আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

নির্বাচিত মাসআলা-২৩: আশুরার রোজা ৩টি পদ্ধতিতে রাখা যায়।

No Comments

 



*যারা আশুরার রোজা রাখতে চান, তারা জেনে নিন: আশুরার রোজা ৩টি পদ্ধতিতে রাখা যায়।*


▫️ *প্রথম পদ্ধতি (এটিই সর্বোত্তম):*

আশুরা মানে মুহাররাম মাসের ১০ তারিখ। আশুরার রোজা রাখার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো, আশুরার আগের দিন (৯ই মুহাররাম) ও আশুরার দিন (১০ই মুহাররাম) রোজা রাখা। অর্থাৎ, আগামী ১৬ ও ১৭ই জুলাই ২০২৪ (মঙ্গলবার ও বুধবার) এই দুই দিন রোজা রাখা উত্তম হবে।


ইবনু আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা রাখলেন এবং (অন্যদের) রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন, তখন লোকেরা বললো, ‘হে আল্লাহর রাসুল! এটিতো এমন দিন, যাকে ইহু -দি ও খ্রিস্টানরা বিশেষ মর্যাদা দেয় (তাহলে এমন দিনে আমরা রোজা রাখবো কেনো?)!’ তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, *‘‘আগামী বছর এই দিন আসলে, আমরা (আশুরার দিনের সাথে) ৯ তারিখেও রোজা রাখবো ইনশাআল্লাহ।’’* বর্ণনাকারী বলেন, পরের বছর আসার আগেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকাল হয়ে যায়। [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২৫৫৬]


▫️ *দ্বিতীয় পদ্ধতি*

কেউ চাইলে আশুরার দিন (১০ই মুহাররাম) এবং এর পরের দিনও (১১ই মুহাররাম) রোজা রাখতে পারেন। অর্থাৎ বুধ ও বৃহস্পতিবার। 


রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

তোমরা ইহুদিদের বিরোধিতা কোরো—আশুরার আগে বা পরে আরও একদিন রোজা রাখো।’’ [ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ: ২১৫৫; ইমাম বাইহাকি, আস-সুনানুল কুবরা: ৪৩১৫; হাদিসটি হাসান (শায়খ আহমাদ শাকিরের তাহকিক)]


▫️ *তৃতীয় পদ্ধতি:*

শুধু আশুরার দিন (১০ই মুহাররাম) রোজা রাখাও জায়েয; এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে, উত্তম হলো, দুইটি রোজা রাখা। [ইমাম ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মা‘আদ]


*আশুরা মানে ‘দশম’।* অর্থাৎ, মুহাররামের দশ তারিখের (১৭ই জুলাই) রোজাটি হলো আশুরার রোজা। তাই, কেবল ১৭ই জুলাই, বুধবারের রোজাটিই আশুরার নিয়তে রাখবেন। এর আগের দিন বা পরের দিনের রোজা সাধারণ নফলের নিয়তে রাখবেন।


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি— তিনি (এর দ্বারা) *পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।”* [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২৬৩৬]


এক ব্যক্তি আশুরার রোজা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন—


‘‘এটি এক বছরের (নফল) রোজা(র সমতূল্য)।” [ইমাম ইবনু হিব্বান, আস-সহিহ: ৩৬৩১; হাদিসটি সহিহ]


অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

রামাদানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাস মুহাররাম (মাসের রোজা)। [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২৬৪৫]


তাই, এই মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা উত্তম ও ফজিলতের ব্যাপার। আমরা শুধু আশুরার রোজা রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবো না, বরং আল্লাহর মাসের বাকি দিনগুলোতেও সাধ্যানুসারে বেশি বেশি রোজা রাখার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।