আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৪৬৭: চাকরি বা অর্থের বিনিময়ে কোন মেয়েকে বিবাহ করা জায়েজ হবে কি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা -১২৪৬৭:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। বিজ্ঞজনের নিকট জানার বিষয় হলো,  মেয়ের বাবা যদি কোন ছেলেকে টাকাপয়সা দিয়ে  চাকরির ব্যবস্থা করে মেয়েকে বিবাহ দেয় আর ছেলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তাহলে এই চাকরিটা তার জন্য বৈধ হবে কিনা??  

 তারিখ: ১৪/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

 মাওলানা মো: শফিউল ইসলাম সিরাজগঞ্জ থেকে।



  জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 
 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,  আপনার প্রশ্নের আলোকে দুটি ছুরত/পদ্ধতি হতে পারে, এবং হুকুমও ভিন্ন ভিন্ন।


প্রথম ছুরত/পদ্ধতি: 

বিবাহের পূর্বে ছেলেপক্ষ যদি মেয়ে পক্ষ থেকে আর্থিক যে কোন ধরনের অনুদান দাবি করে, কৌশল অবলম্বন করে, চাপ সৃষ্টি করে, তাহলে এটা যৌতুক হিসেবে গণ্য হবে যা ইসলাম এবং বাংলাদেশে আইনে নিষিদ্ধ। দলিল:


یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟

অর্থাৎ হে মুমিনগণ! তোমরা পরস্পরে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, তবে পারস্পরিক সন্তুষ্টিক্রমে কোন ব্যবসায় করা হলে (তা জায়েয)।  সূরা নিসা-২৯


দ্বিতীয় ছুরত/পদ্ধতি:

বিয়ের আগেই বিশেষ কোনো কারণে যদি কন্যা পক্ষ বা অভিভাবক স্বেচ্ছায় বিবাহে আগ্রহী ব্যক্তিকে অর্থ কড়ি বা উপহার-সাগ্রহী দেওয়ার প্রস্তাব দেয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তির জন্য তা গ্রহণ করা জায়েজ হবে।

উদাহরণ: মেয়ের শারীরিক গঠনে ত্রুটি বা অসুন্দর, কুৎসিত ইত্যাদি কারণে মেয়ে যদি বিয়ে না হয়। বাড়িতে অবিবাহিত থাকার কারণে নানান ফিতনা-ফ্যাসাদ জড়িয়ে পড়ে আশঙ্কা হয় । এই পরিস্থিতিতে মেয়ের পিতা বা অভিভাবক যদি অগ্রিম ঘোষণা করে, যে ব্যক্তি আমার মেয়ে বা কন্যাকে বিবাহ করবে তাকে এত এত টাকা,  এত এত উপহার-উপঢৌকন দেয়া হবে।  এখন কোন ব্যক্তি যদি এই সুযোগ গ্রহণ করে অক্ত মেয়েকে বিবাহ করে তাহলে এটা নাজায়েজ হবে না।

দলিল: 

হাদিস নং-০১

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ , أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسِهِ»

হজরত আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের সম্পদকে তার সন্তুষ্টি ছাড়া গ্রহণ করা হালাল নয়। তাখরিজ: সুনানে দারা কুতনি-২৮৮৫

ব্যাখ্যা:  হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়, খুশি মনে, সম্মতিতে যা প্রদান করা হয় তা বৈধ।


উসূলে ফিকহির একটি কায়দা আছে,

الضرورات تبيح المحظورات

অর্থ: জরুরি/প্রয়োজন নিষিদ্ধ বিষয়কে বৈধ করে দেয়। সূত্র: কিতাবুল কাওয়ায়িদুল ফিকহি ওয়া তাতবিকাতিহা ফিল মাজাহিবিল আরবাআ -২৭৯ পৃষ্ঠা 


সারকথা হলো, মেয়ের বাবা যদি কোন ছেলেকে টাকা পয়সা দিয়ে  চাকরির ব্যবস্থা করে মেয়েকে বিবাহ দেয় আর ছেলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তাহলে এই চাকরিটা তার জন্য বৈধ হবে।

তবে চাকরিটা যেন বৈধ পন্থায় হয়। এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।


و الله اعلم بالصواب

পিডিএফ ডাউনলোড-৮৮: মডেল বেসিক ইংলিশ গ্রামার

No Comments

 



কিতাবটি পাঠ বা ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন


জরুরি পরামর্শ: প্রথমে ক্লিকে ডাউনলোড হবে না, এডমিনের কাছে একটি রিকুয়েস্ট আসবে সেটা ওকে করার পর আপনার কাছে একটি মেসেজ যাবে তারপর ওপেন অপশনে ক্লিক করলে পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। সুতরাং একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

জিজ্ঞাসা-১৩২৩৫: হুন্ডি ব্যবসা কি ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ কিনা?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩২৩৫: 

আসসালামু আলাইকুম। হুন্ডি ব্যবসা  কি ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ কিনা????

তারিখ:৩০/০৪/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 নুর মোহাম্মদ রাংগামাটি   থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, হুন্ডি ব্যবসা মূলত জায়েজ। তবে দুটি কারণে জায়েজ নেই।

(১) একই মজলিসেই কমপক্ষে একপক্ষ কারেন্সি হস্তগত করে নিতে হবে। যদি একজনও তাদের বিনিময়কৃত কারেন্সি হস্তগত না করে তাহলে ক্রয় বিক্রয়টি জায়েয হবে না। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

فَإِذَا اخْتَلَفَتْ هَذِهِ الأَصْنَافُ فَبِيعُوا كَيْفَ شِئْتُمْ إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ

…এ দ্রব্যগুলো যদি একটি অপরটির ব্যতিক্রম হয় (অর্থাৎ- পণ্য এক জাতীয় না হয়) তোমরা যেরূপ ইচ্ছা বিক্রি করতে পার যদি হাতে হাতে (নগদে) হয়। (মুসলিম ১৫৮৭)

(২) সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। আর শরয়িত বিরোধী না হলে রাষ্ট্রের আইন মানা ওয়াজিব। দলিল-

Surah An-Nisa, Verse 59:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক/আমির তাদের। সূরা নিসা-৫৯


لان طاعة الإمام فيما ليس بمعصية فرض، (الدر المختار مع الشامى-6/41

অর্থাৎ আমিরের/রাষ্ট্র প্রধানের আনুগত্য ফরজ, তবে আল্লাহর নাফরমানিতে নয়। সূত্র: ফতোয়া শামি-৬/৪১


সারকথা হলো,  হুন্ডি ব্যবসা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হারাম।



  والله اعلم بالصواب

পিডিএফ ডাউনলোড-৮৭: ইসলামে নারীর অধিকার ও মর্যাদা

No Comments

 


কিতাবটি পাঠ বা ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন


জরুরি পরামর্শ: প্রথমে ক্লিকে ডাউনলোড হবে না, এডমিনের কাছে একটি রিকুয়েস্ট আসবে সেটা ওকে করার পর আপনার কাছে একটি মেসেজ যাবে তারপর ওপেন অপশনে ক্লিক করলে পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। সুতরাং একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

জিজ্ঞাসা-১৩২৩৪: জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় একই মসজিদে দুটি জুমাআর জামাআত আদায় করা যাবে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩২৩৪: 

আসসালামু আলাইকুম।  হযরত কোন এলাকায় জনবল বেশি থাকায় মসজিদে জায়গা না থাকায়, ঐ মসজিদে জুমুয়ার দ্বিতীয় জামায়াত করা যাবে কি না। আচ্ছালামু আলাইকুম।

তারিখ:২৯/০৪/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  সাইফুল ইসলাম ভোলা থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, সাধারণ অবস্থায় একই মসজিদে দুটি জামাআত আদায় করা জমহুরের নিকট মাকরুহ। তবে আপনার বর্ণিত ছুরতে দ্বিতীয় জামাআত আদায় করা যাবে। দলিল -


يجوز شرعًا تَكْرَارُ صلاة الجمعة والعيدين في مسجدٍ واحدٍ في أوقات هذه الصلوات بمصلِّينَ مختلفينَ وإمامٍ مختلف؛ ليصلِّيَها مَن لم يُصَلِّها مِن المسلمين؛ وذلك نظرًا للحاجة المتمثلة في عدم استيعاب المسجد وبُعْدِ المصلين عنه، بشرط أن يكون التعدد بقدر الحاجة ولا يتجاوزها.

শরিয়তসম্মতভাবে একই মসজিদে ভিন্ন ভিন্ন 

জামাতে ও ভিন্ন ভিন্ন ইমামের নেতৃত্বে, পৃথক সময়ে, একাধিকবার জুমার ও ঈদের নামাজ আদায় করা বৈধ — যেন যারা আগে নামাজ আদায় করতে পারেনি, তারা নামাজ আদায় করতে পারে। তবে এটি তখনই বৈধ হবে যখন প্রয়োজনের কারণে তা করা হবে, যেমন মসজিদে সব মুসল্লিকে স্থান দেওয়া সম্ভব না হওয়া বা মুসল্লিদের দূরত্বের সমস্যা। তবে খেয়াল রাখতে হবে, প্রয়োজনের সীমা অতিক্রম করা যাবে না। সূত্র: দারুল ইফতা মিসর, ফতোয়া নং-৬২৭০


সারকথা হলো,  জনবল বেশি থাকায় মসজিদে জায়গা না থাকায়, ঐ মসজিদে জুমুয়ার দ্বিতীয় জামায়াত করা যাবে। তবে এটা যেন অভ্যাসে পরিণত না হয় , মসজিদের জায়গায় বাড়ানোর ফিকির করতে হবে।



  والله اعلم بالصواب

পিডিএফ ডাউনলোড-৮৬: আল্লাহর মহব্বত লাভের পরীক্ষিত পাঁচটি কিতাব -শাহ হাকীম মুহাম্মাদ আখতার রহ .

No Comments

 











কিতাবটি পাঠ বা ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন


জরুরি পরামর্শ: প্রথমে ক্লিকে ডাউনলোড হবে না, এডমিনের কাছে একটি রিকুয়েস্ট আসবে সেটা ওকে করার পর আপনার কাছে একটি মেসেজ যাবে তারপর ওপেন অপশনে ক্লিক করলে পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। সুতরাং একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

গবেষণামূলক প্রবন্ধ-১১: ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র সর্বত্র মানব সেবার পদ্ধতি

No Comments

 



ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র সর্বত্র মানব সেবার পদ্ধতি 

********************************************************

১। পারিবারিক অবস্থানে থেকে

ক। পরিবারের সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিমিত ব্যয় করে সবাইকে সুস্থ রাখার মাধ্যমে।

খ। পরিবারের সবাই কে সুশিক্ষা দিয়ে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর মাধ্যমে।

গ। পরিবারের বয়স্কদের সম্মান ও সেবা করে এবং ছোটদের আদর স্নেহ যত্ন দিয়ে সুন্দর ভাবে জীবন যাপনের সুযোগ দিয়ে।

ঘ। পরিবারের খাদেম খাদেমাদের প্রতি মানবিক আচরণের মাধ্যমে।


২। প্রতিবেশী হিসেবে 

ক। প্রতিবেশীর মান সম্মান ও সম্পদের হেফাজত করার মাধ্যমে।

খ। তাদের কে কথা ও কটু ব্যবহার থেকে মুক্ত রেখে মার্জিত আচরন দিয়ে শান্তিতে বসবাসের সুযোগ দানের মাধ্যমে।

গ। অসুস্থ ও অভাব গ্ৰস্থ প্রতিবেশীর প্রতি সেবা ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে।


৩। পথচারী হিসেবে 

ক। চলার পথে সবাই কে সালাম আদান প্রদানের মাধ্যমে।

খ। রিক্সা ভ্যান গাড়ি ওয়ালাদের সাথে সৌজন্য মূলক আচরণ করার মাধ্যমে।

গ। ট্রেনে বাসে বয়স্ক ও অসুস্থ যাত্রীদের কে প্রয়োজনে নিজ

আসন ছেড়ে দিয়ে বসার ব্যবস্থা করে দেয়ার মাধ্যমে।


৪। আত্মীয় হিসেবে 

ক। নিয়মিত ভাবে আত্মীয় স্বজনের খোঁজ খবর নেয়ার মাধ্যমে।

খ। অসহায় অভাবী আত্মীয় স্বজনের দূঃখ মোচনে সাধ্যমত 

সাহায্য সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়ার মাধ্যমে।

গ। আনন্দে উৎসবে দাওয়াত দিয়ে শরীক করার মাধ্যমে।


৫। ব্যবসায়ী হিসেবে 

ক। ভোক্তাকে ভেজাল মুক্ত পন্য সঠিক মূল্যে সরবরাহ করে সুস্থ ভাবে জীবন যাপনের সুযোগ দিয়ে।


৬। ডাক্তার হিসেবে 

ক। রুগী কে সঠিক চিকিৎসা দিয়ে এবং অহেতুক টেস্ট না দিয়ে বিড়ম্বনা মুক্ত রাখার মাধ্যমে।

৭। শিক্ষক হিসেবে 

ক। ছাত্র ছাত্রীদেরকে পাঠ্যপুস্তকের পাঠ দানের পাশাপাশি তাদেরকে নৈতিক চরিত্র গঠনে অনুপ্রাণিত করে ভালো মানুষ ভালো নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে।

৮। আইন �


লেখক, মাওলানা মোঃ আলিফ হোসাইন হাফি 

জিজ্ঞাসা-১২৪৬৬: রাসূলুল্লাহ মিরাজে যাওয়ার সময় নবী (আ) গণকে নিয়ে যে দূ রাকাত সালাত আদায় করছিলেন তার কেবলা কোন দিকে ছিল।

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৪৬৬:

আসসালামু আলাইকুম। একটা প্রশ্নের জবাব দরকার। ইনশাআল্লাহ পাবো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি মিরাজে যাওয়ার  সময় নবী (আ) গণকে নিয়ে যে দূ রাকাত সালাত আদায় করছিলেন তার কেবলা কোন দিকে ছিল।  তারিখ:  ১৪/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা মোহাঃ শামছুল হুদা আনছারী চট্টগ্রাম থেকে।


  জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো,  

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মিরাজের রজনীতে উত্তর -দক্ষিণ,পূর্ব- পশ্চিম কোন দিকে নামাজ পড়েছেন এরকম কোন নস নেই। আর স্বয়ং কাবা/বায়তুল মুকাদ্দাস এর ভেতরে নামাজ আদায় করলে কোন দিক ফিরে নামাজ আদায় করা জরুরি নয়। বিস্তারিত সামনে আসছে।

হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক কাবা ঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর, তদীয় পুত্র হজরত ইসহাক (আ.)–এর সন্তান হজরত ইয়াকুব (আ.) ফিলিস্তিনের জেরুজালেম নামক স্থানে আল আকসা মসজিদটি নির্মাণ করেন।


عن أبي ذَرٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْه، قال: ((قلتُ: يا رسولَ الله، أيُّ مسجدٍ وُضِعَ في الأرض أوَّلُ؟ قال: المسجدُ الحرامُ، قال: قلتُ: ثم أيُّ؟ قال: المسجدُ الأقصى، قلتُ: كم كان بينهما؟ قال: أَرْبَعُونَ سَنةً، ثم أينما أدركتْك الصَّلاةُ بعدُ فَصلِّهْ؛ فإنَّ الفضلَ فيه ))

অর্থাৎ কাবার ৪০ বছর পর বায়তুল মুকাদ্দাসকে তৈরি করা হয়েছে। তাখরিজ: বুখারি-৩৩৬৬; মুসলিম-৫২০

 অতঃপর তদীয় পুত্র হজরত ইউসুফ (আ.)–এর বংশধর হজরত দাউদ (আ.)–এর সন্তান হজরত সুলাইমান (আ.) তা পুনর্নির্মাণ করেন।


দ্বিতীয় কথা হলো, অনেক নবির কাবা হলো বায়তুল মুকাদ্দাস এবং হিজরতের পর ১৬ মাস বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন।


তৃতীয় কথা হলো, 

القِبلة في اللغة هي الجهة، أمّا في الاصطلاح فهي الوجهة التي يستقبلها المسلمون في صلاتهم، وهي الكعبة المشرّفة،[١] 

অর্থাৎ কেবলা শব্দের অর্থ হল দিক। পরিভাষা বলা হয়, মুসলমানগণ তাদের নামাজের সময় যে দিক করে সালাত আদায় করেন। সূত্র: আলমাআনি


চতুর্থ কথা হলো

বায়তুল হারাম বা বায়তুল মুকাদ্দাস এর এর বাইরে সালাত আদায় করলে, কিবলাকে সামনে রাখতে হবে।


তবে কেউ যদি কাবা বা বায়তুল মোকাদ্দাস এর ভেতরে নামাজ আদায় করে, তাহলে তার জন্য কোন দিক শর্ত নাই, যেদিকে ইচ্ছা সেদিক করে আদায় করতে পারবে।

দলিল:

হাদিস নং-০১

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْكَعْبَةَ وَأُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ وَبِلاَلٌ وَعُثْمَانُ بْنُ طَلْحَةَ الْحَجَبِيُّ فَأَغْلَقَهَا عَلَيْهِ وَمَكَثَ فِيهَا، فَسَأَلْتُ بِلاَلاً حِينَ خَرَجَ مَا صَنَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ جَعَلَ عَمُودًا عَنْ يَسَارِهِ، وَعَمُودًا عَنْ يَمِينِهِ، وَثَلاَثَةَ أَعْمِدَةٍ وَرَاءَهُ، وَكَانَ الْبَيْتُ يَوْمَئِذٍ عَلَى سِتَّةِ أَعْمِدَةٍ، ثُمَّ صَلَّى. وَقَالَ لَنَا إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي مَالِكٌ وَقَالَ عَمُودَيْنِ عَنْ يَمِينِهِ.

 আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আর উসামা ইবনে যায়েদ, বিলাল এবং উসমান ইবনে তালহা হাজাবী (রাযিঃ) কাবায় প্রবেশ করলেন। নবী (ﷺ) এর প্রবেশের সাথে সাথে উসমান (রাযিঃ) কাবার দরজা বন্ধ করে দিলেন। তাঁরা কিছুক্ষণ ভিতরে ছিলেন। বিলাল (রাযিঃ) বের হলে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ নবী (ﷺ) কি করলেন? তিনি জওয়াব দিলেনঃ একটা স্তম্ভ বামদিকে, আর স্তম্ভ ডানদিকে আর তিনটা স্তম্ভ পেছনে রাখলেন। আর তখন বায়তুল্লাহ ছিল ছয় স্তম্ভ বিশিষ্ট। তারপর তিনি নামায আদায় করলেন। তাখরিজ: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৮১ (আন্তর্জাতিক নং ৫০৫)


উপরোক্ত হাদিসের আলোকে ইমাম নববি রহ. বলেন,

وقال النووي : ... وإذا صلى في الكعبة فله أن يستقبل أي جدار شاء، وله أن يستقبل الباب إن كان مردوداً أو مفتوحاً، وله عتبة قدر ثلثي ذراع تقريباً.

অর্থাৎ যদি সে কাবাতে নামাজ পড়ে, তবে সে তার ইচ্ছামত যে কোন দেয়ালের মুখোমুখি হতে পারে, এবং দরজাটি ফিরিয়ে বা খোলা থাকলে সে তার মুখোমুখি হতে পারে এবং তার প্রায় একটি প্রান্তিক এক হাতের দুই-তৃতীয়াংশ। সূত্র: কিবলাতুল মসল্লি দাখিলুল কাবা, ফতোয়া নং -২৯২৭১ 


পঞ্চম কথা হলো, বাইতুল মুকাদ্দাস যেহেতু নিজেই কাবা তাই তার ভেতরে কেউ আমার আদায় করলে, কোন দিকে বা বায়তুল হারামের দিকে ফিরে সালাত আদায় করা জরুরি নয়। যেদিকে ইচ্ছা সেদিক করে আদায় করতে পারবে। যেমন, 

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ( أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: « أُتِيتُ بِالْبُرَاقِ وَهُوَ دَابَّةٌ أَبْيَضُ طَوِيلٌ فَوْقَ الْحِمَارِ وَدُونَ الْبَغْلِ يَضَعُ حَافِرَهُ عِنْدَ مُنْتَهَى طَرْفِهِ، قَالَ: فَرَكِبْتُهُ حَتَّى أَتَيْتُ بَيْتَ الْمَقْدِسِ قَالَ فَرَبَطْتُهُ بِالْحَلْقَةِ الَّتِي يَرْبِطُ بِها الْأَنْبِيَاءُ، قَالَ: ثُمَّ دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ فَصَلَّيْتُ فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ

আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমার নিকট বোরাক নিয়ে আসা হল, বোরাক হচ্ছে চতুষ্পদ জন্তু সাদা, লম্বা, গাধার চেয়ে বড় ও খচ্চর থেকে ছোট, তার দৃষ্টির শেষ প্রান্তে সে তার পা রাখে, তিনি বলেন: আমি তাতে সওয়ার হলাম, অবশেষে আমাকে বায়তুল মাকদিস নিয়ে আসা হল, তিনি বলেন: আমি তাকে সে খুঁটির সাথে বাঁধলাম যার সাথে নবীগণ বাঁধেন। তিনি বলেন: অতঃপর আমি মসজিদে প্রবেশ করি, তাতে দু’রাকাত সালাত আদায় করি, অতঃপর বের হই। তাখরিজ: মুসলিম -৯৯


উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়তুল মুকাদ্দাসের ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। সুতরাং তার জন্য জরুরী ছিল না কাবার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা।

 

والله اعلم بالصواب


জিজ্ঞাসা -১২৪৬৫: ফরজ গোসলের সময় মহিলাদের চুলের বেনী/খোঁপা খোলা কি জরুরী?

No Comments

 


জিজ্ঞাসা -১২৪৬৫:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। বিজ্ঞজনদের নিকট জানার বিষয় হলো, ফরজ গোসলের সময় মহিলাদের মাথার চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ধৌত করা ফরজ নাকি শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌছালেই হয়ে যাবে?? জানালে উপকৃত হতাম। 


তারিখ: ১২/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       


মোঃ শফিউল ইসলাম সিরাজগঞ্জ থেকে


জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 



তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, 

ফরজ গোসলের সময় মহিলাদের চুলের খোপা বা বেনী খোলা জরুরি নয়। চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছালেই যথেষ্ট। দলিল:

হাদিস নং-০১

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، كُلُّهُمْ عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَافِعٍ، مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي امْرَأَةٌ أَشُدُّ ضَفْرَ رَأْسِي فَأَنْقُضُهُ لِغُسْلِ الْجَنَابَةِ قَالَ " لاَ إِنَّمَا يَكْفِيكِ أَنْ تَحْثِي عَلَى رَأْسِكِ ثَلاَثَ حَثَيَاتٍ ثُمَّ تُفِيضِينَ عَلَيْكِ الْمَاءَ فَتَطْهُرِينَ " .

আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা, আমর আন-নাকিদ, ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ও ইবনে আবু উমর (রাহঃ) ... উম্মে সালামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মাথার বেণী খুব শক্ত করে বেধে থাকি। আমি কি জানাবাতের গোসলের জন্য তা খুলে ফেলব? তিনি বললেন, না, তোমার মাথায় কেবল তিন আজলা পানি ঢেলে দিলেই চলবে। এরপর তোমার সর্বাঙ্গে পানি ঢেলে দিবে। এভাবেই তুমি পবিত্রতা অর্জন করবে। তাখরিজ: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৩৭ (আন্তর্জাতিক নং ৩৩০-১)



হাদিস নং-০২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَوْفٍ، قَالَ قَرَأْتُ فِي أَصْلِ إِسْمَاعِيلَ بْنِ عَيَّاشٍ - قَالَ ابْنُ عَوْفٍ - وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أَبِيهِ، حَدَّثَنِي ضَمْضَمُ بْنُ زُرْعَةَ، عَنْ شُرَيْحِ بْنِ عُبَيْدٍ، قَالَ أَفْتَانِي جُبَيْرُ بْنُ نُفَيْرٍ عَنِ الْغُسْلِ، مِنَ الْجَنَابَةِ أَنَّ ثَوْبَانَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّهُمُ، اسْتَفْتَوُا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ " أَمَّا الرَّجُلُ فَلْيَنْشُرْ رَأْسَهُ فَلْيَغْسِلْهُ حَتَّى يَبْلُغَ أُصُولَ الشَّعْرِ وَأَمَّا الْمَرْأَةُ فَلاَ عَلَيْهَا أَنْ لاَ تَنْقُضَهُ لِتَغْرِفْ عَلَى رَأْسِهَا ثَلاَثَ غَرَفَاتٍ بِكَفَّيْهَا " .


মুহাম্মাদ ইবনে আওফ .... শুরায়হ ইবনে উবাইেদ (রাহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যুবায়ের ইবনে নুফায়ের (রাহঃ) আমার নিকট অপবিত্রতার গোসল সম্পর্কে বলেছেন যে, ছাওবান (রাযিঃ) তাদের নিকট বর্ণনা করেছেন, একদা তাঁরা এ সম্পর্কে নবী (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেনঃ পুরুষ লোক অপবিত্রতার গোসলের সময় এমনভাবে চুল ছেড়ে দিয়ে গোসল করবে- যেন তার প্রতিটি চুলের গোড়ায় পানি পৌছে। অপরপক্ষে মহিলাদের জন্য গোসলের সময় চুল ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। তারা অপবিত্রতার গোসলের সময় উভয় হাতে তিনবার তিন কোষ পানি মাথার উপর ঢালবে। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৫৫ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৫)

হাদীসদ্বয়ের ব্যখ্যা:
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, ফরয গোসল করার সময় যদি কোন মহিলার চুল শক্ত করে বাঁধা থাকে তাহলে চুল খোলা এবং পূর্ণ চুল ধুয়া জরুরী নয়। বরং চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে গেলে গোসল শুদ্ধ হয়ে যাবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। আলমগিরী: ১/১৩

সুপ্রসিদ্ধ ফিকহ-গ্রন্থ “আল-বাহরুর রায়িকৎ”-এ রয়েছে—

فى البحر الرائق: (وكفى بل اصل ضفيرتها) اى شعر المراة المضفور للحرج اما المنقوض فيفرض غسل كله اتفاقا.

খোঁপা বা বেণি খুলে চুল ভেজানো কষ্টকর হওয়াতে মহিলাদের চুলে খোঁপা থাকাবস্থায় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। অবশ্য চুলে খোঁপা না থাকলে পুরো চুল ধোয়া সর্বসম্মতিক্রমে ফরয। (আল-বাহরুর রায়িক : ১/৫৪)



সারকথা হলো, মহিলাদের মাথার চুল যদি খোঁপা করে বাঁধা থাকে তাহলে ফরয গোসলের সময় খোঁপা খুলে সমস্ত চুল পানি দিয়ে ভেজানো জরুরি নয়। বরং এক্ষেত্রে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে দেওয়াই যথেষ্ট। অর্থাৎ মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে চুলে মর্দন করে দেবে যাতে পানি গোড়ায় পৌঁছে যায়। আর যদি গোসলের সময় চুলে খোঁপা না থাকে বরং চুল খোলা অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া থাকে তাহলে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোর সাথে সাথে মাথার পুরো চুলও ধৌত করা জরুরি। যদি চুলের কোনো অংশ এক্ষেত্রে শুকনো থেকে যায় তাহলে গোসল সঠিক হয়েছে বলে গণ্য হবে না।
 

والله اعلم بالصواب

জিজ্ঞাসা-১৩২৩৩: হাদীসের আলোকে সালাতু আওয়াবীন।

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩২৩৩: 

আসসালামু আলাইকুম। হাদীসের আলোকে সালাতু আওয়াবীনের বর্ণনা চাই ‌।

তারিখ:২৬/০৪/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা আবু সুমাইয়া শাহ্ জাহান শেখ থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, আপনার প্রশ্নের বর্ণনা মোতাবেক হাদিসটি নিম্নরূপ:



হাদিস নং-০১ 

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، وَأَبُو عُمَرَ حَفْصُ بْنُ عُمَرَ قَالاَ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ أَبِي خَثْعَمٍ الْيَمَامِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ مَنْ صَلَّى سِتَّ رَكَعَاتٍ بَعْدَ الْمَغْرِبِ لَمْ يَتَكَلَّمْ بَيْنَهُنَّ بِسُوءٍ عُدِلَتْ لَهُ عِبَادَةَ اثْنَتَىْ عَشْرَةَ سَنَةً ‏"‏ ‏.‏

১৩৭৪। 'আলী ইবন মুহাম্মাদ ও আবু 'উমর হাফস ইবন উমর (রাহঃ)...... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাক'আত সালাত আদায় করে এবং এর মাঝে কোন খারাপ কথা না বলে তাকে বারো বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব দেওয়া হয়।

It was narrated that Abu Hurairah said:

“The Messenger of Allah (ﷺ) said: ’Whoever prays six Rak’ah after the Maghrib and does not speak evil between them, they will be made equivalent to twelve years’ worship.’”

—সুনানে ইবনে মাজা', হাদীস নং ১৩৭৪ (আন্তর্জাতিক নং ১৩৭৪)


হাদিস নং-০২ 

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: إِنَّ الْمَلائِكَةَ لَتَحُفُّ بِالَّذِينَ يُصَلُّونَ بَيْنَ الْمَغْرِبِ إِلَى الْعِشَاءِ، وَهِيَ صَلاةُ الأَوَّابِينَ

‘ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নিশ্চয়ই ফেরেশতারা ওই সকল নামাজিদের বেষ্টন করে নেয় যারা মাগরিব ও এশার মাঝখানে নামাজ পড়ে থাকে। সেটি হল আওয়াবীনের নামাজ।’ (শরহুস সুন্নাহ, বাগাবী, হাদিস, ৮

৯৭)



  والله اعلم بالصواب

জিজ্ঞাসা-১২৪৬৪: আসর নামাজে উচ্চস্বরে কিরাত পাঠ করলে নামাজ হবে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা -১২৪৬৪:

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

মুহতারাম,  আজ ইমাম সাহেব আসর নামাজে সূরা ফাতিহা প্রথম আয়াত উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করেছেন। তারপর আস্তে পড়েছেন। এখন সাহু সিজদা কি আবশ্যক হবে? জানালে উপকৃত হতাম। জাযাকাল্লাহু খয়রান।

তারিখ: ০৯/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       



জনৈক মাওলানা সিলেট   থেকে


জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, এটি একটি ইজতিহাদি মাসয়ালা।

ফিকহি হানাফির মতে, সিররি (নিম্নস্বরে  কেরাত বিশিষ্ট) নামাজে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ কেরাত যদি এতটা উচ্চ আওয়াজে পড়েন যে পিছনের লোকজন শুনতে পায়, তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।  সূত্র:রদ্দুল মুহতার ১/৫৩৫; শরহুল মুনয়াহ ৪৫৫-৪৫৬; আসসিআয়াহ ২/২৬৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ ১২৩

নোট: ، ولا يخفى ما فيه. قوله: (تعدل ثلاثا قصارا) أي مثل - * (ثم نظر) * - الخ وهي ثلاثون حرفا، فلو قرأ آية طويلة قدر ثلاثين حرفا أ

অর্থাৎ তিন আয়াত সমান ৩০ অক্ষর । সূত্র: হাশিয়ায়ে রদ্দুল মুহতার, ফাতওয়ায়ে শামি- ১ম খণ্ড, ৪৭৪ পৃ.


সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত ৩০ হরফ বা অক্ষর বিশিষ্ট নয়। সুতরাং সাহু সিজদা ওয়াজিব নয়। নামাজ সহিহ হয়েছে।

 

والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক

জিজ্ঞাসা-১৩২৩২: নামাজ পড়ার সময় চোখ বন্ধ করে রাখলে কি নামাজ হবে?

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১৩২৩২:  

আসসালামু আলাইকুম।  নামাজ পড়ার সময় চোখ বন্ধ করে রাখলে কি নামাজ হবে? আমি চোখ বন্ধ করে রাখলে নামাজে গভীরতা ও মনোযোগ আসে।

তারিখ:২৫/০৪/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 উম্মে মারিয়াম ঢাকা থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, সাধারণ অবস্থায় নামাজে চোখ বন্ধ রাখা খেলাফে সুন্নাত, মাকরুহ। দলিল- 

رواه الطبراني في الكبير والأوسط، وابن عدي عن ابن عباس -رضي الله عنهما- قال: قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم-: إذا قام أحدكم في الصلاة فلا يغمض عينيه.

অর্থ: হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন নামাজে দাঁড়াবে, তখন চোখ যেন বন্ধ না রাখে। তাখরিজ: তাবারানি-২২১৮


দ্বিতীয় কথা হলো, নামাজে ধ্যান-খেয়াল, খুশু-খুজুর জন্য মাঝে মাঝে বা অধিকাংশ সময় চোখ বন্ধ রাখা জায়েয। দলিল- 

‌   ‌وقال الإمام العز بن عبد السلام في فتاويه بالجواز عند الحاجة إن كان ذلك أخشع للمصلي في صلاته ، ونص ابن القيم في زاد المعاد على أن الإنسان إذا كان أكثر خشوعاً بتفتيح العينين فهو أولى ، وإن كان أخشع له تغميض العينين لوجود ما يشغله عن الصلاة من تزويق وزخرفة فإنه لا يكره قطعاً بل القول باستحباب التغميض أقرب إلى مقاصد الشرع وأصوله من القول بالكراهة . "زاد المعاد" (1/283)

ইমাম ইয্‌য ইবনু আব্দিস্‌সালাম তাঁর ফতোয়ায় বলেছেন, প্রয়োজনবোধে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া জায়েয, যদি তা নামাজে খুশু (অন্তরনিবিষ্টতা) বাড়ায়। ইবনুল কায়্যিম তাঁর ‘যাদুল মাআদ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, যদি কারো চোখ খোলা রাখলে বেশি খুশু বা একাগ্রতা সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটিই শ্রেয়। তবে যদি আশপাশের শোভা-সজ্জা বা অলংকরণ নামাজে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটায় এবং সে কারণে চোখ বন্ধ রাখলে তার খুশু বা একনিবিষ্টতা বাড়ে, তাহলে তা মোটেও অপছন্দনীয় (মাকরুহ) নয়। বরং চোখ বন্ধ রাখাকে সুন্নাহর উদ্দেশ্য ও ইসলামী শরিয়তের মূলনীতির দিক বিবেচনায় প্রশংসনীয় ও অধিক গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখা হয়।

(সূত্র: যাদুল মাআদ, ১/২৮৩)


সারকথা হলো, নামাজে গভীরতা ও মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য নামাজ পড়ার সময় চোখ বন্ধ রাখলে নামাজের কোন ক্ষতি হবে না।



  والله اعلم بالصواب

পিডিএফ ডাউনলোড-৮৫: নতুন খুতবা ৩য় খণ্ড

No Comments

 


কিতাবটি পাঠ বা ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন


জরুরি পরামর্শ: প্রথমে ক্লিকে ডাউনলোড হবে না, এডমিনের কাছে একটি রিকুয়েস্ট আসবে সেটা ওকে করার পর আপনার কাছে একটি মেসেজ যাবে তারপর ওপেন অপশনে ক্লিক করলে পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। সুতরাং একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

পিডিএফ ডাউনলোড-৮৪: নতুন খুতবা ৪র্থ খণ্ড

No Comments

 


কিতাবটি পাঠ বা ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন


জরুরি পরামর্শ: প্রথমে ক্লিকে ডাউনলোড হবে না, এডমিনের কাছে একটি রিকুয়েস্ট আসবে সেটা ওকে করার পর আপনার কাছে একটি মেসেজ যাবে তারপর ওপেন অপশনে ক্লিক করলে পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। সুতরাং একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

জিজ্ঞাসা-১২৪৬৩: ক্যাম্পে প্রযাপ্ত পানি নেই, অল্প আছে, পানাহারের জন্য এমত অবস্থায় তায়াম্মুম করে নামাজ পড়া জায়েজ হবে কি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৪৬৩:

আসসালামুয়ালাইকুম। মুহতারাম, বর্তমানে আমরা যে ক্যাম্পে অবস্থান করছি সেটির বাইরের যাওয়া নিরাপদ নয়। সে কারণে কর্তৃপক্ষ বাইরে যেতে নিষেধ করেছেন।

ক্যাম্পে প্রযাপ্ত পানি নেই, অল্প আছে, পানাহারের জন্য এমত অবস্থায় তায়াম্মুম করে নামাজ পড়া জায়েজ হবে কি? জানালে উপকৃত হতাম। জাযাকাল্লাহু খয়রান।

তারিখ:  ০৮/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

জনৈক মাওলানা  কঙ্গো থেকে


জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, 

ج- إِذا كان في مكان بعيد، وليس معه إِلا ماء قليل يحتاجه للشرب، ولا يستطيع إِحضار غيره

অর্থাৎ আশেপাশে ১.৭ কিলোমিটারের মধ্যে পানি পাওয়া না যায়। পানি পেতে যদি শত্রুর, সাপ কিংবা বিপদজনক পশুর আক্রমণের ভয় থাকে। এত অল্প পানি থাকে যে তা গোসল বা অযুতে ব্যবহার করলে খাওয়ার পানির সংকট হবে , তাহলে তায়াম্মুম জায়েজ। সূত্র: আলমুগনি-১/১৯২


দলিল:


আয়াত নং -০১


Surah At-Taghabun, Verse 16:

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا 

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর, শুন, আনুগত্য কর । সূরা তাগাবুন-১৬


আয়াত নং -০২


Surah Al-Hajj, Verse 78:

 وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ  


অর্থ: ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। সূরা হজ-৭৮

সুতরাং আপনার প্রশ্নের আলোকে যতদিন বাইরে যাওয়া নিরাপদ না হবে, পর্যাপ্ত পানি ব্যবস্থা না হবে ততদিন তায়াম্মুম করা নামাজ পড়া জায়েজ হবে। দলিল:


وعن أبي هريرة  قال: قال رسولُ الله ﷺ: الصَّعيدُ وضوء المسلم وإن لم يجد الماءَ عشر سنين, فإذا وجد الماءَ فليتَّقِ الله, وليُمِسَّه بشرَتَه. رواه البزَّار, وصحَّحه ابنُ القطان, لكن صوَّب الدَّارقُطني إرساله. وللترمذي عن أبي ذرٍّ نحوه, وصحَّحه

কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘পবিত্র মাটি মুসলমানের পবিত্রতা অর্জনের বস্তু। যদিও সে দশ বছর পর্যন্ত পানি না পায়। তাখরিজ: তিরমিজি-১২৪


 

 

والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক

Stylo

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে করে যোগাযোগ করুন। জাযাকাল্লাহু খাইর