জিজ্ঞাসা-১৩০২১:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারাম এর কাছে জানার বিষয় সামরিক বাহিনীর রেশন কার্ড জমা দিয়ে কারো কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা নিয়ে কার্ডের রেশন ভোগ করার সুযোগ দেওয়া টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত জায়েজ কিনা,অথবা সুদ হবে কিনা.? এরূপ রেশন কার্ড বন্ধক রাখার শুদ্ধতার কোন পদ্ধতি আছে কিনা?
তারিখ: ১৩/০৬/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা বিন ইয়ামীন, ঢাকা থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ঋণদাতার জন্য বন্ধকি জিনিস ভোগ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটি মূলত ঋণ প্রদান করে বিনিময়ে সুদ গ্রহণেরই একটি প্রকার। দলিল-
ومنها ما رواه ابن أبي شيبة في مصنفه عن ابن سيرين قال: أقرض رجل رجلا خمسمائة درهم واشترط عليه ظهر فرسه، فقال ابن مسعود: ما أصاب من ظهر فرسه فهو ربا. ومنها ما رواه أيضا ابن أبي شيبة عن زر بن حبيش قال: قال أبي: إذا أقرضت قرضا وجاء صاحب القرض يحمله ومعه هدية فخذ منه قرضه ورد عليه هديته. ومنها
ইবনে সীরীন রাহ. বলেন, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর নিকট এসে বললেন, এক লোক আমার নিকট একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, অতঃপর আমি তাতে আরোহণ করেছি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বললেন-
مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِهَا فَهُوَ رِبًا.
তুমি উক্ত ঘোড়ার উপর যে পরিমাণ আরোহণ করেছ তা সুদ হয়েছে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১৫০৭১)
দ্বিতীয় কথা হলো, উপহার-উপঢৌকন অথবা বিনা মজুরীতে ঋণদাতার কোন কাজ করে দেওয়া প্রভৃতি (যদিও ঋণগ্রহীতা এ সবের মাধ্যমে উপকারের বিনিময়ে প্রত্যুপকার করতে চায়, তবুও ঋণদাতার জন্য তা গ্রহণ করা বৈধ নয়।) হাদীস শরীফে প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন,
إذا أقرض أحدكم قرضاً فأهدى إليه أو حمله على الدابة فلا يركبه ولا يقبلها إلا أن يكون جرى بينه وبينه قبل ذلك.
অর্থাৎ, ‘‘যখন তোমাদের মধ্যে কেউ (কাউকে) ঋণ দেয়। অতঃপর (ঋণগ্রহীতার তরফ থেকে) তাকে কোন উপঢৌকন দেওয়া হয় অথবা তাকে (ঋণগ্রহীতা নিজের গাড়ি বা) সওয়ারীতে চড়িয়ে কোথাও পৌঁছিয়ে দিতে চায়, তবে সে যেন তার সওয়ারীতে না চড়ে এবং তার উপঢৌকনও গ্রহণ না করে। তবে হ্যাঁ, যদি এরূপ সদ্ব্যবহার (উপঢৌকন আদান-প্রদান ঋণ দেওয়ার) পূর্ব থেকেই জারী থাকে তবে (তার পরে) অনুরূপ কিছু গ্রহণ করায় দোষ নেই।’’ মুসনাদে আহমদ ১/৩৯৫, ৪২৪, ইবনে মাজাহ ২২৭৯, বাইহাকী, মিশকাত ২৮২৭ নং)
তৃতীয় কথা হলো, বন্ধক গ্রহীতা বন্ধক রাখা বস্তু থেকে উপকৃত হওয়ার বিনিময়ে বন্ধক দাতাকে বন্ধককৃত বস্তুর ন্যায্য ভাড়া আদায় করে দিবে। তাহলে বন্ধক গ্রহীতার জন্য উক্ত কার্ড ব্যবহার করা জায়েয হবে।
সারকথা হলো, কার্ড বন্ধক রাখা জায়েয আছে, তবে বন্ধক/কার্ড গ্রহীতা থেকে ফায়দা নিতে পারবে না। রেশন উঠালে ওই পরিমাণ মূল্য বন্ধ দাতাকে মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
নোট: জায়েজ-এর কোন সুরত থাকলে ইফতা বিভাগ বা বিজ্ঞ মুফতি থেকে জেনে নিতে পারেন।
والله اعلم بالصواب