আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৬০৭: হিজরি মাসের নামকরণ ও উৎপত্তি

No Comments

  জিজ্ঞাসা-১২৬০৭:

 আসসালামু আলাইকুম 

আরবি বারো মাসের নামকরণ কবে এবং কে শুরু করেন?

এই নামকরণের ইতিহাস জানতে চাই!

কখন থেকে আরবি বারো মাসের গননা শুরু হয়?

বি:দ্র: হিজরি সাল হজরত উমর রাদিআল্লাহু আনহু চালু করেছেন এইটা আমরা জানি তবে আরবি বারো মাসের নাম( মহরম, সফর,) এই বারো মাস কখন থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটা জানতে চাইছি

তারিখ:  ৩১/০৫/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

  মাওলানা  মোঃ কামরুল হাসান, যশোর থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, পৃথিবীর সৃষ্টি শুরু থেকে অর্থাৎ ইসলামের পূর্ব যুগ থেকেই আরবি ১২ মাস ছিল। দলিল:


আয়াত নং -০১


Surah At-Taubah, Verse 36:

إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ


নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। সূরা তওবা -৩৬


আয়াত নং -০২


Surah At-Taubah, Verse 37:

إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ يُضَلُّ بِهِ الَّذِينَ كَفَرُوا يُحِلُّونَهُ عَامًا وَيُحَرِّمُونَهُ عَامًا لِّيُوَاطِئُوا عِدَّةَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ فَيُحِلُّوا مَا حَرَّمَ اللَّهُ زُيِّنَ لَهُمْ سُوءُ أَعْمَالِهِمْ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ

এই মাস পিছিয়ে দেয়ার কাজ কেবল কুফরীর মাত্রা বৃদ্ধি করে, যার ফলে কাফেরগণ গোমরাহীতে পতিত হয়। এরা হালাল করে নেয় একে এক বছর এবং হারাম করে নেয় অন্য বছর, যাতে তারা গণনা পূর্ণ করে নেয় আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলোর। অতঃপর হালাল করে নেয় আল্লাহর হারামকৃত মাসগুলোকে। তাদের মন্দকাজগুলো তাদের জন্যে শোভনীয় করে দেয়া হল। আর আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। সূরা তওবা -৩৭


হাদিস নং -০১

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ فِي حَجَّتِهِ فَقَالَ " إِنَّ الزَّمَانَ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللَّهُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ثَلاَثٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَ ذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ " .

মুসাদ্দাদ (রাহঃ) ..... ইবনে আবু বাকরা (রাহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) নহরের দিন খু্তবা প্রদানকালে বলেন, আল্লাহ্ তাআলার যমীন ও আসমান সৃষ্টির সময় হতে সময় চক্রাকারে ঘুরছে। আর বছর হলো বার মাসে। তম্মধ্যে চারটি হারামের মাস[১]। এগুলোর মধ্যে তিনটি পর্যায়ক্রমে এসেছে, যেমন- যিল-কাআদা, যিল-হজ্জা, আর চতুর্থ মাসটি হল রজব। আর এটা জুমাদাস সানী ও শা‘বানের মধ্যবর্তীতে।


[১] সম্মানিত মাস, পবিত্র মাস।

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৯৪৫ (আন্তর্জাতিক নং ১৯৪৭)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)


হাদিস -০২

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ، عَبَّاسٍ - رضى الله عنهما - قَالَ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ فَوَجَدَ الْيَهُودَ يَصُومُونَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَسُئِلُوا عَنْ ذَلِكَ فَقَالُوا هَذَا الْيَوْمُ الَّذِي أَظْهَرَ اللَّهُ فِيهِ مُوسَى وَبَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى فِرْعَوْنَ فَنَحْنُ نَصُومُهُ تَعْظِيمًا لَهُ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " نَحْنُ أَوْلَى بِمُوسَى مِنْكُمْ " . فَأَمَرَ بِصَوْمِهِ .

. ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (হিজরত করে) মদীনায় এলেন এবং তিনি ইয়াহুদীদেরকে আশূরার (১০ ইং মহররম) দিন রোযা পালন করতে দেখতে পেলেন। এরপর তাদেরকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার পর তারা বলল, এ সে দিন, যে দিন আল্লাহ মুসা (আলাইহিস সালাম) ও বনী ইসরাঈলকে ফির’আউনের উপর বিজয়ী করেছেন। তাই এর সম্মানার্থে আমরা রোযা পালন করে থাকি। তখন নবী (ﷺ) বললেন, আমরা তোমাদের চেয়েও মুসা (আলাইহিস সালাম) এর অধিক নিকটবর্তী। অতঃপর তিনি এ দিনে রোযা পালন করার নির্দেশ দিলেন। তাখরিজ: 

সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫২৭ (আন্তর্জাতিক নং ১১৩০)


হাদিস নং -০৩

حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - قَالَتْ كَانَتْ قُرَيْشٌ تَصُومُ عَاشُورَاءَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُهُ فَلَمَّا هَاجَرَ إِلَى الْمَدِينَةِ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ شَهْرُ رَمَضَانَ قَالَ " مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ " .

আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরাইশরা জাহিলী যুগে আশূরার দিন রোযা পালন করত। রাসুল্ললাহ (ﷺ)ও এ দিন রোযা পালন করতেন। যখন তিনি মদীনায় হিজরত করলেন, তখনও তিনি আশূরার রোযা পালন করেছেন এবং লোকদেরকে তা পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর যখন রমযানের রোযাকে ফরয করা হল, তখন যার ইচ্ছা সে আশূরা রোযা পালন করত আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিত।

—সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫০৮ (আন্তর্জাতিক নং ১১২৫-১)


প্রশ্ন: ক। হিজরি/আরবি মাস কিভাবে এবং কখন থেকে গণনা শুরু হয়?


উত্তর: ক।  

خلاصة ما ورد في بعض الكتب التاريخية :

أن العرب قبل الإسلام كانوا يستعملون السنة قمرية وكان بها 12 شهرا قمريا تضبط من رؤية الهلال إلى رؤيته ثانية .


অর্থাৎ কিছু ঐতিহাসিক বইয়ে যা উল্লেখ করা হয়েছে তার সংক্ষিপ্তসার: ইসলামের পূর্বে আরবরা চান্দ্র বছর ব্যবহার করত এবং এতে ১২টি চান্দ্র মাস ছিল যেগুলো চন্দ্র দেখা থেকে শুরু করে আবার দেখা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত ছিল। 


قد اعتمد العرب على تحديد بداية كل شهر برؤية الهلال. فإذا استطاعوا رؤية الهلال فهذا يعني بداية الشهر العربي و إذا اختفى الهلال فهي إشارة لإنتهاء الشهر و إذا كان القمر ظاهر كاملاً بشكل مستدير فهذا يعني وسط الشهر العربي.

আরবরা অর্ধচন্দ্র দেখে প্রতি মাসের শুরু নির্ধারণের উপর নির্ভর করত। যদি তারা অর্ধচন্দ্র দেখতে সক্ষম হয়, তবে এর অর্থ আরব মাসের শুরু, এবং যদি অর্ধচন্দ্র অদৃশ্য হয়ে যায়, তবে এটি মাসের শেষের চিহ্ন এবং যদি চাঁদ সম্পূর্ণরূপে গোলাকারভাবে দেখা যায় তবে এটি মানে আরব মাসের মাঝামাঝি। সূত্র: আলমুফাস্সিলু ফি তারিখিল আরবি কবলাল ইসলামি ১/৫১০৪


প্রশ্ন: খ। ইসলামের পূর্বে আরবি মাস এবং হজরত ওমর রা এর হিজরি সনের প্রবর্তনের মধ্যে পার্থক্য কি?


উত্তর: খ। আমি পূর্বেও উল্লেখ করেছি যে, আরবি বার মাস তথা চন্দ্র বছর ইসলামের পূর্বেও প্রচলন ছিল, কিন্তু সন/সাল হিসেবে ছিল না, সেটাকেই ওমর রা গ্রহণ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরত বছর থেকে সাল গণনা শুরু করেন। যেমন, 


التقويم الهجري هو تقويم قمري، أي أنه يعتمد حركة القمر في تحديد الأشهر والمواقيت، فإذا اختفى القمر فهذه علامة نهاية الشهر وبظهور الهلال تُعرف بداية الشهر. وقد استُخدم التقويم الهجري للتأريخ رسمياً في عهد الخليفة عمر بن الخطاب رضي الله عنه. واعتمدت الهجرة النبوية للرسول الكريم صلى الله عليه وسلم كبداية لانطلاق السنة الهجرية، ولهذا عرفت السنة الهجرية وشهورها بهذا الاسم.


হিজরি ক্যালেন্ডার একটি চন্দ্র ক্যালেন্ডার, অর্থাৎ এটি মাস ও সময় নির্ধারণে চাঁদের গতিবিধির উপর নির্ভর করে। খলিফা উমর ইবন আল-খাত্তাবের (রা.) শাসনামলে হিজরি ক্যালেন্ডারটি আনুষ্ঠানিকভাবে গণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। সূত্র: কাইফা ওয়া লিমাজা বাদায়াল তাকবিমুল হিজরি-১১/২০১৮, জামিআতুন ইউয়ুন, সংযুক্ত আরব আমিরাত

প্রশ্ন: গ। আরবি মাসের নামকরণের কারণ এবং কে করেন? 

উত্তর: গ। কোন একক ব্যক্তি নাম করণ করেননি, বরং আরবরা বিভিন্ন প্রেক্ষাপট, মর্ম ও অর্থভেদে নামকরণ করেছেন। নিচে নামকরণ এর কারণ উল্লেখ করা হলো:


معاني أسماء الشهور الهجرية

لأسماء الشهور الهجرية أسباب ومعانٍ وذلك على النحو التالي:


- مُحَرم: يسمى أيضاً بالشهر الحرام، وهو أول شهور السنة الهجرية، وسمي كذلك لأنه من الأشهر التي يحرم فيها القتال.


১। মহরম : এর অর্থ হারামকৃত, মর্যাদাপূর্ণ। হিজরি সনের প্রথম মাস। যেহেতু এ মাসের মর্যাদার কথা বিবেচনা করে যুদ্ধবিগ্রহ হারাম বা নিষিদ্ধ মনে করা হতো, এ জন্য এ মাসকে মহরম বলা হয়। (গিয়াসুল লোগাত : ৪৫৭)।


- صَفَرْ: هو ثاني الشهور الهجرية، وسمي بهذا الاسم نسبة إلى العرب الذين كانوا يتركون بيوتهم صَفْراً أي خالية حين كانوا يخرجون إلى القتال.

২। সফর : হিজরি সনের দ্বিতীয় মাস। অর্থ খালি, শূন্য। মহরম মাসে যুদ্ধ বন্ধ থাকায় আরবরা এ মাসে দলে দলে যুদ্ধে যেত। ফলে তাদের ঘর খালি হয়ে যেত। এ জন্য এ মাসের নামকরণ করা হয় ‘সফর’।


- ربيع الأول وربيع الآخر: جاءت تسمية هذا الشهران في الربيع فلزمهما ذلك الاسم ويقال أيضاً أن الاسم نسبة إلى العرب الذين كانوا يستثمرون كل ما استولوا عليه من أسلاب في صَفَر، حيث يقول العرب (ربيع رابع) أي مُخْصِب.

৩। রবিউল আউয়াল : শাব্দিক অর্থ বসন্তের শুরু। এ মাসের নামকরণ করা হয় বসন্তকালের শুরু লগ্ন হওয়ার কারণে। (রেসালায়ে নুজুম : ২২৯)


৪। রবিউল আখের বা সানি : ‘আখের’ অর্থ শেষ। বসন্তকালের শেষ পর্যায়ে হওয়ায় এ মাসের নামকরণ করা হয় রবিউল আখের। (রেসালায়ে নুজুম : ২২৯)।



- جمادى الأولى وجمادى الآخرة: سمي هذان الشهران بهذا الاسم نظراً لجمود الماء فيهما بسبب ৫। জুমাদাল উলা : আরবি শব্দ ‘জুমুদ’ থেকে এর উৎপত্তি। অর্থ জমে যাওয়া, স্থবির হওয়া। আর ‘উলা’ অর্থ শুরু বা প্রথম। যখন এ মাসের নাম রাখা হয়, তখন ছিল শীতের শুরুলগ্ন। যখন ঠান্ডায় সবকিছু জমে যেত। পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে মিল রেখে এ মাসের নাম রাখা হয় ‘জুমাদাল উলা’।


৬। জুমাদাল উখরা : ‘উখরা’ অর্থ শেষ। শীতকালের শেষ লগ্নে গিয়ে এ মাসের নামকরণ করা হয় বলে এ মাসের নাম রাখা হয়েছে ‘জুমাদাল উখরা’।


- رجب: وهو الترجيب والتعظيم.

৭। রজব : শাব্দিক অর্থ সম্মান করা। আরবরা এ মাসকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা আল্লাহর মাস বলত এবং যথেষ্ট সম্মান করত। এ জন্য এ মাসের নাম রাখা হয়েছে ‘রজব’। (রেসালায়ে নুজুম : ২৩০)।


- شعبان: قيل شعبان لأن العرب كانوا يتشعّبون للقتال بعد امتناعهم عنه في شهر رجب، وقيل لأن العرب كانوا يتشعبون في المناطق بحثاً عن الماء.

৮। শাবান : শাব্দিক অর্থ ছড়িয়ে দেওয়া, বিচ্ছিন্ন হওয়া। যেহেতু এ মাসে অসংখ্য কল্যাণ আর রহমতের বৃষ্টি বর্ষিত হয় এবং হায়াত, মওত, রিজিক এবং তাকদিরের নানা বিষয় ফেরেশতাদের হাতে ন্যস্ত করা হয়, এ জন্য এ মাসের নাম রাখা হয়েছে ‘শাবান’। অথবা আরবরা রজব মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ থাকার পর এ মাসে যুদ্ধ করতে ছড়িয়ে পড়ত। তাই এ মাসের নাম ‘শাবান’ রাখা হয়েছে।


- رمضان: سمي شهر رمضان بهذا الاسم من شدة الرمضاء وهي الحر، وهو شهر الصيام للمسلمين.

৯। রমজান : অর্থ জ্বালিয়ে দেওয়া। যেহেতু এ মাসে বান্দার গুনাহ জ্বলে-পুড়ে পরিষ্কার হয়ে যায়, অথবা গরমকালে এ মাসের নামকরণ করা হয়, এজন্য এ মাসকে ‘রমজান’ বলা হয়। (ইবনে কাসির, খÐ ২, পৃষ্ঠা ২৩৬)।



- شوال: سمي بهذا الاسم نسبة إلى الإبل التي تشول أذيالها في بداية فصل الشتاء.

১০। শাওয়াল : অর্থ তোলা, উঠানো। আরবরা এ মাসে শিকার করার জন্য কাঁধে অস্ত্র উঠাত, এজন্য এর নামকরণ করা হয়েছে ‘শাওয়াল’। (ইবনে কাসির, খÐ ২, পৃষ্ঠা ৩০০)।



- ذو القعدة: سمي ذو القعدة بهذا الاسم لأن العرب تقعد فيه عن القتال باعتباره أحد الأشهر الحرم.

১১। জিলকদ : অর্থ বসে থাকা। আরবরা এ মাসে যুদ্ধ না করে বসে থাকত, এজন্য এর নামকরণ করা হয়েছে ‘জিলকদ’। (ইবনে কাসির, খÐ ২, পৃষ্ঠা ২২৬)


- ذو الحجة: هو آخر الشهور الهجرية، وسمي بهذا الاسم نسبة إلى قيام المسلمين بأداء فريضة الحج فيه.

১২। জিলহজ : হজের মাস বলে এ মাসকে জিলহজ বলা হয়। (ইবনে কাসির, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ২২৬)।


সারকথা হলো,  সুনানে আবু দাউদের-১৯৪৭  এবং মুসলিম শরিফের-১১৩০ নং হাদিস ( যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে)  থেকে জানা যায় হজরত মুসা আঃ এর জামানায় আরবি মাস ছিল, আরবরা নতুন চাঁদ ওঠা থেকে শুরু করে শেষ হওয়া পর্যন্ত একটি মাস গণনা করতেন, তবে সাল হিসেবে গণনা করতো না, ওমর রা এর জামানায় হিজরি সন সাল হিসেবে গণনা শুরু হয়।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক