আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-২০৭: টিএ ডিএ বিল পাস করানোর জন্য ঘুষ দেওয়া জায়েজ হবে

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-২০৭:

সরকারি যে কোন অফিস থেকে টিএ ডিএ বিল পাস করানোর জন্য ঘুষ দেওয়া জায়েজ হবে কিনা? (তারিখ৫/০৬/২০২২ ঈসায়ি/ইংরেজি)

 

 মাওলানা মোহাম্মদ আক্তার হোসেন, কুমিল্লা থেকে----- 

জবাবঘুষের ভয়াবহতা সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত।  কিছু কিছু গুনাহ আছে যা কোন ধর্মে তা তো সমর্থন করে না। তারমধ্যে অন্যতম হলো ঘুস।  আপনার প্রশ্নকে সহজভাবে বুঝার জ্যন তিনভাগে ভাগ করছি।

 

প্রশ্ন:        ক।   ঘুষ কাকে বলে?


উত্তর:       ক।  ঘুষ শব্দটি বাংলা, দেশি শব্দ। কোনো কাজে সাহায্য লাভের জন্য বা কার্যসিদ্ধির জন্য গোপনে দেওয়া পুরস্কার বা অর্থউত্কোচ। সূত্র: সংসদ বাংলা অভিধান

 কোনো প্রতিষ্ঠানে কমকতা কমকতা কমচারী তাদের কাজে জন্য নিদিষ্ট বেতন ভাতা পায়। কিনতু তারা যদি ঐ কাজে জন্য অন্যয়ভাবে আরও বেশি কিছু গ্রহণ করে তা হলো ঘোষ। 

 

প্রশ্ন:       খ।   ঘুষ গ্রহণ করা কি জায়েজ আছে?

প্রশ্ন:  খ।  না, কোন অবস্থায় ঘুষ গ্রহণ করা জায়েজ নেই। দলিল:

 

 

وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا فَرِيقًا مِّنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ

তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে-বুঝে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারককে উৎকোচ দিও না। সুরা বাকারা- ১৮৮

 

 আবু হুরায়রা রা. রাসূলুল্লাহ্ () থেকে বর্ণনা করেন,

«لَعَنَ اللهُ الرَّاشِيَ وَالْمُرْتَشِيَ فِي الْحُكْمِ» অর্থ: বিচার-ফায়সালায় ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়ের উপরে আল্লাহ তাআলা লানত করেছেন। তাখরিজ:  মুসনাদে আহমদহাদীস নং ৯০১১


প্রশ্ন:        গ।    মাজলুম/নিরাপায় হয়ে ঘুষ দেওয়া কি জায়েজ?


উত্তর:       গ।   হ্যাঁ,  মাজলুম/নিরাপায় হয়ে ঘুষ দেওয়া কি জায়েজ আছে। অর্থাৎ মাজলুম ব্যক্তি যদি বৈধ কোনো পন্থায় নিজের হক উদ্ধার করার সক্ষমতা রাখে তাহলে সে তাই করবে। আর যদি বৈধ পদ্ধতিতে উদ্ধার করার সক্ষমতা না থাকে; তাহলে অর্থ প্রদানের মাধ্যমেও অধিকার রক্ষা করতে পারে। তবে মুমিন মুসলমানদের জন্য এই অনুমতির বিষয়টা একান্ত অপারগ পরিস্থিতিতে পালন করা উচিত। সূত্র: রদ্দুল মুহতারখণ্ড-৯পৃষ্ঠা-৬০৭ফাতহুল ক্বাদীর,খণ্ড-৭,পৃষ্ঠা-২৫৫বাহরুর রায়েক,খণ্ড-৬,পৃষ্ঠা-২৬২
 

সারকথা: আপনার প্রশ্নে বর্ণিত টিএ,ডিএ যদি বাস্তবিক দাবি হয়, (আর দাবিটা যদি অসত্য হয়, তাহলে তো ডিমান্ট করা এমনিতে জায়েজ নেই)। সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা-ফিকির করার পরও যদি লক্ষ্য অর্জিত  না হয়। এমতাবস্থায় অপারগতার কারণে ঘুষ দেওয়া জায়েজ হবে। কিন্তু ঘৃণাভরে ঘুষটা দিতে হবে।  হারাম জিনিস হালাল মনে করলে ঈমান থাকে না; তেমনি হারাম কাজে খুশি হওয়াও ঈমান যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

 

তাকওয়া: তবে এ বিষয়ে কেউ  ঘুষের ভয়ে মূল টাকা/দাবিও ছেড়ে দেয়; তাহলে তার জন্য অবশ্যই এটা উত্তম/সর্বোচ্চ তাকওয়া। যেমন,

 

আবু দারদা (রা.) বলেনপরহেজগারিতা পরিপূর্ণ হয় যখন বান্দা তার প্রতিপালককে ভয় করবে। এমনকি সে অণু পরিমাণ গুনাহের ব্যাপারেও সতর্ক থাকে। সূত্র: জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ৮/২২