আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-২৬৬: ফরজ নামাজের তিন নম্বর এবং চার নম্বর রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার বিধান কি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-৬৬: বিজ্ঞ ওলামায়ে দ্বীনের কাছে জানার বিষয় হল : ফরজ নামাজের তিন নম্বর এবং চার নম্বর রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার বিধান কিতারিখ-/০৯/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি


হাফেজ মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক (পাবনা )

 

জবাব

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

হামদ-সানা ও দরুদের পর কথা হলো, ফরজ নামাজের ৩য় এবং ৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা আহলে হাদিসের মতে পড়া ফরজ/ওয়াজিব আর ফুকাহায়ে আহনাফের নিকট  সুন্নাত/মুস্তাহাব।

 

ফুকাহায়ে আহনাফের দলিল:

 

হাদিস নং-০১

হাদিস শরিফে এসেছে,

أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ

রাসূল () জোহরের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহা ও দুটি সূরা পড়তেন এবং শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন তাখরিজ:  বুখারিহাদিস: ৭৭০

 

হাদিস নং-০২

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ، وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لاَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي الْعَصْرِ

অর্থ: আবু কাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যেনাবী ( যুহরের প্রথম দুরাকআতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা ও দুটি সূরাহ্ পড়তেন এবং শেষ দুরাকআতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেনআর তিনি প্রথম রাকআতে যত দীর্ঘ করতেনদ্বিতীয় রাকআতে তত দীর্ঘ করতেন না। আসরেও এ রকম করতেন। বুখারী শরীফ ৭৭৬.৭৫৯

 

হাদিস/আসার নং-০৩

أن عبد اللہ بن مسعود کان لا یقرأ خلف الامام فیما جھر فیہ، وفیما یخافت فیہ فی الأولیین، ولا فی الأخریین، واذا صلی وحدہ قرأ فی الأولیین بفاتحة الکتاب وسورة، ولم یقرأ فی الأخریین شیئا

(مؤطا امام مالک ،باب افتتاح الصلاة،ص62،مطبوعہ  المکتبة العلمی

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ যখন একাকী নামাজ পড়তেন,তখন প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা আর অন্য সুরা পড়তেন,শেষ দুই রাকাতে কিছুই পড়তেননা। তাখরিজ: মুয়াত্তা মালেক-৬২ পৃষ্ঠা

 

হাদিস/আসার নং-০৪

عن عبید اللہ بن أبی رافع قال کان یعنی علیا یقرأ فی الأولیین من الظھر والعصر بأم القرآن وسورة، ولا یقرأ فی الأخریین

(مصنف عبد الرزاق،کتاب الصلاہ،باب کیف القراء ة فی الصلاة،ج2،ص100،مطبوعہ  المکتب الاسلامی ،بیروت)

অর্থ: হযরত আলী রাঃ জোহর আছরের ১ম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা আর অন্য সুরা পড়তে,  শেষ দুই রাকাতে  পড়তেননা। তাখরিজ: মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক- ২ খণ্ড; ১০০ পৃষ্ঠা

 

হাদিস/আসার নং-০৪

হযরত ইবরাহীম নখয়ী থেক বর্ণিত আছেঃ

ما قرأ علقمة فی الرکعتین الأخریین حرفاقط

(مصنف عبد الرزاق،کتاب الصلاہ،باب کیف القراء ة فی الصلاة،ج2،ص100،مطبوعہ  المکتب الاسلامی ،بیروت

আলকামা রাঃ শেষ দুই রাকাতে এক হরফও পড়তেননা।  তাখরিজ: মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক- ২ খণ্ড; ১০০ পৃষ্ঠা

 

 

আলেমদের মতামত:

واکتفی المفترض فیما بعد الأولیین بالفاتحة فانھاسنۃ علی الظاھر

(درمختار،کتاب الصلاۃ،ج02،ص270،مطبوعہ کوئٹہ)

অর্থাৎ  প্রথম দুরাকাতে সূরা ফাতেহা মিলাতে হবে।  সূত্র: ফাতাওয়ায়ে শামী-২য় খণ্ড;২৭০ পৃ.


সারকথা কথা হলো, উপরোক্ত হাদিস, আসার এর উপর ভিত্তি করে ওলামায়ে আহনাফ বলেন, ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে   সূরা ফাতিহা পড়া সুন্নাত। সুতরাং  কেহ যদি ৩য়/৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতিহা না পড়ে; তাহলে সাহু সিজদা লাগবে না, নামাজ হয়ে যাবে। সূত্র:  আলমগিরি ১/১২৬মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ৩৭৪৩-৩৭৬২আলবাহরুর রায়েক ১/৩২৬শরহুল মুনইয়াহ ৩৩১রদ্দুল মুহতার ১/৪৫৯

 


 

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক