জিজ্ঞাসা-১২৫৯৩:
আস্ সালামুআলাইকু মুহতারাম। দেশের প্রখ্যাত একজন বক্তা আলোচনায় বলেছেন খাসির গোশত খাওয়া হারাম, বরং পাঠার গোশত খাওয়া জায়েজ। আমার জানার বিষয় হলো খাসির গোশত খাওয়ার ব্যাপারে শরীয়তের বিধান কী? তারিখ: ১৮/০৫/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মোঃ আমিনুল ইসলাম, সাভার থেকে
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, খাসির গোশত খাওয়া হালাল, এ বিষয়ে ওলামাদের কোন মতভেদ নেই। ( তবে চতুষ্পদ জন্তুকে খাসি করা জায়েজ কি না, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।) দলিল:
হাদিস নং -০১
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: ذَبَحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الذَّبْحِ كَبْشَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ مُوجَأَيْنِ،
হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন দু’টি শিংওয়ালা, সাদা কালো রংওয়ালা খাসি করা বকরী জবাই করেন। তাখরিজ:সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৭৯৫
হাদিস নং -০২
إذا أرادَ أن يضحِّيَ، اشتَرى كبشينِ عظيمينِ، سَمينينِ، أقرَنَيْنِ، أملَحينِ موجوءَينِ، فذبحَ أحدَهُما عن أمَّتِهِ، لمن شَهِدَ للَّهِ، بالتَّوحيدِ، وشَهِدَ لَهُ بالبلاغِ، وذبحَ الآخرَ عن محمَّدٍ، وعن آلِ محمَّدٍ صلَّى اللَّهُ علَيهِ وسلَّمَ
الراوي : عائشة وأبو هريرة | المحدث : الألباني | المصدر : صحيح ابن ماج
الصفحة أو الرقم: 2548 | خلاصة حكم المحدث : صحي
الأضاحيُّ من شَعائِرِ الإسْلامِ، ومِن أعظَمِ: هو المُتغيِّرُ الشَّعرُ بسَوادٍ وبَياضٍ. "مَوجوءَينِ" قد نُزِعُ منهما الخِصْيتانِ وعِرقُ الخُصوبةِ منهما حتى يكونَ ويُفعَلَ ذلك بالغَنَمِ؛ لِقطْعِ نَزْوِها، فتَسمَنَ ويَكثُرَ لَحْمُها " المواقع العلمي
নিম্নে খাসি করার ব্যাপারে ফোকাহায়ে উম্মতের মতামত উল্লেখ করা হলো:
وللفقهاء خلاف في هذه المسألة حاصله ما جاء في "الموسوعة الفقهية" (19/112) : " قرر الحنفية أنه لا بأس بخصاء البهائم ؛ لأن فيه منفعة للبهيمة والناس .
وعند المالكية : يجوز خصاء المأكول من غير كراهة ؛ لما فيه من صلاح اللحم .
والشافعية فرقوا بين المأكول وغيره ، فقالوا : يجوز خصاء ما يؤكل لحمه في الصغر ، ويحرم في غيره . وشرطوا أن لا يحصل في الخصاء هلاك .
أما الحنابلة فيباح عندهم خصي الغنم لما فيه من إصلاح لحمها ، وقيل : يكره كالخيل وغيرها" انتهى .
এ বিষয়ে ফুকাহাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে, যেমনটি আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়্যাহ (19/112) এ বর্ণিত হয়েছে: হানাফীগণ বলেছেন যে, পশুকে খাসি করতে দোষ নেই, কারণ এটি উভয় প্রাণীর জন্যই উপকারী। এবং মালেকিদের মতে, যা খাওয়া হয় তা মাকরূহ না হয়ে বর্জন করা জায়েয, কেননা এটি গোশতকে স্বাস্থ্যকর করে।
শাফাঈগণ
তা ব্যতীত যা খাওয়া হয় তার মধ্যে পার্থক্য করেছেন এবং তারা বলেছেন: এটা জায়েজ। যার মাংস অল্প বয়সে খাওয়া হয় তাকে করা, এবং অন্য সময়ে তা হারাম, এবং তারা শর্ত দিয়েছিল যে
মৃত্যু ঘটায় না।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ এর মতে, ছাগলের খাসি করা জায়েজ যদি গোশতের সুস্বাদু করার জন্য। আর কেউ কেউ বলেন এটা মাকরুহ । যেমন ঘোড়ার এবং অন্যান্য প্রাণীর।
وقد كره مالك وغيره خصاء الخيل ، وقال : لا بأس بإخصائها إذا أكلت . "المنتقى" للباجي (7/268).
ইমাম মালেক রহ. বলেন, ঘড়া ও অন্যান্য প্রাণীর খাসি করা মাকরূহ, তবে গোস্ত খাওয়ার জন্য। সূত্র: আলমুনতাকি, লিলবাজি-২/২৬৮
وقال الشيخ ابن عثيمين رحمه : " وأما الخصاء فهو جائز إذا كان فيه مصلحة، ولكن يجب أن تتخذ الإجراءات اللازمة لمنع تألم البهيمة " انتهى من "لقاء الباب المفتوح" (37/15).
শাইখ ইবনে উসাইমিন রহ. বলেছেন: কাস্টেশনের জন্য, যদি এতে আগ্রহ থাকে তবে এটি জায়েয, তবে প্রাণীটিকে কষ্ট না দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সূত্র: আল-মাফতুহ (৩৭/১৫)
সারকথা হলো, খাসির গোস্ত খাওয়া হালাল, এতে কোন সন্দেহ নেই। ১৪০০ বছর পর্যন্ত কোন আলেম-ফকিহ হারাম ফতোয়া দেয়নি। সুতরাং উক্ত বক্তার ফতোয়াটি ইজমা বিরোধী। তার নিম্নের আয়াতদ্বয়ের খেয়াল/ভয় করা উচিত:
আয়াত নং -০১
Surah At-Tahrim, Verse 1:
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكَ تَبْتَغِي مَرْضَاتَ أَزْوَاجِكَ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।
সূরা তাহরিম -০১
আয়াত নং -০২
قُلْ أَرَأَيْتُمْ مَّا أَنْزَلَ اللهُ لَكُم مِّن رِّزْقٍ فَجَعَلْتُمْ مِّنْهُ حَرَاماً وَحَلاَلاً قُلْ اللهُ أَذِنَ لَكُمْ أَمْ عَلَى اللهِ تَفْتَرُونَ-
‘আপনি বলুন, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে যে রূযী দান করেছেন, তন্মধ্যে তোমরা যে সেগুলির কতক হারাম ও কতক হালাল করে নিয়েছ, তা কি তোমরা ভেবে দেখেছ? আপনি বলুন, আল্লাহ কি তোমাদেরকে এতদ্বিষয়ে অনুমতি দিয়েছেন, নাকি তোমরা আল্লাহর নামে মনগড়া কথা বলছ’ । ইউনুস- ৫৯
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক
1 comments:
শুকরান জাযিলা,বারাকাল্লাহু ফীইলমিকা ওয়া হায়াতিকা