জিজ্ঞাসা-১৩২৩২:
আসসালামু আলাইকুম। নামাজ পড়ার সময় চোখ বন্ধ করে রাখলে কি নামাজ হবে? আমি চোখ বন্ধ করে রাখলে নামাজে গভীরতা ও মনোযোগ আসে।
তারিখ:২৫/০৪/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি
উম্মে মারিয়াম ঢাকা থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, সাধারণ অবস্থায় নামাজে চোখ বন্ধ রাখা খেলাফে সুন্নাত, মাকরুহ। দলিল-
رواه الطبراني في الكبير والأوسط، وابن عدي عن ابن عباس -رضي الله عنهما- قال: قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم-: إذا قام أحدكم في الصلاة فلا يغمض عينيه.
অর্থ: হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন নামাজে দাঁড়াবে, তখন চোখ যেন বন্ধ না রাখে। তাখরিজ: তাবারানি-২২১৮
দ্বিতীয় কথা হলো, নামাজে ধ্যান-খেয়াল, খুশু-খুজুর জন্য মাঝে মাঝে বা অধিকাংশ সময় চোখ বন্ধ রাখা জায়েয। দলিল-
وقال الإمام العز بن عبد السلام في فتاويه بالجواز عند الحاجة إن كان ذلك أخشع للمصلي في صلاته ، ونص ابن القيم في زاد المعاد على أن الإنسان إذا كان أكثر خشوعاً بتفتيح العينين فهو أولى ، وإن كان أخشع له تغميض العينين لوجود ما يشغله عن الصلاة من تزويق وزخرفة فإنه لا يكره قطعاً بل القول باستحباب التغميض أقرب إلى مقاصد الشرع وأصوله من القول بالكراهة . "زاد المعاد" (1/283)
ইমাম ইয্য ইবনু আব্দিস্সালাম তাঁর ফতোয়ায় বলেছেন, প্রয়োজনবোধে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া জায়েয, যদি তা নামাজে খুশু (অন্তরনিবিষ্টতা) বাড়ায়। ইবনুল কায়্যিম তাঁর ‘যাদুল মাআদ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, যদি কারো চোখ খোলা রাখলে বেশি খুশু বা একাগ্রতা সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটিই শ্রেয়। তবে যদি আশপাশের শোভা-সজ্জা বা অলংকরণ নামাজে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটায় এবং সে কারণে চোখ বন্ধ রাখলে তার খুশু বা একনিবিষ্টতা বাড়ে, তাহলে তা মোটেও অপছন্দনীয় (মাকরুহ) নয়। বরং চোখ বন্ধ রাখাকে সুন্নাহর উদ্দেশ্য ও ইসলামী শরিয়তের মূলনীতির দিক বিবেচনায় প্রশংসনীয় ও অধিক গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখা হয়।
(সূত্র: যাদুল মাআদ, ১/২৮৩)
সারকথা হলো, নামাজে গভীরতা ও মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য নামাজ পড়ার সময় চোখ বন্ধ রাখলে নামাজের কোন ক্ষতি হবে না।
والله اعلم بالصواب