আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৫০১: আজানের সময় কানে আঙুল দেওয়ার হুকুম কী

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১২৫০১

আসসালামু আলাইকুম।

আজান বিষয়ে জানতে চাওয়া। 

আজান দেওয়ার সময়ে কানে আংগুল দেওয়া কতটুকুন জরুরী ,কানে আংগুল দেওয়া কি, এটা সুন্নাহ কিনা, না দিলে কি অসুবিধা ,,জানতে চাই।

তারিখ:  ২০/০৩/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা আব্দুস সালাম সাভারঢাকা থেকে

   জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো


وقال النووي رحمه الله : " السنة أن يجعل أصبعيه في صماخي أذنيه ، وهذا متفق عليه ، ونقله المحاملي في المجموع عن عامة أهل العلم .


আল্লামা নববি রহ. বলেন, তার জন্য সুন্নাত হল তার কানের গোশতে তার দুটি আঙ্গুল রাখা, এবং এটি একমত, এবং তিনি এটা নকল করেছেন আল-মাহামালি হতে তার মাজমু কিতাবে, সাধারণত আহলে ইলেমদের নিকট এটি সুন্নাহ। সূত্র: শরহ আল-মুহাদ্দাব (3/113)

দলিল:

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ بِلاَلاً يُؤَذِّنُ وَيَدُورُ وَيُتْبِعُ فَاهُ هَا هُنَا وَهَا هُنَا وَإِصْبَعَاهُ فِي أُذُنَيْهِ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي قُبَّةٍ لَهُ حَمْرَاءَ أُرَاهُ قَالَ مِنْ أَدَمٍ فَخَرَجَ بِلاَلٌ بَيْنَ يَدَيْهِ بِالْعَنَزَةِ فَرَكَزَهَا بِالْبَطْحَاءِ فَصَلَّى إِلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ الْكَلْبُ وَالْحِمَارُ وَعَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَرِيقِ سَاقَيْهِ . قَالَ سُفْيَانُ نُرَاهُ حِبَرَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي جُحَيْفَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَعَلَيْهِ الْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ يُدْخِلَ الْمُؤَذِّنُ إِصْبَعَيْهِ فِي أُذُنَيْهِ فِي الأَذَانِ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ وَفِي الإِقَامَةِ أَيْضًا يُدْخِلُ إِصْبَعَيْهِ فِي أُذُنَيْهِ . وَهُوَ قَوْلُ الأَوْزَاعِيِّ . وَأَبُو جُحَيْفَةَ اسْمُهُ وَهْبُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ السُّوَائِيُّ .

আযানের সময়ে কানে আঙ্গুল প্রবেশ করান।


অর্থ: মাহমূদ ইবনে গায়লান (রাহঃ) .... আবু জুহায়ফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন আমি বিলাল (রাযিঃ) কে দেখেছি তিনি আযান দিচ্ছিলেন এবং (হায়্যা আলা বলার সময়) ঘুরছিলেন আর তিনি এদিকে এবং ওদিকে তাঁর মুখ ফিরাচ্ছিলেন। তাঁর দুই আঙ্গুল ছিল তাঁর কানে। তাখরিজ: জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ১৯৭ (আন্তর্জাতিক নং ১৯৭)



নোট:

ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ আবু জুহায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহ বর্ণিত হাদিসটি হাসান ও সহীহ। আলিমগণ এই হাদিস অনুসারে আমল গ্রহণ করেছেন। তাঁরা বলেন আযানের সময় মুআয্‌যিন কর্তৃক স্বীয় কর্ণদ্বয়ে আঙ্গুল প্রবেশ করার মুস্তাহাব। কোন কোন আলিম বলেন ইকামত দেওয়ার সময়ও কানে আঙ্গুল প্রবেশ করাতে হবে। এ হল ইমাম আওযাঈ (রাহঃ) এর অভিমত। আবু জুহায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু এর নাম ওয়াহাব ইবনে আবদিল্লাহ আস সুওয়াঈ।


হাদীসের ব্যখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ এবং حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ বলার সময় যথাক্রমে মুখ ডান এবং বামে ঘুরানো সুন্নাত। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৮৭)


এ হাদীস থেকে এটিও প্রমাণিত হয় যে, আযানের সময় কানে আঙ্গুল দেয়া সুন্নাত। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৮৮)


তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)


সারকথা হলো, আজানের সময় কানে আঙ্গুল রাখা সুন্নাত বলতে সুন্নাতে জায়েদা বা মুস্তাহাব, জরুরি নয়। তাই কেউ তরক বা ছেড়ে দিলে গুনাহগার হবে না।

 তবে এ সময় কানে আঙ্গুল দেওয়া হিকমাহ রয়েছে। যেমন, আজানের ধ্বনি মুয়াজ্জিনের, কানের পর্দার, মস্তিষ্কের ক্ষতি করবে,

 আমাদের শ্রবণযন্ত্রের স্বাভাবিক ধারণ ক্ষমতা ১-৭৫ ডেসিবল এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। উক্ত মাত্রার উপরের শব্দ মানুষের জন্য ক্ষতিকর।

 মানুষের স্বাভাবিক শ্রবণ ক্ষমতায় ঊর্ধ্বে সৃষ্ট যে কোনো শব্দ যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায় তাই হলো শব্দ দূষণ।

 

  1. والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক