আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩১৭৯: জীবদ্দশায় স্ত্রীকে বাড়ি লিখে দেওয়া যাবে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩১৭৯: 

আসসালামু আলাইকুম। সম্মানিত মুফতি সাহেবের কাছে একটি মাসায়ালা জানার ছিল, মাসায়ালা টি হলো,এক দম্পত্তি যাদের কোনো ছেলে মেয়ে নেই, তাদের যত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি আছে সব ওয়ারীশদের মধ্যে বন্টন করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উক্ত ব্যক্তির স্ত্রী চাচ্ছে যে,তারা যে বাড়িটি করেছে তা তার নামে লিখে দিতে ।কিন্তু উক্ত ব্যক্তি বলেছেন শরীয়তে নিষেধ আছে দেয়া যাবে না।নোট: ওয়ারীশদের জন্য আরো বাড়ি আছে।

তারিখ:৬/০২/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা রমজান আলী ঠাকুরগাঁও থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, জীবিত অবস্থায় মিরাস বা সম্পদ বণ্টন করা যাবে কিনা এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। 


প্রথম মত: জীবদ্দশায় ওয়ারিশদের মধ্যে  প্রাপ্যানুযায়ী বণ্টন করা নাজায়েজ। বরং সবাইকে সমানভাবে বণ্টন করতে হবে।


২য় মত: মৃত্যুর পর সন্তান/ওয়ারিশদের মধ্যে সম্পদের বণ্টন নিয়ে ঝগড়া মিটানোর নিমিত্তে জীবিত থাকতে প্রাপ্যতানুযায়ী বণ্টন করা জায়েয।


দ্বিতীয় কথা হলো, যেহেতু উক্ত ব্যক্তির কোন সন্তানাদি নেই, তাই স্ত্রী মোট সম্পদে চার ভাগের একভাগ অধিকারী হবে। দলিল-

Surah An-Nisa, Verse 12:

وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَاجُكُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّهُنَّ وَلَدٌ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِينَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُم مِّن بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْ


আর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ঐ সম্পত্তির, যা তারা ছেড়ে যায়; ওছিয়্যতের পর, যা তারা করে এবং ঋণ পরিশোধের পর। স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পর, যা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পর। সূরা নিসা-১২


এখন স্ত্রীকে যে বাড়ি লিখে দিতে যাচ্ছে তা যদি মোট সম্পদের চার ভাগের এক ভাগ হয় বা তার চেয়ে কম হয়, তাহলে ঐ বাড়িটি লিখে দেওয়া জায়েজ হবে। বেশি হলে পারবে না, এক্ষেত্রে বাকি ওয়ারিশদের অনুমতি লাগবে।


তৃতীয় কথা, কোন ওয়ারিশদেরকে বঞ্চিত করার জন্য কাউকে সম্পদ লিখে দেওয়া জায়েয নেই। দলিল-

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّهُ مِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»

অর্থ- হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ওয়ারিসকে মিরাস থেকে বঞ্চিত করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের মিরাস থেকে বঞ্চিত করবেন। তাখরিজ: মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১৬/২১৫; ইবনে মাজাহ- ২৭০৩; সুনানে সাঈদ বিন মানসূর-২৮৫


সারকথা হলো, যেহেতু মিরাস বণ্টনের কথা এসেছে তাই স্ত্রী যে বাড়িটি চেয়েছে, ঐ বাড়িটি মোট সম্পদের (স্থাবর ও অস্থাবর)  এক চতুর্থাংশের সমান বা কম হলে লিখে দিতে পারবে, বেশি হলে বাকি ওয়ারিশদের খুশি মনে অনুমতি লাগবে।

আর স্ত্রীর যেহেতু সন্তানাদি নেই, তাই স্বামী তাকে মিরাস বণ্টন ছাড়া সাবলম্বী করার মত সম্পদ হিবা/দান করতে পারবে।


  والله اعلم بالصواب