আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৯৯৮: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কি সূরা ফাতিহার অংশ?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৯৯৮:  

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।  

আমার জিজ্ঞাসা সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত নিয়ে।আমাদের দেশের ছাপানো কোরআন মাজিদে প্রথম আয়াত "আলহামদুলিল্লাহ্ হি রব্বিল আলামিন "। কিন্ত সৌদি আরব, মিশর,কাতারসহ ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশে ছাপানো কোরআন মাজিদে প্রথম আয়াত "বিসমিল্লাহ হিররহমানের রহিম "। আমাদের দেশের ছাপানো ৬ নম্বর ও ৭ নম্বর আয়াত একত্রিতকরে সেখানে ৭ নম্বর আয়াত লেখা হয়েছে।

দলিলসহ সঠিক কোনটি জানালে খুশি হবো।

যাজাকাল্লাহু খাইরান।

তারিখ:  ২২/০৫/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 আমি মোহাম্মদ আবদুল হান্নান, উপপরিচালক প্রতিরক্ষা অডিট অধিদপ্তর ,

সেগুন বাগিচা,ঢাকা।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সূরা ফাতিহার আয়াত এ ব্যাপারে উলামা-কিরামদের ভিতর মতভেদ রয়েছে। এই মতামতসমূহ নিম্নে পেশ করা হলঃ


১. এটি সূরা ফাতিহার অংশ।এটি কোন পরিপূর্ণ আয়াত নয় তা কেবল আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীনের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।


২. এটি একটি আলাদা আয়াত। সকল সূরার ভিতর পার্থক্য করার জন্যে এটি ব্যবহৃত হয়েছে।


৩. এটি প্রত্যেক সূরার প্রথম আয়াতের অংশ এবং একটি পরিপূর্ণ আয়াত নয়।


৪. সূরা ফাতিহার আয়াত এবং অন্যান্য সূরার ক্ষেত্রে আয়াতের অংশ।


৫. সূরা ফাতিহার অংশ এবং অন্যান্য সূরার পরিপূর্ণ আয়াত।


৬. অনেকের মতে এটি সূরা ফাতিহার একটি স্বতন্ত্র আয়াত।


৭. ইবন আব্বাস(রাঃ), ইবন কাসীর(রঃ), ইবনুল মুবারক(রঃ) এর মতে এটি শুধু সূরা নমলের আয়াত আর অন্য কোন সূরার আয়াত নয়।


বিসমিল্লাহির রহমানীর রহিম সূরা ফাতিহার অংশ নাকি নয় এই ব্যাপারে ইসলামী প্রধান দুই ফিকহীবিদ তথা ইমাম আবূ হানীফা(রঃ) এবং ইমাম শাফিঈ(রঃ) দুই ধরনের মতামত ব্যক্ত করেছেন।


শাফিঈ(রঃ) এর অভিমত

ইমাম শাফিঈ(রঃ),আব্দুল্লাহ বিন মুবারক,মক্কা ও কূফার আলিমগণ বলেন, এটি সুরাতুল ফাতিহার একটি অংশ।ইমাম শাফিঈ(রঃ) বলেন এটি সূরা বারাআত(তাওবা) ছাড়া সকল সূরার অংশ।

পবিত্র কুরআনের সুরাহ ফাতিহাকে সাত আয়াতবিশিষ্ট বলা হয়েছে। বিসমিল্লাহীর রহমানীর রহীমকে বাদ দিলে তা সাত আয়াত বিশিষ্ট হয় না। দলিল- 


إذا قرأتم الحَمْدُ فاقرؤوا بِسْمِ اللهِ الرّحْمَنِ الرّحِيمِ إنها أمّ القرآنِ وأمّ الكتابِ والسبعُ المثانِي وبِسْمِ اللهِ الرّحْمَنِ الرّحِيمِ إحدى آياتها

الراوي : أبو هريرة | المحدث : ابن الملقن | المصدر : تحفة المحتاج | الصفحة أو الرقم : 1/292 | خلاصة حكم المحدث : إسناده كل رجاله ثقات | التخريج : أخرجه الدارقطني (1/312)، والبيهقي (2486

আবূ হুরায়রা(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ(সাঃ) ইরশাদ করেন, সূরা ফাতিহা সাত আয়াতবিশিষ্ট এবং তা বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম দিয়ে শুরু হয়। তাখরিজ: দারে কুতনি-১/৩১২; বায়হাকি-২৪৮৬


حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ حَمَّادٍ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَفْتَتِحُ صَلاَتَهُ بِـ (بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِذَاكَ . وَقَدْ قَالَ بِهَذَا عِدَّةٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو هُرَيْرَةَ وَابْنُ عُمَرَ وَابْنُ عَبَّاسٍ وَابْنُ الزُّبَيْرِ وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنَ التَّابِعِينَ رَأَوُا الْجَهْرَ بِـ (بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ) وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ . وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ حَمَّادٍ هُوَ ابْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ . وَأَبُو خَالِدٍ يُقَالُ هُوَ أَبُو خَالِدٍ الْوَالِبِيُّ وَاسْمُهُ هُرْمُزُ وَهُوَ كُوفِيٌّ 

২৪৫. আহমদ ইবনে আব্দা (রাহঃ) ....... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীমের মধ্যে তাঁর নামায শুরু করতেন।


Ibn Abbas narrated:

"The Prophet would open his Salat with (Bismillahir-Rahmanir-Rahim)."


নোট:

ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ এই হাদিসটির সনদ তেমন শক্তিশালী নয়। আবু হুরায়রা, ইবনে উমর, ইবনে আব্বাস, ইবনুয যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুম এর মত কতিপয় সাহাবী ও তাঁদের পরবর্তী কিছু তাবিঈ নামাযে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম জোরে পড়ার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ইমাম শাফিঈ, ইসামঈল ইবনে হাম্মাদ ইনি হলেন ইবনে আবী সুলাইমান, আবু খালিদ (রাহঃ) ও অনুরপ অভিমত দিয়েছিন। এই আবু খালিদ হলেন আবু খালিদ আল ওয়লিবী, তাঁর নাম হল হুরমুয। ইনি ছিলেন কুফার বাসিন্দা।


—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৪৫ (আন্তর্জাতিক নং ২৪৫)


উম্মে সালমা(রাঃ) বিলেন, রাসূলুল্লাহ(সাঃ) প্রত্যেক আয়াত শেষ করে থামতেন এবং তা ক্বিরাআত আলাদা আলাদা হত। যেমন বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম পড়ে থামতেন তারপর আলহামদুলিল্লাহী রাব্বিল আলামীন পড়তেন আর থামতেন না।


মালিকীদের অভিমত

ইমাম মালিক, ইমাম আওযাই,মদীনা এবং বসরার অনেক কারী ও ফকীহদের মতে এটি সূরা ফাতিহার অংশ নয়।এটি একটি স্বতন্ত্র আয়াত।


হানাফীদের অভিমত

ইমাম আবূ হানীফা(রঃ) এই ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে কিছুই বলেন নাই। কিন্তু ইমাম মুহাম্মদ(রঃ) এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, কুরআনের উভয় পাশের মলাটের ভিতরে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর কালাম। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তাহলে বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহিম কেন ধীরে তিলওয়াত করা হয়? তখন তিনি বলে একটি স্বতন্ত্র আয়াত আর এটি দুই সূরা ব্যবধান সৃষ্টির জন্যে নাযিল হয়েছে। আর এটি মূলত আবূ হানীফা(রঃ) এর অভিমত। তাই বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহিম সূরা ফাতিহার অংশ নয়। দলিল- 

হাদিস নং-০১ 

مِهْرَانَ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ عَبْدَةَ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، كَانَ يَجْهَرُ بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ يَقُولُ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ . وَعَنْ قَتَادَةَ أَنَّهُ كَتَبَ إِلَيْهِ يُخْبِرُهُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ حَدَّثَهُ قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ فَكَانُوا يَسْتَفْتِحُونَ بِـ ( الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) لاَ يَذْكُرُونَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ فِي أَوَّلِ قِرَاءَةٍ وَلاَ فِي آخِرِهَا .


৭৭৭। মুহাম্মাদ ইবনুল মিহরান আর রাযী (রাহঃ) ......... আব্দা থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) এই বাক্যগুলি সরবে পাঠ করতেনঃ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ


কাতাদা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাকে লিখিতভাবে আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে জানান যে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু বকর, উমর ও উসমান (রাযিঃ) এর পেছনে নামায আদায় করেছি। তারা সবাই নামায আরম্ভ করতেন الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ পাঠ দিয়ে। তারা কিরাআতের শুরুতেও بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ উল্লেখ করতেন না, শেষেও না।


’Abda reported:

’Umar b. al-Khattab used to recite loudly these words: Subhanak Allahumma wa bi hamdika wa tabarakasmuka wa ta’ala jadduka wa la ilaha ghairuka [Glory to Thee,0 Allah, and Thine is the Praise, and Blessed is Thy Name. and Exalted is Thy Majesty. and there is no other object of worship beside Thee]. Qatada informed in writing that Anas b. Malik had narrated to him: I observed prayer behind the Messenger of Allah (ﷺ) and Abu Bakr and Umar and ’Uthman. They started (loud recitation) with: AI-hamdu lillahi Rabb al-’Alamin [All Praise is due to Allah, the Lord of the worlds] and did not recite Bismillah ir- Rahman-ir-Rahim (loudly) at the beginning of the recitation or at the end of it.

তাখরিজ: মুসলিম-৩৯৯-৩


হাদিস নং-০২ 

وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ صَلَّى صَلاَةً لَمْ يَقْرَأْ فِيهَا بِأُمِّ الْقُرْآنِ فَهْىَ خِدَاجٌ - ثَلاَثًا - غَيْرُ تَمَامٍ " . فَقِيلَ لأَبِي هُرَيْرَةَ إِنَّا نَكُونُ وَرَاءَ الإِمَامِ . فَقَالَ اقْرَأْ بِهَا فِي نَفْسِكَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " قَالَ اللَّهُ تَعَالَى قَسَمْتُ الصَّلاَةَ بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي نِصْفَيْنِ وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ فَإِذَا قَالَ الْعَبْدُ ( الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) . قَالَ اللَّهُ تَعَالَى حَمِدَنِي عَبْدِي وَإِذَا قَالَ ( الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ) . قَالَ اللَّهُ تَعَالَى أَثْنَى عَلَىَّ عَبْدِي . وَإِذَا قَالَ ( مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ) . قَالَ مَجَّدَنِي عَبْدِي - وَقَالَ مَرَّةً فَوَّضَ إِلَىَّ عَبْدِي - فَإِذَا قَالَ ( إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ) . قَالَ هَذَا بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ . فَإِذَا قَالَ ( اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ * صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ) . قَالَ هَذَا لِعَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ " . قَالَ سُفْيَانُ حَدَّثَنِي بِهِ الْعَلاَءُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَعْقُوبَ دَخَلْتُ عَلَيْهِ وَهُوَ مَرِيضٌ فِي بَيْتِهِ فَسَأَلْتُهُ أَنَا عَنْهُ .



৭৬৪। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম আল হানযালী (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি নামায আদায় করল (অথচ) তাতে উম্মুল কুরআন পাঠ করল না সে নামায হবে অসম্পূর্ণ। তিনি তিনবার এটা বললেন। অতঃপর আবু হুরায়রা (রাযিঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, আমরা তো ইমামের পেছনে থাকি (তখনো কি ফাতিহা পড়ব?) তিনি বললেন, তখন মনে মনে তা পড়। কারণ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি নামাযকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে অর্ধেক করে ভাগ করেছি। আর বান্দা যা চাইবে তা সে পাবে।


অতঃপর বান্দা যখন বলে, الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই প্রাপ্য); আল্লাহ তাআলা এর জবাবে বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। সে যখন বলে, الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু); আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার গুণাবলী বর্ণনা করেছে, গুণগান করেছে। অতঃপর সে যখন বলে, مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ (কর্মফল দিবসের মালিক), তিনি বলেন, আমার বান্দা আমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছে। আর কখনো বলেছেন, আমার বান্দা (তার সব কাজ) আমার উপর সোপর্দ করেছে। সে যখন বলে, إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ (আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি); তিনি বলেন- এটা আমার এবং আমার বান্দার মধ্যকার ব্যাপার। আমার বান্দা যা চাইবে তা সে পাবে। যখন সে বলে, اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ * صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ (আমাদের সরল পথ প্রদর্শন কর, তাদের পথে যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, যারা ক্রোধ নিপতিত নয়, পথভ্রষ্টও নয়); তখন তিনি বলেন, এটা কেবল আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দা যা চায় তা সে পাবে।


সুফিয়ান বলেন, আলা ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াকুব (রাহঃ) আমার কাছে তখন বর্ণনা করেন যখন তিনি বাড়ীতে অসুস্থ ছিলেন। আমি (শুশ্রূষার জন্য) তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। অতঃপর এ সম্পর্কে তার কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম।


Abu Huraira reported:

The Apostle of Allah (ﷺ) said: If anyone observes prayer in which he does not recite Umm al-Qur’an, It is deficient [he said this three times] and not complete. It was said to Abu Huraira: At times we are behind the Imam. He said: Recite it inwardly, for he had heard the Messenger of Allah (ﷺ) declare that Allah the Exalted had said: I have divided the prayer into two halves between Me and My servant, and My servant will receive what he asks. When the servant says: Praise be to Allah, the Lord of the universe, Allah the Most High says: My servant has praised Me. And when he (the servant) says: The Most Compassionate, the Merciful, Allah the Most High says: My servant has lauded Me. And when he (the servant) says: Master of the Day of judg- ment, He remarks: My servant has glorified Me. and sometimes He would say: My servant entrusted (his affairs) to Me. And when he (the worshipper) says: Thee do we worship and of Thee do we ask help, He (Allah) says: This is between Me and My servant, and My servant will receive what he asks for. Then, when he (the worshipper) says: Guide us to the straight path, the path of those to whom Thou hast been Gracious not of those who have incurred Thy displeasure, nor of those who have gone astray, He (Allah) says: This is for My servant, and My servant will receive what he asks for. Sufyan said: ’Ala b. ’Abd al-Rahman b. Ya’qub narrated it to me when I went to him and he was confined to his home on account of illness, and I asked him about it.

তাখরিজ: মুসলিম-৩৯৫


হাদিস নং-০৩ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ كِلاَهُمَا عَنْ غُنْدَرٍ، قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَنَسٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ فَلَمْ أَسْمَعْ أَحَدًا مِنْهُمْ يَقْرَأُ ( بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ) .


৭৭৫। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ইবনে বাশশার (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু বকর, উমর ও উসমান (রাযিঃ) এর পেছনে নামায আদায় করেছি, কিন্তু তাঁদের কাউকে بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ সরবে পড়তে শুনিনি।

Anas reported:

I observed prayer along with the Messenger of Allah (ﷺ) and with Abu Bakr, Umar and Uthman (may Allah be pleased with all of them), but I never heard any one of them reciting Bismillah-ir-Rahman-ir-Rahim loudly.

তাখরিজ: মুসলিম-৩৯৯


হাদিস নং-০৪

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْمَرْوَزِيُّ، وَابْنُ السَّرْحِ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، - قَالَ قُتَيْبَةُ فِيهِ - عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَعْرِفُ فَصْلَ السُّورَةِ حَتَّى تُنَزَّلَ عَلَيْهِ ( بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ) . وَهَذَا لَفْظُ ابْنِ السَّرْحِ .

৭৮৮. কুতায়বা ইবনে সাঈদ .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ﷺ)-এর উপর বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম নাযিল না হওয়া পর্যন্ত কোন সূরার শুরু চিহ্নিত করতে পারতেন না। হাদীসের এই পাঠ ইবনুস সারহ-এর।

Ibn Abbas said:

The prophet (ﷺ) did not distinguish between the two surahs until the words “In the name of Allah, the Compassionate, the merciful” was revealed to him. These are the words of Ibn al-sarh.

—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৭৮৮ (আন্তর্জাতিক নং ৭৮৮)



তাহলে উপরোক্ত দলীল দ্বারা এই বিষয়টি প্রমাণিত হয় যে, বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহিম সূরা ফাতিহার অংশ নয়


বিরুদ্ববাদের দলীল

ইমাম শাফিঈ(রঃ) প্রথমে আবূ হুরায়রা(রাঃ) থেকে বর্ণিত যেই হাদীসটি উদ্বৃত করেছেন, সেখানে মূলত বিসমিল্লাহকে বাদ দিলে তা সাত আয়াত বিশিষ্ট হয়।

অন্যদিকে উম্মে সালমা(রাঃ) এর বর্ণনা হতে যা পাওয়া যায় তাতে রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীমের বরকতকে তুলে ধরেছেন।


সারকথা হলো,  আপনি যে সৌদি বা অন্য দেশের কুরআন শরীফে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আয়াত হিসেবে দেখেছেন, এটা শাফেয়ি রহ এর মত অনুযায়ী। তবে জমহুর বা অধিকাংশ ( ইমাম আবু হানিফা ইমাম মালেক ও আহমদ ইবনে হাম্বল রহ) ইমামদের মতে সূরা ফাতেহার অংশ নয়।



  والله اعلم بالصواب