জিজ্ঞাসা-২৩৭: বর্তমানে আমাদের সমাজে জমিকট নেয়া হয়। এক/দের লক্ষ্য টাকা দিয়ে এক বৎসরের জন্য এক বিঘা জমি। এখন এক বৎসর পর টাকা ফেরত নেবার সময় মূল টাকা হতে ৩ হাজার টাকা কম নিলে কতটুকু শরিয়ত সম্মত হবে একটু জানাবেন প্লিজ। ধন্যবাদ। তারিখ-২৭/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা ইব্রাহীম ঢাকা থেকে-----
জবাব:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
সালাম ও তাসলিম বাদ, কথা এই যে, বাংলাদেশে প্রচলিত জমি বন্ধক/কট পদ্ধতি হারাম। হজরতে ফোকাহায়ে কেরামাগণ! জায়েজের ছুরত বর্ণনা করেছেন, তা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই বেখবর। উল্লেখ্য যে, জায়েজ পদ্ধতি আছে অবশ্যই, কিন্তু তা গ্রহণ না করাই অধিক তাকওয়া।
যাই হোক প্রথম কথা হলো, বন্ধককৃত বস্তু বন্ধকগ্রহীতার কাছে আমানতস্বরূপ। ★বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতার কোনো ফায়দা হাসিল করা নাজায়েজ ও হারাম। এমনকি বন্ধকদাতা এর অনুমতি দিলেও পারবে না। কারণ বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতা কোনো ধরনের ফায়দা উপভোগ করা সুদের অন্তর্ভুক্ত, যা হারাম। সূত্র: বাদায়েউস সানায়ে : ৬/১৪৬ দলিল:
হাদিস/আসার নং-০১
ফাযালাহ ইবুন উবাইদ (রা.) বলেন,
كُلُّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً فَهُوَ وَجْهٌ مِنْ وُجُوهِ الرِّبَا
‘যে ঋণ থেকে ঋণদাতা উপকৃত হয় তা সুদের একটি প্রকার।’তাখরিজ: সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদিস: ১১২৫২
হাদিস/আসার নং-০২
اسْتَقْرَضَ رَجُلٌ مِنْ رَجُلٍ خَمْسَمِائَةِ دِينَارٍ عَلَى أَنْ يُفْقِرَهُ ظَهْرَ فَرَسِهِ فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ : مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِ فَرَسِهِ فَهُوَ رِبًا
ইবনে সিরিন (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক লোক সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করল, এক ব্যক্তি আমার কাছে একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, তা আমি আরোহণের কাজে ব্যবহার করেছি। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তুমি আরোহণের মাধ্যমে এর থেকে যে উপকার লাভ করেছ তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে। তাখরিজ: মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৭১
হাদিস/আসার নং-০৩
বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম কাজি শুরাইহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সুদ পান করা কিভাবে হয়ে থাকে? তিনি বলেন, বন্ধকগ্রহীতা বন্ধকি গাভির দুধ পান করা সুদ পানের অন্তর্ভুক্ত। মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৬৯,
ঋণদাতার জন্য বন্ধকি জমি ভোগ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটি মূলত ঋণ প্রদান করে বিনিময়ে সুদ গ্রহণেরই একটি প্রকার। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত পদ্ধতিটি জায়েজ হবে না।
উল্লেখ্য যে, জায়েজ পদ্ধতি ওলামায়ে কেরাম থেকে জেনে নিবেন। ইনশাল্লাহ আমরাও কোন এক সময় আলোচনা ইচ্ছা রাখি। সূত্র: মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/২৪৪-২৪৫; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৩/১৪৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; শরহুল মাজাল্লা, খালেদ আতাসী ৩/১৯৬-১৯৭; ইলাউস সুনান ১৮/৬৪
তথ্যসহযোগিতা, ইসলামিক ইফতা
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিচ্ছেন,