জিজ্ঞাসা-১৩০৫৩:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। ডিপিএস বিষয়ে শরীয়তের বিধান জানতে চাই। যাতে আমরা শরীয়তের সঠিক বিধান মানতে পারি।
তারিখ: ১৭/০৭/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আব্দুল্লাহ হিল কাফী ঝিনাইদহ থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ডিপিএস যদি সুদি ব্যাংক-এ হয় তাহলে তো নিশ্চিত হারাম, কেননা ব্যাংকে ডিপিএস করে বাড়তি টাকা কিসের ভিত্তিতে পাওয়া যায়? নিশ্চয়ই ব্যাংক সুদ দেয়। সুদ নেওয়া কি জায়েজ?
দ্বিতীয় কথা হলো, ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস পদ্ধতি করা ইসলামী শরিয়াহ সিস্টেমে। অর্থাৎ লিখিত নীতিমালা গুলো শরিয়া পদ্ধতি এটা কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকগুলো তাদের বিনিয়োগে যথাযথভাবে শরীয়তের নীতিমালা অনুসারণ করে না।
তাই অনুসন্ধানী আলেমদের ফতোয়া হলো, বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকে ডিপিএস রাখা জায়েজ নেই। অর্থাৎ পরিপূর্ণ সুদ মুক্ত নয়।
সারকথা হলো, বাংলাদেশে কোনো ব্যাংকে ডিপিএস রাখা জায়েজ নেই, যদি যুক্তির খাতিরে ধরে নেন ইসলামী ব্যাংকের নীতিমালাগুলো ইসলামী মোতাবেক, তাই জায়েজ। কিন্তু অনুসন্ধানী আলেমদের মতে নাজায়েজ, এ বিষয়ে শরীয়তে বিধান হল, হালাল হারামের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়ে গেলে বিরত থাকায় নিরাপদ। দলিল-
وَعَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ إنَّ الْـحَلاَلَ بَيِّنٌ وَإنَّ الْـحَرامَ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبَهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهُنَّ كَثيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ في الحَرَامِ كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الحِمَى يُوشِكُ أنْ يَرْتَعَ فِيهِ ألاَ وَإنَّ لكُلّ مَلِكٍ حِمَىً ألاَ وَإنَّ حِمَى اللهِ مَحَارِمُهُ ألاَ وَإنَّ فِي الجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَت صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ ألاَ وَهِيَ القَلْبُ متفقٌ عَلَيْهِ
নু’মান ইবনে বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, অবশ্যই হালাল বিবৃত ও স্পষ্ট এবং হারাম বিবৃত ও স্পষ্ট, আর উভয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দিহান বস্তু; যা অনেক লোকেই জানে না। অতএব যে ব্যক্তি এই সন্দিহান বস্তুসমূহ হতে দূরে থাকবে, সে তার দ্বীন ও ইজ্জতকে বাঁচিয়ে নেবে এবং যে ব্যক্তি সন্দিহানে পতিত হবে (সন্দিগ্ধ বস্তু ভক্ষণ করবে), সে হারামে পতিত হবে। (এর উদাহরণ সেই) রাখালের মত, যে নিষিদ্ধ চারণভূমির আশেপাশে পশু চরায়, তার পক্ষে নিষিদ্ধ সীমানায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শোন! প্রত্যেক বাদশাহরই সংরক্ষেত চারণভূমি থাকে। আর শোন! আল্লাহর সংরক্ষেত চারণভূমি হল তাঁর হারামকৃত বস্তুসমূহ। শোন! দেহের মধ্যে একটি মাংসপি- রয়েছে; যখন তা সুস্থ থাকে, তখন গোটা দেহটাই সুস্থ হয়ে থাকে। আর যখন তা খারাপ হয়ে যায়, তখন গোটা দেহটাই খারাপ হয়ে যায়। শোন! তা হল হৃৎপি- (অন্তর)। বুখারী ৫২, ২০৫১, মুসলিম ৪১৭৮)
والله اعلم بالصواب