আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

দ্বীনি সচেতনতা-৬৩: মানবজীবনে গুনাহের কুপ্রভাব: পর্ব ২

No Comments

 



✅মানবজীবনে গুনাহের কুপ্রভাব: পর্ব ২


🟢রিযক্ব থেকে বঞ্চিত হওয়া :

গুনাহের কুপ্রভাবগুলো মধ্যে অন্যতম হলো, গুনাহ করলে তা গুনাহকারীর জীবিকা কমিয়ে দেয় বা সে বরকতপূর্ণ জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়। আমরা অনেকেই একসময় ভালো ও পর্যাপ্ত খাবার এবং অন্যান্য নি‘আমত ভোগ করলেও হঠাৎ দেখি রিযক্ব ও নি‘আমত কমে যাওয়া শুরু করেছে। তখন আমরা হতাশ হই, এর কারণ খুঁজি। আসল কারণের কথা হাদীসেই বর্ণিত হয়েছে। সাওবান হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘‘দু‘আ ব্যতীত আর কিছুই ভাগ্যকে ফেরায় (পরিবর্তন করে) না, পুণ্য ব্যতীত আর কিছু্ আয়ুকে বাড়ায় না এবং কৃত পাপের কারণেই বান্দা জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়।’’[সুনান ইবনু মাজাহ : ৪০২২, মুসনাদ আহমাদ : ২২৪১৩; মিশকাত : ৪৯২৫, হাদীসটির প্রথমাংশ হাসান লিগাইরিহী, তবে শেষাংশের ইসনাদ য‘ঈফ।]


* এডমিন কমেন্ট- ‘পাপের কারণে বান্দা তার রিযিক থেকে বঞ্চিত হয়’ মর্মে বর্ণিত হাদীসটি যঈফ (যঈফুত তারগীব হা/১৭৭৩; যঈফুল জামে‘ হা/৩০০৬)। তবে পাপের কারণে রিযিকে বরকত কমে যেতে পারে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৮; মিরক্বাত)


🟢আল্লাহর আনুগত্য কঠিন মনে হওয়া :

গুনাহের কাজের অন্যতম কুপ্রভাব হলো আল্লাহর আদেশ-নিষেধ না মানা এবং নিজের মনের ইচ্ছার লাগামহীন অনুসরণ করা। মানুষ যখন গুনাহ করতে থাকে এবং গুনাহের পরিমাণ বাড়াতে থাকে তখন ধীরে ধীরে তার ‘ইবাদাতের পরিমাণ কমতে থাকে, ঈমান সঙ্কুচিত হতে থাকে, ‘ইবাদাতের প্রতি মনোযোগে ঘাটতি দেখা দেয়, আল্লাহর আনুগত্য করতে না পারলে দুঃখ বা আফসোস লাগে না। গুনাহের প্রভাবে আল্লাহর ‘ইবাদাত করা কঠিন মনে হতে থাকে। অন্যায়-অশ্লীলতার চর্চায় সুখ লাভ করে এবং তা অভ্যাসে পরিণত হয়।

আল্লাহর আনুগত্য ও শয়তানের আনুগত্য একই সাথে সমান গতিতে চলতে পারে না। তাই শয়তানের আনুগত্যের মাধ্যমে গুনাহ অর্জন করতে থাকলে আল্লাহর আনুগত্য করতে মন আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। যারা আল্লাহর আনুগত্যে অনীহাবোধ করে, অলসতাবোধ করে অথচ তারা একসময় ‘ইবাদাতে মনোযোগী ছিল এবং অন্যকেও দা‘ওয়াত দিত তখন বুঝে নিতে হবে যে, তার উপরে তার কৃত গুনাহের কুপ্রভাব পড়েছে। তাই সে ইবাদাতে গাফিল ও পিছিয়ে। তাইতো যারা কাফির তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে মৃত বলেছেন; তারা জীবিত নয়। (সূরা আন্ নাহ্ল ১৬ : ২১) অর্থাৎ কাফিররা শারীরিকভাবে জীবিত থাকলেও আত্মিক ও মানসিকভাবে তারা মৃত।


🟢অন্তর মরে যাওয়া ও অপমানিত হওয়া :

গুনাহ মানুষের অন্তরকে মেরে ফেলে। এর কারণে অন্তরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়। গুনাহে লিপ্ত থাকা অসম্মানেরও কারণ। সম্মান দেয়ার মালিক আল্লাহ। আল্লাহর অবাধ্যতা করে সম্মানিত হওয়া যায় না। বরং আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে মানুষের সম্মান ও ভালোবাসা পাওয়া যায়। ফলে সে সকলের আন্তরিক ভালোবাসায় সিক্ত হয়।

আল্লাহর ভালোবাসা পেলে যেমন মানুষের ভালোবাসা ও সম্মান পাওয়া যায় তেমনি আল্লাহর অবাধ্যতা করলে তার বিরাগভাজন হতে হয় এবং অপমানিত হতে হয়।

ইমাম ‘আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহিমাহুল্লাহ)বলেন : ‘‘আমি দেখেছি গুনাহ অন্তরকে মেরে ফেলে আর সর্বদা গুনাহে লিপ্ত থাকা অপমান নিয়ে আসে। গুনাহ পরিত্যাগ করা অন্তরের বাঁচিয়ে রাখে আর নফস্ বা প্রবৃত্তির অনুসরণ না করার মধ্যেই কল্যাণ নিহীত।’’


- শাহাদাৎ হুসাইন খান ফয়সাল (রহ.)