আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

আত্মশুদ্ধি-২২: মুমিনের ছুটি নেই

No Comments

 



*মুমিনের ছুটি নেই* 


#'দেহ প্রাণ থাকা পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার ইবাদতের (হুকুমের) ক্ষেত্রে মুমিনের ছুটি নেই (যদি অক্ষম/ অসুস্থ/বেহুঁশ হয় ভিন্ন কথা)। যেমন -


وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ

এবং পালনকর্তার এবাদত করুন, যে পর্যন্ত আপনার কাছে নিশ্চিত কথা (মৃত্যু ) না আসে। সূরা হিজর-৯৯


# প্রিয় বন্ধুগণ! ঈদের মৌসুমে রাস্তা ঘাটে ঈমানের নূর পাওয়া যায় অর্থাৎ নজর হিফাজতের মাধ্যমে। যেমন,

النظرةُ سهمٌ مسمومٌ من سهامِ إبليسَ من تركَه خوفًا من اللهِ آتاهُ اللهُ إيمانًا يجدُ حلاوتَه في قلبِه

অর্থ: কুদৃষ্টি হলো শয়তানের বিষাক্ত তীর এর মধ্যে একটি তীর। যেহেতু আল্লাহর ভয়ে তা পরিত্যাগ করবে। আল্লাহ তাআলা তাকে এমন ঈমান দান করবেন যার মধুরতা সে অন্তরে উপলব্ধি করবে। তাখরিজ: মুসনাদে শিহাব-৪৩৪; হাকেম-৭৮৭৫


# নজর হিফাজত এতটা জরুরি যে, আল্লাহ তাআলা শরীয়তের অন্যান্য বিধানের বিষয়ে শুধু পুরুষদেরকে সম্বোধন করে এর মধ্যে নারীদেরকে শামিল করেছেন অর্থাৎ নারীদের জন্য আলাদা আয়াত বা সিগাহ ব্যবহার করেননি। যেমন,

وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ

আর নামায কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাযে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়। সূরা বাকারা-৪৩


# কিন্তু নজর হেফাজতের বিষয়ে পুরুষ এবং নারীদেরকে আলাদা আলাদা সম্বোধন করেছেন। যেমন,

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ

মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। সূরা নূর-৩০


وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ 

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। সূরা নূর-৩১


# নফল ইবাদতের চেয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকলে আল্লাহ তাআলা দয়া-রহমত-নৈকট্য বেশি অর্জিত হয়। দলিল-

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺقَالَ اتَّقِ الْمَحَارِمَ تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ وَارْضَ بِمَا قَسَمَ اللهُ لَكَ تَكُنْ أَغْنَى النَّاسِ وَأَحْسِنْ إِلَى جَارِكَ تَكُنْ مُؤْمِنًا وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُسْلِمًا وَلَا تُكْثِرْ الضَّحِكَ فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُمِيتُ الْقَلْب

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিষিদ্ধ ও হারাম জিনিস থেকে বেঁচে থাক, তাহলে তুমি মানুষের মধ্যে সব চেয়ে বড় আবেদ (ইবাদতকারী) গণ্য হবে। আল্লাহ যা তোমাকে দিয়েছেন, তাতেই পরিতুষ্ট থাক, তবে তুমিই মানুষের মধ্যে সব চেয়ে বড় ধনী হবে। প্রতিবেশীর প্রতি অনুগ্রহ কর, তাহলে তুমি একজন (খাঁটি) মু’মিন বিবেচিত হবে। মানুষের জন্যও তা-ই পছন্দ কর, যা তুমি নিজের জন্য পছন্দ কর, তাহলে তুমি একজন (খাঁটি) মুসলিম গণ্য হবে। আর খুব বেশী হাসবে না, কারণ, অধিক হাসি অন্তরকে মেরে দেয়। তাখরিজ: আহমাদ-৮০৯৫, তিরমিযী-২৩০৫


# মানুষের নাফসো মারাত্মক খারাপ, খতরনাক, ঝুঁকিপূর্ণ। যেমন,

Surah Yusuf, Verse 53:

وَمَا أُبَرِّئُ نَفْسِي إِنَّ النَّفْسَ لَأَمَّارَةٌ بِالسُّوءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّي إِنَّ رَبِّي غَفُورٌ رَّحِيمٌ

আমি নিজেকে নির্দোষ বলি না। নিশ্চয় মানুষের মন মন্দ কর্মপ্রবণ কিন্তু সে নয়-আমার পালনকর্তা যার প্রতি অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয় আমার পালনকর্তা ক্ষমাশীল, দয়ালু। সূরা ইউনুস-৫৩


# তাহলে এই নফসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, মুজাহাদা কতদিন পর্যন্ত। এ বিষয়ে হাকিমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত শাহ আশরাফ আলী থানভি রহ. বলেন, এ নফসের বিরুদ্ধে মোজাহাদা মৃত্যু পর্যন্ত করতে হবে, কোন ছুটি নেই।


# আর নফসের বিরোধিতা করে আল্লাহর হুকুম পুরো করলে পুরস্কার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন। যেমন,


Surah An-Naziat, Verse 40:

وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَىٰ

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে,


Surah An-Naziat, Verse 41:

فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَىٰ

তার ঠিকানা হবে জান্নাত। সূরা নাজিয়াত-৪১


# মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে মৃত্যু পর্যন্ত নফস ও শয়তান এর বিরোধিতা করে আল্লাহকে খুশি করার তৌফিক দান করুন। আমিন!!