জিজ্ঞাসা-১৩২২৫:
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহ তাআলা আপনাকে ভালো রেখেছেন ।
আমার একটি প্রশ্ন : আমাদের ১১ জন সদস্যের একটি দল রয়েছে। প্রতি মাসে আমরা সকলেই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা প্রদান করে থাকি। এবং ওই টাকা দিয়ে আমরা ব্যবসা করছি এবং গাড়ি কিনেছি। এ থেকে আলহামদুলিল্লাহ আমরা লাভবান হচ্ছি।
আমাদের গ্রুপের একটি নিয়ম করা হয়েছে কেউ যদি মাসের চাদা নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর আদায় করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সে পরবর্তী মাসে ১০০ টাকা জরিমানা সহ আদায় করবে। এভাবে জরিমানার নিয়ম করা কি ঠিক হবে?
আল্লাহ তাআলা আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মানিত করুক। আমিন।
তারিখ:১২/০৪/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি
মোঃ রিদওয়ান সিঙ্গাপুর থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ইসলামি শরিয়াতে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রশাসক বা বিচারক ব্যতীত অন্য কেউ জরিমানা নির্ধারণ করা জায়েয নেই, (যদি সে কারও আর্থিক ক্ষতি করে, তাহলে ভিন্ন কথা )। দলিল-
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، - يَعْنِي ابْنَ قَيْسٍ - عَنْ أَبِي، سَعِيدٍ مَوْلَى عَامِرِ بْنِ كُرَيْزٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا . الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ وَلاَ يَحْقِرُهُ . التَّقْوَى هَا هُنَا " . وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ " بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ " .
এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। সে তার উপর যুলুম করবে না, তাকে অপদস্থ করবে না এবং হেয় করবে না। তাকওয়া এইখানে, এই কথা বলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার সীনার প্রতি ইশারা করলেন তিনবার। একজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে হেয় করে। কোন মুসলমানের উপর (প্রত্যেক) মুসলমানের সবকিছু জান-মাল ও ইযযত-আবরু হারাম।
Abu Huraira reported Allah’s Messenger (ﷺ) as saying:
Don’t nurse grudge and don’t bid him out for raising the price and don’t nurse aversion or enmity and don’t enter into a transaction when the others have entered into that transaction and be as fellow-brothers and servants of Allah. A Muslim is the brother of a Muslim. He neither oppresses him nor humiliates him nor looks down upon him. The piety is here, (and while saying so) he pointed towards his chest thrice. It is a serious evil for a Muslim that he should look down upon his brother Muslim. All things of a Muslim are inviolable for his brother in faith: his blood, his wealth and his honour.
তাখরিজ: মুসলিম-২৫৬৪
সৌদি আরবের স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, এক গোত্রের কিছু লোক এই মর্মে একমত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি কিছু কিছু বিষয়ে লিপ্ত হবে তার উপরে কিছু আর্থিক জরিমানা ধার্য করা হবে।
জবাবে তাঁরা বলেন:
وقد سئلت اللجنة الدائمة عما اتفق عليه أفراد بعض القبائل من فرض غرامات مالية على من يفعل بعض الأمور .
فكان جوابهم : " هذا إجراء لا يجوز ؛ لأنه عقوبة تعزيرية مالية ممن لا يملكها شرعاً، بل مرد ذلك للقضاة ، فيجب ترك هذه الغرامات" انتهى "فتاوى اللجنة الدائمة" (19/ 252).
“এ ধরণের পদক্ষেপ নাজায়েয। কেননা এটি এমন লোকদের পক্ষ থেকে আর্থিক জরিমানা ধার্য করা যারা আইনগতভাবে (শরিয়ত মোতাবেক) সে ক্ষমতা রাখে না। বরং এ ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছে- বিচার বিভাগ। তাই, এ ধরণের জরিমানা প্রত্যাহার করা কর্তব্য।”[ফাতাওয়াল লাজনাহ্ আদ্ দায়িমা (১৯/২৫২)]
সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের বর্ণিত ছুরতে ১০০ অতিরিক্ত জরিমানা জায়েজ হবে না, তবে নেওয়া যেতে পারে এই শর্তে যে বছর শেষে বা নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যার যার জরিমানার টাকা ফেরত পাবে।
والله اعلم بالصواب