জিজ্ঞাসা-১২৩৪৬
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
তাশাহুদ সম্পর্কে মিরাজের সাথে সম্পৃক্ত একটা ঘটনা যা হলো আল্লাহ এবং রাসুলের মধ্যে কথোপকথন যেমন-আপনি বন্ধুর কাছে আসলেন কি নিয়ে আসছেন তিনি বললেন আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি.......
এরপরে আল্লাহ বললেন আসসালামু আলাইকা আইয়ুহাননাবিয়্যু.....
এরপরে ফেরেস্তারা
এই ঘটনাটির পক্ষে হাদিস বা আসার প্রয়োজন
উল্লেখ্যঃ আবুল কালাম আজাদ বাশার সাহেবের মিরাজ ও আধুনিক বিজ্ঞান বইয়ে এই বিষয়টাকে ভিত্তিহীন লিখেছেন ওইটা পড়েই ডাউট টা আসলো। তারিখ: ১৯/১১/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মো: নজরুল ইসলাম চাঁদপর থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, মিরাজ রজনিতে তাশাহুদের ঘটনা সম্পর্কে হাদিসের কিতাবে পাওয়া যায় না। তবে ইমাম কুরতুবি রহ. এবং বাহরুল উলুম তথা তাফসীরে শমরকন্দি, সূরা বাকারার ২৮৫ নং আয়াতের তাফসির করতে ইবনে আব্বাস রা. মুজাহিদ (রহ.) ও ইমাম হাসান বসরি (রহ.) সনদে বর্ণনা করেছেন। যেমন,
{ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَـٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ أَحَدٖ مِّن رُّسُلِهِۦۚ وَقَالُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ غُفۡرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيۡكَ ٱلۡمَصِيرُ} (285)
فيه إحدى عشرة مسألة :
الأولى : قوله تعالى : " آمن الرسول بما أنزل إليه من ربه " روي عن الحسن ومجاهد والضحاك : أن هذه الآية كانت في قصة المعراج ، وهكذا روي في بعض الروايات عن ابن عباس ، وقال بعضهم : جميع القرآن نزل به جبريل عليه السلام على محمد صلى الله عليه وسلم إلا هذه الآية فإن النبي صلى الله عليه وسلم : هو الذي سمع ليلة المعراج ، وقال بعضهم : لم يكن ذلك في قصة المعراج ؛ لأن ليلة المعراج كانت بمكة وهذه السورة كلها مدنية ، فأما من قال : إنها كانت ليلة المعراج قال : لما صعد النبي صلى الله عليه وسلم وبلغ في السماوات في مكان مرتفع ومعه جبريل حتى جاوز سدرة المنتهى فقال له جبريل : إني لم أجاوز هذا الموضع ولم يؤمر بالمجاوزة أحد هذا الموضع غيرك ، فجاوز النبي صلى الله عليه وسلم حتى بلغ الموضع الذي شاء الله ، فأشار إليه جبريل بأن سلم على ربك ، فقال النبي صلى الله عليه وسلم : التحيات لله والصلوات والطيبات . قال الله تعالى : السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته ، فأراد النبي صلى الله عليه وسلم أن يكون لأمته حظ في السلام فقال : السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين ، فقال جبريل وأهل السماوات كلهم : أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمدا عبده ورسوله . قال الله تعالى : " آمن الرسول " على معنى الشكر ؛ أي : صدق الرسول " بما أنزل إليه من ربه " فأراد النبي صلى الله عليه وسلم أن يشارك أمته في الكرامة والفضيلة فقال :
অর্থাৎ হযরত হাসান বসরি রহ., হযরত মুজাহিদ রহঃ, হযরত জাহহাক রহঃ থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় এ আয়াত মিরাজের ঘটনার সময়কার। এমনিভাবে হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকেও কিছু বর্ণনায় তা পাওয়া যায়।
তবে কেউ কেউ বলেছেনঃ পূর্ণ কুরআন জিবরাঈল আঃ হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)এর কাছে নিয়ে এসেছেন এ আয়াত ছাড়া। যা রাসূল মেরাজের রাতে শুনেছেন।
আর কেউ কেউ বলেন, এ আয়াত মিরাজের ঘটনার সময়কার নয়। কেননা, মেরাজের ঘটনা হয়েছে মক্কায়। আর এ পূর্ণ সুরা নাজিল হয়েছে মদীনায়।
তবে যারা বলেন যে, এ আয়াত মেরাজের রাতে নাজিল হয়েছে তারা বলেন, রাসুল (ﷺ)যখন আসমানে উঠলেন এবং উঁচু স্থানে পৌঁছলেন সাথে ছিলেন জিবরাঈল আঃ। এমনকি তারা সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছলেন। তখন তাঁকে জিবরাঈল আঃ বললেন, নিশ্চয় আমি এ স্থান অতিক্রম করতে পারবো না। আর আপনাকে ছাড়া আর কাউকে এ স্থান অতিক্রম করার অধিকার দেয়া হয়নি। তারপর রাসূল (ﷺ) তার অতিক্রম করলেন এবং এমন স্থানে পৌঁছলেন যেখানে আল্লাহ তাআলা তাঁকে পৌঁছাতে চাইলেন। তখন জিবরাঈল আঃ তাঁকে [রাসূল সাঃ] ইশারা করলেন, আল্লাহ তাআলাকে সালাম করার জন্য। তখন রাসূল (ﷺ) বললেন, আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত ত্বায়্যিবাতু। তখন আল্লাহ তাআলা বললেন, আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। তখন রাসূল (ﷺ) চাইলেন সালামের একটি অংশ উম্মতীদের জন্যও বরাদ্দ হোক। তাই তিনি বললেন, আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালেহীন। তারপর জিবরাঈল আঃ এবং আসমানবাসী সবাই বলতে লাগল, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসূলুহু। সূত্র: আল-মাউসুআতুল কুরআনিয়া, আলজামেউ লিআহকামিল কুরআন-৪২৫ পৃ. বাহরুল উলুম তথা তাফসীরে শমরকন্দি
উল্লেখখিত বর্ণনা বিষয়ে ওলামায়ে কেরামগনের মতভেদ দেখা দেয়। দুটি মত পাওয়া যায়।
প্রথম মত: ওলামাদের েএকটি জামাত উক্ত রেওয়ায়েত গ্রহণ করতে নারাজ। তাদের দলিল হলো,
হাদিসটির সনদ তাবেয়ি পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে। তারপর আর কোন সনদ উল্লেখ করেননি। এবং কোন কিতাবের হাওলা উল্লেখ করেননি। তাছাড়া ইমাম বাসান বসরি (রহ.) এর জন্ম ৬৪২, মৃত্যু-৭২৮ খ্রিষ্টাব্দ আর ইমাম কুরতুবি (রহ.) জন্ম-১২১৪, মৃত্যু-১২৭৩ খ্রিষ্টাব্দ।
والله اعلم بالصواب