আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৮৬: কিস্তিতে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে দ্রব্য কিনলে সুদ হবে কি না ?

No Comments

 



প্রশ্ন-১৮৬:  কিস্তিতে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে মোবাইলফ্রিজ ইত্যাদি কিনলে সুদ হবে কি না এভাবে কেনা বেচায় তাকওয়ার খেলাফ নয় কী ? তারিখ-১৮/০৬/২০২২

 

মাওলানা ইউনুছ আলী হাফিজাহুল্লাহ তাআলাসুদান থেকে

 

উত্তর:  প্রথম কথা হলোনির্দিষ্ট শর্তাপেক্ষে কিস্তিতে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে মোবাইলফ্রিজ ইত্যাদি কিনলে জায়েজ হবেসুদ হবে না। সূত্রজামে তিরমিযীহাদীস ১২৩১আলমাবসূতসারাখসী ১৩/৭আহকামুল কুরআনজাস্সাস ২/৩৭রদ্দুল মুহতার ৫/৯৯

 

عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِىِّ أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : الدِّينُ النَّصِيحَةُ

হযরত তামীম আদ-দারী (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ () এরশাদ করেন যেদ্বীন হল নছীহত  মুসলিম হা/৫৫মিশকাত হা/৪৯৬৬।  নছীহা অর্থাৎ কল্যাণকামিতা এর উসূলের ওপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম বিশেষ করে ফুকাহায়ে আহনাফ যেখানে সম্ভব উম্মাহর জন্য জায়েজের রাস্তা করেছেন। এটা ইসলামি দ্বীনের অন্যতম উদ্দেশ্য।


দ্বিতীয় কথা,  একটি প্রসিদ্ধ বাণী আছে حسنات الابرار سيئات المقربين

অর্থাৎ নেককারদের জন্য পূণ্য  হলেওনৈকট্যশীলদের জন্য তা পাপ।  

পবিত্র কুরআনুল কারিমে নবিদের বিষয়ে এ ধরণের বর্ণনা এসেছে। সাধরণ মানুষের জন্য যা করা জায়েজবিশেষ লোকদের জন্য তা করা ঠিক নয়। উপরোক্ত মাসয়ালাটিও ঐ রকম বলা যায়।

 

ইমাম আল-গাযালী (র) তাকওয়ার চারটি স্তর বর্ণনা করেছেন।


{একশরীআতে যে সকল বস্তুকে হারাম করা হয়েছেআল্লাহ্‌র ভয়ে সকল বস্তু থেকে বিরত থাকা। যেমনমদ্যপানব্যভিচারজুয়াখেলা ও সুদ খাওয়া প্রভৃতি হারাম কাজ থেকে আত্মরক্ষা করা। এটি সাধারণ মুমিনের তাকওয়া। এ শ্রেণীর মুত্তাকীকে বলা হয় মুমিন।

{দুইহারাম বস্তুসমূহ হতে বিরত থাকার পর সন্দেহযু্ক্ত হালাল বস্তুসমূহ হতেও দূরে থাকা। এ শ্রেণীর মুত্তাকীকে বলা হয় সালিহ।

 

তিন. সকল হারাম বস্তু ও সন্দেহযু্ক্ত হালাল বস্তুসমূহ হতে দূরে থাকার পর আল্লাহ্‌র ভয়ে অনক সন্দেহবিহীন হালাল বস্তুও পরিত্যাগ করেএ শ্রেণীকে মুত্তাকী বলা হয় ।

 

 চার. তিন শ্রেণীর তাকওয়া আয়ত্ত করার পর এমন সকল হালাল বস্তু পরিত্যাগ করা যা ইবাদাতে কোনরূপ সহায়তা করে না। এ শ্রেণীর মুত্তাকীকে বলা হয় সিদ্দীক ।   ইসলামী বিশ্বকোষ,  পৃ. ১০৮-১০৯

 

হাদিস:

হযরত আয়েশা রা. একদিন তাই জানতে চাইলেনআপনি এত কষ্ট করেন কেনআল্লাহ কি আপনার আগে-পরের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেননিরাসূলুল্লাহ ()  উত্তরে বললেন,

أَفَلاَ أُحِبُّ أَنْ أَكُونَ عَبْدًا شَكُورًا

আমি কি একজন কৃতজ্ঞ বান্দা হতে চাই না? -সহীহ বুখারীহাদীস ৪৮৩৭



আসলাফের আমল:

 শায়খুল আরব ওয়াল আজাম হাজি এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কি রহজীবনে কখনও কালো রংয়ের  জুতো পরিধান করেননি। কারণ হলো পবিত্র কাবার গিলাফ হলো কালো। কালো রংয়ের জুতো তো না জায়েজ নয়। কিন্তু তিনি কাবার প্রতি আজমতভক্তির কারণে তিনি এটা করেছেন। 

 

পরিশিষ্টউপরোক্ত  আলোচনা দ্বারা এ কথা বুঝাতে চাচ্ছি যেযেটা ফুকাহায়ে উম্মত বিভিন্ন উসূল ও দলিলের ভিত্তিতে জায়েজ বলেছেনসেটা নাজায়েজ বলা যাবে না (یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَاۤ اَحَلَّ اللّٰهُ لَکَ ۚহে নবী! আল্লাহ তোমার জন্য যা বৈধ করেছেনতুমি তা অবৈধ করছ কেনসূরা তাহরিম-০১)।  তাকওয়ার যেহেতু অনেক স্তর আছেসবার জন্য একই হুকুম প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ যিনি আল্লাহ্‌র ভয়ে অনক সন্দেহবিহীন হালাল বস্তুও পরিত্যাগ করেতাতো অধিক উত্তম।

 

 

والله اعلم بالصواب

আল্লাহ তাআলাই সকল বিষয়ে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী