জিজ্ঞাসা-১২৪৪৮:
আসসালামুআলাইকুম,
এশা ও বিতর নামাজ শেষে কেউ কেউ দু'রাকাত নফল পড়েন বসা অবস্থায়। তারা নাকি শুনেছেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে বসে পড়তেন। এ বিষয়টি হাদিস মোতাবেক জানতে চাই।
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ يَعْنِي ابْنَ رَاشِدٍ عَنْ يَزِيدَ بْنِ يَعْفُرَ عَنِ الْحَسَنِ عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا صَلَّى الْعِشَاءَ دَخَلَ الْمَنْزِلَ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهُمَا رَكْعَتَيْنِ أَطْوَلَ مِنْهُمَا ثُمَّ أَوْتَرَ بِثَلَاثٍ لَا يَفْصِلُ فِيهِنَّ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ يَرْكَعُ وَهُوَ جَالِسٌ وَيَسْجُدُ وَهُوَ قَاعِدٌ جَالِسٌ
অর্থ: আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্ধ্যার সালাত আদায় করার সময় ঘরে প্রবেশ করতেন, তারপর তিনি দুই রাকাত সালাত আদায় করতেন, তারপর তিনি দুই রাকাত সালাত আদায় করতেন। তাদের চেয়ে দীর্ঘ, তারপর তিনি বিতরের তিন রাকাত নামায পড়লেন, সেগুলিকে আলাদা না করে, তারপর তিনি বসে থাকা অবস্থায় দুই রাকাত নামায পড়লেন, বসে থাকা অবস্থায় রুকু করলেন এবং বসে থাকা অবস্থায় সিজদা করলেন। তাখরিজ: মুসনাদে আহমদ -২৫২২৩
এ হাদিস জানা গেলো, আল্লাহর নবী বিতিরের পরে দুই রাকাত নফল নামাজ বসে আদায় করেছেন।
তবে এই দুই রাকাত নামাজ নিয়মিত প্রতি রাতেই বসে বসে পড়তে হবে, এমন নয়। আর যেহেতু আল্লাহর নবী বসে বসে আদায় করেছেন, বিধায় কেউ যদি বিতরের পরে এ দুই রাকাত বসে বসে তার অনুসরণের উদ্দেশ্যে আদায় করে, তাহলে তিনি অনেক সাওয়াব পাবেন।
প্রশ্ন: ক। বসে সালাত আদায় করার সওয়াব বেশি না দাঁড়িয়ে আদায় করা?
উত্তর: ক। বসে নামাজ আদায় করার চেয়ে দাঁড়িয়ে আদায় করা সওয়াব বেশি।
দলিল:
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ المُعَلِّمُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، أَنَّ عِمْرَانَ بْنَ حُصَيْنٍ - وَكَانَ رَجُلًا مَبْسُورًا - وَقَالَ أَبُو مَعْمَرٍ مَرَّةً: عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلاَةِ الرَّجُلِ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَقَالَ: «مَنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ، وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَائِمِ، وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَاعِدِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: «نَائِمًا عِنْدِي مُضْطَجِعًا هَا هُنَا
অর্থ: আবু মা’মার (রাহঃ) ... ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি ছিলেন অর্শরোগী, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে বসে নামায আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করেল সে উত্তম। আর যে ব্যক্তি বসে নামায আদায় করবে তার জন্য দাঁড়িয়ে নামায আদায়কারীর অর্ধেক সাওয়াব। আর যে শুয়ে নামায আদায় করবে, তার জন্য বসে নামায আদায়কারীর অর্ধেক সাওয়াব।
আবু আব্দুল্লাহ (রাহঃ) বলেন, আমার মতে এ হাদীসে نَائِمًا (নিদ্রিত) এর দ্বারা مُضْطَجِعًا (শুয়া) অবস্থা বুঝানো হয়েছে। তাখরিজ: সহীহ বুখারী, হাদীস নং আন্তর্জাতিক নং ১১১৬
সারকথা হলো, এ বিষয়ে ফাতহুল বারিতে ইবনে হজর আসকালানী রহ. বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। অবশেষে তিনি এ সারাংশের উপর সমাপ্তি করেছেন যে, কেউ যদি হযরত আয়েশা (রা.)-এর এ হাদিসের উপর আমল করতে চায়— তাহলে আমল করতে পারে। এতে তিনি সওয়াব পাবেন। তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত বলেছেন- اجعلوا آخر صلاتكم بالليل وترا যে, তোমাদের রাতে শেষ নামাজ, বিতরকে করো। অর্থাৎ সর্বশেষে বিতর নামাজ আদায় করো। তাখরিজ: সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৩৮, ৭৪০
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে,