আত্মশুদ্ধি-২১: নফসের বিরোধিতা -মুফতি ত্বাকী উসমানী হাফি.
নফসের চাহিদার বিরোধিতা করা কোন কোন অবস্থায় ওয়াজিব। আবার কোন কোন অবস্থায় মুস্তাহাব। অর্থাৎ, যদি নফস কোন গোনাহের ব্যাপারে প্রলুদ্ধ করে, সেদিকে আহবান করে তাহলে ঐ চাহিদার বিরোধিতা করে সেটাকে পিষে ফেলা এবং মুজাহাদা করা ওয়াজিব।
উদাহরণস্বরূপ: মনে করুন অন্তরে দারুণ চাহিদা সৃষ্টি হল, কোন বেগানা নারীকে দেখে হারাম স্বাদ ভোগ করার, মজা নেয়ার; এখন এই চাহিদা ও দাবীর বিরোধিতা করা এবং এ চাহিদা কে পিষে ফেলা ওয়াজিব। এই চাহিদার উপর আমল করা এবং তার সামনে আত্মসমর্পণ করা জায়েয নেই।
অথবা মনে করুন অন্তরে চাহিদা সৃষ্টি হল: আমি অমুকের গীবত করব । মজলিস জমে গেছে আর অন্য মানুষের সমালোচনা করতে মজাও লাগছে, কথাবার্তা চলছে, এখন দিলের মধ্যে তাকাযা পয়দা হচ্ছে যে, আমি অমুকের গীবত করব, এ ক্ষেত্রে এই চাহিদার বিরোধিতা করা ওয়াজিব। এ জন্য যেখানেই মানুষের নফস কোন গোনাহের কাজে প্ররোচনা দেয় ঐ সময় সেটার বিরোধিতা করা এবং মুজাহাদা করা ওয়াজিব।
কিন্তু যদি নফসের মধ্যে কোন এমন জিনিসের চাহিদা সৃষ্টি হয় যেটা গোনাহ এবং হারাম নয়, নাজায়েয নয় বরং 'মুবাহ'। কিন্তু সেই 'মুবাহ' বিষয়টি এমন যার ব্যাপারে বুযুর্গানে দীনের অভিজ্ঞতা হল: ঐ মুবাহ বিষয় মানুষকে ধীরে ধীরে গোনাহের দিকে টেনে নিয়ে যায়। এমন চাহিদার ও বিরোধিতা করা উচিৎ। অবশ্য এ ধরণের পরিস্থিতিতে নফসের বিরোধিতা করা ওয়াজিব নয় কিন্তু মুসতাহাব অবশ্যই। শুধুমাত্র এ কারণে যে, কখনো যেন এমন না হয় এই চাহিদাই ধীরে ধীরে কোন গোনাহে লিপ্ত করে দিল!
এ বাণীতে হযরত থানভী রহ. বলছেন : 'মুজাহাদা' ব্যতীত আল্লাহ তা'আলা পর্যন্ত পৌঁছা সম্ভব নয়। মুজাহাদা করতেই হবে। কেননা আল্লাহ তা'আলা পরিস্কার ভাষায় বলেছেন :
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِينَهُمْ سُبُلَنَا
এ আয়াতে কারীমায় আল্লাহ তা'আলা তাঁর পথে হিদায়েতকে মুজাহাদার উপর নির্ভরশীল সাব্যস্ত করেছেন। অর্থাৎ, যখন তোমরা মুজাহাদা করবে তখন আমি তোমাদেরকে পথের সন্ধান দিব। মুজাহাদা ব্যতীত আল্লাহ পাক পর্যন্ত পৌঁছা যায় না।
[ ইসলাহী মাজালিস ; দ্বিতীয় খণ্ড ; মুফতি ত্বাকী উসমানী হাফি. ]