আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

ইতিহাস-৩৭: ভারতের সভ্যতায় মুসলমানদের অবদান, আকবর দ্য গ্রেট-৯

No Comments

 



 ভারতের সভ্যতায় মুসলমানদের অবদান

আকবর দ্য গ্রেট-৯

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

 ৩১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম


ইন্দ্র, বিষ্ণু, মহাদেবের প্রতি আকবর বেশ শ্রদ্ধা পোষণ করতেন। হিন্দু ধর্ম বিষয়ে জানার সময় তাদের বিভিন্ন উৎসবের সাথেও আকবরের পরিচিতি ঘটে। রাখীবন্ধন, বসন্তোৎসব, দীপাবলী, দশহারার মতো উৎসবগুলোতে আকবর অংশ নিতেন। হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে হিন্দু পÐিতদের আমন্ত্রণ জানাতেন। এমনকি আকবরের আগ্রহে যোগ, বলিষ্ঠ, রামায়ণ, মহাভারত, অথর্ব বেদ প্রভৃতি হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো অনুবাদের ব্যবস্থা করা হয়। তখনকার হিন্দু পÐিতদের অনেকেই আকবরকে হিন্দু ধর্মের পরিত্রাতা বলে আখ্যায়িত করতেন। এমনকি পরম পূজনীয় হিসেবে বিশ্বাস করতেন অনেকেই। তারা ঘোষণা করেন, আকবর হচ্ছেন রাম-কৃষ্ণের অবতার। হিন্দু ধর্ম ও সমাজের সংস্কারে আকবরের ভ‚মিকা ও প্রভাব ছিলো সুদূরপ্রসারী।


বর্ণবাদ হিন্দুসমাজকে গিলে ফেলছিলো বহু শতাব্দী ধরে। তিনি এর বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেন। উচ্চবর্ণ ও নি¤œবর্ণের মধ্যে সীমাহীন বৈষম্যকে তিনি ঘৃণা করতেন। অগ্রসর হিন্দুদের এ বিষয়ে সচেতন করেন। কিন্তু হিন্দু ধর্মের স্বাধীনতায় তিনি বিশ্বাস করতেন। আইন করে তা বন্ধ করার উদ্যোগ নেননি তিনি। তিনি সতীদাহ প্রথাকে অত্যন্ত ঘৃণা করতেন। ইচ্ছার বিরুদ্ধে সদ্যবিধবা স্ত্রীকে দাহ করা থেকে বিরত রাখতে আকবর শাস্তির ব্যবস্থা করেছিলেন। বেঁচে যাওয়া বিধবা হিন্দু মহিলাদের পুনরায় বিবাহের জন্য আকবর সবসময় উৎসাহ দিতেন।



মুঘল শাসকদের মধ্যে একমাত্র আকবরের প্রশ্নে হিন্দুত্ববাদের অবস্থান কিছুটা উদার। যদিও তারা সাধারণভাবে তাকেও প্রতিপক্ষ মনে করে, তবুও বিভিন্ন উপলক্ষে তাকে স্মরণ করার নজিরও কম নয়। ‘ইন্ডিয়া: মাদার অব ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক গ্রন্থে ভারতের প্রাচীন সভ্যতা, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, ধর্ম, সাধু-সন্ত, বিভিন্ন মহাপুরুষ ও শাসকদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩ এ মোদি সরকারের প্রকাশনা ‘ইন্ডিয়া: মাদার অব ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক গ্রন্থে ভারতের প্রাচীন সভ্যতা, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, ধর্ম, সাধু-সন্ত, বিভিন্ন মহাপুরুষ ও শাসকদের বিবরণে সম্মানের সাথে আকবরকে উল্লেখ করা হয়। এতে মুঘল সম্রাট আকবরের পরিচয়ে লেখা হয়েছে, ‘সুশাসন হল সেটাই, যেখানে ধর্ম নির্বিশেষে সবার কল্যাণ হবে। তৃতীয় মুঘল পাদিশাহ আকবর সেই গণতন্ত্রেরই চর্চা করতেন।’


তার সম্বন্ধে স্মরণিকা গ্রন্থে আরও লেখা হয়েছে, ‘তিনি সুলহ-এ-কুল, অর্থাৎ সার্বজনিক শান্তির নীতি নিয়ে চলতেন। এই নীতি ছিল ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে।’


লেখা হয়েছে, আকবর এমন এক সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন, যেখানে সৌহার্দ্য বিরাজ করবে, সেজন্যই তিনি নতুন ধর্ম ‘দিন-ই-ইলাহি’র প্রচলন করেছিলেন। বস্তুত সম্রাট আকবরের দ্বীনে ইলাহি ও ধর্মনীতি হিন্দু সমাজ, সংস্কৃতি ও দৃষ্টিভঙ্গির অগ্রগতি নিশ্চিত করেছিলো। এর প্রতিফলন ঘটেছে সেই প্রকাশনার মন্তব্যেও। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আকবরের গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা ছিল ব্যতিক্রমী এবং সময়ে থেকে অনেক এগিয়ে থাকা।’ রামায়ণে উল্লিখিত রাম, মগধের অজাতশত্রæ প্রমুখের ধারাবাহিকতায় আকবরকে সম্মান জানানো বস্তুত হিন্দু সংস্কৃতি ও সভ্যতায় তার বিপুল অবদানেরই জানান দিয়ে যায়।


বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন

ইতিহাস-৩৬: ভারতের সভ্যতায় মুসলমানদের অবদান, আকবর দ্য গ্রেট-৮

No Comments

 



 ভারতের সভ্যতায় মুসলমানদের অবদান

আকবর দ্য গ্রেট-৮

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

 ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৮ এএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৮ এএম


একজন ইংরেজ ভ্রামণিকের উদ্ধৃতি দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আকবরের ধর্মদৃষ্টিকে বয়ান করেছেন। একটি ঘটনার মধ্যদিয়ে তা লক্ষ্য করেছেন তিনি। ‘আকবর শাহের মাতৃভক্তি অত্যন্ত প্রবল ছিল। এমনকি, এক সময়ে যখন তাঁহার মা পালকি চড়িয়া লাহোর হইতে আগ্রায় যাইতেছিলেন, তখন আকবর এবং তাঁহার দেখাদেখি অন্যান্য বড়ো বড়ো ওমরাওগণ নিজের কাঁধে পালকি লইয়া তাঁহাকে নদী পার করিয়াছিলেন। সম্রাটের মা সম্রাটকে যাহা বলিতেন তিনি তাহাই পালন করিতেন। কেবল আকবর শা মায়ের একটি আজ্ঞা পালন করেন নাই। সম্রাটের মা সংবাদ পাইয়াছিলেন যে পর্তুগিজ নাবিকগণ একটি মুসলমান জাহাজ লুট করিয়া একখানা কোরান গ্রন্থ পাইয়াছিল, তাহারা সেই গ্রন্থ একটি কুকুরের গলায় বাঁধিয়া বাজনা বাজাইয়া অর্মজ শহর প্রদক্ষিণ করিয়াছিল।



Pause


Unmute

Remaining Time -10:24


Close PlayerUnibots.com

এই সংবাদে ক্রুদ্ধ হইয়া সম্রাটমাতা আকবরকে অনুরোধ করিয়াছিলেন, যে একখানা বাইবেল গাধার গলায় বাঁধিয়া আগ্রা শহর ঘোরানো হউক। সম্রাট তাহার উত্তরে বলিয়াছিলেন, ‘যে কার্য একদল পর্তুগালবাসীর পক্ষেই নিন্দনীয় সে কার্য একজন সম্রাটের পক্ষে অত্যন্ত গর্হিত সন্দেহ নাই। কোনো ধর্মের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করিলে ঈশ্বরের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা হয়। অতএব, আমি একখানা নিরীহ গ্রন্থের উপর দিয়া প্রতিশোধস্পৃহা চরিতার্থ করিতে পারিব না।’



এই ঘটনা আকবরের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া তৈরি করেনি। তিনি গোয়াতে অবস্থানরত পর্তুগীজদের কাছে খ্রিস্টান পাদ্রী প্রেরণের আহŸান জানান। যেন তিনি খ্রিস্টধর্মকে উপলব্ধি করতে পারেন। এতে বর্বররা সাড়া দেয় দ্রæত। ১৫৮০ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি প্রথম প্রতিনিধি দল আকবরের কাছে আসে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন এনরিকেজ, রিদলজেন একোয়াভিভ আর এস্টোনিভ মনসারেত। তারা প্রায় ২ বছর দরবারে অবস্থান করেন। ১৫৮২ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম দলটির বিদায় হলেও আরেকটি দল আসে ১৫৯১ সালে। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন এডওয়ার্ড লিউটন আর ক্রিস্টোফার দ্য ভেগা। একবছর দলটি আকবরের দরবারে ছিলো। ফাদার জেরোম জেভিয়ার, বেনেডিক্ট দ্য গোয়োস আর ইমানুয়েল পিনহিরোর নেতৃত্বাধীন আরেকটি দল আকবরের সমীপে আসে লাহোরে, ১৫৯৫ সালের ঘটনা এটা। ১৬০৫ সালে আকবরের মৃত্যু পর্যন্ত এই মিশনটি মুঘল রাজদরবারে অবস্থান করেছিলো। অপরদিকে ব্রিটিশ রাণী এলিজাবেথ উদ্বিগ্ন ছিলেন পর্তুগীজদের সাথে আকবরের যোগাযোগে। তার পক্ষ থেকে আকবরের কাছে পত্র প্রেরণ করা হয়। সেই সূত্র ধরে পরবর্তীতে ব্রিটিশরা মুঘল সাম্রাজ্যে বাণিজ্যের অনুমতি পায়।


হিন্দুদের প্রতি নিজের আন্তরিকতা প্রকাশের জন্য আকবর রাজপুত নারীদের সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। হিন্দু ধর্মের প্রতি তার আগ্রহ বাড়ে। হিন্দু স্ত্রীদের সুবিধার্থে প্রথমবারের মতো মুঘল প্রাসাদে পূজা-অর্চণার অনুমতি দেয়া হয়।


শিক্ষার্থীদের পাতা-১৩: নিয়ত সহিহ করার কৌশল

No Comments

 



আল্লামা আবদুর রশীদ নোমানী রহ. বলতেন, প্রতিদিন নিয়তের তাজদীদ করো, নবায়ন করো। প্রতিদিন সকালে নিয়ত করো, হে আল্লাহ, আমি তোমার রেযামন্দির মধ্যে আজকের দিনটি কাটাতে চাই। তোমার সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য ইলমে ওহী অর্জনের মধ্য দিয়ে দিনটি কাটাতে চাই। তুমি তাওফীক দাও।


আমি যেদিন হুজুরের কথার উপর আমল করি সে দিনটি আমার অন্য দিনের চেয়ে ভালো কাটে। আমাদের দিনগুলো গাফলতের সাথে শুরু করা উচিত না। 


🖋️-মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক হাফি.


📖[তালেবে ইলমের জীবন গড়ার পাথেয় : ১৫]

জিজ্ঞাসা-২৬৮: জোক ধরলে কিংবা রক্ত খেলে কি অজু ভেঙ্গে যাবে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-২৬৮আসসালামু আলাইকুম। মুহতারামএকজন ইমাম সাহেবসালাম ফিরানোর পর দেখেন যেতার পায়ে জোক ধরে আছে। জোক রক্ত খেয়ে মোটা হয়েছে।  এখন আমার জানার বিষয় হলোউনার অজু নষ্ট হয়েছে কিনা?  এবং আদায়কৃত নামাজ কি আবার পড়তে হবে। তারিখ-/০৯/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি


হাফেজ মাওলানা মোঃ রজিব উদ্দিন,  পোস্তগোলা, ঢাকা থেকে-----


জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

তাসলিম-হামদ-সানার পর কথা হলো, জোক ধরা বা রক্ত খাওয়া অজু ভঙ্গের মূল কারণ না। আসল কারণ হলো, রক্ত গড়িয়ে পড়া।  দলিল:

 

হাদিস নং-০১

أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا رَعَفَ، انْصَرَفَ فَتَوَضَّأَ

অর্থ: আব্দুল্লাহ বিন উমর রাযি.-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝরতোতখন তিনি ফিরে গিয়ে অযু করে নিতেন। তাখরিজ: মুয়াত্তা মালিক-১১০

 

হাদিস নং-০২

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يُفْتِي الرَّجُلَ إِذَا رَعَفَ فِي الصَّلَاةِ، أَوْ ذَرَعَهُ قَيْءٌ، أَوْ وَجَدَ مَذِيًّا أَنْ يَنْصَرِفَ فَيَتَوَضَّأُ

অর্থ: আব্দুল্লাহ বিন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি যদি কারো নামাযরত অবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তোবা বমি হতোবা মজি বের হতো তাহলে তাকে ফিরে গিয়ে অযু করার ফাতওয়া প্রদান করতেন। তাখরিজ: মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-৩৬১০


হাদিস নং-০৩

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ  বলেছেন,

إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ

অর্থ: শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। তাখরিজ: সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী-৫৬৮

 

উপরোক্ত হাদিসের আলোকে ফুকাহায়ে আহনাফ বলেন যে, শরীর থেকে রক্ত পুঁজ গড়িয়ে পড়লে অজু ভেঙ্গে যাবে।

আপনার বর্ণিত ছুরুতে যেহেতু জোকটি রক্ত খেয়ে মোটা হয়েছে, তাহলে সহজে বুঝা যাচ্ছে যে, এতে তার অজু নষ্ট হয়েছে।  সুতরাং তার আদায়কৃত নামাজ মুসল্লিকে আবার দোহরায়তে (পুনরায়) হবে।

   উল্লেখ্য যে, যদি জোক ধরার পর রক্ত বের হওয়ার আগেই টের পায়, অথবা এই পরিমাণ খেয়েছে, যা গড়িয়ে পড়ার মত নয়; তাহলে অজু ভাঙ্গবে না।  সূত্র: আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/১৩৮ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ১/৪৭খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭

 

 

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক

 

জিজ্ঞাসা-২৬৭: ফিতনার যুগে আমল করলে ৫০জন সাহাবীর সমপরিমাণ সওয়াবের রেফারেন্স

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-২৬৭:

সবিনয়ে জানতে চাই "৫০ জন সাহাবী সমপরিমাণ পুন্য....." এ সংক্রান্ত হাদিস টি। তারিখ-১৪/০৯/২০২২ ইং 


জবাব: আপনার প্রশ্নের বর্ণনা মোতাবেক হাদিসটি নিম্নরূপ: 

হাদিস নং-০১

فَإِنَّ مِنْ وَرَائِكُمْ أَيَّامًا الصَّبْرُ فِيهِنَّ مِثْلُ الْقَبْضِ عَلَى الْجَمْرِ لِلْعَامِلِ فِيهِنَّ مِثْلُ أَجْرِ خَمْسِينَ رَجُلاً يَعْمَلُونَ مِثْلَ عَمَلِكُمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ وَزَادَنِي غَيْرُ عُتْبَةَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَجْرُ خَمْسِينَ رَجُلاً مِنَّا أَوْ مِنْهُمْ قَالَ ‏"‏ لاَ بَلْ أَجْرُ خَمْسِينَ مِنْكُمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ ‏.‏

অর্থ: তোমাদের সামনে রয়েছে এমন কঠিন সময়, যখন ধৈর্য্য ধারন করাও আগুনের অঙ্গার মুঠি করে ধরার মত কষ্টদায়ক হবে। সে সময় যারা কর্ম করবে তারা তোমাদের মত যারা কর্ম করে তাদের ৫০ জনের সমান পুরুস্কার লাভ করবে। সাহাবিগণ বলেন, হে রাসুল (সা:), তাদের মধ্যকার ৫০ জনের সাওয়াব ? তিনি বলেন, না, বরং তোমাদের মধ্যকার ৫০ জনের সমপরিমাণ সাওয়াব। তিরমিজি-৩০৫৮


নোট: ইমাম তিরমিজি রহমাতুল্লাহ বলেন হাদীসটি হাসান গরিব।


হাদিস নং-০২

يأتي على الناسِ زمانٌ ، الصابرُ منهم على دينِهِ له أجرُ خمسينَ منكم . قالوا : يا رسولَ اللهِ ، أجرُ خمسين منَّا ؟ قال : نعم ، أجرُ خمسينَ منكم . قالها ثلاثًا .

عرض مختصر..

الراوي : أنس بن مالك | المحدث : العراقي | المصدر : الأربعون العشارية

الصفحة أو الرقم : 216 | أحاديث مشابهة | خلاصة حكم المحدث : غريب


স্বাস্থ্য পরামর্শ-৯০: গ্যাস্ট্রিক : প্রতিরোধ ও প্রতিকার।

No Comments

 



গ্যাস্ট্রিক : প্রতিরোধ ও প্রতিকার।


গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়নি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। আমাদের দেশের মানুষের জন্য এটি খুব পরিচিত একটি অসুখ বা সমস্যা বলা যায়। গ্যাস্ট্রিককে আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ অসুখ মনে হলেও এটি সারিয়ে না তুললে ধীরে ধীরে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। এই সমস্যা আগেভাগে নির্ণয় করা গেলে সহজে সারিয়ে তোলা সম্ভব। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. রিফাত আল মাজিদ।


পেটের যেকোনো সমস্যাকেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বলে মনে করা উচিত নয়। এটি আমাদের খুবই ভুল ধারণা যে আমরা আমাদের পেটের যেকোনো সমস্যা, অসুবিধাকে গ্যাস্ট্রিকের রোগ বলে মনে করে নেই শুরু থেকেই। এতে করে সঠিক রোগের ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে খুব সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ বাজার কিংবা ফার্মেসি থেকে গ্যাস্ট্রিকের বড়ি নামে বিক্রি হওয়া অনেক ড্রাগ কিনে নিয়ে আসেন আর না বুঝে সেগুলো সেবন করেন। এতে করে অজান্তেই আমরা নিজের শরীরের অনেক ক্ষতি করে ফেলি, যা বুঝতে অনেক সময় দেরি হয়ে যায়। চিকিৎসাও জটিল রূপ ধারণ করতে পারে যা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। এখন আমি মূলত আলোচনা করবো এই গ্যাস্ট্রাইটিস রোগ সম্বন্ধে। যা আশা করি আপনাদের সবার উপকারে আসবে।


আমরা যখন কোনো খাবার গ্রহণ করি, তখন খাদ্য পরিপাকের জন্য এবং খাদ্যে উপস্থিত অনুজীবসমূহকে ধ্বংস করার জন্য পাকস্থলী থেকে হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl) নামে একপ্রকার এসিড ক্ষরণ হয়, যা খাদ্য পরিপাকে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। হাইড্রোক্লোরিক এসিডের অনেক ভূমিকা আছে এই খাদ্য পরিপাক প্রক্রিয়ায়। এটি অন্যতম মূল উপাদান আমাদের খাবারকে হজম করানোর ক্ষেত্রে।আবার গ্যাসট্রাইটিসসহ গ্যাস্ট্রিক আলসার ও অন্যান্য পেটের অসুখও এর জন্য দায়ী হতে পারে।


একজন সুস্থ মানুষের পাকস্থলীতে প্রতিদিন প্রায় ১.৫-২ লিটার HCl ক্ষরণ হয়। যা হাইড্রোক্লোরিক এসিড ক্ষরিণ হওয়ার স্বাভাবিক মাত্রা। এই হাইড্রোক্লোরিক এসিড ক্ষরণের মাত্রা যদি কোনো কারণে বেড়ে যায়, তখন পেটের ভেতরের আবরণ তথা মিউকাস মেমব্রেনে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। হাইড্রোক্লোরিক এসিড দিয়ে মিউকাস মেমব্রেনের যে প্রদাহ হয়, এই অবস্থাকে গ্যাস্ট্রাইটিস রোগ বলে। যা অনেক সময় গ্যাস্ট্রিক আলসার কিংবা রক্তক্ষরণ জনিত ভয়াবহ সমস্যার সূত্রপাত করতে পারে।


গ্যাস্ট্রাইটিস হওয়ার প্রক্রিয়া-


আমাদের পেট থেকে প্রতিনিয়ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড ক্ষরণ হয়। তাই যখন পাকস্থলী খালি (empty stomach) থাকে, তখন হাইড্রোক্লোরিক এসিডসমূহ ব্যবহৃত না হয়ে অধিক জমা হয়ে যায়, কারণ হাইড্রোক্লোরিক এসিডের কাজ হচ্ছে খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করা। যখন পেট খালি থাকে কিংবা পেটে কোনো খাবারই থাকে না, তখন অতিরিক্ত এসিড পাকস্থলীতে জমে যায়। অতিরিক্ত এসিডের কারণে তখন পাকস্থলীর ভেতর ক্ষত হয়ে যায় এবং পর্যায়ক্রমে তা অন্ত্রের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে। আবার পাকস্থলির উপরের দিকে খাদ্যনালী তথা ইসোফেগাসের দিকেও ছড়িয়ে যেতে পারে। যা রোগীর জন্য মারাত্মক সমস্যার কারণ হতে পারে।


এসিড যদি পাকস্থলির উপরের দিকে খাদ্যনালী বা ইসোফেগাসকে আক্রান্ত করে, তবে এই অবস্থাকে জারড বা Gastro-Esophageal Reflux disorder (GERD) বলা হয়। এই ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির বেশি বেশি ঢেকুর উঠবে এবং বুক জ্বালাপোড়া করবে। সকালে ঘুম থেকে উঠলে গলায় কফ জমে থাকতে পারে। বমি বমি ভাব থাকবে। টক ঢেঁকুর উঠতে পারে। এসব সমস্যা থাকলে তখন বুঝতে পারা যায় এটি (GERD)। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থা কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।


প্রদাহের পরিমাণ বেড়ে পাকস্থলির মাঝে আলসার তৈরি করতে পারে, যাকে আমরা গ্যাস্ট্রিক আলসার বলে থাকি। আলসার হতে থাকলে সেখানে কোষসমূহের গাঠনিক পরিবর্তন আসতে পারে, এক প্রকারের কোষ অন্যপ্রকার কোষে রূপান্তরিত হতে পারে, যাকে চিকিৎসকরা মেটাপ্লেসিয়া (Metaplasia) বলেন এবং পরিশেষে তা থেকে Dysplasia এমনকী ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। যা খুবই খারাপ পরিস্থিতির সূত্রপাত ঘটাতে পারে। তখন চিকিৎসা আরো জটিল রূপ নেয়। অনেক সময় সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

গ্যাস্ট্রাইটিস রোগের উপসর্গ-


* পেটের বামপাশে ব্যথা

* বুক জ্বালাপোড়া

* খাবারে অরুচি

* পেট জ্বালাপোড়া

* পেট ফেঁপে থাকা

* মাথা ঘুরানো

* বমি বমি ভাব

* অল্প খাবারের পর পেট ভরে গেছে মনে হওয়া

* GERD এর ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা, অধিক হারে ঢেঁকুর ও বমিভাব

* ডিউডেনাম আলসার হলে পেটের মাঝামাঝি ব্যথা এবং ব্যথা পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়া

* গ্যাস্ট্রিক আলসারের সবচেয়ে অপরিচিত উপসর্গ হচ্ছে খাবার খাওয়ার চাহিদা বেড়ে যাওয়া। অধিকহারে খাবার পরেও রোগীর ক্ষুধা লাগবে। কারণ আলসারের কারণে অনেক সময় দেখা যায়, পাকস্থলি থেকে ব্রেইনে হাঙ্গার সেন্টারে নার্ভ সিগনাল সঠিকভাবে পরিচালিত হতে পারেনা। তাই রোগী পেট ভরে খেলেও হাঙ্গার সেন্টার সঠিক মেসেজ না পাওয়ার কারণে ক্ষুধার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।


আমাদের জীবনযাপনের নানা ভুল অভ্যাসই হতে পারে গ্যাস্ট্রিকের কারণ। সেসব অভ্যাস বদলে কিংবা নিয়ন্ত্রণ করে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। গ্যাস্ট্রাইটিস রোগের কারণ জেনে নিন-

১)অনিয়মিত খাওয়া-


অনিয়মিত খাবার খাওয়া গ্যাস্ট্রাইটিস এর অন্যতম মূল কারণ। খাবার অনিয়মিত খেলে কিংবা দুই বেলার খাবারের মাঝে দীর্ঘ বিরতি থাকলে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের ক্ষরণ বেড়ে গিয়ে গ্যাস্ট্রাইটিস হয়ে যায়। তাই নিয়মিত খাবার গ্রহণ করা, সময়ের ব্যবধান ঠিক রাখা, কোনো বেলা না খেয়ে থাকা পরিহার করা- এসব বিধি মেনে জীবন যাপন করতে পারলে খুব সহজেই এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।


২)ভাজা-পোড়া খাবার-


গ্যাস্ট্রাইটিস রোগের আরো একটি বিশেষ কারণ হলো তেলে ভাজা খাবার কিংবা অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খাওয়া। তেলের খাবার হাইড্রোক্লোরিক এসিডের ক্ষরণ বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। অনেকেই তেলে ভাজা খাবার খুব পছন্দ করেন। কেউ কেউ খুব বেশি ভাজা পোড়া খাবার খেয়ে থাকেন। বাড়িতে কিংবা বাইরে এসব খাবার খাওয়া কখনোই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এসব খাবার অতিরিক্ত খেলে খুব দ্রুতই যে কেউ গ্যাস্ট্রিকের এসব সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষ করে বাইরে, খোলা বাজারে, রাস্তায় এসব ভাজা-পোড়া খাবার ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। যারা সচেতন থাকতে চান তারা এসব খাবার এড়িয়ে যাবেন এবং সেই সাথে চেষ্টা করবেন বাড়িতেও ভাজা-পোড়া খাবার না খাওয়ার অভ্যাস করা। কারণ এটি শুধু গ্যাস্ট্রাইটিসই নয়, শরীরের নানারকম রোগের কারণ হতে পারে।


৩)কোমল পানীয়-

কোমল পানীয় অনেকেরই খুব পছন্দ। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা এটি খুব পছন্দ করে। এসব সফট ড্রিংক খাওয়া গ্যাস্ট্রাইটিসের অন্যতম কারণ এবং অনেক সময় গ্যাস্ট্রাইটিস বাড়িয়ে দেয়। সাময়িক ভালো লাগলেও এটি শরীরের জন্য ভালো নয়। সেইসাথে অ্যালকোহলজাতীয় পানীয়তে আরো ঝুঁকি থাকে। লিভারেরও ক্ষতি করে এসব পানীয়।

ধূমপান-

এটি এমন কোন ক্ষতি নেই যা করে না। গ্যাস্ট্রাইটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্য ধুমপান খুবই বিপজ্জনক। প্রত্যেক সচেতন মানুষেরই উচিত ধূমপান না করা। সেই সাথে যখন কেউ ধূমপান করে তখন তার আশেপাশে না থাকা।

৪)পানি কম পান করা-

আমরা অনেকেই পানি কম পান করে থাকি। মূলত অবহেলা করে আমরা পানি কম পান করি। পানি আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। পানি কম পান করলে পরিপাক ক্রিয়ায় অসুবিধা দেখা যায়। তখন তন্ত্রের নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। খাবার হজম ঠিক রাখতে নিয়মিত বেশি করে পানি পান করা উচিত। দিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। পানি আমাদের শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখবে।

৫)খাওয়ার পরেই ঘুম-

রাত্রে খাবার খেয়ে সাথে সাথে ঘুমিয়ে গেলে GERD হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই রাতে খাবার খেয়ে সাথে সাথে ঘুমিয়া যাওয়া উচিত না। সেজন্য খাবারের পরে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করা, বসে থাকা উচিত। এতে করে খাবার খাদ্যনালী থেকে পাকস্থলিতে সঠিকভাবে পৌঁছাবে।

৬)মাংস বেশি খাওয়া-

অনেকেই আছেন যারা একসঙ্গে অনেকখানি মাংস খেয়ে ফেলেন। রেড মিট, মুরগি, খাসি এসব খুব বেশি খাওয়া উচিত নয়। এতে করে হজমে সমস্যা হয় এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

৭)ব্যথার ওষুধ-

ব্যথার বড়ি বা পেইন কিলার মেডিসিনের সাইড ইফেক্ট হিসাবে গ্যাস্ট্রাইটিস ও গ্যাস্ট্রিক আলসার হতে পারে। তাই ব্যথার ওষুধ খেলে সাথে একটি এসিড নিউট্রালাইজিং খেতে হবে।

৭)বিশেষ ব্যাক্টেরিয়া-

একটি বিশেষ ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা ইনিফেকশন হলে ডিউডেনাল আলসার হতে পারে।


গ্যাস্ট্রাইটিস প্রতিরোধে পরামর্শ-


* নিয়মিত খাবার খান, বেশি বেশি পানি পান করুন।

* রাত্রে খাবারে পর ২০-৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করে ঘুমাতে যান।

* সকালে ইসুবগুলের ভূসি ভিজিয়ে পান করুন। এতে করে অতিরিক্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিউট্রালাইজড হয়ে যাবে।

* সকালে খালি পেটে ২ গ্লাস পানি পান করুন।

* দিনে ১৩০ গ্রামের বেশি মাংস খাবেন না।

* তেলে ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার পরিহার করুন।

* একসাথে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।

গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য চিকিৎসা :

* প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরি শ্রেণির মেডিসিনগুলো এসিডিটি থেকে মুক্তি দিতে ভূমিকা রাখে। সেসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। 

* এন্টাসিড শ্রেণীর ড্রাগসমূহ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারেন।

* H. pylori ডায়াগনোসিস হলে ট্রিপল থেরাপি দেওয়া হয়।

* বমিবমি ভাব থাকলে Domperidon ব্যবহার হয়।


এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসক রোগীকে প্রয়োজনীয় ড্রাগ দিয়ে চিকিৎসা দেবেন। নিজ থেকে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের নাম করে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকা উচিত। নিয়মিত সুন্দর জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস এসব রোগ থেকে নিরাপদ রাখতে পারে। যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের কাছে গেলে জটিলতা রোধ করা যায়। 

নির্বাচিত হাদিস-১৪: মানুষের উপকারে এগিয়ে আসতে যে হাদিসগুলো আমাদের প্রেরণা দেয়।

No Comments

 



মানুষের উপকারে এগিয়ে আসতে যে হাদিসগুলো আমাদের প্রেরণা দেয়। মুখস্থ করুন। প্রচার করুন। 


#এক. রাসুল ﷺ বলেন:

 وَاللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ

আল্লাহ ততক্ষণ তার বান্দাকে সাহায্য করেন, যতক্ষণ সে অন্য ভাইয়ের সাহায্যে লিপ্ত থাকে। 

(সহিহ মুসলিম: ৬৭৪৬) 


#দুই. রাসুল ﷺ বলেন:

 ارْحَمُوا مَنْ فِي الْأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ

তোমরা জমিনবাসীদের প্রতি দয়া করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। 

(তিরমিজি: ২০০৬)


#তিন. রাসুল ﷺ বলেন:

مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ

যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দুনিয়ার একটি কষ্ট দূর করে দিবে, আল্লাহ ঐ ব্যক্তির কিয়ামতের দিনের একটি কষ্ট দূর করে দিবেন। (মিশকাত, ২০৪)


#চার. রাসুল ﷺ বলেন:

مَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ

যে ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের কোনো প্রয়োজন পূরণ করে দিবে, আল্লাহ ঐ ব্যক্তির সকল প্রয়োজন পূরণ করে দিবেন। (সহিহ মুসলিম ৬৪৭৪)


#পাঁচ. রাসুল ﷺ বলেন:


 وَمَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ يَسَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ

যে ব্যক্তি দূর্দশা গ্রস্থ কারো কিছু সহজ করে দিবে, আল্লাহ ঐ ব্যক্তির দুনিয়া ও আখেরাতের সকল বিষয় সহজ করে দিবেন। (আবু দাউদ, ৪৯৪৬)


আর কিছু না পারলে, অন্তত দুয়ার মাধ্যমেও সাহায্য করা যায়। এতেও নিজের লাভ। 


#ছয়. রাসুল ﷺ বলেন:

مَنْ دَعَا لأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ قَالَ الْمَلَكُ الْمُوَكَّلُ بِهِ آمِينَ وَلَكَ بِمِثْلٍ

যখনই কোনো মুসলিম অপর ভাইয়ের অগোচরে তার জন্য দুয়া করে, একজন নির্ধারিত ফেরেশতা বলেন, আমিন, আল্লাহ তোমার জন্যও এমনটা করুন। (সহিহ মুসলিম, ৬৮২১)


আল্লাহ তায়ালা সকলের কষ্ট দূর করে দিন। আমিন।

জিজ্ঞাসা-১৩০৬৮: যাকাতের টাকা বন্যার্তদের দেওয়া যাবে কি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩০৬৮: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। যাকাতের টাকা বন্যার্তদের দেওয়া যাবে কি?

তারিখ:০৪/০৯/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  আব্দুর রহমান সাভার থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, বন্যার্ত লোকরা যদি যাকাত খাওয়ার উপযুক্ত হয়, তাহলে তাদেরকে দেওয়া যাবে। যাকাত শুধু এটা গরীবদের হক, কোন মসজিদ, মাদ্রাসা, কোন প্রতিষ্ঠানে যাকাত দেওয়া যায় না। যাকাতের খাতসমূহ মহান আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত। দলিল-


Surah At-Taubah, Verse 60:

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সূরা তওবা-৬০


দ্বিতীয় কথা হলো, তিন শর্ত পূরণ হলে বন্যাপীড়িতদের জাকাত দেওয়া যাবে

১. বন্যার্ত ব্যক্তি যদি দরিদ্র বা ঋণগ্রস্ত হয় তাহলে তার জন্য জাকাত বা জাকাতের টাকার ত্রাণ গ্রহণ করা জায়েজ হবে এবং ত্রাণদাতার জাকাতও আদায় হয়ে যাবে।


২ সম্পদ ছিল কিন্তু বন্যায় ধ্বংস হয়ে গেছে—এমন ব্যক্তিকে দিলেও জাকাত আদায় হয়ে যাবে।


৩. বন্যার্ত ব্যক্তির সম্পদ আছে কিন্তু তার সম্পদ অনেক দূরে হওয়ায় এই দুর্যোগের সময় তা কোনো কাজে আসছে না। এমন ব্যক্তি ইবনুস সাবিল তথা সম্পদহীন মুসাফিরের হুকুমে। তাকে দান করলেও জাকাত আদায় হয়ে যাবে।



সারকথা হলো,  যাকাত এটা স্রেফ গরিবদের হক, সুতরাং যিনি যাকাত খাওয়ার যোগ্য তাকেই শুধু যাকাত দেওয়া যাবে।



  والله اعلم بالصواب

১৩০৬৭: অফিস চলাকালীন সময়ে ও ডিউটিতে থাকা অবস্থায় ইবাদত করার বিধান কি ?

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১৩০৬৭: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। 

সম্মানিত মুফতি সাহেব,

নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর কোরআন ও হাদিসের আলোকে রেফারেন্সসহ প্রদান করলে কৃতজ্ঞ থাকব। জাযাকাল্লাহু খাইরান। 

প্রশ্ন: অফিস চলাকালীন সময়ে ও ডিউটিতে থাকা অবস্থায় ইবাদত করার বিধান কি ?

তারিখ:০১/০৯/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

হাফেজ মাওলানা সাজ্জাদ হোসেন নারায়ণগঞ্জ   থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, যে কর্মচারী/কর্মকর্তা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে শরয়ি বিধান পালন করবে, তার ডাবল সাওয়াবের ওয়াদা রয়েছে। যেমন,

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدٌ ـ هُوَ ابْنُ سَلاَمٍ ـ حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ حَيَّانَ، قَالَ قَالَ عَامِرٌ الشَّعْبِيُّ حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثَةٌ لَهُمْ أَجْرَانِ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ آمَنَ بِنَبِيِّهِ، وَآمَنَ بِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم وَالْعَبْدُ الْمَمْلُوكُ إِذَا أَدَّى حَقَّ اللَّهِ وَحَقَّ مَوَالِيهِ، وَرَجُلٌ كَانَتْ عِنْدَهُ أَمَةٌ (يَطَؤُهَا) فَأَدَّبَهَا، فَأَحْسَنَ تَأْدِيبَهَا، وَعَلَّمَهَا فَأَحْسَنَ تَعْلِيمَهَا، ثُمَّ أَعْتَقَهَا فَتَزَوَّجَهَا، فَلَهُ أَجْرَانِ ".

ثُمَّ قَالَ عَامِرٌ أَعْطَيْنَاكَهَا بِغَيْرِ شَىْءٍ، قَدْ كَانَ يُرْكَبُ فِيمَا دُونَهَا إِلَى الْمَدِينَةِ.

৯৭। মুহাম্মাদ ইবনে সালাম (রাহঃ) ......... আবু বুরদা (রাহঃ), তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তিন ধরনের লোকের জন্য দুটি সাওয়াব রয়েছেঃ (১) আহলে কিতাব—যে ব্যক্তি তার নবীর ওপর ঈমান এনেছে এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) এর উপরও ঈমান এনেছে। (২) যে ক্রীতদাস আল্লাহর হক আদায় করে এবং তার মালিকের হকও (আদায় করে)। (৩) যার একটি বাঁদী ছিল, যার সাথে সে মিলিত হত। তারপর তাকে সে সুন্দরভাবে আদব-কায়দা শিক্ষা দিয়েছে এবং ভালভাবে দ্বীনী ইলম শিক্ষা দিয়েছে, এরপর তাকে আযাদ করে বিয়ে করেছে; তার জন্য দুটি সাওয়াব রয়েছে। এরপর বর্ণনাকারী আমের শা'বী (রাহঃ) (তাঁর ছাত্রকে) বলেন, তোমাকে কোন কিছুর বিনিময় ছাড়াই হাদীসটি শিক্ষা দিলাম, অথচ এর চাইতে ছোট হাদীসের জন্যও লোক (দূর-দূরান্ত থেকে) সওয়ার হয়ে মদীনায় আসত।


Narrated Abu Burda’s father:

Allah’s Messenger (ﷺ) said "Three persons will have a double reward:

1. A Person from the people of the scriptures who believed in his prophet (Jesus or Moses) and then believed in the Prophet (ﷺ) Muhammad (i .e. has embraced Islam).

2. A slave who discharges his duties to Allah and his master.

3. A master of a woman-slave who teaches her good manners and educates her in the best possible way (the religion) and manumits her and then marries her."

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭ (আন্তর্জাতিক নং ৯৭)


দ্বিতীয় কথা হলো, যে পেশা বা চাকরী করতে আল্লাহ তাআলার বিধান পালনে প্রতিবন্ধক বা নাফরমানি করতে বাধ্য করে, সেই চাকরি করা জায়েয নেই। দলিল- 

, لاطاعة في معصية الله إنما الطاعة في المعروْف

 আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন আনুগত্য নেই। আনুগত্য কেবল ন্যায় কর্মে। তাখরিজ:বুখারী হা/৭২৫৭; মুসলিম-১৮৪০; যাদুল মাআদ পৃঃ ৪৫০


তৃতীয় কথা হলো, সর্বাবস্থায় আল্লাহ তাআলার বিধান পূর্ণ করার সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করা, কখনো ত্রুটি হয়ে গেলে জলদি তওবা করে নেওয়া। দলিল- 

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَأَنفِقُوا خَيْرًا لِّأَنفُسِكُمْ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর, শুন, আনুগত্য কর এবং ব্যয় কর। এটা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর। যারা মনের কার্পন্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম। সূরা তাগাবুন-১৬


وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

 মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। সূরা নূর-৩১


চতুর্থ কথা হলো, অফিস বা ডিউটি চলাকালীন সময়ে জামাআতে নামাজ আদায় ও জুমাআর নামজের বিধান সম্পর্কে আল-বুরহান জিজ্ঞাসা-১২৯১৭ শিরোনামে মাসয়ালাটি আলোচনা করা হয়েছে। সেটা দেখে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।


পঞ্চম কথা হলো, রোগীর বিস্তারিত বর্ণনার পরেই কেবল ডাক্তার তার ওষুধ নির্বাচন করে, তাই ব্যক্তি কি চাকরি করে, কি পরিস্থিতি ইত্যাদি ইত্যাদি বিস্তারিত বিজ্ঞ মুফতির কাছে বলার পরেই তিনি সিদ্ধান্ত দিবেন। আমভাবে বলা দুষ্কর। কেননা আপনি "ইবাদাত" শব্দ উল্লেখ করেছেন, শব্দটি ব্যাপক অর্থ বহন করে।


সারকথা হলো,  একজন মুসলিম হিসেবে তার পেশাগতা দায়িত্ব পালন করা এটাও ইসলামের হুকুম আবার আল্লাহর নির্ধারিত শরয়ি বিধি-বিধান পালন করা এটাও তারই হুকুম। 


উভয়ের মাঝে কিভাবে সমন্বয় করা যায়, ব্যক্তিগতভাবে বিজ্ঞ মুফতি/আলেম কাছে বিস্তারিত  জেনে, আমল করা যেতে পারে। সমন্বয় করা সম্ভব না হলে, সর্বাবস্থায় বান্দাকে আল্লাহর শরীয়তে সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিতে হবে।


  والله اعلم بالصواب

জিজ্ঞাসা-১৩০৬৬: দাড়ির সীমানা কতটুকু, গলা-চেহেরার উপর দাড়ি কাটা যাবে কি

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১৩০৬৬: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।   মুহতারাম স্যার, দাড়ি গলার উপরের দিকের কিছু অংশ কাটা যাবে কি? অনুগ্রহ পূর্বক জানাবেন।

তারিখ: ৩১/০৮/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা ওবায়দুর রহমান ফরিদপুর থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, ইসলামী আইনবিদদের সর্বসম্মতিক্রমে দাড়ি বলা হয় দুই চোয়ালের দাঁতবিশিষ্ট হাড়ের ওপর গজানো পশম এবং কান ও চোখের মধ্যবর্তী স্থানে গজানো সারিবদ্ধ পশমকে। কোনো কোনো ইসলামী আইনবিদের মতে, ঠোঁটের নিচের অংশে গজানো পশম ও নাকের উভয় দিক সংলগ্ন গালের ওপর গজানো ও থুতনির নিচের নরম অংশে গজানো পশমও দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এসব পশম কাটা বা উপড়ানো অনুচিত। দলিল- 

قال ابن قدامة: العارض هو ما نزل عن حد العذار، وهو الشعر النابت على اللحيين، ونقل عن الأصمعي والمفضل بن سلمة: ما جاوز وتد الأذن عارض، فالعارضان من اللحية. كما في (الموسوعة الفقهية


অর্থাৎ, আল্লামা ইবনে কুদামা ( রাহি.) বলেন, "দাড়ির বিস্তৃতাংশ বলা হয় সেই অংশটুকুকে, যা চিবুকের সীমা থেকে নিম্নদেশে অবস্থান করছে। আর সেগুলোই হলো, চোয়ালের হাড়যুগলের উপর গজিয়ে ওঠা কেশগুচ্ছ।"

আল্লামা আসমায়ী ও মুফাদ্দাল বিন সালামাহ(রাহি.) বলেন, " কানের গ্রন্থিসীমা অতিক্রমকারী কেশগুচ্ছই হলো "আরিয" বা দাড়ির বিস্তৃতাংশ। আর এই অংশটুকু শরয়ী দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। ( আল-মাওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ)


الشيخ ابن باز رحمه الله تعالى:

اللحية هي ما نبت على الخدين والذقن كما أوضح ذلك صاحب القاموس، فالواجب ترك الشعر النابت على الخدين والذقن وعدم حلقه أو قصه .

أصلح الله حال المسلمين جميعاً.

فتاوى إسلامية (2/325) .

অর্থাৎ, শায়েখ বিন বায ( রাহি.) বলেন, "অভিধানবেত্তাগণের মতানুসারে, দুই গণ্ডদেশ বা গাল ও থুতনীর উপর যে কেশ গজায়, তাকেই দাঁড়ি বলে।" সুতরাং গাল ও থুতনীর উপর গজিয়ে ওঠা কেশগুচ্ছকে অটুট রাখা ওয়াজিব। সেগুলোকে মুন্ডন কিংবা কর্তন করা বৈধ নয়। 

আল্লাহ সকল মুসলিমের সার্বিক অবস্থাকে সংশোধন করে দিন।

( ফাতাওয়ায়ে ইসলামিয়া- 2/325)


দ্বিতীয় কথা হলো, তবে দাড়ি ব্যতীত গাল ও থুতনীর নিচের পশম কাটা জায়েয আছে৷ তবে মুণ্ডন করা বিদআত৷ অনুরুপভাবে ঠোঁটের নিচের নিমদাড়ি রাখাও আবশ্যক৷তা কেটে ফেলা বা মুণ্ডন করা বিদআত বা মাকরুহে তাহরীমী৷ (শামী ৫/৪০৬ পৃঃ) দলিল- 

لا يحلق شعر حلقه ولا بأس بأن يأخذ شعر الحاجبين وشعر وجهه ما لم يتشبه بالمخنثين (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-526)

তার গলার উপর দাড়ি কামানো উচিত নয়, এবং তার ভ্রু ও মুখের চুল ছাঁটাতে তার কোন ক্ষতি নেই যতক্ষণ না সে হিজড়া পুরুষদের অনুকরণ না করে (হাশিয়াত আল-তাহতাভী ‘আলা মারাকি আল-ফালাহ - 526)


সারকথা হলো,  গালের উপরের এবং গলার দিকে তথা থুতনির হাড্ডির নিচে গলায় গজানো চুল দাড়ীর অন্তর্ভূক্ত নয়। তাই তা কাটা বা মুণ্ডানোতে কোন সমস্যা নেই।



  والله اعلم بالصواب

পর্দানশীন-০১: আপনার মেয়েকে/বোনকে অবশ্যই শেখাবেন:-💝

No Comments

 



⚠️আপনার মেয়েকে/বোনকে অবশ্যই শেখাবেন:-💝


১. মাটি থেকে কখনও কোনো কিছু উঠাতে গেলে অবশ্যই বুকের উপর এক হাত দিয়ে তারপর উঠাতে যাবে।

সতর ঢাকার সতর্কতা স্বরুপ এটা করা উচিত।


২. পুরুষ মানুষের সামনে কখনও পায়ের উপর পা তুলে বসবে না, দুই পা'কে মিলিয়ে বা খুব কাছাকাছি রেখে বসবে।


৩. সিঁড়িতে উপরের দিকে উঠার সময় যদি পেছনে কোনো পুরুষ মানুষ থাকে, তাহলে এক কোনায় গিয়ে কিছুক্ষণ স্থির হয়ে দাঁড়াবে, পুরুষ লোকটি চলে গেলে তারপর উঠবে।


৪. লিপ্টে ওঠার সময় যদি অপরিচিত পুরুষ মানুষ থাকে এবং মাত্র একজনই থাকে, তাহলে তার সাথে ওঠবে না, অপেক্ষা করবে, সেই অপরিচিত লোকটি বের হলে তারপর উঠবে।


৫. সবসময় মুচকি হাসার অভ্যাস করবে, উঁচু আওয়াজে অট্টহাসি হাসবে না।


৬. তোমার চাচাতো ভাই, খালাতো ভাই বা ফুফাতো ভাইদের সাথে মুসাফাহা করবে না, যদিও তোমার কাছে তাদের ছোট মনে হয়।


৭. কোনো প্রয়োজনে পুরুষ মানুষের সাথে কথা বলতে হলে, অবশ্যই শারীরিকভাবে যথেষ্ট পরিমাণ দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলবে।


৮. নিকটাত্মীয় হলেও কাজকর্মে বা কথা বার্তায় অবশ্যই একটা সীমারেখা বজায় রাখবে। নিজের ভাবগাম্ভীর্য এমনভাবে বজায় রাখবে, যেন তোমার প্রতি তার ভিতরে খারাপ কল্পনা তৈরি না হয়।


৯. রাস্তাঘাটে নিজ বান্ধবীদের সাথে হাসি ঠাট্টা করবে না, রাস্তার শিষ্টাচার বজায় রাখবে।


১০. তারা যেন বেপর্দা না করে এবং বেপর্দা করে যেন বাহির না হয় ! যেমন- চুল খোলা রাখা অতিরিক্ত ফিটিং কাপড় পড়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

পর্দানশীন-০২: হায়েজ বা পিরিয়ড যখন নারীদের জন্য উপহারস্বরুপ!

No Comments

 



হায়েজ যখন নারীদের জন্য উপহারস্বরুপ! 


কারণঃ


১) যতখুশি যিকির করা যায়। 

২) যতখুশি ইস্তেগফার করা যায়।

৩) জাহান্নামের ভয়াবহতা নিয়ে গভির চিন্তা করা যায়।

[কারণ হায়েজ অবস্থায় সময় বেশি পাওয়া যায়]

৪) জান্নাত নিয়ে গভির চিন্তার সাগরে ঢুবে থাকা যায়।

৫)অতিমাত্রায় দুরুদ পাঠ করা যায়।

৬) দোয়া কবুলের সময়গুলোতে বেশি বেশি দোয়া করা যায়।

৭) রাতের শেষাংশে অল্প সময়ের জন্য উঠে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়।

৮) সবথেকে বড় কথা, অতিমাত্রায় দোয়া, দুরুদ- যিকির, ইস্তেগফার পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় এবং নেকির পাল্লা ভারি করা যায় যা নাজাতের পথ।


[ হায়েজ অবস্থায় নারীদের কষ্ট হলেও, মুখে যত বেশি দোয়া, দুরুদ,  যিকির ইস্তেগফার পাঠ করা যায়, যা পবিত্র থাকা অবস্থায় কখনোই সম্ভব হয় না]


⭕ যুবতীদের হায়েজ সর্বনিম্ন ৩ দিন ই থাকার কথা। এই ৩ দিন যদি সে শুধুই ইস্তেগফার করে তাহলে একেতো আল্লাহর ভালোবাসা পেলোই, তাছাড়া আল্লাহর ক্ষমার দ্বারা নিজে পবিত্র ও হয়ে যেতে পারে। কারণ আল্লাহ তায়ালা এমন নন যে, তার বান্দা টানা ৩ দিন ইস্তেগফার করবে অথচ আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন না।


⭕৩ দিন একটানা দুরুদ পাঠ করলে কতবার রহমত বর্ষণ হবে চিন্তা করতে পারেন? একবার দুরুদ পাঠ করলে ১০ বার রহমত নাযিল হয়। 


তাহলে ৩ দিনে ৩০০০ বার দুরুদ পাঠ করলে রহমত বর্ষণ হয়, ৩০০০*১০=৩০,০০০ বার অর্থ্যাৎ ৩০ হাজার বার।  

৩০ হাজার বার যদি রহমত বর্ষিত হয় তাহলে আপনার অবস্থান ৩ দিনে কোথায় যাওয়ার কথা? চিন্তা করেন? 

আপনিতো রহমতের সাগরে হাবুডুবু খেতে থাকবেন।


⭕ আপনি যদি ৩ দিনে ৩০০০ বার তাসবিহ পড়েন। তাহলে আসে কতো নেকি? ৩০০০*১০=৩০,০০০নেকি। 


এটা কি কোন বুদ্ধিমানে ত্যাগ করে? হায়েজকেও কাজে লাগাতে হবে বুদ্ধি দিয়ে।আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে মা- বোনদেরকে এভাবে আমল করার তৌফিক দিন, আমিন! 💞

জিজ্ঞাসা-২৬৬: ফরজ নামাজের তিন নম্বর এবং চার নম্বর রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার বিধান কি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-৬৬: বিজ্ঞ ওলামায়ে দ্বীনের কাছে জানার বিষয় হল : ফরজ নামাজের তিন নম্বর এবং চার নম্বর রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার বিধান কিতারিখ-/০৯/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি


হাফেজ মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক (পাবনা )

 

জবাব

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

হামদ-সানা ও দরুদের পর কথা হলো, ফরজ নামাজের ৩য় এবং ৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা আহলে হাদিসের মতে পড়া ফরজ/ওয়াজিব আর ফুকাহায়ে আহনাফের নিকট  সুন্নাত/মুস্তাহাব।

 

ফুকাহায়ে আহনাফের দলিল:

 

হাদিস নং-০১

হাদিস শরিফে এসেছে,

أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ

রাসূল () জোহরের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহা ও দুটি সূরা পড়তেন এবং শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন তাখরিজ:  বুখারিহাদিস: ৭৭০

 

হাদিস নং-০২

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ، وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لاَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي الْعَصْرِ

অর্থ: আবু কাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যেনাবী ( যুহরের প্রথম দুরাকআতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা ও দুটি সূরাহ্ পড়তেন এবং শেষ দুরাকআতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেনআর তিনি প্রথম রাকআতে যত দীর্ঘ করতেনদ্বিতীয় রাকআতে তত দীর্ঘ করতেন না। আসরেও এ রকম করতেন। বুখারী শরীফ ৭৭৬.৭৫৯

 

হাদিস/আসার নং-০৩

أن عبد اللہ بن مسعود کان لا یقرأ خلف الامام فیما جھر فیہ، وفیما یخافت فیہ فی الأولیین، ولا فی الأخریین، واذا صلی وحدہ قرأ فی الأولیین بفاتحة الکتاب وسورة، ولم یقرأ فی الأخریین شیئا

(مؤطا امام مالک ،باب افتتاح الصلاة،ص62،مطبوعہ  المکتبة العلمی

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ যখন একাকী নামাজ পড়তেন,তখন প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা আর অন্য সুরা পড়তেন,শেষ দুই রাকাতে কিছুই পড়তেননা। তাখরিজ: মুয়াত্তা মালেক-৬২ পৃষ্ঠা

 

হাদিস/আসার নং-০৪

عن عبید اللہ بن أبی رافع قال کان یعنی علیا یقرأ فی الأولیین من الظھر والعصر بأم القرآن وسورة، ولا یقرأ فی الأخریین

(مصنف عبد الرزاق،کتاب الصلاہ،باب کیف القراء ة فی الصلاة،ج2،ص100،مطبوعہ  المکتب الاسلامی ،بیروت)

অর্থ: হযরত আলী রাঃ জোহর আছরের ১ম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা আর অন্য সুরা পড়তে,  শেষ দুই রাকাতে  পড়তেননা। তাখরিজ: মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক- ২ খণ্ড; ১০০ পৃষ্ঠা

 

হাদিস/আসার নং-০৪

হযরত ইবরাহীম নখয়ী থেক বর্ণিত আছেঃ

ما قرأ علقمة فی الرکعتین الأخریین حرفاقط

(مصنف عبد الرزاق،کتاب الصلاہ،باب کیف القراء ة فی الصلاة،ج2،ص100،مطبوعہ  المکتب الاسلامی ،بیروت

আলকামা রাঃ শেষ দুই রাকাতে এক হরফও পড়তেননা।  তাখরিজ: মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক- ২ খণ্ড; ১০০ পৃষ্ঠা

 

 

আলেমদের মতামত:

واکتفی المفترض فیما بعد الأولیین بالفاتحة فانھاسنۃ علی الظاھر

(درمختار،کتاب الصلاۃ،ج02،ص270،مطبوعہ کوئٹہ)

অর্থাৎ  প্রথম দুরাকাতে সূরা ফাতেহা মিলাতে হবে।  সূত্র: ফাতাওয়ায়ে শামী-২য় খণ্ড;২৭০ পৃ.


সারকথা কথা হলো, উপরোক্ত হাদিস, আসার এর উপর ভিত্তি করে ওলামায়ে আহনাফ বলেন, ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে   সূরা ফাতিহা পড়া সুন্নাত। সুতরাং  কেহ যদি ৩য়/৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতিহা না পড়ে; তাহলে সাহু সিজদা লাগবে না, নামাজ হয়ে যাবে। সূত্র:  আলমগিরি ১/১২৬মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ৩৭৪৩-৩৭৬২আলবাহরুর রায়েক ১/৩২৬শরহুল মুনইয়াহ ৩৩১রদ্দুল মুহতার ১/৪৫৯

 


 

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক 


Stylo

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে করে যোগাযোগ করুন। জাযাকাল্লাহু খাইর