِضَتْ بمكة قبل الهجرة، كما أخرجه الدار قطني عن ابن عباس ـ رضي الله عنهما ـ ولم يتمَكَّن النبي ـ صلى الله عليه وسلم ـ من إقامتها بها، وذلك لقِلة عدد المسلمين، أو لضعف

شوْكَتهم أمام قوة المشركين، فلمَّا هاجر من هاجر من الصحابة إلى المدينة . كتب إلى مصعب بن عُمَير ـ وهو أول من أوفده النبي ـ صلى الله عليه وسلم ـ من مكة مع المسلمين من الأنصار ليُعَلِّمهم ، ثم قَدم بعده عبد الله بن أم مكتوم ـ : أما بعد فانظر اليوم الذي تجْهَر فيه اليهود بالزَّبور لسَبْتِهِم، فاجمعوا نساءكم وأبناءكم ، فإذا مال النهار عن شطره عند الزوال من يوم الجمعة فتقرَّبوا إلى الله بركعتين.

হিজরতের পূর্বে মক্কায় জুমার নামায ফরজ করা হয়েছিল , যেমনটি আল-দারাকুতনি ইবনে আব্বাসের সূত্রে বর্ণনা করেছেন - আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারেন - এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর সালাত প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হননি। সেখানে মুসলমানদের স্বল্প সংখ্যক কারণে বা মুশরিকদের শক্তির সামনে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তিনি মুসআব বিন উমাইরকে লিখেছিলেন - যিনি নবীর দ্বারা সর্বপ্রথম প্রেরণ করেছিলেন - আল্লাহ তাকে শান্তি দান করুন - মক্কা থেকে আনসারদের মধ্যে মুসলমানদের সাথে তাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য, তারপর আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম তার পরে এসেছিলেন: এখন, যেদিন ইহুদীরা তাদের বিশ্রামবারে জবুর ধ্বনিত করেছিল, সেই দিনটির দিকে তাকাও তাই তোমরা তোমাদের নারী ও শিশুদেরকে একত্র কর, যদি শুক্রবারের দিন দুপুরের অর্ধেক হয়ে যায়, তাহলে দুই রাকাত পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অন্বেষণ কর। এর ভিত্তিতে, মুসআব প্রথম হবেন যারা তাদের সাথে মদীনায় জুমার নামাযের ইমামতি করবেন এবং তাদের সংখ্যা ছিল বারো জন, যেমনটি আবু মাসউদ আল-আনসারীর সূত্রে আল-তাবারানির হাদীস রয়েছে এবং এই হাদীসটি দুর্বল।

মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাকে’ সহিহ সনদে আল্লামা ইবনে সিরিন থেকে বর্ণিত আছে, দ্বিতীয় বাইয়াতে আকাবার পর যখন মদিনায় ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে, তখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় আগমনের পূর্বে একবার আনসারগণ পরামর্শক্রমে একত্রিত হয়ে হজরত আসআদ বিন যুরারাহ (রা.)-এর কাছে গেলে তিনি জুমার দিন সবাইকে নিয়ে একত্রে জুমার নামাজ আদায় করেন।



৩। হিজরতের পর শুক্রবার জুমাআর জন্য নির্ধারণ এবং সংশ্লিষ্ট ঘটনা : 


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মদিনায় যাওয়ার পর এবং জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার আগে একবার মদিনার আনসার সাহাবিরা আলোচনায় বসেন। তারা বললেন, ইহুদিদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট রয়েছে, যে দিনে তারা সবাই একত্র হয়। খ্রিস্টানরাও সপ্তাহে একদিন একত্র হয়। সুতরাং আমাদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যে দিনে আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব, নামাজ আদায় করব।


অতঃপর তারা আলোচনায় বললেন, শনিবার ইহুদিদের আর রোববার নাসারাদের জন্য নির্ধারিত। অবশেষে তারা ইয়াওমুল আরুবা শুক্রবারকে গ্রহণ করলেন এবং তারাই এদিনকে ‘জুমার দিন’ নামকরণ করলেন। (সীরাতুল মুস্তাফা ও দারসে তিরমিজি)


فقد جاء في حديث مُرسل عن ابن سيرين قال: جُمِعَ أهل المدينة قبل أن يقدم النبي ـ صلى الله عليه وسلم ـ المدينة، وقبل أن تنزل الجمعة ، قالت الأنصار: لليهود يوم يجمعون فيه كل أسبوع وللنصارى مثل ذلك، فهلمَّ فلنجعل يومًا نجمع فيه فنذكر الله تعالى ونصلي ونشكره، فجعلوه يوم العَروبة، واجتمعوا إلى أسعد بن زُرارة، فصلي بهم يومئذٍ ركعتين وذكرهم، فسَموا الجمعة حين اجتمعوا إليه فذبح لهم شاة فتغدوا وتعشوا منها، وذلك لقلتهم فأنزل الله تعالى في ذلك: (يَا أيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلاةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسَعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ…) (سورة الجمعة : 9) قال ابن حجر: رجاله ثقات، إلا أنه مُرسل ، أي سقط منه الصحابي (يُلاحظ أن هذا الحديث بيَّن قلة عدد المصلين للجمعة في أول مرة بحيثبحيث تكفيهم الشاة غَداء وعَشاء، أما الحديث الذي فيه استغفار كعب بن مالك لأسعد بن زرارة فيذكر أن عددهم أربعون، وهؤلاء لا تكفيهم الشاة غَداء وعَشاء، فالظاهر أن رواية حديث ابن سيرين كانت عن أول صلاة، وحديث كعب كان بعد اشتهار صلاة الجمعة وكثرة الحاضرين).

যেমনটি একটি হাদীসে এসেছে ইবনে সিরীন (রহ.) থেকে, যিনি বলেছেন: মদিনা নবীর সামনে জড়ো হলেন - মদিনায় এসেছিলেন, এবং শুক্রবার নামার আগে, আনসাররা বললেন, ইহুদীদের একটি দিন রয়েছে যেটিতে তারা প্রতি সপ্তাহে একত্রিত হয়, এবং খ্রিস্টানদেরও একই দিন রয়েছে, তাই আসুন। আমরা এমন একটি দিন তৈরি করি যেখানে আমরা একত্রিত হই, তাই আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহকে স্মরণ করি এবং প্রার্থনা করি এবং তাঁর শুকরিয়া আদায় করি, তাই তারা এটিকে আরববাদের দিন বানিয়েছিল এবং তারা আসাদ বিন জাররার

কাছে একত্রিত হয়েছিল, তাই তিনি সেদিন তাদের সাথে দুই রাকাত সালাত আদায় করেছিলেন এবং তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলেন, তাই তারা জুমার দিন ডেকেছিল যখন তারা তাঁর কাছে একত্রিত হয়েছিল, তখন তিনি তাদের জন্য একটি ভেড়া জবাই করেছিলেন, তখন তারা তা থেকে দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার খেয়েছিল। যারা ঈমান এনেছে, শুক্রবার থেকে যখন নামাযের আযান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা পরিত্যাগ। সূরা জুমাআ-০৯


নোট: ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, হাদিসটি মুরসাল। 


ولما هاجر النبي ـ صلى الله عليه وسلم ـ نزل “قِباء” عند بني عمرو بن عوف، ثم توجه إلى المدينة يوم جمعة فأدركته صلاتها في بني سالم بن عوف، فصلاها في المسجد الذي في بطن الوادي وسُمي مسجد الجمعة وهي أول جمعة صلاها بأصحابه وكانوا مائة وقيل أربعون “الزرقاني 7/382”.

যেমনটি তার মুসাব বিন ওমাইরের বই দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে , যা আল-দারাকুতনি ইবনে এর থেকে প্রকাশ করেছিলেন। আব্বাস।

এবং যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করেন, তখন তিনি বনী আমর ইবনে আওফের সাথে কুবায় অবস্থান করেন, তারপর তিনি শুক্রবার মদিনায় যান এবং বনি সালেম ইবনে আওফ এর মহল্লায় পৌঁছিলে জোহরের ওয়াক্ত হয়। তখন তিনি সাহাবিদের সঙ্গে নিয়ে জুমাআর সালাত আদায় করেন, যে মসজিদটি উপত্যকার মাঝখানে অবস্থিত এবং যাকে বলা হত শুক্রবারের মসজিদ। এবং বলা হয়েছিল এর মুসল্লি সংখ্যা ছিল চল্লিশ ।  

এবং মদিনায় তিনি যে প্রথম খুতবা দিয়েছিলেন তা পূর্বোক্ত রেফারেন্সে, তাফসির আল-কুরতুবির উদ্ধৃতিএবং এর গুণাবলীর দিকগুলি উল্লেখ করেছেন। সূত্র: যারকানি-৭/৩৮২



সারকথা হলো,   শনিবার বনী ইসরাইলের এবং মুসা আঃ এর বিশেষ ইবাদতের দিন ছিল আর বর্তমানে তার ধর্মের অনুসারী দাবিদার ইহুদিরা শনিবার বড় দিন পালন করে আসছে।

রবিবারে হজরত ঈসা আঃ তার শিষ্যদের নিয়ে মজলিস, ইবাদত করেছেন এবং নাসারাদের ভাষায় যিশু এই দিনে আবির্ভুত হয়েছেন, তাই তার সম্মানে রবিবারকে তারা ইবাদতের দিন নির্ধারিত করে নিয়েছেন।


আর হিজরতের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  মদিনার আনসার সাহাবাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অন্যান্য ধর্মের ন্যায় শুক্রবারকে মুসলমানদের বিশেষ ইবাদতের দিন নির্ধারিত করেছেন।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক

জিজ্ঞাসা-১২৬০৯: মুসাফিরের জন্য সুন্নাত নামাজের হুকুম কি?

No Comments

  



জিজ্ঞাসা-১২৬০৯:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হলো, মুসাফির অবস্থায় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সুন্নাত নামাজ আদায় নিষেধ নাকি কেউ চাইলে আদায় করতে পারবেন? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম। 

তারিখ:  ০৩/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা মোঃ শফিউল ইসলাম সিরাজগঞ্জ।

 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, ফিকহি হানাফির মতে,


মুসাফির ব্যক্তির জন্য চলন্ত অবস্থায় বা তাড়াহুড়া থাকলে ফজরের সুন্নত ছাড়া অন্যান্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা না পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে স্বাভাবিক ও স্থির অবস্থায় সুন্নত নামাজ আদায় করবে। সূত্র: ইলাউস্ সুনান: ৭/১৯১, রদ্দুল মুহতার : ১/৭৪২


দলিল: 


আয়াত নং -০১

Surah Al-Baqara, Verse 184:

 فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ وَأَن تَصُومُوا خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ


 যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণ কর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার। সূরা বাকারা-১৮৪


ব্যাখ্যা: সফররত অবস্থায় সাওম না রাখা ব্যক্তির ইচ্ছা ও পছন্দের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও অসুবিধা না হলে রোজা রাখাই উত্তম।


সুতরাং সফর অবস্থায় রোজা যদি উত্তম হয়, তাহলে নামাজ আরও উত্তম হবে।


হাদিস নং -০১

عن أبى هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : لا تتركوا ركعتي الفجر ولو طردتكم الخيل

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ অশ্বারোহী বাহিনী তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করলেও তোমরা ফজরের দুই রাকাত [সুন্নত] ছেড়ো না। তাহাবী শরীফ-১৬৪৭, সুনানে আবু দাউদ-১২৬০, সুনানে বায়হাকী কুবরা-৪২৫৭, মুসনাদে আহমাদ-৯২৫৩


হাদিস নং -০২

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَيَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ يَحْيَى، - قَالَ ابْنُ حَاتِمٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، - حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ عَرَّسْنَا مَعَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ نَسْتَيْقِظْ حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لِيَأْخُذْ كُلُّ رَجُلٍ بِرَأْسِ رَاحِلَتِهِ فَإِنَّ هَذَا مَنْزِلٌ حَضَرَنَا فِيهِ الشَّيْطَانُ " . قَالَ فَفَعَلْنَا ثُمَّ دَعَا بِالْمَاءِ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ - وَقَالَ يَعْقُوبُ ثُمَّ صَلَّى سَجْدَتَيْنِ - ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَصَلَّى الْغَدَاةَ .

আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে আমরা একবার শেষ রাত্রে ঘুমিয়ে পড়লাম। সূর্যোদয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা জাগতে পারলাম না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা সকলেই নিজ সওয়ারীর মাথায় ধরে নিয়ে চল। কেননা এই মনযিলে আমাদের কাছে শয়তান এসে পড়েছে। বর্ণনাকারী বলেন,-আমরা তা-ই করলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পানি আনিয়ে উযু করলেন এবং দুটি সিজদা করলেন; আর ইয়াকুব বলেন, দু’রাকআত সুন্নাত নামায আদায় করলেন। এরপর নামাযের ইকামত দেয়া হলো এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফজরের নামায আদায় করলেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৩৪ (আন্তর্জাতিক নং ৬৮০-২)


হাদীসের ব্যখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম. সফরেও ফজরের ছুন্নাত পড়েছেন। হযরত আয়েশা রা. থেকে সহীহ সনদে আরো বর্ণিত আছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ বা অসুস্থ অবস্থায়, সফর বা মুকীম অবস্থায় এবং উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে যা ছাড়তেন না, তা-হলো ফজরের পূর্বের দু’রাকাত। (ইবনে আবী শাইবা-৩৯২৯) ইবনে উমার রা.-এর ব্যাপারে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে, তিনি সফরেও ফজরের পূর্বের দু’রাকাত ছাড়তেন না। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ২/১৩১)



হাদিস নং -০৩

وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي مُرَّةَ، مَوْلَى عَقِيلٍ عَنْ أُمِّ هَانِئٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي بَيْتِهَا عَامَ الْفَتْحِ ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ قَدْ خَالَفَ بَيْنَ طَرَفَيْهِ .

 উম্মে হানী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর ঘরে একটি কাপড় পরে আট রাকআত নামায আদায় করেন। তিনি সে কাপড়ের দুআঁচল বিপরীত দিকে জড়িয়েছিলেন।

সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৪৩ (আন্তর্জাতিক নং ৩৩৬-৭)


ব্যাখ্যা: মুসাফির অবস্থায় সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ নফল  হুকুম হয়ে যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিনে মুসাফির অবস্থায় নফল নামাজ আদায় করেছেন। এ হাদিস থেকে সফর অবস্থায়  সুন্নাত বা নফল নামাজ পড়ার অনুমতি প্রমাণ হয়।



সারকথা হলো,   আপনার প্রশ্নের আলোকে মুসাফির অবস্থায় সুযোগ থাকলে   সুন্নাত নামাজ আদায় করা উত্তম আর ফজরের সুন্নত অবশ্যই আদায় করবেন।


 والله اعلم بالصواب

জিজ্ঞাসা-১২৬০৫: শাহাদাতের ফজিলত সংক্রান্ত হাদিস এর রেফারেন্স?

জিজ্ঞাসা-১২৬০৫: শাহাদাতের ফজিলত সংক্রান্ত হাদিস এর রেফারেন্স?

No Comments

  জিজ্ঞাসা-১২৬০৫:

 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লা। নিচের হাদিস শরীফের আরবি এবারত এবং হাদিস নাম্বার প্রয়োজন

যে ব্যক্তি নিয়তের বিশুদ্ধতা ও সততার সঙ্গে আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জনের প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে শহীদের মর্যাদায় পৌঁছাবে.... যদিও সে বিছানায় মৃত্যুবরণ করে

তারিখ:  ৩০/০৫/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

 মাওলানা  আবুল কালাম আজাদ  থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে, হাদিসটির আরবি ইবারত নিম্নরূপ:

وَعَن سَهلِ بنِ حُنَيفٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَمَنْ سَأَلَ اللهَ تَعَالَى الشَّهَادَةَ بِصِدْقٍ بَلَّغَهُ اللهُ مَنَازِلَ الشُّهَدَاءِ وَإنْ مَاتَ عَلَى فِرَاشِهِرواه مسلم


সাহ্ল ইবনে হুনাইফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সত্য নিয়্যাতে আল্লাহর কাছে শাহাদত প্রার্থনা করবে, আল্লাহ তাকে শহীদদের মর্যাদায় পৌঁছিয়ে দেবেন; যদিও সে নিজ বিছানায় মৃত্যুবরণ করে।” (মুসলিম ৫০৩৯ নং)

  


হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৯৫৭

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস



 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মাওলানা মাহমুদ 

জিজ্ঞাসা-১২৬০৬: মাথার ও দাড়ির পাকা বা সাদা চুল উপড়িয়ে ফেলার বিধান কি?

No Comments

  



জিজ্ঞাসা-১২৬০৬:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। মাথার ও দাড়ির পাকা বা সাদা চুল উপড়িয়ে ফেলার বিধান কি?

তারিখ:  ৩০/০৫/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

জনাব হাসান বরিশাল  থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো

ইমাম নববি রহ. শারহুল তাহজিব গ্রন্থে বলেন, পাকা চুল উপড়ে ফেলা মাকরূহ। কারণ হাদিস শরিফে এসেছে-

দলিল:


حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، ح وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - الْمَعْنَى - عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَنْتِفُوا الشَّيْبَ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَشِيبُ شَيْبَةً فِي الإِسْلاَمِ " . قَالَ عَنْ سُفْيَانَ " إِلاَّ كَانَتْ لَهُ نُورًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . وَقَالَ فِي حَدِيثِ يَحْيَى " إِلاَّ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِهَا حَسَنَةً وَحَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً " .


. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) ...... আমর ইবনে শু’আয়েব (রাহঃ) তাঁর দাদা ও পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা পাকা চুল, দাড়ি উপড়াবে না। কেননা, যে মুসলমানের চুল ইসলামের উপর সাদা হয়; সুফিয়ান (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তা কিয়ামতের দিন তার জন্য নূর স্বরূপ হবে। রাবী ইয়াহয়ার বর্ণনায় আছে যে, তা ঐ সাদা চুলের বিনিময়ে একটি নেকী লেখা হবে এবং একটি গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪১৫৪ (আন্তর্জাতিক নং ৪২০২, তিরমিজি, নাসাঈ


নোট: ইমাম তিরমিজি রহ বলেন, হাদিসটির সনদ হাসান।


  আমাদের সাহাবীরা বলেছেন: এটি অপছন্দনীয়। এটি স্পষ্ট এবং সঠিক নিষেধের জন্য হারাম, দূরে নয়, এবং দাড়ি এবং মাথা থেকে ছিঁড়ে ফেলার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই । সূত্র: আল লিবাসু ওয়ায যিনাহাতু,আকওয়ালুল ওলামা ফি তানফিশ শায়বি-২৯৭৯০৪ ( ফতোয়া নং)



وجاء في مرقاة المفاتيح للملا قاري: قال ميرك: نتف الشيب يكره عند أكثر العلماء، لحديث عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده مرفوعا: لا تنتفوا الشيب، فإنه نور المسلم ـ رواه الأربعة، وقال الترمذي: حسن، وروى مسلم من طريق قتادة عن أنس قال: كان يكره نتف الرجل الشعرة البيضاء من رأسه ولحيته، 

অর্থাৎ মোল্লা আলী কারী মিরকাতুল মাফাতাহের মধ্যে বলেছেন, পাকা চুল উপড়িয়ে ফেলা অধিকাংশ ওলামাদের নিকট মাকরূহ। উপরোক্ত হাদিস দ্বারা উল্লেখ করেছেন।


আনাস রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,পুরুষের জন্য মাথা ও মাথা এবং দাড়ি থেকে সাদা চুল ও উপড়ানো মাকরুহ। সূত্র: মিরকাতুল মাবাতিহ শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ -২৮৩০ পৃষ্ঠা




সারকথা হলো,   মাথার সাদা চুল উপড়ানো মাকরুহ।


তবে দাড়ি থেকে পাকা দাড়ি উঠিয়ে ফেলা সম্পূর্ণরূপে হারাম; তখন এটি আর উচিত-অনুচিতের পর্যায়ে থাকে না। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দাড়ি রাখার ব্যাপারে আদেশ দিয়ে বলেছেন,

 (انْهَكُوا الشَّوَارِبَ، وَأَعْفُوا اللِّحَى»  অর্থআব্দুল্লাহ  ইবনে  উমর রা.থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনরাসূলুল্লাহ ()  বলেছেন, তোমরা গোঁফ বেশী ছোট রাখবে এবং দাড়ি বড় রাখবে। বুখারি-৫৪৬৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন

( خَالِفُوا المُشْرِكِينَ: وَفِّرُوا اللِّحَى، وَأَحْفُوا الشَّوَارِبَ  অর্থতোমরা মুশরিকের বিপরীত করদাড়ি লম্বা কর এবং গোঁফকে কর ছোট বুখারিমুসলিম-২৫৯ ই.ফা.; মুসনাদে আহমদ-২১২৫২


নোট: আমর হলো উজুব এর জন্য, সুতরাং দাড়ি লম্বা করা ওয়াজিব, কাটা, মুণ্ডানো, উপড়ানো হারাম।



 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক

Stylo

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে করে যোগাযোগ করুন। জাযাকাল্লাহু খাইর