আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩১৮১: কোন কোন সময় দরুদ-জিকির-তাসবিহ পাঠ করা নিষেধ

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩১৮১: 

আসসালামু আলাইকুম।  কোন কোন সময় দরুদ পাঠ নিষিদ্ধ? দলিল সহ জানতে চাই।

তারিখ:০৮/০২/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 সালমা সুলতানা বাগেরহাট থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, অজু-অজু বিহীন-নাপাক তথা গোসল ফরজ অবস্থাতেও জিকির-দরুদ পাঠ করা জায়েয। দলিল- 

باب ذِكْرِ اللَّهِ تَعَالَى فِي حَالِ الْجَنَابَةِ وَغَيْرِهَا

حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ خَالِدِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنِ الْبَهِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ اللَّهَ عَلَى كُلِّ أَحْيَانِهِ .

৩০. জানাবাত বা অন্য কারণে অপবিত্র অবস্থায় আল্লাহ তাআলার যিক্‌র করা

৭১২। আবু কুরায়র মুহাম্মাদ ইবনুল আলা ও ইবরাহীম ইবনে মুসা (রাহঃ) ......... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সব সময়ই আল্লাহর যিক্‌র করতেন।

’A’isha said:

The Apostle of Allah (ﷺ) used to remember Allah at all moments.

—সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭১২ (আন্তর্জাতিক নং ৩৭৩)


দ্বিতীয় কথা হলো, প্রসাব-পায়খানা, সহবাস এবং দুর্গন্ধ জায়গায় তথা টয়লেট-বাথরুমে জিকির-আজকার করা মাকরুহ। দলিল- 

দলিল:



হাদিস নং-০১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ حُضَيْنِ بْنِ الْمُنْذِرِ أَبِي سَاسَانَ، عَنِ الْمُهَاجِرِ بْنِ قُنْفُذٍ، أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَبُولُ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ حَتَّى تَوَضَّأَ ثُمَّ اعْتَذَرَ إِلَيْهِ فَقَالَ ‏"‏ إِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أَذْكُرَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ عَلَى طُهْرٍ ‏"‏ ‏.‏ أَوْ قَالَ ‏"‏ عَلَى طَهَارَةٍ ‏"‏ ‏.‏


অর্থ: হজরত আল-মুহাজির ইবনু কুনফু (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি নবী (ﷺ) এর নিকট গিয়ে তাঁকে সালাম দিলেন। তখন নবী (ﷺ) পেশাব করছিলেন। সেজন্য অযূ না করা পর্যন্ত তিনি তার জবাব দিলেন না। অতঃপর (পেশাব শেষে অযূ করে) তিনি তার নিকট ওযর পেশ করে বললেন, পবিত্রতা ছাড়া আল্লাহর নাম স্মরণ করা আমি অপছন্দ করি। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ-১৭


হাদিস/আসার নং-০২

ما روى عن ابن عباس رضي الله عنه قال: يكره أن يذكر الله تعالى على حالتين على خلائه والرجل يواقع امرأته لأنه ذو الجلال والاكرام يجل عن ذلك أخرجه ابن أبي شيبة في مصنفه (1/ 108) قال ابن المنذر في الأوسط (1/ 461):

অর্থ: আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. তিনি দুই অবস্থায় আল্লাহর জিকির করা অপছন্দ করতেন (১) টয়লেটে থাকা অবস্থায় (২) এবং এই অবস্থায় যে, একজন ব্যক্তি তিনি তাঁর স্ত্রীর সাথে সহবাস অবস্থায়। কেননা তিনি (আল্লাহ) মহা মহিয়ান মর্যাদার অধিকারী, এসব জিনিস থেকে তিনি পবিত্র। তাখরিজ: মুসান্নাফায়ে ইবনে আবী শাইবাহ ১/১০৮; ইমাম ইবনুল মুনযির রাহিমাহুল্লাহ আল- আউসাত (১/৪৬১)


وقال الحافظ رحمه الله: والمشهور في المذهب كراهة الإجابة-أي إجابة المؤذن- في الصلاة بل يؤخرها حتى يفرغ، وكذا في حال الجماع والخلاء

অর্থাৎ হাফেজ ইবনু হাজার (রাহি.) বলেন, মাযহাবের প্রসিদ্ধ মত হলো, কোন ব্যক্তি শৌচাগারে থাকা অবস্থায় মুয়াজ্জিনের কন্ঠে আযানের ধ্বনি শুনতে পেলে, সেই অবস্থায় আযানের জওয়ান দেয়া মাকরূহ। বরং সে প্রাকৃতিক কর্ম সম্পন্ন হওয়ার পর সেখান থেকে বের হয়ে জবাব দেবে। বাইতুল খলায় অবস্থানকালে কিংবা সহবাসরত ব্যক্তির ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য হবে। সূত্র: নায়নুল আওয়ার-২/৬২

নোট: আজানের সওয়াব জিকিরের অন্তর্ভুক্ত।


সারকথা হলো,  প্রসাব-পায়খানা, সহবাস এবং দুর্গন্ধ জায়গায় তথা টয়লেট-বাথরুমে দরুদ শরীফ তথা জিকির মাকরুহ। তবে অপবিত্র অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত জায়েজ নেই। দলিল- 

عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ لاَ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ الْجُنُبُ وَلاَ الْحَائِضُ ‏"‏ ‏.


হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-ঋতুবতী মহিলা এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি কোরআন পড়বে না। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৩১, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৯৯১)


  والله اعلم بالصواب