আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

দ্বীনি সচেতনতা-১৮: সন্তানের খেলনা সামগ্রী সতর্কতা জরুরী-

No Comments

 



সন্তানের খেলনা সামগ্রী সতর্কতা জরুরী-


 শিশুদের খেলার জন্য অস্থায়ী ভাবে ব্যবহার্য খেলনা পুতুল ব্যবহার করা নাজায়েয নয় (ইবনু তায়মিয়াহ, আল-ফাতাওয়াল কুবরা ৫/৪১৫; ইবনু হাযম, মুহাল্লা মাসআলা নং ১৯১০; আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া ১২/১২১)। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে পুতুল নিয়ে খেলা করতাম আর আমার কিছু সাথীও আমার সাথে খেলা করত। যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রবেশ করতেন তখন তারা আত্মগোপন করত। কিন্তু তিনি তাদেরকে আমার নিকট পাঠিয়ে দিতেন, অতঃপর তারা আমার সাথে খেলত (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৪৩)।  নববী বলেন, মেয়েদের খেলনার বিষয়টি স্বতন্ত্র। কারণ এ ব্যাপারে ছাড় রয়েছে। খেলনাটি মানবাকৃতির হৌক বা প্রাণীর আকৃতির হৌক, দেহধারী হৌক বা দেহহীন হৌক, প্রাণীকুলের মধ্যে তার সাদৃশ্য থাক বা না থাক যেমন দু’ডানা ওয়ালা ঘোড়া (ফাৎহুল বারী ১০/৫২৭; তোহফা ৫/৩৫০



সারকথা হলো,

যে সকল বস্তুর প্রাণ আছে, এমন প্রাণীর চোখ,কান, মুখ থাকা অবস্থায় উক্ত প্রাণীর ছবি আঁকা, তা ব্যবহার করা, তার ঘরে রাখা এবং তা দিয়ে খেলাধুলা করা কোনটিই জায়েজ নয়। তাই বাচ্চাদের জন্য প্রাণীর পুতুল দিয়ে খেলা জায়েজ হবে না। চোখ-মুখ না থাকলে তথা প্রাণির অবস্থান পরিস্ফুটিত না হলে ব্যবহার করার সুযোগ আছে। যেমন হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ কাপড়ের পুতুল দিয়ে খেলেছিলেন। এসবের চোখ-কান তথা মুখের অবয়ব ছিল না।



عَنْ أَبِي طَلْحَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلَا تَصَاوِيرُ

হযরত আবু তালহা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ঐ ঘরে ফেরেস্তা প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৯৪৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২১৭৭২}


عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ لَنَا سِتْرٌ فِيهِ تِمْثَالُ طَائِرٍ وَكَانَ الدَّاخِلُ إِذَا دَخَلَ اسْتَقْبَلَهُ فَقَالَ لِى رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- حَوِّلِى هَذَا فَإِنِّى كُلَّمَا دَخَلْتُ فَرَأَيْتُهُ ذَكَرْتُ الدُّنْيَا

হযরত আয়শা রাঃ বর্ণনা করেন। আমাদের একটা পর্দা ছিল। এতে পাখির ছবি ছিল। যখন কেউ ভিতরে আসত তখন এ ছবি তার সামনে পড়ত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ এটি উল্টিয়ে দাও, কেননা, যখনই আমি ভিতরে আসি, আর এটা দেখি, দুনিয়ার কথা মনে পড়ে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৪৩}


عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- مِنْ سَفَرٍ وَقَدْ سَتَّرْتُ عَلَى بَابِى دُرْنُوكًا فِيهِ الْخَيْلُ ذَوَاتُ الأَجْنِحَةِ فَأَمَرَنِى فَنَزَعْتُهُ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ সফর থেকে ফিরে আসলেন। আমি আমার দরজায় ডানাযুক্ত ঘোড়ার ছবি সম্বলিত একটি রেশমি পর্দা টানিয়ে রেখেছিলাম। রাসূল সাঃ আমাকে নির্দেশ দিলেন, এবং আমি তা সরিয়ে ফেললাম। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৪৫}


عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- وَأَنَا مُتَسَتِّرَةٌ بِقِرَامٍ فِيهِ صُورَةٌ فَتَلَوَّنَ وَجْهُهُ ثُمَّ تَنَاوَلَ السِّتْرَ فَهَتَكَهُ ثُمَّ قَالَ إِنَّ مِنْ أَشَدِّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِينَ يُشَبِّهُونَ بِخَلْقِ اللَّهِ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ একদিন আমার কাছে আসলেন। আমি তখন ছবিযুক্ত একটি পর্দা টানাতে ব্যস্ত ছিলাম। তা দেখে তাঁর চেহারার রঙ পরিবর্তন হয়ে গেল। অতঃপর পর্দাটা নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি তাদের হবে যারা আল্লাহর সৃষ্টির সাদৃশ্য তৈরী করে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৪৭}


عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِى الْحَسَنِ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ إِنِّى رَجُلٌ أُصَوِّرُ هَذِهِ الصُّوَرَ فَأَفْتِنِى فِيهَا. فَقَالَ لَهُ ادْنُ مِنِّى. فَدَنَا مِنْهُ ثُمَّ قَالَ ادْنُ مِنِّى. فَدَنَا حَتَّى وَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ قَالَ أُنَبِّئُكَ بِمَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ « كُلُّ مُصَوِّرٍ فِى النَّارِ يَجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهُ فِى جَهَنَّمَ ». وَقَالَ إِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً فَاصْنَعِ الشَّجَرَ وَمَا لاَ نَفْسَ لَهُ.

হযরত সাঈদ বিন আবুল হাসান বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ এর কাছে এসে বলল, আমি চিত্রকর। এবং চিত্র অংকন করি। এতএব এ সম্পর্কে আমাকে শরীয়তের বিধান বলে দিন। ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তাঁর কাছে গেল। তিনি পুনরায় বললেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তার এত কাছে গেল যে, ইবনে আব্বাস রা তাঁর হাত ঐ ব্যক্তির মাথার উপর রাখলেন, এবং বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে এমন একটি হাদীস শুনাচ্ছি, যা আমি রাসূল সাঃ এর কাছে শুনেছি। আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, “সকল চিত্রকরই দোযখে যাবে। আর প্রত্যেক চিত্রের পরিবর্তে জীবিত এক ব্যক্তিকে বানানো হবে, যা দোযখে তাকে শাস্তি দেবে”। ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, যদি তোমাকে এরূপ করতেই হয়, তাহলে গাছ-পালা বা এমন বস্তুর ছবি তৈরী কর যা প্রাণী নয়। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৬২}