"আ্যাডজাস্টমেন্ট"
মো রফিকুল ইসলাম
১৭/৭/২৪
খাওয়া বেশি হয়ে গেলে পেটে সমস্যা হয়ে যায়, তাই পরের ওয়াক্তে খাওয়া কমাতে হয়, গ্যাসের ঔষধ লাগে পেটের আ্যাডজাস্টমেন্টর জন্য, সমতা আনয়নের জন্য। শরীরের তাপমাত্রা বা প্রেসার কমে গেলে বাড়াতে হয়, বেড়ে গেলে কমাতে হয়। বেশী পরিশ্রম হলে বা ঘুম কম হলে, এরপর বেশী পরিমাণে ঘুমাতে হয় বা বিশ্রাম নিতে হয়।
তরি-তরকারিতে লবণ কম বা বেশী হলেও সমতা বা আ্যাডজাস্ট করেই খাওয়ার উপযোগী করা হয়। এই সমতা বা আ্যাডজাস্টমেন্ট জীবনের সকলক্ষেত্রে, সব সময়ই দরকার হয়ে থাকে। যেখানেই এর ব্যত্যয় ঘটে সেখানেই দেখা যায় সমস্যা। এ জন্যই আরবীতে একটা প্রবাদ আছে, خير الامور اوسطها "সবকিছুতেই মধ্যম পন্থা উত্তম।"
আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর সৃষ্টির মাঝে সকলক্ষেত্রেই এই সমতার সুসম ব্যবস্থা করে রেখেছেন। কোথাও কোন কিছুতেই সামান্যতম কোন অসমতা বা অসামঞ্জস্য রাখেননি। যখন, যেখানে বিধির এই বিধানের ব্যাত্যয় ঘটে তখনই সেখানে দেখা দেয় বিপর্যয়, অশান্তি, অসমতা এবং নানা অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা।
একজন মানুষ সারাজীবনে দশকটি টাকা অর্জন করার কথা, যদি সে কোন বা কোনভাবে জীবনের শুরুতে বা অল্প সময়ের মধ্যেই তা অর্জন করে ফেলে, তাহলে বাকী জীবনে আর তেমন কোন আয়-রোজগার না হবারই কথা। সত্তর বছরের রিজিক কেউ ষাট বা পয়ষট্টি বছরে খেয়ে ফেলে বাকী সময়টাতে সে কীভাবে? কী খেয়ে বাঁচবে? কার খাবার সে খাবে? অথচ তাঁর হায়াত এখনো বাকী। তাহলে সে কী না খেয়ে মারা যাবে? না, তা মোটেই নয়, কারণ যেহেতু তাঁর হায়াত এখনো বাকী, একারণে সে খাদ্যাভাবে মৃত্যু বরণও করবেনা। তাহলে বেঁচে থাকার উপায়? উপায় আছে বৈকি!
চারপাশে একটু চোখ বুলাইলে একরকম হাজার হাজার মানুষের নজির চোখে পড়বে আমাদের, যাদের সম্পদের পরিমাণ পাহাড়সম কিন্তু ডাক্তার ওর জন্য সকল পুষ্টিকর, মজাদার খাবার দাবার সব হারাম করে দিয়েছেন। সামান্যতম একটু জুস, একটা শশা, এক টুকরো ফল বা এমন কিছুই তাঁর বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে যায়।
আর এভাবেই মহাবিশ্বের মহান কর্তা সদা-সর্বদাই সমতা বিধান করে যাচ্ছে সকলের মাঝে, সবকিছুতে, সব সময়ই।