*▪️উযূর সুন্নাত সমূহ-▪️*
১. উযূর নিয়ত করা অর্থাৎ উযূকারী মনে মনে এই নিয়ত করবে যে, পবিত্রতা অর্জন করা ও নামায জায়েয হওয়ার জন্য আমি উযূ করছি। (সূরা বায়্যিনাহ, ৫/ বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৬৬৮৯)
২. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে উযূ আরম্ভ করা। হাদীসে পাকে আছে, বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহ পড়ে উযূ করলে যতক্ষণ ঐ উযূ থাকবে, ফেরেশতাগণ তার নামে ততক্ষণ অনবরত সাওয়াব লিখতে থাকবে, যদিও সে কোন মুবাহ কাজে লিপ্ত থাকে।(নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং-৭৮/ তাবারানী সাগীর, ১ : ৭৩)
৩. উভয় হাত পৃথকভাবে কব্জিসহ তিনবার ধোয়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৫৯)
৪. মিসওয়াক করা। যদি মিসওয়াক না থাকে তাহলে আঙ্গুল দ্বারা দাঁত মাজা মিসওয়াক অর্ধ হাতের চেয়ে বেশি লম্বা না হওয়া এবং গাছের ডাল হওয়া মুস্তাহাব। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৯২১৬, ১৩৯, ৩৯৯০/ তিরমিযী, হাদীস নং-২৩/ বাইহাকী, হাদীস নং-১৭৪)
৫. তিনবার কুলি করা। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৮৫)
৬. তিনবার নাকে পানি দেয়া এবং নাক সাফ করা। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-১০৭৭)
৭. ততসঙ্গে প্রতিবারই নাক ঝাড়া। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-২৩৬)
৮. প্রত্যেক অঙ্গকে পূর্ণভাবে তিনবার করে ধোয়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৫৯) এর জন্য তিনবারের বেশি পানি নিতে হলে নিবে।
৯. দুই হাতে মুখ ধোয়া এবং মুখমণ্ডল ধোয়ার সময় দাড়ি খিলাল করা।(তিরমিযী, হাদীস নং-৩১)
১০.হাত ও পা ধোয়ার সময় আঙ্গুলসমূহ খিলাল করা। (তিরমিযী, হাদীস নং-৩৮)
১১. একবার সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ্ করা।(তিরমিযী, হাদীস নং-৩৪)
১২. উভয় কান মাসাহ করা। উল্লেখ্য, কানের ছিদ্রের মধ্যে কনিষ্ঠ আঙ্গুল ঢুকিয়ে এবং ভিতর দিকে অবশিষ্ট অংশে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা মাসাহ করা।(তিরমিযী, হাদীস নং-৩৩/ আবু দাউদ, হাদীস নং-১৩৫)
১৩. উযূর অঙ্গসমূহ হাত দ্বারা ঘষে-মেজে ধোয়া।(মুস্তাদরাক, হাদীস নং-৫৭৬/ সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস নং-১১৮)
১৪. এক অঙ্গ ধোয়ার পর অন্য অঙ্গ ধৌত করতে বিলম্ব না করা।(মুসলিম, হাদীস নং-২৪৩/ আবু দাউদ, হাদীস নং-১৭৩)
১৫. তরতীবের সাথে উযূ করা। অর্থাৎ উযূর অঙ্গসমূহ ধোয়ার সময় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। (আবু দাউদ, হাদীস নং-১৩৭)
১৬. ডান দিকের অঙ্গ আগে ধোয়া।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৬৮)
১৭. শীত অথবা অন্য কোন কারণে যখন উযূ করতে ইচ্ছে না হয়, তখনও উযূর অঙ্গসমূহ উত্তমরূপে ধুয়ে উযূ করা।(তিরমিযী, হাদীস নং-৫১/ মুসলিম, হাদীস নং-২৫১)
১৮. উযূর মধ্যে নিম্নোক্ত দু‘আটি পড়া :
اَللّهُمَّ اغْفِرْلِي ذَنْبِيْ وَوَسِّعْ لِيْ فِيْ دَارِيْ وَبَارِكْ لِيْ فِيْ رِزْقِيْ.
(আমালুল্য়াওমি ওয়াল লাইলাহ লি ইবনিসসুন্নী, হাদীস নং-২৮)
এবং উযূ শেষ করে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া।(মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-২৩৪)
অতঃপর এ দু‘আ পড়া : (তিরমিযী, হাদীস নং-৫৫)
اَللّهُمَّ اجْعَلْنِيْ مِنَ التَّوَّابِيْنَ وَاجْعَلْنِيْ مِنَ الْمُتَطَهِّرِيْنْ .
উল্লেখ্য, গোসল এবং তায়াম্মুমের শুরু ও শেষে উযূতে বর্ণিত দু‘আ পড়বে।
বি.দ্র. শুধু এ সব বর্ণনা পড়ার দ্বারা সুন্নাত তরীকায় উযূ করা সম্ভব নয়, এ জন্য কোন হাক্কানী আলেম থেকে সব বিষয়গুলো চাক্ষুষভাবে দেখে নিবে। আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হযরত জিবরাঈল আ.-এর মাধ্যমে সকল বিষয় চাক্ষুষভাবে দেখিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। (তিরমিযী, হাদীস নং-১৪৯)