জিজ্ঞাসা-১২৯৬৬:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। শাওয়াল মাসের ৬ রোজা সম্পর্কে রাসুলের কোন ফেলি হাদিস আছে কি? অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাওয়াল মাসে শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখতেন এই মর্মে কোন হাদিস আছে কি?
তারিখ: ১৯/০৪/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আব্দুল মান্নান কুমিল্লা থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
أنه صلى الله عليه وسلم كان لا يصوم الست من شوال، فلعل تركه لصيامها من هذا الباب، هذا وجمهور أهل العلم يقولون باستحباب صيام الست من شوال وأن تكون عقب رمضان متتابعة.
অর্থাৎ, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কার্যত কখনোই শাওয়ালের ছয় রোজা পালন করেননি। তার এই সিয়ামগুলো পালন না করার অন্যতম কারণ এটিই হতে পারে যে, এই বার্তাটি সকলের নিকট পৌঁছে দেয়া যে, এই সিয়ামগুলো পালন করা হলো ইচ্ছাধিকারমূলক আমল, অবশ্যপালনীয় বিধান নয়।
উল্লেখ্য যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ ফিকহবেত্তাগণের মতে, শাওয়ালের ছয়টি সিয়াম পালন করা মুস্তাহাব। আর সেটি ঈদের পরবর্তী দিন হতে একাধারে ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে। সূত্র: ফিকহুল ইবাদাত, সিয়াম-১১৩৭২৭
দ্বিতীয় কথা হলো,
ومن السنة ما يثبت بالقول دون الفعل، وقد يتركه النبي صلى الله عليه وسلم لعارض أو لبيان جواز الترك كصلاة الضحى، ففي الصحيح أن عائشة رضي الله عنها أخبرت أنها لم تره صلى الله عليه وسلم يسبحها، مع أن الأحاديث المرغبة فيها في غاية الصحة
অর্থাৎ, সুন্নাতের অনেকগুলো প্রকারভেদ রয়েছে। যার মাঝে অন্যতম হলো- যা রাসূলের কর্মের মাধ্যমে নয়, বরং বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। বস্তুত উদ্ভূত কোন পরিস্থিতির কারণে তিনি সেই সুন্নাহগুলো নিজে কর্মে পরিণত করেননি। অথবা তাঁর এই সুন্নাহটি পালন না করার কারণ হলো, মানুষ যেন এটিকে অবশ্যপালনীয় আমল না ভেবে বসে। বরং তা পালন করা-না করার অবকাশ রয়েছে, এই নির্দেশনাটিই যেন পায়। এইদিক বিবেচনা করেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই সলাতুত দ্বুহার নামাজ আদায় করেননি।
সহীহ হাদীসের বর্ণনা মোতাবেক, আয়েশা (রাযি.) বলেন, " তিনি কখনোই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাসবীহ পাঠ করতে দেখেননি। অথচ তাসবীহ পাঠ সংক্রান্ত হাদিসগুলো সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহীহ।
সারকথা হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাওয়ালের ছয় রোজা পালন করেছেন এ রকম কোনো নস নেই, না পালন করার কারণ হিসেবে ওলামায়ে দ্বীন উল্লেখ করেছেন ফরজ ও নফল রোজার তারতম্যের জন্য।
তবে উম্মতকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, যা সহিহ হাদিস প্রমাণিত। তার কথা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ
এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না।
إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ
কোরআন ওহী, যা প্রত্যাদেশ হয়। সূরা নজম,৩-৪
والله اعلم بالصواب