জিজ্ঞাসা-১৫১: একজন মানুষের ব্যাপারে জানতে পারলাম, তিনি বিদেশী জাতের বিড়াল পোষেন এবং তা নাকি খুব ভাল দামে বিক্রি করেন। এই বিড়াল বিক্রির টাকা হালাল হবে কি? তারিখ ১২/০৬/২০২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মোঃ আব্দুল মজিদ, যশোর থেকে--
জবাব: এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। যেমন,
ক। প্রথম মত: এ দলে হলো আহলে হাদিস ও ইবনে তাইমিয়া (রহ.) মতে বিড়াল বিতক্রি করা জায়েজ নেই। দলীল-
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، قَالَ سَأَلْتُ جَابِرًا عَنْ ثَمَنِ الْكَلْبِ، وَالسِّنَّوْرِ، قَالَ زَجَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ আবূ যুবায়র (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জাবির (রাযিঃ) এর নিকট কুকুর ও বিড়ালের মূল্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ নবী (ﷺ) এ ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছেন। মুসলিম-3907
আরেকটি হাদিস:
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ ثَمَنِ الْكَلْبِ وَالسِّنَّوْرِ .
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) কুকুর ও বিড়ালের বিক্রয় মূল্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। সুনানে আবু দাউদ-৩৪৭৯
খ। দ্বিতীয়মত: ওলামায়ে আহনাফ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুর, শিকারি কুকুর বিক্রয় জায়েজ এর উপর কিয়াস করে বলেন, তেমনি ভাবে বিড়াল বিক্রয় করা জায়েজ।
প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত-শিকারি কুকুর বিক্রয় জায়েজ তার দলীল:
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ اقْتَنٰى كَلْبًا إِلاَّ كَلْبَ مَاشِيَةٍ أَوْ ضَارِيًا نَقَصَ مِنْ عَمَلِه„ كُلَّ يَوْمٍ قِيرَاطَانِ.
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি পশু রক্ষাকারী কিংবা শিকারী কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালে, তার আমাল থেকে প্রতিদিন দুকীরাত পরিমাণ সাওয়াব কমে যায়। বুখারি- ৫৪৮২; ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৪
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ قَالَ : مَنْ اقْتَنَى كَلْبًا لَيْسَ بِكَلْبِ صَيْدٍ وَلا مَاشِيَةٍ وَلا أَرْضٍ فَإِنَّهُ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِهِ قِيرَاطَانِ كُلَّ يَوْمٍ
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদি পশু অথবা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর পালে ঐ ব্যক্তির প্রত্যেকদিন দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়। সহীহ মুসলিম ১৫৭৫ জামে তিরমিযী ১৪৮৭
عن جابر رضی اللہ عنہ أن النبي صلی اللہ علیہ وسلم نہی عن أکل الہرّة وأکل ثمنہا (مشکاة: ۳۶۱)
قال في المرقاة أکل لحم الہرّة حرام بلا خلاف وأما بیعہا وأکل ثمنہا فلیس بحرام بل ہو مکروہ (مرقاة)
সারমর্মঃ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে বিড়ালের গোশত খাওয়া সর্বসম্মতিক্রমে হারাম।
তবে সেটা বিক্রয় করা,তার মূল্য খাওয়া হারাম নয়।
বরং মাকরুহ।
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (5/ 68):
’’لكن في الخانية: بيع الكلب المعلم عندنا جائز، وكذا السنور، وسباع الوحش والطير جائز معلماً أو غير معلم‘‘.
الفتاوى الهندية (3/ 114):
সারমর্মঃ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুর,শিকারি কুকুর বিক্রয় করা জায়েজ। তেমনি ভাবে বিড়াল বিক্রয় করা জায়েজ।
’’بيع الكلب المعلم عندنا جائز، وكذلك بيع السنور وسباع الوحش والطي جائز عندنا معلماً كان أو لم يكن، كذا في فتاوى قاضي خان‘‘.
الفتاوى الهندية (3/ 114):
’’وبيع الكلب غير المعلم يجوز إذا كان قابلاً للتعليم وإلا فلا، وهو الصحيح، كذا في جواهر الأخلاطي‘‘
সারমর্মঃ
প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুর,শিকারি কুকুর বিক্রয় করা আমাদের নিকটে জায়েজ। তেমনি ভাবে বিড়াল বিক্রয় করা জায়েজ। সূত্র: ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৩/১১৪; দুররুল মুখতার-৫/৬৮
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক