জিজ্ঞাসা-২১৬: গরুটি সম্পূর্ণ সুস্থ,, কিন্তু পায়ে আঁচিলের মত (রং দেওয়ার কারনে এমনটা দেখাচ্ছে) একটা গোস্তের টুকরা। আপনাদের নিকট জানতে চাচ্ছি,, এটা দিয়ে কুরবানি সহিহ হবে কিনা???। তারিখ-০৫/-৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
হাফেজ মাওলানা মোঃ ইমারাত হোসেন যশোর থেকে---
জবাব: প্রধান চারটি ত্রুটি থাকলে ঐ পশু দ্বারা কুরবানি জায়েজ নেই। দলিল:
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ فَيْرُوزَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، رَفَعَهُ قَالَ " لاَ يُضَحَّى بِالْعَرْجَاءِ بَيِّنٌ ظَلَعُهَا وَلاَ بِالْعَوْرَاءِ بَيِّنٌ عَوَرُهَا وَلاَ بِالْمَرِيضَةِ بَيِّنٌ مَرَضُهَا وَلاَ بِالْعَجْفَاءِ الَّتِي لاَ تُنْقِي " .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ فَيْرُوزَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عُبَيْدِ بْنِ فَيْرُوزَ عَنِ الْبَرَاءِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
১৫০৩। আলী ইবনে হুজর (রাহঃ) ......... বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ) থেকে মারফু‘ হাদীস বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, খোঁড়া পশু যার খোঁড়া হওয়া স্পষ্ট, কানা পশু যার অন্ধত্ব সুস্পষ্ট, রুগ্ন পশু যার রোগ সুস্পষ্ট, ক্ষীণ পশু যার হাড্ডির মগজ পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে-এমন জন্তুর কুরবানী হবে না।
হান্নাদ (রাহঃ) বারা (রাযিঃ) থেকে উক্ত মর্মে বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান-সহীহ। উবাইদা ইবনে ফায়রুয-বারা (রাযিঃ) সূত্র ছাড়া এটি সম্পর্কে আমরা অবগত নই। আলিমদের এই হাদীস অনুসারে আমল রয়েছে।
Narrated Al-Bara’ bin ’Azib:
A Marfu’ narration (from the Prophet (ﷺ)), saying: "A crippled animal whose limp is obvious is not to be slaughtered as sacrifice, nor an animal with a bad eye whose blindness is obvious, nor a sick animal whose sickness is obvious, nor an emaciated animal that has no marrow (in its bones)."
—জামে' তিরমিযী, হাদীস আন্তর্জাতিক নং ১৪৯৭; ইবনে মাজাহ ৩১৪৪
বিস্তারিত হলো:
১. দৃষ্টিশক্তি না থাকা। যে পশুর দুই চোখ বা এক চোখ পুরোপুরি অন্ধ, অথবা এক তৃতীয়াংশের বেশি নষ্ট হয়েছে এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে না।
২. শ্রবণশক্তি না থাকা।
৩. অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ হওয়া। কোরবানির পশুর হাড়ের মগজ শুকিয়ে গেলে তা দিয়ে কোরবানির করা যাবে না। আর হাড়ের মগজ না শুকালে কোরবানি করা যাবে।
৪. এই পরিমাণ লেংড়া যে জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না। যে পশু এমন খোঁড়া যে তিন পায়ের ওপর ভর করে চলাচল করে, চতুর্থ পা মাটি স্পর্শ করে না কিংবা স্পর্শ করলেও তাতে ভর দিতে পারে না এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে না। তবে জবাইয়ের সময় মাটিতে শোয়াতে গিয়ে পশুর পা ভেঙ্গে গেলে ওই পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে।
৫. লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা।
৬. জন্মগতভাবে কান না থাকা।
৭. কানের বেশির ভাগ কাটা। পশুর কানের এক-তৃতীয়াংশের বেশি কাটা থাকলে তা দিয়ে কোরবানি করা যাবে না।
৮. গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া।
৯. পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া।
১০. বেশির ভাগ দাঁত না থাকা।
১১. রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া।
১২. ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা।
১৩. গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা।
সূত্র: জামে তিরমিযী ১/২৭৬; সুনানে আবু দাউদ ৩৮৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; রদ্দুল মুহ্তার ৬/৩২৪; আলমগীরী ৫/২৯৭
সুতরাং আপনার প্রশ্নে বর্ণিত পশুটির ত্রুটি মৌলিক ত্রুটি নয়, সুতরাং এ দ্বারা কুরবানি সহিহ হবে। তবে এর চেয়ে ভাল পশু পেলে সেটা দ্বারা কুরবানি আরও উত্তম হবে।
والله اعلم بالصواب