আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

সাধারণ জ্ঞান-০৯: যেভাবে ইসলামী জ্ঞান বিশ্বময় ছড়িয়েছে।

No Comments

 



যেভাবে ইসলামী জ্ঞান বিশ্বময় ছড়িয়েছে।

 

ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতির প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর পবিত্র মক্কা নগরীতে রাখা হয়। ইতিহাসের সর্বপ্রথম মাদরাসা (বিদ্যালয়) মক্কার সাফা পর্বতে ‘দারে আরকাম’-এ প্রতিষ্ঠিত। তাতে কোরআন শরিফের কিছু আয়াত ও সুরা অবতীর্ণ হয়। তারই একটি দরসগাহে নবীজি (সা.) সাহাবিদেরকে ইসলামের দাওয়াত ও কোরআন কারিমের শিক্ষা দিয়েছেন।

তারই ধারাবাহিকতায় জ্ঞান-বিজ্ঞান ও বইপত্রের চর্চা শুরু হতে থাকে।

মক্কা নগরী থেকে হিজরত করে মদিনায় আসার পর এখানেই ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতির চর্চা আবার শুরু হয়। এই নগরীই হলো ইসলামী ইতিহাসের সর্বপ্রথম গণশিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। আর মসজিদে নববী হলো ইসলামের সর্বপ্রথম মসজিদ, যা এই নগরীতেই অবস্থিত।

এ সৌভাগ্য মদিনা শহরের চিত্রকে পৃথিবীর বুকে এক সমুন্নত স্থানে দাঁড় করিয়েছে। অতঃপর এখানেই জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে। এই মদিনা শহর থেকেই ইসলামের মশাল পৃথিবীর আনাচকানাচে প্রজ্বলিত হয়। এ শহরই জ্ঞানচর্চার সূতিকাগার এবং ‘দারুস সুন্নাহ’ উপাধিতে ভূষিত হয়।

সাহাবিদের যুগে মদিনা মুনাওয়ারা সর্বপ্রথম ‘মদিনাতুল ইলম’ বা জ্ঞান-বিজ্ঞানের শহর উপাধিতে ভূষিত হয়। পরবর্তী সময়ে হেজাজ শহর ‘মারকাজুল ইলম’ বা জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘাঁটি হিসেবে আখ্যা পায়। আলী (রা.)-এর শাসনামলে ইসলামী শাসনব্যবস্থার প্রধান মারকাজ বা কেন্দ্র যখন ইরাকে স্থানান্তর করা হয়, তখন এই সৌভাগ্য (তথা ইসলামী শাসনব্যবস্থার প্রধান মারকাজ) কুফা ও বসরা নগর অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে উমাইয়া যুগে যখন ইসলামী শাসনব্যবস্থার কেন্দ্র শামে স্থানান্তর করা হয়, তখন দামেস্ক জ্ঞানের কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়। এভাবেই কাল-পরিক্রমায় স্থানান্তরিত হতে থাকে ‘ইলমি মারকাজ’।

বনু উমাইয়া শাসনামলের পরে প্রাচ্যে আব্বাসীয় যুগে জ্ঞানকেন্দ্র বাগদাদে হয়। অতঃপর ক্রমেই মিসর এবং পাশ্চাত্যে তিউনিশিয়া, কর্ডোভা প্রভৃতি স্থান ইলমি কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়।

আল্লামা ইবনে খালদুন (রহ.) বলেন, তোমরা বাগদাদ, তিউনিশিয়া, কর্ডোভা, মিসর, বসরা ও কুফা প্রভৃতির ইতিহাসের দিকে লক্ষ করে দেখো, ইসলামের প্রাক্কালে সভ্যতা-সংস্কৃতি যখন এসব স্থানে বিস্তার হতে শুরু করে আর নাগরিক উন্নয়ন যখন চরম উন্নত শিখরে পৌঁছে, তখন এসব স্থানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের মহাসমুদ্র উত্তালতায় ভরপুর হতে থাকে। যখন এখানে সভ্যতা-সংস্কৃতির অবক্ষয় ঘটে এবং পরিস্থিতি নাজুক হয়, তখন জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভিত্তি পাল্টে যায়। জ্ঞান ও শিক্ষা এখান থেকে বিলুপ্ত হয়ে অন্য শহরে চলে যায়। সে সময় এখানকার অধিবাসীরা শিক্ষাগত যোগ্যতা, গবেষণা ও শরয়ি সমাধান নিরসনে স্বীয় পূর্বসূরিদের ছাড়িয়ে অনেক উন্নতি সাধিত করে বিশ্বদরবারে নিজেদের আসীন করেন।


যখন বাগদাদ, বসরা ও কুফার মতো জ্ঞানের সূতিকাগারের অবক্ষয় ঘটে, তখন ধ্বংসাবশেষ থেকেই বড় বড় শহর জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘাঁটিতে রূপ নেয়। জ্ঞানের কেন্দ্র ইরাক থেকে স্থানান্তরিত হয়ে খোরাসান ও মাওয়ারাআন নাহারে (এটি কিরগিজস্তান, কাজাকিস্তান, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। যাতে ইতিহাসবিখ্যাত শহরগুলো অন্তর্ভুক্ত। তথা সমরকন্দ, বোখারা, ফারগানা, তুস্কন্দ বা তাসখন্দ, খাওয়ারিজম, তিরমিজ প্রভৃতি শহর ছিল এবং স্থাপিত হয়। পরে এখান থেকে স্থানান্তর করে কায়রোতে (মিসর) নেওয়া হয়। কায়রোতে যেহেতু সভ্যতা-সংস্কৃতি আগে থেকেই বলবৎ ছিল সে জন্য কায়রোকেই প্রত্যেক যুগের মারকাজ হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

যেসব জ্ঞানপিপাসু পাশ্চাত্য দেশ থেকে জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে প্রাচ্যদেশে আসে, তাঁরা মনে করেন যে প্রাচ্যের নাগরিকদের বুদ্ধিবৃত্তিক চাতুর্য ও মেধাশক্তি পাশ্চাত্যের নাগরিকদের চেয়ে অত্যধিক এবং তারা স্বভাবতই তাদের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান ও ধীশক্তিসম্পন্ন। তাঁরা এভাবেই পাশ্চাত্য (ইউরোপ, স্পেন) ও প্রাচ্যের (এশিয়া, আফ্রিকা) নাগরিকদের মানবীয় বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য বোধগম্য করতে শুরু করেন। অথচ এটি অবাঞ্ছনীয়। প্রাচ্যের নাগরিকরা সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং ক্রমাগত অনুশীলন অব্যাহত রাখার কারণে তাঁরা পাশ্চাত্যের নাগরিকদের ছাড়িয়ে গেছে। তাঁদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মূল কারণ হলো এই ক্রমাগত অনুশীলন ও জ্ঞানচর্চা তথা অধ্যাপনা ও গ্রন্থাগার।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগ থেকে শিক্ষার প্রচলন ঘটে, তবে শত বছরের সংক্ষিপ্ত এই সময়ে শিক্ষা এতটাই বিকশিত হয় যে ইসলামী বিজয়ের পরিধি যত বিস্তৃত হয় ততই শিক্ষার পরিধি ব্যাপকতা লাভ করে। আল্লামা ইবনে হাজম (রহ.) এ সম্পর্কে বলেন, ‘যাদের ইতিহাসবিষয়ক সম্যক ধারণা আছে তাদের নিশ্চয়ই একথাও জানা আছে যে সিন্ধু, খোরাসান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, মাসুল, দিয়ারে রাবিয়া, দিয়ারে মিসর, শাম, আফ্রিকা, আন্দালুস, হিজাজ, ইয়েমেন, আরব ভূখণ্ড, ইরাক, ফ্রান্স, কিরমান, সিজিস্তান, কাবুল, তাবারিস্তান, জুরজান প্রভৃতি দেশ ও শহরে তাবেঈরা ইসলামের শাশ্বত চিরায়ত পয়গাম ছড়িয়েছেন এবং জ্ঞানের দীপ্যমান চেরাগ প্রতিটি আনাচকানাচে জ্বালিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ! উল্লিখিত শহরগুলোর মধ্যে এমন কোনো পল্লী গ্রামও অবশিষ্ট ছিল না, যেখানে জ্ঞানের চেরাগের দ্যুতি পৌঁছেনি; বরং সেসব পল্লী গ্রামেও বড় বড় জ্ঞানী ও আলেমের আধিক্য ছিল ধারণাতীত। ’

তথ্যঋণঃ তারিখে ইবনে খালদুন

(আল-মুকাদ্দামাহ), ইবনে খালদুন;

তারিখে বাগদাদ, ইমাম হাফিজ আবি বকর আহমদ বিন আলী;

তারিখে দামেস্ক, ইবনে আসাকির

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।আসআদ শাহীন সাহেবের লেখা থেকে সংগৃহীত।

সংগ্রহে, হজরত মাওলানা খন্দকার মুহাম্মাদ মনজুরুর রহমান হাফিজাহুল্লাহু 

আমল ও দুআ-৩৪৫: শিশুদের হেফাজতের দু‘আ

No Comments

 



শিশুদের হেফাজতের দু‘আ


أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ


উচ্চারণ: আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিওঁ ওয়া হা-ম্মাহ, ওয়ামিন কুল্লি আইনিল্লা-ম্মাহ্‌।


অর্থ: আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহর পরিপূর্ণ কথাসমূহের, সকল শয়তান থেকে, সকল ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও প্রাণী থেকে এবং সকল ক্ষতিকারক দৃষ্টি থেকে।


বুখারী হাদীস নং-৩৩৭১ সুনানুত তিরমিযী হাঃ ২০৬০


حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ الْمِنْهَالِ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعَوِّذُ الْحَسَنَ وَالْحُسَيْنَ وَيَقُوْلُ إِنَّ أَبَاكُمَا كَانَ يُعَوِّذُ بِهَا إِسْمَاعِيْلَ وَإِسْحَاقَ أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান এবং হুসাইন (রাঃ)-এর জন্য নিম্নোক্ত দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন আর বলতেন, তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আঃ) ইসমাঈল ও ইসহাক (আঃ)-এর জন্য দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন। আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বাক্যগুলি দ্বারা হাসান ও হুসাইনকে (রাঃ) হেফাজত করাতেন। তিনি বলতেন, ইবরাহীম (আ.) এই বাক্যদ্বারা তার দুই সন্তান ইসমাঈল ও ইসহাককে (আ) হেফাজত করাতেন।[1]সকল মুমিন পিতা ও মাতার উচিত সকাল ও সন্ধ্যায় এই বাক্যগুলি পাঠ করে সন্তানদের ফুঁক দেওয়া ও দু‘আ করা।


https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tos.namajtime

জিজ্ঞাসা-২৩৭: জমি কট নেওয়া জায়েজ আছে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-২৩৭: বর্তমানে আমাদের সমাজে জমিকট নেয়া হয়। এক/দের লক্ষ্য টাকা দিয়ে এক বৎসরের জন্য এক বিঘা জমি। এখন এক বৎসর পর টাকা ফেরত নেবার সময় মূল টাকা হতে ৩ হাজার টাকা কম নিলে কতটুকু শরিয়ত সম্মত হবে একটু জানাবেন প্লিজ। ধন্যবাদ। তারিখ-২৭/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি

মাওলানা ইব্রাহীম ঢাকা থেকে-----


জবাব:

 وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

সালাম ও তাসলিম বাদকথা এই যেবাংলাদেশে প্রচলিত জমি বন্ধক/কট পদ্ধতি  হারাম। হজরতে ফোকাহায়ে কেরামাগণ! জায়েজের ছুরত বর্ণনা করেছেনতা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই বেখবর।  উল্লেখ্য যেজায়েজ পদ্ধতি আছে অবশ্যইকিন্তু তা গ্রহণ না করাই অধিক তাকওয়া।

যাই হোক প্রথম কথা হলোবন্ধককৃত বস্তু বন্ধকগ্রহীতার কাছে আমানতস্বরূপ। বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতার কোনো ফায়দা হাসিল করা নাজায়েজ ও হারাম। এমনকি বন্ধকদাতা এর অনুমতি দিলেও পারবে না। কারণ বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতা কোনো ধরনের ফায়দা উপভোগ করা সুদের অন্তর্ভুক্তযা হারাম। সূত্র: বাদায়েউস সানায়ে : ৬/১৪৬ দলিল: 

হাদিস/আসার নং-০১

  ফাযালাহ ইবুন উবাইদ (রা.) বলেন,

كُلُّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً فَهُوَ وَجْهٌ مِنْ وُجُوهِ الرِّبَا

যে ঋণ থেকে ঋণদাতা উপকৃত হয় তা সুদের একটি প্রকার।তাখরিজ:  সুনানে কুবরাবায়হাকীহাদিস: ১১২৫২

হাদিস/আসার নং-০২

اسْتَقْرَضَ رَجُلٌ مِنْ رَجُلٍ خَمْسَمِائَةِ دِينَارٍ عَلَى أَنْ يُفْقِرَهُ ظَهْرَ فَرَسِهِ فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ : مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِ فَرَسِهِ فَهُوَ رِبًا

ইবনে সিরিন (রহ.) সূত্রে বর্ণিততিনি বলেনজনৈক লোক সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করলএক ব্যক্তি আমার কাছে একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছেতা আমি আরোহণের কাজে ব্যবহার করেছি। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেনতুমি আরোহণের মাধ্যমে এর থেকে যে উপকার লাভ করেছ তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে। তাখরিজ: মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাকহাদিস : ১৫০৭১

 

হাদিস/আসার নং-০৩

বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম কাজি শুরাইহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলসুদ পান করা কিভাবে হয়ে থাকেতিনি বলেনবন্ধকগ্রহীতা বন্ধকি গাভির দুধ পান করা সুদ পানের অন্তর্ভুক্ত। মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাকহাদিস : ১৫০৬৯,

ঋণদাতার জন্য বন্ধকি জমি ভোগ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটি মূলত ঋণ প্রদান করে বিনিময়ে সুদ গ্রহণেরই একটি প্রকার। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত পদ্ধতিটি জায়েজ হবে না।

উল্লেখ্য যেজায়েজ পদ্ধতি ওলামায়ে কেরাম থেকে জেনে নিবেন। ইনশাল্লাহ আমরাও কোন এক সময় আলোচনা ইচ্ছা রাখি। সূত্র: মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/২৪৪-২৪৫শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৩/১৪৯রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২শরহুল মাজাল্লাখালেদ আতাসী ৩/১৯৬-১৯৭ইলাউস সুনান ১৮/৬৪

তথ্যসহযোগিতাইসলামিক ইফতা

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিচ্ছেন

বিজ্ঞবচন-২৬: বেশিরভাগ মানুষ লোভী অথচ তার, জান্নাতের লোভ নেই,

No Comments

 



মানুষের চরিত্র: 

বেশিরভাগ মানুষ লোভী অথচ তার, জান্নাতের লোভ নেই,

বেশির ভাগ মানুষ ভীত অথচ তার, জাহান্নামের ভয় নেই।

ফাহাদ ইবনে ইলিয়াস (হাফিঃ)


অথচ জান্নাত ও জাহান্নাম পবিত্র কুরআন ও হাদীসে এসেছে -

আয়াত নং-০১ 

Surah As-Sajda, Verse 17:

فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّا أُخْفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ

কেউ জানে না তার জন্যে কৃতকর্মের কি কি নয়ন-প্রীতিকর প্রতিদান লুক্কায়িত আছে। সূরা সিজদা-১৭

হাদিস নং-০১

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ বলেন, আমার সৎকর্মশীল বান্দাদের জন্য আমি এমনসব জিনিস তৈরী করে রেখেছি যা কখনো কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন মানুষ কোনদিন তা কল্পনাও করতে পারে না।” [বুখারী: ৪৭৭৯; মুসলিম: ১৮৯, ২৪২৪]

হাদিস নং-০২

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে কেউ জান্নাতে যাবে নেয়ামত প্রাপ্ত হবে, সে কোনদিন নিরাশ হবে না, তার কাপড় পুরনো হবে না, আর তার যৌবন নিঃশেষ হবে না।” [মুসলিম: ২৮৩৬]


আয়াত নং-০১

Surah Al-Baqara, Verse 24:

فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا وَلَن تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ

আর যদি তা না পার-অবশ্য তা তোমরা কখনও পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য। সুরা বাকারা-২৪


আয়াত নং-০২

Surah Al-Humaza, Verse 5:

وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْحُطَمَةُ

আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কি?

نَارُ اللَّهِ الْمُوقَدَةُ

এটা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি,

الَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى الْأَفْئِدَةِ

যা হৃদয় পর্যন্ত পৌছবে। সূরা হুমাযা,৫-৭

আমল ও দুআ-৩৪৪: মুসিবতের সম্মুখীন হলে এই দুআ

No Comments

 



মুসিবতের সম্মুখীন হলে


اِنَّا لِلّٰهِ وَاِنَّا اِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ. اَللّٰهُمَّ اْجُرْنِيْ فِـيْ مُصِيْبَتِيْ. وَاَخْلِفْ لِيْ خَيْرًا مِّنْهَا.

উচ্চারণ: ইন্নাা লিল্লাাহি ওয়া ইন্নাা ইলাইহি রাাজি‘ঊন, আল্লাাহুম্মা’ জুরনী ফী মুসী বাতী ওয়া আখলিফলী খইরম মিনহাা।


অর্থ: নিঃসন্দেহে আমরা আল্লাহ তায়ালারই জন্য এবং আল্লাহ তায়ালারই দিকে ফিরিয়া যাইব। আয় আল্লাহ ! আমাকে আমার মুসিবতের উপর সওয়াব দান করুন, আর যে জিনিস আপনি আমার নিকট হইতে লইয়া গিয়াছেন উহা হইতে উত্তম জিনিস আমাকে দান করুন। মুসলিম-৯১৮


বিস্তারিত:

وعنها قالت‏:‏ سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول‏:‏‏"‏ما من عبد تصيبه مصيبه، فيقول إن لله وإنا إليه راجعون‏:‏ اللهم آجرني في مصيبتي، واخلف لي خيرا منها، إلا آجره الله تعالي في مصيبته واخلف له خيراً منها‏.‏ قالت‏:‏ فلما توفي أبو سلمة، قلت كما أمرني رسول الله صلى الله عليه وسلم ، فاخلف الله خيراص منه رسول الله صلى الله عليه وسلم “ ‏(‏‏(‏رواه

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী হযরত উম্মে সালামাহ (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এরশাদ করিতে শুনিয়াছি, যে বান্দার উপর কোন মুসিবত আসে এবং সে এই দু’আ পড়িয়া লয়--

إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ اللَّهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا إِلاَّ أَجَرَهُ اللَّهُ فِي مُصِيبَتِهِ وَأَخْلَفَ لَهُ خَيْرًا مِنْهَا

অর্থঃ নিঃসন্দেহে আমরা আল্লাহ তায়ালারই জন্য এবং আল্লাহ তায়ালারই দিকে ফিরিয়া যাইব। আয় আল্লাহ ! আমাকে আমার মুসিবতের উপর সওয়াব দান করুন, আর যে জিনিস আপনি আমার নিকট হইতে লইয়া গিয়াছেন উহা হইতে উত্তম জিনিস আমাকে দান করুন।

আল্লাহ তায়ালা তাহাকে উক্ত মুসিবতে সওয়াব দান করেন এবং হারানো জিনিসের বিনিময়ে উহা অপেক্ষা উত্তম জিনিস দান করেন।

হযরত উম্মে সালামাহ (রাযিঃ) বলেন, যখন হযরত আবু সালামাহ (রাযিঃ) এর ইন্তেকাল হইয়া গেল তখন আমি এইভাবে দু’আ করিলাম যেভাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এই দু’আর হুকুম দিয়াছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাকে আবু সালামাহ হইতে উত্তম বদল দান করিলেন। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার স্বামী বানাইয়া দিলেন। (মুসলিম)


https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tos.namajtime

জিজ্ঞাসা-২৩৬: ইসলামে ছবির বিধান কি? ক্যামেরা/মোবাইলে ছবি তোলা কি জায়েজ? ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ ইত্যাদিতে চ্যাটিং-এর সময় বিভিন্ন ধরণের emoji ব্যবহারের বিধান দালিলিক বিশ্লেষণ করলে উপকৃত হতাম।

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-২৩৬: ইসলামে ছবির বিধান কি? ক্যামেরা/মোবাইলে ছবি তোলা কি জায়েজ? ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ ইত্যাদিতে চ্যাটিং-এর সময় বিভিন্ন ধরণের emoji ব্যবহারের বিধান দালিলিক বিশ্লেষণ করলে উপকৃত হতাম। তারিখ-২৬/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি

মাওলানা মো: ফরিদুজ্জামান বরিশাল থেকে---



জবাব: 

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

আলহামদুল্লিাহ ইসলামে ছবির বিধান সম্পর্কে আল-বুরহানে ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসা-১২৬ শিরোনামে আলোচনা করা হয়েছে। বাকি ক্যামেরা/মোবাইলে ছবি তোলা, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপে ইমোজি ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা ইচ্ছা রাখি। আপনার প্রশ্নকে সহজভাবে বোধগম্যের জন্য কয়েকভাগে ভাগ করছি।


ونسأل الله التوفيق وهو الموفق والمعين

 প্রারম্ভে ছবি হারাম হওয়ার রহস্য: বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন জামেআ হাকিমুল উম্মাহর প্রতিষ্ঠাতা শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল মতিন বিন হুসাইন সাহেব দা.বা. বলেন, মহান আল্লাহ বান্দার ইজ্জত-সম্মান রক্ষার জন্য ছবি/ভিডিও হারাম করেছেন। যেমন, কোন বান্দা এক সময় গুনাহে লিপ্ত ছিল বা তার অরুচিকর ছবি/ভিডিও ‍ওঠানো হলো। কিন্তু এক সময় সে তওবা করল। কিন্তু সমাজে/নেটে ছড়িয়ে পড়া অশ্লীল ছবি/ভিডিও সে আর ডিলিট করা ক্ষমতা রাখে না। তখন সে লজ্জিত হবে। তাই বান্দা যেন লজ্জিত হতে না হয়, এজন্য দয়াময় আল্লাহ ছবি তোলা হারাম করেছেন।     


দেহবিশিষ্ট ভাস্কর্য নির্মাণ করা চার ইমামের মতে সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। আর দেহবিশিষ্ট ভাস্কর্য না হয়ে যদি তা প্রতিকৃতি আকারে হয়, তাহলে তিন ইমামের এক অভিমত অনুযায়ী তা হারাম। অবশ্য অধিকাংশ মালিকী আলেমের গ্রহনযোগ্য ও উওম অভিমত হল যে, এ জাতীয় প্রতিকৃতিও মাকরূহ। এ প্রসঙ্গে আল্লামা খারেসী ( রহ.) লেখেন:

« قال في التوضيح: التمثال اذا كان لغير حيوان ، كالشجر : جائز، وان كان لحيوان فما له ظل ويقيم ، فهو حرام باجماع ، وكذا ان لم يقم ، كاعجين خلافا للصبغ . . . وما لا ظل له إن كان غير ممتهن فهو مكروه، وان كان ممتهنا فتركه اولي »

'আল্লামা খারাসী ( রহ.) ' তাওযীহ' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন : যদি অপ্রাণীর ছবি হয়, যেমন বৃক্ষ, তাহলে তা জায়েয আছে। যদি প্রাণীর প্রতিকৃতি হয়, আর তা যদি দেহবিশিষ্ট ছায়াযুক্ত এবং স্থায়ী হয়, তাহলে তা সর্বসম্মতভাবেই হারাম। আর তা যদি স্থায়ী পদার্থ দ্বারা প্রস্তুত না করা হয়।,যেমন আটার খামিরা দ্বারা, তাহলে তাও হারাম। এক্কেএে আসবাগ ( রহ.) ভিন্নমত পোষন করেছেন। আর যদি সেটা ছায়াহীন কোনো প্রতিকৃতি হয়, তাহলে সেটি যদি কোনো নিকৃষ্ট স্থানে না থাকে, তবে তা মাকরূহ। হ্যা যদি সেটি কোনো নিকৃষ্ট স্থানে থাকে, তাহলে সেটিও পরিহার করা উওম। ' সূত্র: খারাসী আলা মুখতাসিরিল খালীল : খণ্ড -- ৩, পৃষ্ঠা -- ৩০৩


প্রশ্ন: ক। ক্যামেরা/মোবাইলে ছবি তোলা কি জায়েজ?   

উত্তর: ক। ক্যামেরার ছবি বা ফটোগ্রাফির বিধান

ক্যামেরার ছবি যাকে আজকাল ফটোগ্রাফিও বলা হয়ে থাকে। এ জাতীয় ছবির বিষয়ে শরীয়তের বিধান কী? এ জাতীয় ছবিও কি ওই একই হুকুম, যা হাতে অংকিত উল্লেখ করা হয়েছে, না এর ভিন্ন কোনো হুকুম রয়েছে? এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে।

প্রথম মত:


মিসরের প্রখ্যাত মুফতী শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ বুখাইত ( রহ.)الجواب الشافي في اباحة التصوير الفوتوغرافي

নামে একটি পুস্তিকা রচনা করেছেন। ওই পুস্তিকায় তিনি একথা উল্লেখ করেছেন : 'ক্যামেরার ছবি তথা ফটোগ্রাফি মূলত :ছায়া সংরক্ষনের একটি বিশেষ পদ্ধতি। এই শিল্পের বিশেষজ্ঞারা বিশেষ পদ্ধতিতে এই ছায়া সংরক্ষনের পন্থা উদ্ভাবন করেছেন। এটি ওই ছবির পর্যায়ভুক্ত নয়, যে ছবির বিষয়ে শরীয়তে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। কেননা নিষেধাজ্ঞা ওই ছবির ক্ষেএে, যে ছবির অস্তিত্ব বা আবিস্কার ইতিপূর্বে ছিল না। আর ওই ছবিটি এমন প্রাণীর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হবে, যাকে আল্লাহ তাআলা সৃজন কারেছেন। অথচ এই বিষয়টি ফটোগ্রাফিতে অনুপস্থিত।


দ্বিতীয় মত:


কিন্তু আরববিশ্বের অসংখ্য আলেম এবং হিদুস্তানের সব আলেম কিংবা এদের বড় অংশটিই এই ফতোয়া দিয়েছেন যে, ফটোগ্রাফি এবং হাতে অংকিত ছবির হুকুমে কোনো পার্থক্য নেই। আরববিশ্বের সমকালীন কোনো কোনো আলেমের উদ্বৃতি থেকে এই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে।


(১) শায়খ মোস্তাফা আল-হাম্মামী (রহ.)তাঁর কিতাব النهضة الاصلاحية তে উল্লেখ করেছেন :


« واني احب ان تجزم الجزم كله ان التنصوير بآلة التصوير (الفوتوغرافية) كالتصوير باليد تماما، فيحرم علي المؤمن تسليطها للتصوير، ويحرم عليه تمكين مسلطها لالتقاط صورته بها ؛ لانه بهذا التمكين يعين علي فعل محرم غليظ ، وليس من الصواب في شيء ما ذهب اليه احد علماء عصرنا هذا من استباحة التصوير بتلك الآلة بحجة ان التصوير ما كان باليد ، والتصوير بهذه الآلة لا دخل لليد فيه فلا يكون حراما وهذا عندي اشبه بمن يرسل اسدا مفترسا فيقتل من يقتل ، اويفتح ييارا كهربائيا يعدم كل من مر به ، او يضع سما في طعام فيهلك كل من تناول من ذلك الطعام ، فاذا وجَّه اليه اتهام بالقتل قال: انا لم اقتل ، انما قتل السم والكهرباء والاسد. . . »


আমি এই বিষয়টি পছন্দ করি যে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা উচিত যে,ক্যামেরার মাধ্যমে তোলা ছবি, একেবারে হতে অংকিন করা ছবির মত। সুতরাং ছবি তোলার জন্য কোনো মুমিনের এটি ব্যবহার করা সম্পুর্ণরূপে হারাম। একইভাবে অন্য কাউকে নিজের ছবি তোলার সুযোগ করে দেয়াটাও হারাম। কেননা ছবি তোলার সুযোগ করে দেয়াটাও একটি চূড়ান্ত পর্যায়ের হারাম কাজে সহযোগিতার অন্তভুর্ক্ত । এ সময়কার কোনো একজন আলেম ক্যামেরার মাধ্যমে তোলা ছবি জায়েয হওয়ার স্বপক্ষে দলীল হিসেবে যে কথা বলেছেন যে,ছবি তাকেই বলা হবে, যেটি হাতে অংকন করা হবে। আর যে ছবি যন্ত্রের সাহায্যে তোলা হয় তাতে হাতের কোনো দখলদারিত্ব থাকে না। সুতরাং এ জাতীয় ছবি হারাম নয়। ' ওই আলেমের এহেন দাবী কোনোভাবেই সঠিক ও গ্রহনযোগ্য নয়। আমার কাছে তার এই খোরা যুক্তির উপমা এমন মনে হয় যে, কোনো ব্যক্তি ক্ষুধার্ত বাঘ ছেড়ে দিল,বাঘ ছাড়া পেয়ে কারো উপর আক্রমন করে ফেলল, কিংবা কোনো ব্যক্তি সংযোগসহ বিদ্যুতের তার চলাচলের পথে ফেলে রাখল, সেই তারে স্পর্শে কেউ মারা গেল, কিংবা কোনো ব্যক্তি খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিল, সেই খাবার খেয়ে কেউ মারা গেল। এরপর যখন ওই হত্যায় তাকে অভিযুক্ত করা হল, তখন সে বলল, আমি তো হত্যা করি নি ; বরং তাকে তো হত্যা করেছে বিষ, বিদ্যুৎ এবং বাঘে। সূত্র: আন--নুহদাতুল ইসলামিয়্যাহ :পৃষ্ঠা -- ২৬৪--২৬৫


(২) শায়খ মোহাম্মদ আলী আসসাবুনী ( রহ.) তাঁরحكم الاسلام في التصوير এবং تفسير آيات الاحكام

গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,


« إن التصوير الشمسي لا يخرج عن كونه نوعا من انواع التصوير .و فما يخرج بالآلة يسمي صورة والشخص مصورا، فهو وان كان لا يشمله النص الصريح لانه ليس تصويرا باليد ، وليس فيه مضاهاة لخلق الله ، الا انه لا يخرج عن كونه ضربا من ضروب التصوير ، فينبغي ان يقتصر في الاباحة علي حذد الضرورة ».

'ক্যামেরার মাধ্যমে যে ছবি ওঠানো হয়, তাকেই ছবি-ই বলা হয় এবং যিনি তোলেন তাকে ' ফটোগ্রাফার বলা হয়। সুতরাং এটি যদিও نص صريح (শরীয়তের বিধানে সুনিদির্ষ্টভাবে উল্লেখপূর্বক)-এর দ্বারা ছবি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় না, কেননা এটি হাত দ্বারা অংকিত ছবি নয়, আর এতে আল্লাহর সৃষ্টির সাদৃশ্যতাপূর্ন হওয়ার বিষয়টিও অনুপস্থিত থাকে। এতদসও্বে এটিকেও ছবির এক প্রকার হওয়া থেকে বাদ দেয়ার অবকাশ নেই। সুতরাং নিজস্ব প্রয়োজনের ক্ষেএেই এটিকে বৈধতা সীমারেখায় নেয়া উচিত।

 (৩) শায়খ ডাক্তার মুহাম্মদ সাঈদ রমযান আলবতী ( রহ.) তাঁর فقه السيرة 'ফেকহুস সীরাত 'গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন :


« والحق انه لا ينبغي تكلف اي فرق بين انواع التصوير المختلفة حيطة في الامر ، ونظرا ل اطلاق لفظ الحديث . هذا يتعلق بالتصوير . اما الاتخاذ ، فلا فرق بين الفوتوغرافي وغيره».


সঠিক কথা হল যে, হাদীসের সাধারণ ভাষ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করে এবং হুকুমকে ব্যাপকতর করার লক্ষ্যে ছবির বিভিন্ন প্রকারে পার্থক্য নির্ণয়ের অপচেষ্টা করা অনুচিত। শরীয়তের এই হুকুম তো সব ছবির ক্ষেএেই । আর ছবি চিএণের বিষয়টি হতে পারে সেটি ক্যামেরাবন্দী ছবি আবার হতে পারে সেটি হাতে অংকিত ছবি। এতে পার্থক্য সৃষ্টির কার কোনো হেতু নেই। সূত্র: ফিকহুস সীরাত : পৃষ্ঠায়-৩৮০


  প্রকৃত সত্য হল, চিএ এবং অংকনের মাধ্যমে নির্মিত ছবি এবং ক্যামেরাবন্দী ছবি এ দু'য়ের মাঝে যে পার্থক্য রয়েছে, মূলত এর মজবুত কোনো ভিওি নেই। শরীয়তের নীতি হল এই যে, যে জিনিস মৌলিকভাবে হারাম এবং শরীয়ত অসমর্থিত, যন্ত্র পরিবর্তনের কারণে তার হুকুমে পরিবর্তন হয় না। যেমন শরাব হারাম, হতে পারে এটি প্রস্তত করা হয়েছে, আবার এমনও হতে পারে যে, এটি আধুনিক মেশিনারীর সাহায্য প্রস্তুত করা হয়েছে। অথবা হত্যা করা হারাম, হতে পারে হত্যা কার্যক্রম সংঘটিত হয়ে চাকু-ছূরির সাহায্যে, আবার হতে পারে তা বন্দুকের গুলির সাহায্যে। ছবির বিষয়টি ঠিক এমন-ই। শরীয়ত ছবি বানানো এবং সংরক্ষন নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে। সুতরাং ছবির নির্মাতা এই ছবি তুলির সাহায্যে প্রস্তত করেছে, না ক্যামেরাবন্দি করে করেছে, তাতে হুকুমের ক্ষেএে কোনো ফরাক হবে না।

والله سبحانه وتعال اعلم


ভারত উপমহাদেশের আলেমদের অভিমত:


(১) বিশ্ববরণ্য আলেম দ্বীন বিচারপতি তাকি উসমানি দা.বা. বলেন,       


فى تفسير آيات الأحكام-فإطلاق الإباحة في التصوير الفوتوغرافي ، وأنه ليس بتصوير وإنما هو حبس للظلّ ، مما لا ينبغي أن يقال ، بل يقتصر فيه على حد الضرورة ، (تفسير آيات الأحكام-2/300


সুতরাং ফটোগ্রাফী ছবিকে মুতলাক জায়েজ বলা এই হিসেবে যে, তা মূলত ছবি না, বরং তা ছায়াকে আটকে ফেলা, এরূপ বলা উচিত নয়, বরং তার বৈধতা প্রয়োজন পর্যন্ত সীমিত থাকবে। সূত্র: তাফসীরু আয়াতিল আহকাম-২/৩০০


(২) বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মুফতি মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. বলেন, ছবি তোলা ও সংরক্ষণ করা বা প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ হারাম, আর ক্যামেরায় ছবি যাকে আজকাল ফটোগ্রাফিও বলা হয়। এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের ফাতাওয়া এই যে, যন্ত্রের পরিবর্তনের কারণে ফটোগ্রাফি এবং হাতে অংকিত ছবির হুকুমে কোন পার্থক্য ধরা হবেনা। বরং ক্যামেরার ছবি, ফটোগ্রাফিও প্রকৃত ছবির প্রকারসমূহের মধ্যে এক প্রকারের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং হাতের দ্বারা ছবি অংকনের ন্যায় সম্পূর্ণ হারাম হবে। সূত্র: তাসবীর কী শরয়ী আহকাম পৃ.৬০, তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম খ.৪ পৃ.১৬৩


প্রশ্ন: খ। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ ইত্যাদিতে চ্যাটিং-এর সময় বিভিন্ন ধরণের emoji ব্যবহারের বিধান দালিলিক বিশ্লেষণ করলে উপকৃত হতাম।


উত্তর: খ। ইমোজি শব্দটির উৎপত্তি জাপানী শব্দ ইমোডজি থেকে, যার অর্থ স্মাইলি অর্থাৎ হাসিমুখ। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ ইত্যাদিতে চ্যাটিং-এর সময় বিভিন্ন ধরণের emoji ব্যবহারের বিধান হলো, যদি emoji এর পূর্ণ অবয়ব তথা emoji তে ব্যবহৃত প্রাণীর মাথা,মুখ,চোখ,নাক,কান ইত্যাদি স্পষ্টভাবে বুঝা যায়,তাহলে সেগুলোকে ব্যবহার করা যাবে না। কেননা এগুলো হাদীসে বর্ণিত নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভুক্ত।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يَجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ

প্রত্যেক ছবিনির্মাতা জাহান্নামে যাবে, তার নির্মিত প্রতিটি ছবি পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে। তাখজে: বুখারী-২২২৫, ৫৯৬৩, মুসলিম- ৫৬৬২


হাদিস শরীফে এসেছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى ﷺ يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

আ’মাশ তিনি মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।’ তাখরিজ: বুখারী ২/৮৮০


★ কিন্তু যদি এমন ইমোজিতে চোখ, মুখ ইত্যাদি অঙ্গগুলো স্পষ্টত বুঝা না যায়, তাহলে সেগুলোকে ব্যবহার করা যাবে। কেননা, এগুলোকে ‘প্রাণীর ছবি’ বলা যাবে না বরং খুব বেশী এগুলোকে আঁকিবুকি, চিহ্ন বা কিছু রেখা ইত্যাদি ভাবা হবে। তবে যথাসম্ভব এ সব ব্যবহার না করাই শ্রেয়।


যদি চোখ-মুখ বা শারীরিক অবয়ব স্পষ্ট বুঝা না যায়, তবে এমন ইমোজি ব্যবহারে দোষ নেই। কেননা তা প্রাণীর হুকুমের অন্তর্ভুক্ত নয়। আল-মুগনী ৭/২৮২; উছায়মীন, মাজমূ ফাতাওয়া ২/২৭৯


প্রশ্ন: গ। স্যোসাল মিডিয়া তথা ফেসবুক-ইন্টারনেটে ছবি আপলোড দেয়া সম্পর্কে দারুল উলুম দেওবন্দের ফতওয়া কি?

উত্তর : গ। ফেসবুক-ইন্টারনেটে নিজের ছবি তোলে আপলোড দেয়া জায়েয নয়। এই বিধান জনসাধারণ এবং আলেম সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যারা জেনেশোনে স্বেচ্ছায় নিজেদের ছবি ফেসবুক-ইন্টারনেটে আপলোড করে বা করায়, তাদের এই কাজ শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয নয়। চাই আপলোডকারী বা আপলোডের নির্দেশদাতা যে কেউ হোক।

দারুল ইফতা : দারুল উলূম দেওবন্দ, ভারত। ফতোয়া নং ১৫৪৬৮২


প্রশ্ন: ঘ। মাথা/পূর্ণচেহেরা কি ছবির অন্তর্ভুক্ত?


উত্তর: ঘ। প্রথম কথা হলো প্রাণীর ছবি অঙ্কন করা হারাম। এ সম্পর্কে এত বেশী হাদীস বর্ণিত রয়েছে যে,তা মুতাওয়াতির পর্যায়ের। এই অসংখ্য হাদীস সমূহ থেকে একটি হাদীস উল্লেখ করছি- হযরত সাঈদ ইবনে আবিল হাসান রাহ, থেকে বর্ণিত,


 ﻋَﻦْ ﺳَﻌِﻴﺪِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃُﺻَﻮِّﺭُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺼُّﻮَﺭَ، ﻓَﺄَﻓْﺘِﻨِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﻣِﻨْﻪُ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﺣَﺘَّﻰَ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﻋَﻠَﻰَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃُﻧَﺒُّﺌُﻚَ ﺑِﻤَﺎ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - . ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻳَﻘُﻮﻝُ : " ﻛُﻞُّ ﻣُﺼَﻮِّﺭٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ، ﻳَﺠْﻌَﻞُ ﻟَﻪُ ﺑِﻜُﻞِّ ﺻُﻮﺭَﺓٍ ﺻَﻮَّﺭَﻫَﺎ ﻧَﻔْﺴﺎً ، ﻓَﺘُﻌَﺬِّﺑُﻪُ ﻓِﻲ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ . " ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪُ ، ﻓَﺄَﻗَﺮَّ ﺑِﻪِ ﻧَﺼْﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ . ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 2225 ) ، ﻭﻣﺴﻠﻢ ﻭﺍﺍﻟﻔﻆ ﻟﻪ 


জনৈক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রা.) এর নিকট এসে বলল, আমি এসব ছবি অঙ্কন করে থাকি; তাই এ ব্যাপারে আপনি আমাকে ফাতাওয়া দিন। তিনি বললেন, তুমি আমার কাছে এসো। সে তার নিকটে এলে তিনি বললেন, (আরও) নিকটে এসো। সে (আরও) নিকটে এলো। পরিশেষে তিনি তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট যা শুনেছি, তাই তোমাকে বলব। আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ)কে বলতে শুনেছি - প্রত্যেক ছবি প্রস্তুতকারী জাহান্নামের অধিবাসী হবে। তার তৈরিকৃত প্রতিটি ছবিতে জীবন দেয়া হবে, সে সময় জাহান্নামে তাকে ঐগুলো আযাব দিতে থাকবে। তিনি আরও বললেন, তোমাকে একান্তই যদি (তা) করতে হয়, তাহলে গাছ (পালা) এবং প্রাণহীন বস্তুর (ছবি) প্রস্তুত করো। [ইমাম মুসলিম (রহঃ) এ হাদীস পড়ে শুনালে] নাসর ইবনু আলী (রহঃ) তার অনুমতি দিলেন। সহীহ বুখারী-[২২২৫]সহীহ মুসলিম [৫৪৩৩] 


 কিন্তু মাথা কর্তিত থাকলে সেই ছবি হারামের হুকুম থেকে বাহির হয়ে যাবে। যেমনঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : " ﺍﻟﺼُّﻮﺭَﺓُ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗُﻄِﻊَ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﺑِﺼُﻮﺭَﺓٍ .

" প্রাণীর মাথা-ই হল মূলত ছবি তথা প্রাণীর মাথাটাই ছবির উল্লেখযোগ্য অংশ। যখন কোনো ছবির অাকৃতি থেকে মাথাকে কেটে ফেলা হবে, তখন সেটা যেন কোনো ছবিই না। সুনানে বায়হাক্বী-১৪৫৮০ 


শুধু চেহারা বা মাথা সহকারে উপরের অর্ধাংশের ছবি বিনা প্রয়োজনে আঁকা কিংবা তোলা নাজায়িয ও হারাম। হযরত আবু হুরাইরা রাযি. বলেন, মাথার প্রতিকৃতির নাম হলো ছবি, আর যাতে মাথা নেই তা ছবি নয়। সূত্র: শরহু মাআনিল আছার, খ.২পৃ.৩৩৯ নাসায়ী হা.৫৩৬৫ সহীহ ইবনে হিব্বান হা.৫৮৫৩ শরহুস সিয়ারিল কাবীর,সারাখছী খ.৪ পৃ.২১৯ ফাতহুল বারী খ.১০ পৃ.৪৭০


যেহেতু মাথা ছাড়া কোনো প্রাণী জীবিত থাকতে পারেনা,তাই বলা হচ্ছে মাথা কাটা থাকলে সেটা ছবির হুকুমের আওতাধীন হবেনা। 


এ ব্যাপারে এত হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, ফকীহগণ বলেন, অর্থের দিক থেকে সেগুলো মুতাওয়াতির 'ধারাবাহিক অবিচ্ছেদ্য সূত্রের' পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আএসব হাদীসের ভিত্তিতেই প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ ইমাম নববী (রহঃ) সহ অনেকেই একমত যে রূহ বিশিষ্ট প্রাণীর প্রতিকৃতি বানানো নিষিদ্ধ এবং হারাম। পূর্বোক্ত আলোচনার দ্বারা বোঝা যায় যে, মুখমন্ডল আঁকাও প্রাণীর সম্পূর্ণ ছবি আঁকার নামান্তর। আবার ছবি ছোট হওয়ায় বিধানে কোনো তারতম্য হয় না। তাই এ ধরনের ছবিযুক্ত স্মাইলি বা ইমোটিকন ব্যবহারের বিধান ছবি অঙ্কনের বিধানের ন্যায় হারাম হবে বলেই মনে হয়। সূত্র: ফাতাওয়াল ইসলাম, প্রশ্ন নং: ৭২২২ ও ২০৮৯৪, মাকতাবা শামেলা


প্রশ্ন: ঙ। ছবি হারাম কি শুধু রাসূল (ﷺ)-এর যুগের সাথে খাস?

উত্তর: ঙ। না, খাস নয়, বরং কিয়ামত পর‌্যন্ত এ হুকুম বলবৎ থাকবে। যেমন এ সম্পর্ক শারহুল উমাদাহ ' গ্রন্থে আল্লামা ইবনে দাকীকুল ঈদ ( রহ.) উল্লেখ করেছেন, 

« ولقد ابعد عاية البعد من قال : إن ذلك محمول علي الكراهة ، وأن التشديد كان في ذلك الزمان لقرب عهد الناس بعبادة الاوثان . وهذا الزمان حيث انتشر الاسلاموتمهدت قواعده فلا يساويه في هذا التشديد . . . وهذا القول عندنا باطل قطعا ؛ لانه قد ورو في الاحاديث والاخبار عن أمر الآخرة بعذاب المصورين ، وانهم يقال لهم : أحيوا ما خلقتم. وهذه علة مخالفة لما قاله هذا القائل . وقد صرحخ بذلك في قوله صلي الله عليه وسلم : « المشبهون بخلق الله » . وهذه علة عامة مستقلة مناسبة، ولا تخص زمانا دون زمان . وليس لنا أن نتصرف في النصوص المتظاهرة المتضا فرة بمعني خياليّ»

যারা ছবি 'হারাম' হওয়ার বিষয়টিকে ' মাকরূহ '- এর কাতারে এনে বিষয়টিকে হালকা হিসাবে বর্ণনা করেছেন, এবং যুক্তি হিসেবে একথা বলেছেন যে,ছবি হারাম হওয়ার কঠোর বিধানটি তৎকালীন যুগের জন্য ছিল ( যখন ইসলামের সুচনাকাল ছিল।) কেননা তৎকালীন যুগ ছিল মুর্তিপূজার একেবারেই কাছাকাছি যুগ। বর্তমানে যেহেতু ইসলামের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে এবং ইসলামের বিধিবিধানও সহজ হয়েছে। এই জন্য সেই বিধানের কঠোরতা এখন আর অবশিষ্ট নেই।


আমরা বলব, যারা এহেন খোড়াযুক্তি দাঁড় করিয়ে ইসলামের বিধান সহজায়নে সাহায্য করেছেন, তারা বাস্তবতা থেকে বহুদুরে অবস্থান করেছেন।, আমাদের কাছে তাদের এই অভিমত চূড়ান্তভাবে বাতিল হিসেবে গন্য

কেননা হাদীস সমূহে এবং সাহাবায়ে কিরামের বর্ণনায় আখেরাতে ফটো নির্মাতাদের কঠোর শাস্তি প্রদানের সতর্কবানী উচ্চারিত হয়েছে। কিয়ামতের দিন ফটো নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে বলা হবে, তোমরা যা বানিয়েছ, তাতে জীবন দান কর।


সুতরাং আধুনিক পছন্দদের দাবীর সঙ্গে এই কারণটি একেবারেই বিপরীত মনে হয়। এছাড়া যে হাদীসে স্পষ্টভাষায় রাসূলে কারীম (ﷺ) উল্লেখ করেছেন المتشبهون بخلق الله

 ' ছবি নির্মাতারা আল্লাহর সৃষ্টির বৈশিষ্ট্যে সাদৃশ্যপূর্ন চলে যায়, এই কারণটি ব্যাপক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বতন্দ্র এবং একটি যথাযথ কারণ। এটি কোনো কালের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। সুতরাং হস্তক্ষেপ করা জায়েয হবে না। কেননা এটি একটি স্পষ্ট কারণ। সূত্র: শরহুল উমদাহ:খণ্ড-১,পৃষ্ঠা-১৭৬


প্রশ্ন: চ। প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়েজ, তাহলে প্রোফাইলে ছবি কি জায়েজ হবে?

উত্তর: চ। জিজ্ঞাসা-১২৬ শিরোনামে আমরা আলোচনা করেছি যে, কোন কোন ক্ষেত্রে ছবি তোলা জায়েজ আছে। অর্থাৎ যেখানে ছবি ছাড়া অসম্ভব; সেখানে জায়েজ। তাই বলে প্রোফাইলে ছবিটা দেওয়া জরুতের মধ্যে পড়ে না। কেননা আমরা (অনেকে) প্রোফাইলে ছবি ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাপসগুলো ব্যবহার করছি। সুতরাং প্রমাণিত হলো, এটা ছাড়া সম্ভব। তাই আমাদের প্রোফাইলে ছবি ব্যবহার না করাই শ্রেয়। সূত্র: আল আশবাহ ওয়ান-নাযায়ের-৮৫,কিফায়াতুল মুফতি ৯/২৪৪-২৪৫


সারকথা: হলো, যারা ক্যামেরায়/মোবাইলে ছবি তোলা জায়েজ বলছেন, তাদের যুক্তি হলো যেহেতু ছবিটা হাত দ্বারা অংকন করেনি। কেননা হাত দ্বারা ছবি অংকন করা সর্বোসম্মতভাবে হারাম। আর যারা হারাম বলছেন, তাদের যুক্তি হলো, সরাসরি হাত অংকন না করলেও পরোক্ষভাবে দ্বারাই অংকন হয়। যেমন হাত দ্বারা ক্যামেরা ধরা, হাতের সাহায্যে প্রিন্ট করা ইত্যাদি।


শেষ কথা: যেহেতু ছবির তোলার নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে হাদিসগুলো মুতাওয়াতের পর্যায়ের, কঠিন শাস্তির কথা এসেছে, তাই ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ ইত্যাদিতে চ্যাটিং-এর সময় বিভিন্ন ধরণের emoji ব্যবহার এবং প্রোফাইলে ছবি না দেওয়া উত্তম পন্থা, নাজাতের পথ। যেমন পবিত্র হাদিসে এসেছে-

 عن النعمان بن بشير -رضي الله عنه- قال: سمعت النبي -صلى الله عليه وسلم- يقول: «إن الحلال بيِّن وإن الحرام بين، وبينهما أمور مُشْتَبِهَاتٌ لا يعلمهن كثير من الناس، فمن اتقى الشُّبُهات فقد اسْتَبْرَأ لدينه وعرضه، ومن وقع في الشبهات وقع في الحرام، كالراعي يرعى حول الحِمى يوشك أن يَرْتَع فيه، ألا وإن لكل مَلِك حِمى، ألا وإن حِمى الله محارمه، ألا وإن في الجسد مُضغة إذا صلحت صلح الجسد كله وإذا فسدت فسد الجسد كله ألا وهي القلب». [صحيح] - [متفق عليه]


নু‘মান ইবন বশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, “হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দু’য়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয় রয়েছে - যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে তার দীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হল সে হারামেই লিপ্ত হল। যেমন রাখাল, যে তার পশু বাদশাহের সংরক্ষিত চারণভূমির আশেপাশে চরায়, অচিরেই সেগুলোর সেখানে ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেনে রাখ যে, প্রত্যেক বাদশাহরই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আরো জেনে রাখ যে, আল্লাহর জমীনে তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরে একটি গোশতের টুকরো আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সে গোশতের টুকরোটি হলো অন্তর। তাখরীজ: নাসায়ি-৪৪৫৩; ইবনে মাজাহ-৩৯৮৪; বুখারি-২০৫১, মুসলিম-১৫৯৯


বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন- ফাতাওয়ায়ে মাদানিয়া ২য় খণ্ড; ২০৬-২১৫ পৃষ্ঠা, আল্লামা মাহমুদুল হাসান দা.বা. এর কিতাব, ইসলামের আলোকে ফটোর বিধান মজলিসে এলম, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪, ডিজিটাল ছবি ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান- মুফতি ইহসানুল্লাহ শায়েক, মাকতাবাতুল আযহার, মোবা.০১৯২৪-০৭৬৩৬৫, ফতোয়ায়ে উসমানি-মুফতি তকি উসমানি দা.বা.-বইঘর প্রকাশনী-০১৭১১-৭১১৪০৯ 


 তথ্য সহযোগিতায়, ইসলামিক ফাতওয়া  


والله اعلم بالصواب


উত্তর দিচ্ছেন,

জিজ্ঞাসা-২৩৫: আপন বোনের দুধ পান করা যাবে কী?

No Comments

 

 


জিজ্ঞাসা-২৩৫:  অভিজ্ঞ মহলের কাছে বিনীত ভাবে জানতে চাই,  সদ্যপ্রসূত সন্তান যার মা মারা গেছে,  সেই সন্তান তার আপন বড় বোনের দুধ পান করতে পারবে কিনাতারিখ-২৫/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি

 মাওলানা রফিকুল ইসলাম বগুড়া থেকে---


জবাব

نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

শিশুকে দুধপান করানো শিশুর অধিকার। মায়ের উপর ওয়াজিব। তাফসিরে মারেফুল কোরআন (বাংলা)১৩০আল মুসতাদরাক আলাস সহিহাইন : ২/২২৮

 শিশুর দুধ পানের ক্ষেত্রে মাহরাম বা গয়রে মাহরাম কোন বিধি-নিষিধ নেই।

তবে  শিশুর দুধপান বিষয়ে কাফের-মুশরিক- চরিত্রহীনা মহিলার পান করানো যাবে না। কেননা এটা শিশুর প্রতি প্রতিক্রিয়া কাজ করবে।


চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে জানা যায় যেদেহপসারিণীর (ব্যভিচারী নারীর) দুধ পানে হেপাটাইটিস বি  এইডস-এর মতো ভয়াবহ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে শিশু।

 তাছাড়া মায়ের মারাত্মক ব্যাধি হলে যা শিশুর মধ্যে সংক্রমক হওয়ার আশংকা হলেতখন  মায়ের দুধ পান করানো যাবে না।  

هل يجوز للمرأة أن ترضع أخاها‏؟‏

ج3‏:‏ يجوز للمرأة أن ترضع أخاها الصغير إذا احتاج إلى ذلك، ويكون ابنا لها من الرضاعة إذا أرضعته  ع أخاها‏؟‏ من الفتوى رقم ‏(‏19329‏)‏

অর্থাৎ আপনার প্রশ্নে বর্ণিত ছুরতে শিশুটি তার আপন বোনের দুধপান করতে কোন সমস্যা নেই। সূত্র: ফাতওয়ায়ে ইবনে বায-ফাতওয়া নং-১৯৩২৯প্রচলিত ভুল মাসিক আল-কাউসার-জানুয়ারি-২০১০ সংখ্যা

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিচ্ছেনমুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক 

স্বাস্থ্য পরামর্শ-৮০: ঘরোয়া উপায়ে দাঁত ঝকঝক করুন নিমিষেই!

No Comments

 



ঘরোয়া উপায়ে দাঁত ঝকঝক করুন নিমিষেই!

 

ঝকঝকে দাঁতের সুন্দর হাসি উল্টোদিকের মানুষটির মন ভুলিয়ে দিতে পারে অনায়াসে। তাই দাঁতে চাই বাড়তি ঔজ্জ্বল্য। বিভিন্ন কারণে দাঁতে দাগছোপ পড়ে। নিয়মিত দাঁত মেজেও এমন হতে পারে। তবে দাঁতের দাগছোপ দূর করার ক্ষেত্রে শুধু মাজনের উপর ভরসা করলে চলবে না। ঘরোয়া টোটকাতেও কিন্তু মুশকিল আসান হতে পারে। রইল তেমন কয়েকটি ঘরোয়া টোটকার সন্ধান।


হলুদ

সংক্রমণজনিত রোগের দাওয়াই হলুদ। তবে দাঁত সাদা করতেও এর জুড়ি মেলা ভার। হলুদে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। হলুদ ‘জিঞ্জিভাইটিস’-এর মতো দাঁতের রোগ সারাতেও কার্যকরী। দাঁত সাদা করতে কী ভাবে ব্যবহার করবেন হলুদ? এক চামচ হলুদ পানিতে অথবা নারকেল তেলে মিশিয়ে দাঁতে ভাল করে ঘষুন। মিনিট খানেক পরে ধুয়ে নিন। দাঁতের হলদে ভাব কাটবে।



তুলসী

সর্দি-কাশি থেকে সেরে উঠতে তুলসী হল অন্যতম ভরসা। তবে দাঁত চকচকে রাখতেও তুলসীর জুড়ি মেলা ভার। তুলসী দাঁতে বেড়ে ওঠা ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করে। ফলে ক্যাভিটির মতো সমস্যা থেকে দাঁত সুরক্ষিত থাকে। তুলসী পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে মাজনের সঙ্গে মাজতে পারেন। উপকার পাবেন।



নিম

দাঁতের যত্নে নিমের দাঁতন সত্যিই উপকারী। দাঁত মজবুত রাখতেও নিমের বিকল্প নেই। তবে দাঁত সাদা করতেও যে নিম সাহায্য করতে পারে, তা অনেকেই জানেন না। কয়েকটি নিমপাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে মাজনের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। নিমপাতার গুঁড়ো দিয়ে দাঁত মাজলে ঝকঝকে হতে বাধ্য।


এনএ/আওয়ার ইসলাম ২৪.কম ২৯ জুলাই ২০২৪

খাদ্য ও পুষ্টি পরামর্শ-০১: গরমে লাউ খাবেন যে কারণে

No Comments

 



গরমে লাউ খাবেন যে কারণে


আমাদের দেশের সুস্বাদু সব সবজির মধ্যে লাউ হলো অন্যতম। আর এ লাউ এমন একটি সবজি যা খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে।


লাউ মূলত শীতকালীন সবজি হলেও এখন এটি প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। লাউ-চিংড়ি বাঙালি রান্নার অন্যতম সুস্বাদু পদ। এছাড়া লাউ দিয়ে তৈরি করা যায় সুস্বাদু ডেজার্টও। এই গরমে লাউ খাওয়ার রয়েছে অনেকগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতা।


তো চলুন জেনে নেওয়া যাক গরমকালে লাউ কেন খাবেন সে সম্পর্কে-


প্রচুর পানি: ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) এর দেওয়া এক তথ্য অনুসারে, লাউয়ে থাকা প্রচুর পরিমাণ পানি একে একটি হাইড্রেটিং খাবার হিসেবে তৈরি করে, যা তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত হাইড্রেশন সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তাই লাউ খেলে তা হজমে সহায়তা করে, রক্ত সঞ্চালন এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।


ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ: কেনটাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে গবেষণা অনুসারে, লাউ খাদ্যতালিকাগত ফাইবার সরবরাহ করে।


ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে, অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্বাস্থ্যকর হজমের সহায়তা করে।


পুষ্টি-সমৃদ্ধ: লাউ ভিটামিন বি এবং সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের মতো খনিজ পদার্থ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টির উৎস। এই পুষ্টি ইমিউন ফাংশন, হাড়ের স্বাস্থ্য, শক্তি উৎপাদন এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে সেলুলার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


কম ক্যালোরি: অল্প তেল এবং মসলা দিয়ে তৈরি লাউ একটি কম-ক্যালোরিযুক্ত খাবার। যারা তাদের ক্যালোরি গ্রহণের বিষয়ে খেয়াল রাখছেন তাদের জন্য এটি উপযুক্ত। এটি ওজন কমানোর লক্ষ্যে একটি সুষম খাদ্যের অংশ হতে পারে।


হজম করা সহজ: লাউ হজম করা সহজ। এর ফাইবার সামগ্রী এবং পানি-সমৃদ্ধ প্রকৃতির কারণে এটি হজম করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। হজম সংক্রান্ত সমস্যা বা পেটের বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি আরামদায়ক খাবার হতে পারে।


এনএ/আওয়ার ইসলাম ২৮ জুলাই ২০২৪

Stylo

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে করে যোগাযোগ করুন। জাযাকাল্লাহু খাইর