জিজ্ঞাসা-১২৪১৪:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ, বিজ্ঞজনদের নিকট জানার বিষয় হলো, আমাদের ইউনিটে সৈনিকদের জন্য যে ফ্রেশ আসে তা থেকে যদি কোন সৈনিক কিছু ফ্রেশ নিয়ে নেয় যেমন কেউ কয়েকটি পেয়াজ/রসুন / মরিচ নিয়ে থাকেন তাহলে এটা জায়েজ হবে কিনা বা হক্কুল ইবাদ নষ্ট করার মধ্যে শামিল হবে কিনা? তারিখ: ০৫/০১/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মোঃ শফিউল ইসলাম সিরাজগঞ্জ থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ইসলামে বান্দার হকের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন হাদিস শরিফে এসেছে,
قال النبيٌّ- صلى الله عليه وسلم -: ((أَتَدرُونَ مَا المُفلِسُ؟ قَالُوا: المُفلِسُ فِينَا مَن لَا دِرهَمَ لَهُ وَلَا مَتَاعَ، فَقَالَ: إِنَّ المُفلِسَ مِن أُمَّتِي يَأتِي يَومَ القِيَامَةِ بِصَلَاةٍ, وَصِيَامٍ, وَزَكَاةٍ,، وَيَأتِي قَد شَتَمَ هَذَا، وَقَذَفَ هَذَا، وَأَكَلَ مَالَ هَذَا، وَسَفَكَ دَمَ هَذَا، وَضَرَبَ هَذَا، فَيُعطَى هَذَا مِن حَسَنَاتِهِ، وَهَذَا مِن حَسَنَاتِهِ، فَإِن فَنِيَت حَسَنَاتُهُ قَبلَ أَن يُقضَى مَا عَلَيهِ أُخِذَ مِن خَطَايَاهُم فَطُرِحَت عَلَيهِ، ثُمَّ طُرِحَ فِي النَّارِ)) رواه مسلم
অর্থাৎ রসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, তোমরা কি জান নিংস্ব কে? ‘আমার উম্মতের মধ্যে (আসল) নিঃস্ব তো সেই ব্যক্তি, যে কিয়ামতের দিন অনেক নামাজ, রোজা ও জাকাতের নেকি নিয়ে হাজির হবে। কিন্তু এর সঙ্গে সে এমন অবস্থায় আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে। কারও প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে, কারও মাল (অবৈধভাবে) ভক্ষণ করেছে, কারও রক্তপাত করেছে এবং কাউকে মেরেছে। অতঃপর অমুক অমুক (অত্যাচারিত) ব্যক্তিকে তার নেকিগুলো দেওয়া হবে। পরিশেষে যদি তার নেকি অন্যদের দাবি পূরণ করার আগেই শেষ হয়ে যায়, তাহলে তাদের পাপরাশি নিয়ে তার ওপর চাপানো হবে। অতঃপর (অন্যদের পাপের বোঝার কারণে) তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তাখরিজ: মুসলিম-২৫৮১ ; তিরমিজি-২৪১৮
এই হাদিস থেকে হক্কুল ইবাদতের গুরুত্ব বুঝে আসে।
দ্বিতীয় কথা হলো, যেহেতু প্রতিটি সৈনিকের জন্য সবার জন্য সমান রেশন-রশদ বরাদ্দ। তাই কেউ বেশি খাওয়ার সুযোগ নেই। মেস থেকে পেয়াজ/রসুন / মরিচ ইত্যাদি নিয়ে অন্যের হক নষ্ট করা, ঘার্তি ফেলানো, জায়েজ নেই। দলিল:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلاَّ أَن تَكُونَ تِجَارَةً عَن تَرَاضٍ مِّنكُمْ (29
অর্থাৎ হে মুমিনরা! তোমরা পরস্পরের সম্পদকে অন্যায়ভাবে গ্রাস কর না। তবে ব্যবসায়িক পদ্ধতিতে পারস্পরিক সন্তুষ্টচিত্তে হলে ভিন্ন কথা। সূরা নিসা-২৯
তৃতীয় কথা হলো, মেসের রান্না করার পর (স্বাভাবিক পাক করার পর) যদি অতিরিক্ত পেয়াজ/রসুন / মরিচ থাকে এবং কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অনুমতি থাকে, তাহলে কেউ কয়েকটি পেয়াজ/রসুন / মরিচ নিয়ে থাকেন, তাহলে এটা নাজায়েজ হবে না। সূত্র: ফাতাওয়া মাহমুদিয়া-২৭/২৬৭
সারকথা হলো, সবার জন্য সমান বরাদ্দ থাকলেও, সুষম বণ্টনের দায়ভার কর্তৃপক্ষের উপর। তাই অতিরিক্ত রেশন থেকে কোন কিছু ভোগ করতে চায়লে, কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন। সুতরাং পরামর্শ হলো, বিষয়টি ইউনিট কর্মকর্তা থেকে পেয়াজ/রসুন / মরিচ ইত্যাদি অনুমতি নেওয়া।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি