জিজ্ঞাসা-১৩১৫২:
আসসালামু আলাইকুম।
একজন ব্যক্তি জানতে চেয়েছেন মাগরিবের ফরজ নামাজে যদি তৃতীয় রাকাতেও সূরা মিলিয়ে ফেলে তাহলে করণীয় কি।
তারিখ:২২/১২/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ঝালকাঠি থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
চার রাকাত বা তিন রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের শেষ দুই/এক রাকাতে শুধু সুরা ফাতিহা পড়া সুন্নত। সূরা মেলানো ওয়াজিব নয়।
দ্বিতীয় কথা হলো, কেউ যদি ফরজ নামাজে ইচ্ছা করে তৃতীয়/চতুর্থ রাকাতে সূরা মিলায়, তাহলে মাকরুহ তানজিহ হবে আর যদি কেউ ভুলবশত কোনো আয়াত বা সূরা পড়ে ফেল, তাহলে মাকরুহ তানজিহ হবে না।
তবে উভয় অবস্থাতেই সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। দলিল
وأما ضم السورة إلى الفاتحة في الركعة الثالثة والرابعة فمكروه تنزيها لا تحريما، وقد فصل ذلك ابن عابدين في الحاشية أيضا فقال: لايكره تحريما بل تنزيها لأنه خلاف السنة. قال في المنية وشرحها: فإن ضم السورة إلى الفاتحة ساهيا يجب عليه سجدتا السهو في قول أبي يوسف لتأخير الركوع عن محله، وفي أظهر الروايات لا يجب لأن القراءة فيهما مشروعة من غير تقدير، والاقتصار على الفاتحة مسنون لا واجب.
অর্থাৎ তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলালে সেটা মাকরূহে তানযীহী হবে, মাকরূহে তাহরীমী নয়। আল্লামা ইবনু আবেদীন শামী স্বীয় ব্যাখ্যাগ্রন্থেও এবিষয়ে সবিস্তারে আলোকপাত করেছেন। তিনি বলেন, "এটি মাকরূহে তানযীহী হবে, মাকরূহে তাহরীমী নয়। কারণ এটা সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ। " মুনইয়া" কিতাব ও তার ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলা হয়েছে যে, তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা'র সাথে ভুলক্রমে অন্য কোন সূরা মিলিয়ে ফেললে ইমাম আবূ ইউসূফ (রাহি.) এর মতে তাতে সিজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে। কারণ এর মাধ্যমে যথাসময়ে রূকূ আদায়ে বিলম্ব করা হয়েছে। তবে যাহিরে রিওয়াতের বিশুদ্ধমতে, তাতে সিজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা। কারণ তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে কোন প্রকার সীমা নির্ধারণ করা ব্যতিরেকেই কিরাআত করার বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। আর শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পাঠের উপরই সীমাবদ্ধ থাকা সুন্নাহ। ওয়াজিব নয়। (আর ওয়াজিব তরকের কারণে সিজদায়ে সাহু আবশ্যক হয়, সুন্নাহ তরকের কারণে নয়।)
সূত্র: ফাতাওয়ায়ে শামি : ২/১৫০
সারকথা হলো, মাগরিবের ফরজ নামাজে যদি তৃতীয় রাকাতেও সূরা মিলিয়ে ফেলে, স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শেষ করবে। নামাজ সহিহ হয়ে যাবে, অসুবিধা নেই।
والله اعلم بالصواب