আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩১৩৮: বৈপিত্রেয় ভাই-বোন মৃত ব্যক্তির মিরাস পাবে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩১৩৮: 

আসসালামু আলাইকুম।  মুহতারাম ভাই,আমার একটি প্রশ্ন। এক ব্যক্তি মারা গেছে তার কোন স্ত্রী -সন্তান নাই, আছে একজন সহোদর ভাই আর বৈপিত্রেয় ভাই (মায়ের পক্ষের ভাই) আছে দুজন আর বোন আছে একজন। এ ক্ষেত্রে সহোদর ভাই থাকতে অন্য ভাই বোনেরা সম্পদ পাবে কিনা, পেলে কত অংশ দলিল সহ জানানোর অনুরোধ করছি। 

তারিখ:৩০/১১/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা নুরুল ইসলাম, বরগুনা   থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো,

বৈপিত্রেয় ভাই ১/৩ অংশ পাবে যখন সেখানে দুই বা ততোধিক বৈপিত্রেয় ভাই থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।

(২). সহোদর ভাই একমাত্র অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে অবশিষ্ট সম্পতির উত্তরাধিকারী হয়।

দলিল- 


بَابُ مِيرَاثِ الوَلَدِ مِنْ أَبِيهِ وَأُمِّهِ وَقَالَ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ: «إِذَا تَرَكَ رَجُلٌ أَوِ امْرَأَةٌ بِنْتًا فَلَهَا النِّصْفُ، وَإِنْ كَانَتَا اثْنَتَيْنِ أَوْ أَكْثَرَ فَلَهُنَّ الثُّلُثَانِ، وَإِنْ كَانَ مَعَهُنَّ ذَكَرٌ بُدِئَ بِمَنْ شَرِكَهُمْ فَيُؤْتَى فَرِيضَتَهُ، فَمَا بَقِيَ فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الأُنْثَيَيْنِ»

6732 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَلْحِقُوا الفَرَائِضَ بِأَهْلِهَا، فَمَا بَقِيَ فَهُوَ لِأَوْلَى رَجُلٍ ذَكَرٍ»

যায়দ ইবনে সাবিত (রাযিঃ) বলেন, কোন পুরুষ বা নারী যদি কন্যা সন্তান রেখে যায় তাহলে সে অর্ধাংশ পাবে। আর যদি তাদের সংখ্যা দুই বা ততোধিক হয় তারা পাবে দুই তৃতীয়াংশ। আর যদি উক্ত কন্যা বা কন্যা সমূহের সঙ্গে পুরুষ থাকে তাহলে প্রথমে অংশীদারদেরকে তাদের প্রাপ্ত দেয়ার পর বাকি অংশ দুই নারী সমান এক পুরুষ ভিত্তিতে বণ্টন করা হবে।

৬২৭৬। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মীরাস তার হকদারদেরকে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকে, তা নিকটতম পুরুষের জন্য।


Narrated Ibn `Abbas:

The Prophet (ﷺ) said, "Give the Fara’id (the shares of the inheritance that are prescribed in the Qur’an) to those who are entitled to receive it. Then whatever remains, should be given to the closest male relative of the deceased ."

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬২৭৬ (আন্তর্জাতিক নং ৬৭৩২)


ব্যাখ্যা:

وهذه الفرائض لما أعطينا الزوج النصف والأم أو الجدة السدس، والإخوة لأم أعطيناهم الثلث، والله أعطاهم الثلث بنص القرآن، ما بقي للأخ الشقيق فيسقط، كما لو كان أخًا لأب، هذا هو الصواب لهذا الحديث الصحيح.

অর্থাৎ মীরাসী সম্পদের বন্টনের নীতিমালার আলোকে আলোচ্য ক্ষেত্রে স্বামী পেলেন সমুদয় সম্পত্তির অর্ধেকাংশ, মা কিংবা নানী পেলেন এক-ষষ্ঠমাংশ, বৈপিত্রেয় ভাইয়েরা পেলেন এক-তৃতীয়াংশ। উল্লেখ্য যে, স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই পবিত্র কুরআনের সুস্পষ্ট ভাষ্য দ্বারা বৈপিত্রেয় ভ্রাতাগণের জন্য মীরাসী সম্পদের অংশ বরাদ্দ করে দিয়েছেন। অতএব আলোচ্য মাসয়ালায় যেহেতু আর কোন সম্পদ অবশিষ্ট রইলোনা, তাই এক্ষেত্রে সহোদর ভাই বঞ্চিত হয়ে যাবেন। বৈমাত্রেয় ভাই থাকলে তিনিও এক্ষেত্রে বঞ্চিত হতেন। 

বক্ষমান সহীহ হাদীসের এটিই হলো বিশুদ্ধতম প্রায়োগিক ব্যাখ্যা। সূত্র: শায়েখ ইবনে বাজ এর ওয়েবসাইট থেকে 


فالأخ لأب يرث إجماعا ما لم يحجب وهو من العصبات، يحجبه الأب والابن وابن الابن والأخ لأبوين. وأما الأخ لأم فيحجبه أب وجد وولد وولد ابن وإن سفل، والولد هنا يشمل الذكر والانثى، والإخوة لأم من أصحاب الفروض، وانظر الفتوى رقم: 34364.

অর্থাৎ আসাবা'র অন্তর্ভুক্ত কোন আত্মীয় বিদ্যমান না থাকলে বৈমাত্রেয় ভাই সর্বসম্মতভাবে মিরাসী সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে। তবে পিতা, পুত্র, দৌহিত্র, ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের উপস্থিতিতে সে বঞ্চিত হবে। অন্যদিকে পিতা, দাদা, সন্তান ( চাই সে পুত্রসন্তান হোক কিংবা কন্যা সন্তান), দৌহিত্র কিংবা তদনিম্ন প্রপৌত্র- তাদের উপস্থিতিতে বৈপিত্রেয় ভাই বঞ্চিত হবে। প্রকাশ থাকে যে, বৈপিত্রেয় ভাই পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত 'যাবিল ফুরুজ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত মীরাসী সম্পত্তির হকদার ব্যক্তিবর্গের অন্তর্ভুক্ত। সূত্র: ফিকহুল মাওয়ারিস-৩৪৩৬৪


দ্বিতীয় কথা হলো, তারা প্রত্যেকে অংশ পাবে।

 ধরুন,

মোট জমি= ১০০ শতাংশ

সৎ ভাই (বৈপিত্রেয়)(১) ১১.১০ শতাংশ 

সৎ ভাই (বৈপিত্রেয়)(২) ১১.১০ শতাংশ 

সৎ বোন (বৈপিত্রেয়) ১১.১০ শতাংশ 

সহোদর ভাই ৬৬.৭০ শতাংশ 


সারকথা হলো,  মোট সম্পত্তির সহোদর ভাই পাবে ২২.২০% , বোন পাবে ১১.১০%, দুই ভাই পাবে ৬৬.৭০%



  والله اعلم بالصواب