আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৪৭: মসজিদের জিনিস অন্য কাজে ব্যাবহার করা যাবে কি?

No Comments

 




জিজ্ঞাসা-১৪৭:   ক। মসজিদের  জিনিস মসজিদের বাহিরে অন্য কাজে ব্যাবহার করা যাবে কি?

 মাওলানা আখতার হোসেন যশোর  থেকে----


জবাব:      ক।  মসজিদে দানকৃত মালামালজায়গা-জমিআসবাবপত্র ইত্যাদি পুরাতন কিংবা নতুনব্যবহৃত কিংবা অব্যবহৃত কোন কিছু সাধারণের জন্য ব্যবহার করা কোন অবস্থাতেই জায়েয নেই। এমনকি এক মসজিদের যাবতীয় আসবাবপত্র অন্য মসজিদে ব্যবহার করা জায়েয নেই। একটি মসজিদে বদনা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আছেঅন্য মসজিদে একটিও নেইতবুও এক মসজিদের বদনা অন্য মসজিদে দেয়ার বা ব্যবহারের অনুমতি নেই। মসজিদের আমদানী বা দান অন্য কোন ওয়াক্ফে/খাতে খরচ করা হারামযদিও উক্ত মসজিদের প্রয়োজন না হয়। তবে মসজিদে ব্যবহৃত বা মসজিদের জন্য দানকৃত যে কোন মালামাল ও আসবাব অব্যবহৃত থাকার দারুন নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা হলে বিশেষ প্রয়োজনে বিক্রয় করতে পারবে। আর উক্ত অর্থ মসজিদ ফান্ডে জমা হবে। এক্ষেত্রে মসজিদে ব্যবহৃত উক্ত জিনিসপত্র/মালামাল সমূহের যথাযথ ও পবিত্র স্থানে ব্যবহার করবে। এমন কোন স্থানে ব্যবহার করবে না যার দরুন মসজিদের মালামাল/জিনিসপত্রের বেহুরমতি বা অসম্মান হয়। দুররে মুখতাররাদ্দুল মোহতারফাতওয়া-এ আফ্রিকা এবং ফাতওয়া-এ রযভীয়্যাহ্খন্ড-৬পৃষ্ঠা ৩৮৪

 

প্রশ্ন।  খ।    মসজিদের জন্য বা অন্য কোন স্থানের জন্য যে কোন ওয়াক্ফ বা দান ওয়াক্ফকারীর বা দানকারীর শর্ত মোতাবেক ব্যবহার করা হবে।

ওয়াকফ করার পর সেই ওয়াকফকৃত জায়গার মালিক কে হবে?

 

উত্তর      খ।    এ সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামগণের কিছুটা মতবিরোধ মূলক আলোচনা থাকলেও পরবর্তী সময়ের ফকিহগণ নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন-

وَعِنْدَهُمَا حَبْسُ الْعَيْنِ عَلَى حُكْمِ مِلْكِ اللَّهِ تَعَالَى عَلَى وَجْهٍ تَعُودُ مَنْفَعَتُهُ إلَى الْعِبَادِ فَيَلْزَمُ وَلَا يُبَاعُ وَلَا يُوهَبُ وَلَا يُورَثُ كَذَا فِي الْهِدَايَةِ وَفِي الْعُيُونِ وَالْيَتِيمَةِ إنَّ الْفَتْوَى عَلَى قَوْلِهِمَا كَذَا فِي شَرْحِ أَبِي الْمَكَارِمِ لِلنُّقَايَةِ 

ইমাম আবু ইউসুফ রাহ ও ইমাম মুহাম্মদ রাহ এর মতে ওয়াকফকৃত জিনিষ মালিকের মালিকানা থেকে বের হয়ে আল্লাহর মালিকানায় এমন পদ্ধতিতে চলে যাবে যেওয়াকফকৃত জিনিষ থেকে মাখলুকাত ফায়দা অর্জন করবে।

উক্ত ওয়াকফকৃত জিনিষকে বিক্রি করা যাবে না,কাউকে হাদিয়্যা ও দেয়া যাবে না,এবং তার ওয়ারিছও কেউ হবে না।

উক্ত মতামতের উপরই পরবর্তী হানাফি ফকিহগণ ফাতাওয়া দিয়েছেন।

(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-২/৩৫)

 

ওয়াকফ করার পর উক্ত ওয়াকফ সম্পর্কে ওয়াকফকারী যদি শরীয়ত সমর্থিত কোনো শর্ত করে তাহলে তা গ্রহণযোগ্য।


এ সম্পর্কে ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন-

ﻓَﺈِﻥَّ ﺷَﺮَاﺋِﻂَ اﻟْﻮَاﻗِﻒِ ﻣُﻌْﺘَﺒَﺮَﺓٌ ﺇﺫَا ﻟَﻢْ ﺗُﺨَﺎﻟِﻒْ اﻟﺸَّﺮْﻉَ ﻭَﻫُﻮَ ﻣَﺎﻟِﻚٌ، ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻞَ ﻣَﺎﻟَﻪُ ﺣَﻴْﺚُ ﺷَﺎءَ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔ

শরীয়ত বিরোধী না হলে ওয়াকফ কারীর শর্তসমূহ গ্রহণযোগ্যকেননা সে তো উক্ত মালেক মালিক ছিলো,তাই গোনাহের সম্ভাবনা না থাকলে সে তার মালকে যেখানে ইচ্ছা যেভাবে ইচ্ছা সেখানেই রাখতে পারবে।

 সূত্র:

১. ফাতওয়ায়ে শামী-৬/৫৪৮-৫৫০

২. ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/৪৫৮-৪৫৯

৩. ফাতওয়ায়ে বাযযাযিয়্যাহ আলা হামিশীল হিন্দীয়া-৬/২৭০-২৭১

৪. তাবয়ীনুল হাকায়েক-৪/২৭২-২৭৩

৫. মাসায়েলে মসজিদ-১৮০

 

والله اعلم بالصواب