আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

দ্বীনি সচেতনতা-৬২: মানবজীবনে গুনাহের কুপ্রভাব: পর্ব ১

No Comments

 



মানবজীবনে গুনাহের কুপ্রভাব: পর্ব ১  


🟢জ্ঞান ও মুখস্থশক্তি কমে যাওয়া :


জ্ঞান ও মুখস্থ শক্তি আল্লাহর দেয়া অনন্য নি‘আমত। গুনাহের কারণে আল্লাহ এই নি‘আমত তুলে নেন। ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ)একদিন মাদীনায় ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ)-এর সামনে বসা ছিলেন। তখন ইমাম মালিক ইমাম শাফি‘ঈকে দেখে বুঝলেন যে, ছেলেটির মধ্যে প্রতিভা আছে। তাই তিনি তাকে নসীহত হিসেবে বলেন, ‘‘আমি দেখতে পাচ্ছি আল্লাহ তোমার অন্তরে আলো (জ্ঞান) দান করেছেন, অতএব তুমি এই আলোকে গুনাহের অন্ধকার দিয়ে নিভিয়ে দিও না।’’


ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ) নিজেই বলেন : ‘‘আমি আমার শিক্ষক ওয়াকি‘-এর নিকট দুর্বল মুখস্থশক্তির ব্যপারে অভিযোগ করলাম (অর্থাৎ আমি বললাম যে, আমার মুখস্থশক্তি/স্মৃতিশক্তি দুর্বল। এখন আমি কী করতে পারি?) জবাবে তিনি আমাকে বললেন, আমি যেন গুনাহের কাজ পরিত্যাগ করি। তিনি আরও বললেন, জেনে রাখো, জ্ঞান হচ্ছে আলো। আর আল্লাহর আলো তিনি কোন গুনাহগারকে দেন না।’’[ই‘য়ানাতুত্ তালিবীন ‘আলা হাল্লি আলফাযি ফাতহিল মু‘ঈন, খ. ২, পৃ. ১৬৭।]


🟢অনেকে বিভ্রান্ত হন যখন দেখেন, কোন গুনাহগারকেও আল্লাহ তা‘আলা জ্ঞান ও মুখস্থশক্তি দান করেন। এটা কেন? এর উত্তর জানতে নিচের আয়াত দু’টি পড়ুন : 


‘‘আর তুমি তাদের নিকট সে ব্যক্তির সংবাদ পাঠ কর, যাকে আমি আমার আয়াতসমূহ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে তা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং শয়তান তার পেছনে লেগেছিল। ফলে সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল। আর আমি ইচ্ছা করলে উক্ত নিদর্শনাবলীর মাধ্যমে তাকে অবশ্যই উচ্চ মর্যাদা দিতাম, কিন্তু সে পৃথিবীর প্রতি ঝুঁকে পড়েছে এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে কুকুরের মতো। যদি তার উপর বোঝা চাপিয়ে দাও তাহলে সে জিহবা বের করে হাঁপাবে অথবা যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলেও সে জিহবা বের করে হাঁপাবে। এটি হচ্ছে সে কওমের দৃষ্টান্ত যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে। অতএব তুমি কাহিনীসমূহ বর্ণনা কর, যাতে তারা চিন্তা করে।’’[সূরা আল আ‘রাফ ৭ : ১৭৫-১৭৬।]


ইমাম ইবনুল ক্বায়্যিম আল জাউযিয়্যাহ্ (রহিমাহুল্লাহ)বলেন,


‘‘এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, আল্লাহ যাকে জ্ঞান দান করেন তাকেই উচ্চমর্যাদা দান করেন না। যথাযথ জ্ঞানের মাধ্যমে উচ্চমর্যাদা লাভ শুধু জ্ঞানার্জনের চেয়ে অনেক উত্তম ব্যাপার।’’


উপরিউক্ত আলোচনা দ্বারা বোঝা গেলো যে, আল্লাহ কোন গুনাহগারকে জ্ঞানের আলো দেন না। বাহ্যিকভাবে কাউকে দিয়েছেন বলে দেখা গেলে বুঝে নিতে হবে যে, এটি তার জন্য পরীক্ষা। ক্বিয়ামাতের বিচারের মাঠে তার এই জ্ঞান তার বিরুদ্ধেই প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপিত হবে। তাই জ্ঞান ও মুখস্থশক্তি বৃদ্ধির জন্য এবং অর্জিত জ্ঞান ধরে রাখার জন্য গুনাহের কাজ বর্জনের ও জ্ঞানানুযায়ী ‘আমলের কোন বিকল্প নেই। সকল মানুষের বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে বেশি সচেতন হওয়া জরুরি।


- শাহাদাৎ হুসাইন খান ফয়সাল (রহ.)