আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৯৭০: সাকার মাছ খাওয়া কি জায়েজ?

No Comments

 




জিজ্ঞাসা-১২৯৭০: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। সম্মানিত মুফতী সাহেব, সাকার মাছ খাওয়া কি জায়েজ?

তারিখ:  ২৩/০৪/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা শামসুল আলম ঢাকা   থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, হানাফী মাযহাব মতে নদ নদী এবং সমুদ্রের শুধু মাছ খাওয়া জায়েজ। অন্য প্রাণী খাওয়া জায়েজ নয়। এখন প্রশ্ন হল, কোনটা মাছ আর কোনটা মাছ না এটি কীভাবে নির্ণীত হবে?

 

এর মূল বিষয় হল, জেলে এবং নদীর প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে যেগুলো মাছের মাঝে গণ্য। সেগুলো মাছ হিসেবে স্বীকৃত হবে। আর যে-সব তাদের মতে মাছ নয়, বরং সামুদ্রিক প্রাণী সেসব খাওয়া যাবে না। দলিল-


Surah An-Nahl, Verse 14:

وَهُوَ الَّذِي سَخَّرَ الْبَحْرَ لِتَأْكُلُوا مِنْهُ لَحْمًا طَرِيًّا 

তিনিই কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন সমুদ্রকে, যাতে তা থেকে তোমরা তাজা মাংস খেতে পার। সূরা নাহল-১৪


তাফসির:

يقول تعالى ذكره: والذي فعل هذه الأفعال بكم ، وأنعم عليكم ، أيها الناس هذه النعم، الذي سخر لكم البحر، وهو كلّ نهر ، ملحا ماؤه أو عذبا(لِتَأْكُلُوا مِنْهُ لَحْمًا طَرِيًّا) وهو السمك الذي يصطاد

কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি সমুদ্রকে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তাজা (মাছের) গোশত খেতে পারো।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১৪) উক্ত আয়াতে ‘তাজা গোশত’ শব্দের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদ ইবনে জারির তাবারি (রহ.) লিখেছেন, ‘তাজা গোশত’ হলো সমুদ্র থেকে শিকারকৃত মাছ। (তাফসিরে তাবারি ১৭/১৮০)


দ্বিতীয় কথা হল, আপনি সাকারকে মাছ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে, বিভিন্ন দেশে সাকার মাছ নামে পরিচিত। সুতরাং তা অবশ্যই হালাল হবে। 


তবে অনেক দেশে সাকার মাছ নিষিদ্ধ করেছে, এ কারণে যে, সে রাক্ষুসে মাছ। সে অন্যান্য মাছের ডিম-পোনা খেয়ে ফেলে।

তবে এই মাছটি শারীরিক কোন ক্ষতি করে কিনা তা গবেষণা চলমান আছে। যেমন,

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ড. আনিছুর রহমান বলেন, সাকার মাছ নিয়ে আসলে গবেষণাটা আসলে এখনো শেষ হয়নি। সূত্র: সোনালী নিউজ ১৪ নভেম্বর ২০২২ 


শরীয়তের মূলনীতি হলো:

فإن ثبت أن بالبحر أسماكا سامة يحصل الضرر بأكلها فإنه يحرم أكلها لضررها؛ لما في الحديث: لا ضرر ولا ضرار. رواه مالك في الموطأ.

অর্থাৎ এ কথা যদি সুনির্ধারিতভাবে জানা যায় যে, সাগরে এমন কিছু বিষাক্ত মাছ আছে, যেগুলো আহার করলে স্বাস্থ্যহানির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, তাহলে সেগুলো আহার করা নিষিদ্ধ। কারণ মুয়াত্তা মালিকের রেওয়ায়েতে এসেছে,'ক্ষতি করা উচিত নয়। আর ক্ষতির সম্মুখীন হওয়াও উচিত নয়'। তাখরিজ: মুয়াত্তা মালেক, ইবনে মাজাহ-১৯০৯


সারকথা হলো,  সাকার যেহেতু মাছ তাই তাকে খাওয়া জায়েজ, তবে গবেষণায় যদি শারীরিক ক্ষতি প্রমাণিত হয়, তাহলে খাওয়া যাবে না, সেটা মাছ হিসেবে নিষেধ নয়, ক্ষতির কারণ হিসেবে।


  والله اعلم بالصواب