আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।
No Comments

 


*সহজ তাহাজ্জুদ ও পরম নৈকট্য*


 নফস্ নামক দুশমনকে পরাজিত করার ফিকির থাকা চাই। প্রত্যহ দু' রাকাত ছালাতুল হাজত পড়ে বড়ই মিনতি সহকারে আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করবে যে, হে আল্লাহ! সকল গুনাহ থেকে আমি তওবা করছি। কিন্তু হে আল্লাহ! আমার তওবা তো বার বার ভেঙ্গে যায়, তওবার উপর আমি টিকে থাকতে পারি না। আপনি আমার জন্য সুবিশাল আসমান হতে সাহায্য পাঠিয়ে দিন ।


বহুবারই আমি আরয করেছিলাম যে, ছালাতুত তওবা, ছালাতুল হাজত ও ছালাতুত তাহাজ্জুদ এই তিন নিয়তে বিতিরের পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়বে। এই নামাযের লাভ কি, সে বিষয়ে আমি প্রামাণ্য কথা পেশ করছি। হাদীস শরীফ, ফাতাওয়া শামী ও হাকীমুল উম্মতের এমদাদুল ফাতাওয়ার বর্ণনা অনুযায়ী এই দু' রাকাত নফলের বরকতে কিয়ামতের দিন আপনাকে তাহাজ্জুদওয়ালাদের সঙ্গে উঠানো হবে। তবে যারা অর্ধ রাতের পর শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়তে পারে তারা তো বহু মোবারকবাদ যোগ্য । তাদের জন্য শেষ রাতে পড়াই বাঞ্ছনীয়। এশার পর উক্ত নফল পড়ার অর্থ এই নয় যে, সস্তা মাল পেয়ে দামী সম্পদ ছেড়ে দাও।


মনে করুন, দুই প্রকার মিষ্টি আছে। একটার কেজি দশ টাকা, আরেকটির কেজি পঞ্চাশ টাকা এবং তা খুবই সুস্বাদু। এমতাবস্থায় যার তওফীক হয়, সে তো দামীটাই নিবে। সহজ পদ্ধতিটা আমি তাদের জন্য পেশ করছি যারা দুর্বল, অসুস্থ অথবা যারা কম হিম্মত মানুষ।


 বর্তমান সময়ে অধিকাংশ লোকেরাই স্বাস্থ্যগত কারণে এমন অবস্থায় আছে যে, শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়া মুশকিল। আমি তাদেরকেই বলছি যে, বিতিরের পূর্বে তাহাজ্জুদের নিয়তে দুই রাকাত পড়ে তাহাজ্জুদের নেআমত হাসিল করে নিন। যাতে কিয়ামতের দিন 'অপূর্ণ বান্দা' হয়ে না উঠেন। কেননা, মোহাদ্দেসীন (হাদীস বিশারদগণ) বলেন, যারা কিয়ামুল লাইল (তাহাজ্জুদ) না পড়ে সব সময় তারা অপূর্ণই থেকে যায়; কামেল হতে পারে না । যেমন বিখ্যাত মোহাদ্দেছ মোল্লা আলী কারী (রহ.) লিখেনঃ


ليس مِنَ الْكَامِلِينَ مَن لَّا يَقومُ اللَّيْلَ


অর্থঃ যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামায পড়ে না সে কামেলীনের হয় না। ( মেরকাত, ৩য় খন্ড, ৩৪৮ পৃষ্ঠা)


আমার আকাঙ্ক্ষা যে, আমাদের কোন দোস্তই যেন নাকেছ (অপূর্ণ) না থাকে। শোয়ার পূর্বে দু' চার রাকাত পড়ে নিবে, যাতে কিয়ামতের দিন কামেলদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। আল্লামা শামী (রহ.) একটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করেছেন :


وَمَا كَانَ بَعْدَ صَلَاةِ الْعِشَاء فَهُوَ مِنَ اللَّيْلِ


"এশার পর যত নফল পড়া হয়, তা তাহাজ্জুদ রূপে গণ্য হয়। "


অতঃপর তিনি বলেনঃ


 فيات سنة اللهجدِ تَحْصُلُ بِالتَّنَقْلِ بَعْدَ صَلوةِ الْعِشَاءِ قَبْلَ التَّوْمِ


(শামী, ১ম খণ্ড, ৫০৬ পৃষ্ঠা) 


ইহা ফাতাওয়া শামীর এবারত, যেই ফাতাওয়া-শামীর আলোকে সমগ্র দুনিয়ার মুফতী সাহেবগণ ফতোয়া দিয়ে থাকেন। এবারতটির মর্মার্থ হলো, যে ব্যক্তি এশার পরে বিতিরের পূর্বে ঘুমাবার আগে কয়েক রাকাত নফল পড়বে, এতে তার তাহাজ্জুদের সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। বিতিরের পরেও পড়া যায়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম অধিকাংশই বিতির সবশেষে পড়তেন। এজন্য আমি চাই, আপনারাও সুন্নতের অনুসরণে বিতিরের পূর্বেই নফল পড়বেন। কিন্তু যদি কখনো পরে পড়েন, তাও জায়েয। তবে উত্তম এটাই যে, বিতিরের পূর্বে পড়বেন ।


📖 আসমানী আকর্ষণ ও আকর্ষিত বান্দাদের ঘটনাবলী ||| পৃষ্ঠাঃ ৭৭

🖋️হযরত মাওলানা শাহ্ হাকীম মুহাম্মদ আখতার রহ.

🔲তরজমাঃ মাওলানা আবদুল মতীন বিন হুসাইন