আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৩৬৩: ইমাম না থাকলে জামে মসজিদে জুমার জামাত বন্ধ রাখা জায়েজ আছে?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৩৬৩:

আসসালামু আলাইকুম

প্রশ্ন : ইমাম না থাকলে জামে মসজিদে জুমার জামাত বন্ধ রাখা জায়েজ আছে?

(যে কয় জুমা ইমাম থাকবে না অন্য মসজিদে জুমা পড়বে) তারিখ: ২/১২/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি


মাওলানা রায়হানুল মোবারক সোনারগাঁনারায়ণগঞ্জ  থেকে 

 

জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো  স্বাভাবিক কোনো অবস্থা বিরাজ করলে কিংবা কোনো ধরনের শরয়ি কারণ ছাড়া  শরয়ি জামে মসজিদে জুমাআর জামাত  বন্ধ করা জায়েজ নেই।  কোন মসজিদে জুমাআর জামাত চালু হওয়ার পর বন্ধ করে দেওয়া মসজিদ বিরান করার অন্তর্ভুক্তযা করতে আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন। দলিল:

 

وَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللّٰہِ اَنۡ یُّذۡکَرَ فِیۡہَا اسۡمُہٗ وَسَعٰی فِیۡ خَرَابِہَا ؕ

অর্থাৎ যে আল্লাহর মসজিদসমূহে তাঁর নাম নিতে বাধা দেয় এবং একে বিরান করার চেষ্টা করে। সূরা বাকারা-১১৪

 

তাফসির/ব্যাখ্যামুফতী শফী রাহ. সূরা বাকারার ১১৪ নং আয়াত (অর্থাৎ যে আল্লাহর মসজিদসমূহে তাঁর নাম নিতে বাধা দেয় এবং একে বিরান করার চেষ্টা করে...)-এর অধীনে লিখেছেন(এ থেকে) বোঝা গেল যেমসজিদ বিরান করার যত পন্থা আছে সবই নিষিদ্ধ। এতে খোলাখুলিভাবে মসজিদ বিধ্বস্ত করা যেমন শামিল তেমনি এমন কোনো উপায়-উপকরণ সৃষ্টি করাও শামিলযাতে তা বিরান হয়ে যায়। মসজিদের বিরান এই যেতাতে নামাযের জন্য মানুষজন আসে না (জামাত বন্ধ করা) বা কম হয়। কেননা মসজিদের প্রকৃত আবাদ প্রাচীর বা কারুকার্য দ্বারা নয়আল্লাহর যিকিরকারীদের দ্বারা...  সূত্রতাফসীরে মাআরিফুল কুরআন-৫৭ পৃ. সংক্ষিপ্ত মাওলানা মহিউদ্দিন খান রহ. অনূদিত


এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছেহজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিতহজরত রাসূলুল্লাহ () বলেনমসজিদ হলো- 

عنْ أَنَسٍ رضي الله عنه، ، إِنَّمَا هِيَ لِذِكْرِ الله - عزّ وجل -، وَالصَّلاَةِ، وَقِرَاءَةِ الْقُرْآنِ»؛ رواه مسلم: 285.

অর্থাৎ নিশ্চয় সজিদ হলো- নামাজজিকির ও কোরআন পড়ার জন্য। তাখরিজ:  মুসলিম-২৮৫

ব্যাখ্যা: মসজিদ হলো নামাজ তথা জামাতের জন্য, সুতরাং জামাত বন্ধ করা যাবে না।

 

দ্বিতীয় কথা হলোমসজিদ  আবাদ তথা রক্ষণাবেক্ষণ করা মধ্যে ইমাম নিয়োগ করা অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং  ইমাম ছুটিতে গেলে/না থাকলেনতুন ইমামের ব্যবস্থা করা এলাকাবাসি/কমিটি/কর্তৃপক্ষের পবিত্র  দায়িত্ব। যদি এ দায়িত্বে অবহেলা করেতাহলে সবাই গুনাহগার হবে। যেমন,

 

اِنَّمَا یَعۡمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰهِ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ

অর্থনিশ্চয়ই মসজিদ আবাদ করবে যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। সুরা তওবা- ১৮

  

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «أَلا كلُّكُمْ راعٍ وكلُّكُمْ مسؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনরাসূলুল্লাহ () বলেছেনঃ সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই এক একজন দায়িত্বশীলআর (পরকালে) নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে তোমাদের প্রত্যেককেই জবাবদিহি করতে হবে। তাখরিজ: বুখারি-৭১৩৮মুসলিম ১৮২৯আবূ দাঊদ ২৯২৮তিরমিযী ১৭০৫আহমাদ ৫১৬৭সহীহ আত্ তারগীব ১৯২২

 

সারকথা হলো, আপনার প্রশ্ন উল্লিখিত মসজিদটি জামে মসজিদ হয়, জুমা বন্ধ করা যাবে না আর যদি জামে মসজিদ না হয়, অস্থায়ীভাবে জুমা আদায় করা হয়, তাহলে জামাত  বন্ধ করলে কোন সমস্যা নেই।

والله اعلم بالصواب