জিজ্ঞাসা-১২৯১০:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
মুহতারাম বিজ্ঞ মুফতি সাহেব, আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় জনৈক মুসল্লী জানতে চেয়েছেন যে, নামাজ,রোজা বা এজাতীয় ফরজ ইবাদত সফর/বিশেষ কারনে সময়ের পরে আদায় করলে কাজা করা যায় কিন্তু সময়ের পূর্বে বিশেষ কারন বশত: আদায় করার কোন বিধান আছে কিনা?
অনুগ্রহ পূর্বক কোরআন ও সহীহ হাদিসের ভিত্তিতে সমাধান প্রদানে বাধিত করবেন।
তারিখ: ২৬/০২/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
হাফেজ হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ সিরাজুল হক হাফিজাহুল্লাহু ঢাকা থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশ হলো রমজান মাসের চাঁদ দেখে রোজা রাখবে। দলিল -
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। সূরা বাকারা-১৮৫
عن ابن عمر أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: "الشهر تسع وعشرون، فلا تصوموا حتى تروا الهلال، ولا تفطروا حتى تروه فإن غم عليكم فأكملوا العدة ثلاثين"
অর্থাৎ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মাসটি হলো ২৯ দিনে, সুতরাং চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোজা রাখবেন না এবং যতক্ষণ না রোজা ভাঙবে না। দেখো, আর যদি তোমার জন্য মেঘলা হয়, তাহলে ত্রিশ দিন পূর্ণ করো। সূত্র: আরশিফু মুলতাকি আহলিল হাদিস -৭/৩৫৩
দ্বিতীয় কথা হলো, রমজানের দুএক আগে রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। দলিল -
1914 - حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لاَ يَتَقَدَّمَنَّ أَحَدُكُمْ رَمَضَانَ بِصَوْمِ يَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ، إِلَّا أَنْ يَكُونَ رَجُلٌ كَانَ يَصُومُ صَوْمَهُ، فَلْيَصُمْ ذَلِكَ اليَوْمَ»
১৭৯৩। মুসলিম ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা কেউ রমজানের একদিন কিংবা দুই দিন আগে থেকে রোযা শুরু করবে না। তবে কেউ যদি এ সময় রোযা পালনে অভ্যস্ত থাকে, তাহলে সে সেদিন রোযা রাখতে পারবে।
Narrated Abu Huraira:
The Prophet (ﷺ) said, "None of you should fast a day or two before the month of Ramadan unless he has the habit of fasting (Nawafil) (and if his fasting coincides with that day) then he can fast that day."
তাখরিজ:বুখারি -১৯১৪
তৃতীয় কথা হলো, সফর বা কোনো কারণে রমজানের রোজা অগ্রিম রোজা রাখার বিষয়ে নবি-সাহাবা- তাবেয়িদের আমল দ্বারা প্রমাণিত নয়।
সারকথা হলো, রোজা বা এজাতীয় ফরজ ইবাদত সফর/বিশেষ কারনে সময়ের পরে আদায় করলে কাজা করা যায় কিন্তু সময়ের পূর্বে বিশেষ কারণ বশত: আদায় করার কোন বিধান নেই, ইসলামি স্কলারগণ বৈধ বলেননি।
والله اعلم بالصواب