আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩০৩০: ঈমান আনার পর ভয়ে প্রকাশ করতে না পারলে নাজাত হবে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩০৩০: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম। বিজ্ঞ ওলামায়ে কিরামের নিকট জানতে চাই,আমার এলাকার এক হিন্দু শিক্ষিত ব্যক্তি আমাকে বলেছেন,তিনি গলায় হিন্দুদের কাঠির মালা পড়েন,শরীরে পৈতান পড়েন,হিন্দুদের ধুতি হিন্দুদের মত না পড়ে লুংগির মত পড়েন,গায়ে পাঞ্জাবী পড়েন,মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি রেখেছেন,কপালে তিলক দেন।তিনি দুই ছেলের মাঝে খানা খান।তিনি বেশি বয়সের কারণে কোন ইনকাম করতে পারেন না। তিনি প্রকাশ্যে সম্পুর্ন হিন্দু ধর্ম পালন করেন,কিন্তু পুজার সময় অসুস্থতার অজুহাতে ঘর থেকে বের হননা।তিনি কোন প্রকার শিরকি কাজ করেন না।তিনি কালিমা পড়েছেন এবং আমার সামনে কালিমা পড়লেন,এবং সুরাও পড়লেন যা মোটামোটি শুদ্ধ।তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ খুব গোপনে পড়েন।কোনদিন গোপনে পড়ার সুযোগ না পেলে রাতের আঁধারে একসাথে পড়েন।সর্বদা গোপনে কালিমার যিকির করেন।তিনি ছেলেদের মাঝে ইসলামের হালাল খাবার গুলোই খান।আমি বুঝতে পারলাম,তিনি গোপনে পরিপূর্ণ ইসলাম ধর্ম পালন করেন।আমি তাকে প্রকাশ করতে বললে তিনি বলেন,এই বয়সে আমার ছেলেরা আমাকে পরিত্যাগ করবে,আমার সমাজ আমাকে মারধর করবে,আমার স্ত্রী আমাকে পরিত্যাগ করবে,আমি কিভাবে বেঁচে থাকব?আর তিনি নওমুসলিমের উদাহরণ দিয়ে বলেন,তারা তো মুসলিমদের কাছে তেমন সাহায্য সহযোগিতা পাননা,তাদেরকে খুব কষ্ট করে চলতে হয়।তিনি বলেন, আমার অন্তরের ঈমান সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেন।দুনিয়ার মানুষ না জানলেও চলবে,যেহেতু আমি কোন শির্ক করিনা।আমি খৎনার কথা বললে তিনি বলেন,এটা সুন্নাত ফরজ নয়।আমি বললাম, মারা গেলে লাশের কী হবে,তারা তো পুড়ে ফেলবে।তিনি বললেন,ফেলুক।মরার পরে লাশের কী হবে এজন্য মৃত ব্যক্তি দায়ী নয়।তিনি আমাকে বললেন,দুনিয়াতে শুধু আপনার কাছেই বিশ্বাস করে কথাটি প্রকাশ করলাম।আমার জীবদ্দশায় প্রকাশ করবেন না,তাহলে আমার বেঁচে থাকতে খুব সমস্যা হবে।আমার মৃত্যুর পর পারলে দাফন করার ব্যবস্থা করবেন।।।।।

পরিশেষে আমি জানতে চাই,এই ব্যক্তি কি ইমানদার হবে এবং পরকালে নাজাত পাবে?


তারিখ: ১৯/০৬/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  সাদেকুল ইসলাম রংপুর থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, একজন মুমিনের মর্যাদা অপরিসীম। এ বিষয়ে আমার লেখা- "মহান আল্লাহর নিকট একজন মুমিন মুসলমানের মর্যাদা" নামক কিতাবে দলিলসহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

শিরক ব্যতীত যেকোনো গুনাহ আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করার কথা ঘোষণা করেছেন। যেমন -


Surah An-Nisa, Verse 48:

إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল। সূরা নিসা-৪৮


عَنْ عَمْرِو  مَيْمُونٍ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ كُنْتُ رِدْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى حِمَارٍ يُقَالُ لَهُ عُفَيْرٌ قَالَ فَقَالَ ‏”‏ يَا مُعَاذُ تَدْرِي مَا حَقُّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ وَمَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَإِنَّ حَقَّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوا اللَّهَ وَلاَ يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَحَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ لاَ يُعَذِّبَ مَنْ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ أُبَشِّرُ النَّاسَ قَالَ ‏”‏ لاَ تُبَشِّرْهُمْ فَيَتَّكِلُوا ‏”‏ ‏

.‏ অর্থ: মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক সফরে রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ)-এর গাধা ‘উফায়র-এর পিঠে তাঁর পিছনে বসা ছিলাম। রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) বললেন, ‘হে মুয়াজ! তুমি কি জান, বান্দার উপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর উপর বান্দার হক কী?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রসূলই ভালো জানেন।’ রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) বললেনন , ‘বান্দার উপর আল্লাহর হক হলো তারা আল্লাহর ইবাদাত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছু শরিক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার হক হলো, যে তাঁর সঙ্গে শরিক করবে না, তাকে তিনি শাস্তি দিবেন না।’ মুয়াজ বললেন, ‘আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকদের এ সংবাদ জানিয়ে দেব না?’ তিনি বললেন, না; লোকেদের এ সংবাদ দিও না, তাহলে তারা এর উপর ভরসা করে থাকবে। তাখরিজ: মুসলিম-৩০


যার শেষ কথা (মৃত্যুকালে) “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” হবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবেঃ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ كَانَ آخِرُ كَلاَمِهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ ‏”‏ ‏.‏ অর্থ: মুয়াজ ইবনু জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : যারা সর্বশেষ বাক্য হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাখরিজ: আবু দাউদ-৩১১৬; ইবনে মাজাহ-৩৭৯৬; আহমদ-২১৯৯৮


দ্বিতীয় কথা হলো, কোন মুমিনের যদি কোন আমল নাও থাকে তবুও শুধু ঈমানের বরকতে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। দলিল-

 عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ يَدْخُلُ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ، وَأَهْلُ النَّارِ النَّارَ، ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى أَخْرِجُوا مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ‏.‏ فَيُخْرَجُونَ مِنْهَا قَدِ اسْوَدُّوا فَيُلْقَوْنَ فِي نَهَرِ الْحَيَا ـ أَوِ الْحَيَاةِ، شَكَّ مَالِكٌ ـ فَيَنْبُتُونَ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي جَانِبِ السَّيْلِ، أَلَمْ تَرَ أَنَّهَا تَخْرُجُ صَفْرَاءَ مُلْتَوِيَةً ‏”‏‏.‏ قَالَ وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا عَمْرٌو ‏”‏ الْحَيَاةِ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ ‏”‏ خَرْدَلٍ مِنْ خَيْرٍ অর্থ: হজরত আবু সাঈদ খুদরি রা. হতে বর্ণিত, নবি (ﷺ) এরশাদ করেন, যখন জান্নাতিগণ জান্নাতে ও দোজখিগণ দোজখে চলে যাবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান রয়েছে তাকেও জাহান্নাম হতে বের লও। তাদের অবস্থা এরূপ হবে যে, জ্বলে কালো বর্ণ হয়ে গেছে। অতঃপর তাদেরকে নহরে হায়াতে ফেলা হবে। তখন তারা এমনভাবে বের হয়ে আসবে, যেমন ঢলের(বৃষ্টির কারণে) আবর্জনাতে দানা অঙ্কুরিত হয় (গাছ জন্মায়)। তোমরা কি দেখ না যে, তা কেমন সোনালী ও কোঁকড়ানো অবস্থায় বের হয়ে আসে। তাইব (রহঃ) বলেন, ‘আমর (রহঃ) আমাদের কাছে حيا এর স্থলে حياة এবং خردل من ايمان এর স্থলে خردل من خير বর্ণনা করেছেন।  

عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَفِي قَلْبِهِ وَزْنُ شَعِيرَةٍ مِنْ خَيْرٍ، وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَفِي قَلْبِهِ وَزْنُ بُرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ، وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَفِي قَلْبِهِ وَزْنُ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ قَالَ أَبَانُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ حَدَّثَنَا أَنَسٌ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مِنْ إِيمَانٍ ‏”‏‏.‏ مَكَانَ ‏”‏ مِنْ خَيْرٍ

অর্থ: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি (ﷺ)বলেছেন: যে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি যব পরিমাণও পূণ্য বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম হতে বের করা হবে এবং যে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি গম পরিমাণও পুণ্য বিদ্যমান থাকবে তাকে জাহান্নাম হতে বের করা হবে এবং যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি অণু পরিমাণও নেকি থাকবে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে।


আবু আবদুল্লাহ বলেন, আবান (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, আনাস (রা.) হতে এবং তিনি রসূলুল্লাহ (ﷺ) হতে নেকি –এর স্থলে ‘ঈমান’ শব্দটি বর্ণনা করেছেন। বুখারি-৪৪; মুসলিম-১৯৩; তিরমিজি-২৫৯৩; ইবনে মাজাহ-৪৩১২; দারেমি-৫৩; আহমদ -২৬৯২


ইমাম গাজালি (রহ.)-এর গবেষণা: أَخْرِجُوا مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ (যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান রয়েছে তাকেও জাহান্নাম হতে বের লও) হাদিস থেকে রিচার্স করেছেন যে, ঐ ব্যক্তিও মুক্তি প্রাপ্ত হবে, যে অন্তর দিয়ে ঈমান এনেছে, কিন্তু কালেমা পড়ার সময় পায়নি এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হয়ে গেছে। সূত্র: কাশফুল বারি শরহুল সহিহিল বুখারি-২/১৯৯


তৃতীয় কথা হলো, কোন কাফের যদি কালেমা পড়ে তবে তাকে মুমিন হিসেবে ধর্তব্য হবে। দলিল-


قَالَ سَمِعْتُ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ بَعَثَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْحُرَقَةِ فَصَبَّحْنَا الْقَوْمَ فَهَزَمْنَاهُمْ وَلَحِقْتُ أَنَا وَرَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ رَجُلًا مِنْهُمْ فَلَمَّا غَشِيْنَاهُ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَكَفَّ الْأَنْصَارِيُّ فَطَعَنْتُهُ بِرُمْحِيْ حَتَّى قَتَلْتُهُ فَلَمَّا قَدِمْنَا بَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا أُسَامَةُ أَقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ قُلْتُ كَانَ مُتَعَوِّذًا فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى تَمَنَّيْتُ أَنِّيْ لَمْ أَكُنْ أَسْلَمْتُ قَبْلَ ذَلِكَ الْيَوْمِ. وفي روايةٍ: فَقالَ رسولُ اللَّه ﷺ: أَقَالَ: لا إِلهَ إِلَّا اللَّهُ وَقَتَلْتَهُ؟! قلتُ: يَا رسولَ اللَّهِ! إِنَّمَا قَالَهَا خَوْفًا مِنَ السِّلاحِ، قَالَ: أَفَلا شَقَقْتَ عَنْ قَلْبِهِ حَتَّى تَعْلَمَ أَقَالَهَا أَمْ لا؟! فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى تَمَنَّيْتُ أَنِّي أَسْلَمْتُ يَومَئذٍ. فَكيْفَ تَصْنَعُ بلا إِله إِلَّا اللَّهُ إِذا جاءَت يوْمَ القيامَةِ؟ وفي روايةٍ: قَال: يَا رسولَ اللَّه! اسْتَغْفِرْ لِي، قَالَ: وكَيف تَصْنَعُ بِلا إِله إِلَّا اللَّهُ إِذا جاءَت يَوْمَ القِيامَةِ؟! فَجَعَلَ لا يَزيدُ عَلى أَنْ يَقُولَ: كيفَ تَصْنَعُ بِلا إِلهَ إِلَّا اللَّهُ إِذَا جاءَتْ يَوْمَ القِيامَةِ؟! رواه مسلم.

অর্থ: ওসামা ইবনে জায়েদ রা বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে হুরকা গোত্রের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। আমরা প্রত্যুষে গোত্রটির উপর আক্রমণ করি এবং তাদেরকে পরাজিত করি। এ সময়ে আনসারদের এক ব্যক্তি ও আমি তাদের হুরকাদের একজনের পিছু ধাওয়া করলাম। আমরা যখন তাকে ঘিরে ফেললাম তখন সে বলে উঠল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। এ বাক্য শুনে আনসারি তার অস্ত্র সামনে নিলেন। কিন্তু আমি তাকে আমার বর্শা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে ফেললাম। আমরা মদিনায় ফিরার পর এ সংবাদ নবি (ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি বললেন, হে ওসামা! ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পরেও তুমি তাকে হত্যা করেছ? আমি বললাম, সে তো জান বাঁচানোর জন্য কালিমা পড়েছিল। এর পরেও তিনি এ কথাটি ‘হে ওসামা! ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরেও তুমি তাকে হত্যা করেছ’ বারবার বলতে থাকলেন। এতে আমার মন চাচ্ছিল যে, হায়, যদি সেই দিনটির পূর্বে আমি ইসলামই গ্রহণ না করতাম। তাখরিজ: বুখারি-৪২৬৯; মুসলিম-৯৬


চতুর্থ কথা হলো, খাতনা করা ফরজ নয়, উনার কথা সঠিক। যদি নব মুসলিম ভয় পায়, কষ্টের কারণ হয়, তাহলে তার জন্য রুখসত আছে। দলিল- 

لكن صرح الفقهاء بأن الكبير إذا خاف على نفسه من الختان سقط عنه، 

যাইহোক, ফোকাহায়ে কেরাম বলেছেন যে যদি একজন প্রাপ্তবয়স্ক নিজের জন্য খৎনা করার ভয় পান তবে তা মওকুফ করা হবে। যেমন, আল্লামা ইবনে কুদামা রহ. বলেন,

ابن قدامة: وإن أسلم الرجل، فخاف على نفسه من الختان، سقط عنه؛ لأن الغسل، والوضوء، وغيرهما يسقط إذا خاف على نفسه منه، فهذا أولى، وإن أمن على نفسه، لزمه فعله). انتهى.

 যদি কোন ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে এবং সুন্নতের কারণে নিজের জন্য ভয় পায়, তাহলে তা মওকুফ হয়; কেননা গোসল, ওযু ও অন্যান্য জিনিস বাতিল হয়ে যায় যদি সে নিজের জন্য ভয় করে, তাই এটিই উত্তম এবং যদি সে নিজের ব্যাপারে নিরাপদ থাকে তবে তার জন্য ওয়াজিব। সূত্র: আলমুগনি-১/১০১



সারকথা হলো,  প্রকৃত মুমিনের কাজ তো হলো ঈমান আনার সাথে সাথে সমস্ত পাপকর্ম, কাফের বেঈমানদের সংস্কৃতি রীতি নীতি পরিত্যাগ করা। কিন্তু তিনি নিজের ঈমান প্রকাশ করা অপরাগতা প্রকাশ করেছেন। 


তার ঈমানের কারণে অবশ্যই নাজাতের আশা করা যায় এবং সাধ্যানুসারে আল্লাহকে ভয় করার চেষ্টা করলে আল্লাহ তাকে অবশ্যই ক্ষমা করবেন। দলিল-


فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ 

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। সূরা তাগাবুন-১৬



  والله اعلم بالصواب