জিজ্ঞাসা-১৩০৫৯:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। বিজ্ঞ মুফতি সাহেবের কাছে জানতে চাই, বিনা ওজু নিয়মিত বা অনিয়মিত আজান দেওয়া যাবে কি?
তারিখ: ২১/০৮/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আব্দুল হালিম চিটাগাং থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, অজু অবস্থায় আজান দেওয়া চার ইমামের ঐক্যমতে মুস্তাহাব। যেমন,
يُستحَبُّ أن يكونَ المؤذِّنُ على طهارةٍ، وهذا باتِّفاقِ المذاهب الفقهية الأربعة: الحنفيَّة، والمالكيَّة، والشافعيَّة، والحنابلة، وبه قال عامَّةُ أهلِ العِلمِ
البناية)) للعيني (2/109)، وينظر: ((بدائع الصنائع)) للكاساني (1/151).
মুয়াজ্জিনের পবিত্র অবস্থায় আজান দেওয়া মুস্তাহাব এবং এটি চারটি মাযহাবের সাথে একমত: হানাফী, মালিকি, শাফেয়ী এবং হাম্বলী, এবং এটিই অধিকাংশ আলেম বলেছেন। সূত্র: আল-বিনাইয়া-২/১০৯; আল্লামা আইনি রহ.
হাদিস নং-০১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ لاَ يُنَادِي بِالصَّلاَةِ إِلاَّ مُتَوَضِّئٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا أَصَحُّ مِنَ الْحَدِيثِ الأَوَّلِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ لَمْ يَرْفَعْهُ ابْنُ وَهْبٍ وَهُوَ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ الْوَلِيدِ بْنِ مُسْلِمٍ . وَالزُّهْرِيُّ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الأَذَانِ عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ فَكَرِهَهُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَإِسْحَاقُ . وَرَخَّصَ فِي ذَلِكَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدُ .
২০১. ইয়াহয়া ইবনে মুসা (রাহঃ) ..... ইবনে শিহাব (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেছেন উযু ছাড়া কেউ যেন নামাযের আযান না দেয়।
Ibn Shihab narrated that :
Abu Hurairah said: "None should call (for the prayer except for one with Wudu."
নোট:
ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী এটি প্রথমোক্ত রিওয়ায়াতটি থেকে অধিক সহীহ। ইবনে ওয়াহহাব (রাহঃ) আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদিসটিকে মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেননি। এটি ওয়ালীদ ইবনে মুসলিমের রিওয়ায়াত থেকে অধিক সহীহ। ইবনে শিহাব যুহরী (রাহঃ) আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে সরাসরি কোন কিছু শুনেননি। অযু ছাড়া আযান দেওয়ার বিষয়ে আলিমগণের মতভেদ রয়েছে। কোন কোন ফকীহ আলিম মাকরূহ বলে রায় দিয়েছেন। ইমাম শাফিঈ ও ইসহাক (রাহঃ) ও এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আর কতক ফকীহ আলিম এই বিষয়ে অনুমতি দিয়েছেন। ইমাম সুফইয়ান ছাওরী ইবনে মুবারক ও আহমদ (রাহঃ) -ও এই মত পোষণ করেন।
—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২০১ (আন্তর্জাতিক নং ২০১)
হাদিস নং-০২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ حُضَيْنِ بْنِ الْمُنْذِرِ أَبِي سَاسَانَ، عَنِ الْمُهَاجِرِ بْنِ قُنْفُذٍ، أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَبُولُ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ حَتَّى تَوَضَّأَ ثُمَّ اعْتَذَرَ إِلَيْهِ فَقَالَ " إِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أَذْكُرَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ عَلَى طُهْرٍ " . أَوْ قَالَ " عَلَى طَهَارَةٍ " .
১৭. মুহাম্মাদ ইবনুল মুছান্না .... আল-মুহাজির ইবনে কুনফুয (রাযিঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন যে, একদা তিনি নবী (ﷺ)-এর খেদমতে এমতাবস্থায় পৌছলেন যখন তিনি (ﷺ) পেশাবরত ছিলেন। তিনি তাকে সাল্লাম দেন কিন্তু নবী (ﷺ) উযু না করা পর্যন্ত তার সালামের জবাব থেকে বিরত থাকলেন অতঃপর তিনি তার নিকট ওযর পেশ করে বলেনঃ আমি পবিত্র হওয়া বা পবিত্রতা অর্জন করা ব্যতীত আল্লাহ্ তাআলার নাম স্মরণ করা অপছন্দ করি।
Narrated Muhajir ibn Qunfudh:
Muhajir came to the Prophet (ﷺ) while he was urinating. He saluted him. The Prophet (ﷺ) did not return the salutation to him until he performed ablution. He then apologised to him, saying: I disliked remembering Allah except in the state of purification.
Grade: Sahih (Al-Albani)
—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৭ (আন্তর্জাতিক নং ১৭)
নোট: আজানও আল্লাহর জিকিরের অন্তর্ভুক্ত।
সারকথা হলো, বিনা ওজু নিয়মিত বা অনিয়মিত আজান দেওয়া জায়েজ হলেও, উত্তমতার খেলাফ এতে কোন সন্দেহ নেই। কোন কোন ইমাম মাকরুহ বলেছেন, তাই সাবধান থাকা উচিত।
والله اعلم بالصواب