আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-২২২: কুরবানীর গোশতকে তিনভাগ করার বিধান কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-২২২:  কুরবানীর গোশতকে তিনভাগ করতে হবে এমন কোনো দলিল আছে?? তারিখ-০৬/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি

 মাওলানা সালেহ আহমদ আলীকদম, বান্দরবান থেকে


জবাব প্রথম কথা হলোযদি মান্নতের কুরবানি হয়কুরবানি দাতা ও ধনী ব্যক্তি/হাশেমি বংশ খেতে পারবে না।  সূত্রফাতাওয়া কাসিমিয়া-১৭/৮২-৮৩


দ্বিতীয় কথা হলো, ফিকহি হানিফি ও হাম্বলি মতে, স্বাভাবিক কুরবানি হলেএর গোশত তিন ভাগ করা(নিজে,আত্মীয়প্রতিবেশিমুস্তাহাব বা সর্বোত্তম পদ্ধতি।  যেমন,

وهو رأي الحنفيّة والحنابلة باستحباب تقسيم الأُضحية إلى ثلاثة أجزاء، ثلث للفقراء، وثلث للمضحي، وثلث للإهداء، وقال الحنفيّة إنّ الأفضل للمُضحي إن كان مُوسِراً أن يتصدق بالثلثين، ويأكل الثّلث.

محمد بن أحمد بن أبي أحمد، أبو بكر علاء الدين السمرقندي (1414 هـ - 1994 م)، تحفة الفقهاء (الطبعة الثانية)، بيروت: دار الكتب العلمية، صفحة 87، جزء 3. بتصرّف.

হানাফী ও হাম্বলীদের অভিমত যে, কুরবানীকে তিন ভাগে ভাগ করা মুস্তাহাব: এক তৃতীয়াংশ গরীবদের জন্য, এক তৃতীয়াংশ কুরবানী দাতার জন্য এবং এক তৃতীয়াংশ উপহারের জন্য হানাফীগণ বলেছেন, কুরবানীর জন্য উত্তম। যদি সে বিত্তশালী হয়, দুই তৃতীয়াংশ সদকা করবে এবং এক তৃতীয়াংশ খাবে। সূত্র: তুহফাতুল ফুকাহা-৩/৮৭; কিতাবুল মুগনি-৯/৩৫৫



Surah Al-Hajj, Verse 28:

لِّيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ

যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থান পর্যন্ত পৌছে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করে তাঁর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ করার সময়। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দুঃস্থ-অভাবগ্রস্থকে আহার করাও। সূরা হজ-২৮


«كلوا وأطعموا وادخروا»

 রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরবানির গোশত সম্পর্কে বলেছেন-  ‘তোমরা নিজেরা খাও ও অন্যকে আহার করাও এবং সংরক্ষণ কর।’ বোখারি-৫৫৬৯


আহার করাও’ বাক্য দ্বারা অভাবগ্রস্থকে দান করা ও ধনীদের উপহার হিসেবে দেয়াকে বুঝায়।


আলকামা বলেনআবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমার হাতে কুরবানীর পশু পাঠান এবং নির্দেশ দেনকুরবানীর দিন একে যবেহ করবেনিজে খাবেমিসকীনদেরকে দেবে এবং আমার ভাইয়ের ঘরে পাঠাবো। সূত্রআস-সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী: ১০২৩৮


আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রা.) তার ইহুদী প্রতিবেশীকে দিয়ে গোশত বণ্টন শুরু করেছিলেন। বুখারীআদাবুল মুফরাদহাদীস নং ১২৮সনদ সহীহ


قال ابن قدامة: ولنا ما روي عن ابن عباس في صفة أضحية النبي صلى الله عليه وسلم قال: ويطعم أهل بيته الثلث، ويطعم فقراء جيرانه الثلث، ويتصدق على السؤال بالثلث، رواه الحافظ أبو موسى الأصفهاني في الوظائف، وقال: حديث حسن.

ইবনু কুদামাহ বলেন: আমার কাছে কুরবানীর বর্ণনা সম্পর্কে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: তিনি তার পরিবারকে এক তৃতীয়াংশ খাওয়ান, তার প্রতিবেশীদের এক তৃতীয়াংশ খাওয়ান  এবং এ তৃতীয়াংশ ফকির-মিসকিনকে সদকা করা। সূত্র: ফিকহুল ইবাদাত, আলহাদি ওয়াল উদহিয়া-৮০১৯৫; কিতাবুল মুগনি-৯/৩৫৫

নোট: আসারটি সনদ হাসান ।



সারকথা হলো, তিনভাগ করা জরুরি নয়। তবে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবেশি ও আত্মীয়দের হক আছে, সেটাও কুরবানির সময় আদায় করা উচিত।



والله اعلم بالصواب