হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা শাহ্ আশরাফ 'আলী থানভী রহ. এবং তাসাওউফ
হযরত হাকীমুল উম্মত রহ. এর কাছে চিঠি লেখা ও তাঁর পক্ষ থেকে জবাব
শৈশবে ভাইজান (হযরত যাকী কাইফী রহ.) যখন লেখা শেখেন, তখন ওয়ালিদ সাহেব রহ. (মুফতী শফী রহ.) তাঁকে দিয়ে সর্বপ্রথম হযরত থানভী রহ. এর কাছে চিঠি লেখান। হযরত থানভী রহ. তাঁর সেই চিঠির জবাবও দিয়েছিলেন। সে চিঠিখানিও এক স্বতন্ত্র সবক এবং ভাইজানের জন্যে তো এক মস্ত সম্পদ। হযরত থানভী রহ. সে চিঠিতে লিখেছিলেন-
"প্রিয় বৎস! আস-সালামু 'আলাইকুম। তোমার জন্যে দু'আ। তোমার লেখা দেখে দিল খুশি হয়েছে। তোমার 'ইলমী ও আমলী তারাক্কীর জন্য দু'আ করছি। হাতের লেখা আরও পরিষ্কার করবে। পত্রপ্রাপকের পক্ষে তা সহজ ও আরামদায়ক হয়। এ নিয়তে হস্তাক্ষর সুন্দর করলে ছওয়াবও পাওয়া যায়। দেখ, তোমাকে শৈশব থেকেই সুফী বানিয়ে দিচ্ছি। মাথাব্যাথার এ তাবিজ মাথায় বেঁধে রাখবে। ঘরের সকলকে সালাম ও দু'আ।"
-আশরাফ 'আলী
সাধারণ লোকে মনে করবে, তাসাওউফের সাথে হস্তাক্ষর সুন্দরের কী সম্পর্ক? কিন্তু এটা হযরত হাকীমুল উম্মত থানভী রহ. এরই বৈশিষ্ট্য। তিনি শরী'আত ও তরীকতের গুরুত্বপূর্ণ দাবি পূরণের প্রতি ভক্ত-অনুরক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সামাজিক আদব-কায়দা, আখলাক-চরিত্র, লেনদেনে স্বচ্ছতা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি দ্বীনেরই অন্তর্ভুক্ত বিষয়।
তিনি দ্বীনের গুরুত্বপূর্ণ এসব বিষয়ের প্রতি নিজ ভক্তদের এমন এক সময়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যখন সাধারণভাবে চিন্তাই করা হত না যে, এগুলোও দ্বীনের অংশ। তিনি এসবের প্রতি এতো বেশী গুরুত্ব দিতেন যে, সুলূকের অযীফাসমূহ এবং নফল ইবাদত-বন্দেগীতে কারও কোনও ত্রুটি হলে সেজন্য তিনি তিরষ্কার করতেন না, কিন্তু সামাজিক আদব-কায়দা ও লেনদেন ইত্যাদিতে কোনও ত্রুটি হলে কিংবা *অন্যের কষ্ট হয় এমন কোনও কাজ করে ফেললে হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী রহ. তা কঠিনভাবে ধরতেন।*
*হযরত রহ. এর এ তা'লীম ও তরবিয়াত দ্বারা ভাইজান খুবই প্রভাবিত ছিলেন। তিনি নিজ চলাফেরায় সবসময় লক্ষ রাখতেন, যাতে তাঁর দ্বারা কারও কোনও প্রকার কষ্ট না হয়।*
শাইখুল ইসলাম মুফতী তাকী উসমানী দাঃ বাঃ এর আত্নজীবনীমূলক রচনা 'আমার জীবনকথা' (১ম খণ্ড)
পৃষ্ঠাঃ ৬৪ - ৬৫
অনুবাদঃ মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম
প্রকাশনায়ঃ মাকতাবাতুল আশরাফ
প্রকাশকালঃ জানুয়ারী ২০১৮ ঈসাব্দ