জিজ্ঞাসা-১৩০৬৫:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। হযরত এর কাছে জানার বিষয় হলো: আমাদের সেনাসদস্যরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ৭৭ কি মি দূরত্বের বেশি দূরত্বে দায়িত্ব পালন করছে, এমতাবস্থায় তারা কতদিন কসর নামাজ আদায় করতে পারবে?
তারিখ: ২৭/০৮/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মোঃ আমিনুল ইসলাম বগুড়া থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, কোন ব্যক্তি ৭৭.২৪ বা ৭৮ কিলোমিটার দূরে ১৫ দিনের কম নিয়তে সফরে বের, তাহলে নিজ বসবাস করা গ্রাম বা শহরের সীমানা অতিক্রম হলেই কসর শুরু করবে।
আর যদি ১৫ দিনের বা বেশি নিয়ত বের, তাহলে মুকীম।
দ্বিতীয় কথা হলো, অনির্দিষ্টকালের জন্য যদি কোথাও সফর করে অর্থাৎ যতক্ষণ সে কোন একটি স্থানে টানা ১৫ থাকার নিয়ত না করবে সে মুকীম গন্য হবে না। দলিল-
হাদিস/আসার নং-০১
عن ابن عمر رضي الله عنهما: إذا كنت مسافراً فوطنت نفسك على إقامة خمسة عشر يوماً فأتمم الصلاة وإن كنت لا تدري فاقصر
ইবন উমার রা. বলেন, তুমি যদি মুসাফির হও এবং ১৫ দিন অবস্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর তাহলে সালাত পূর্ণ করবে। আর যদি তুমি না জান যে কতদিন থাকবে তাহলে সালাত সংক্ষেপ (কসর) করবে। মুহাম্মাদ, কিতাবুল আসার, হাদীস-১৮৮]
হাদিস/আসার নং-০২
عن مجاهد قال: كان ابن عمر رضي الله عنهما كان إذا أجمع على إقامة خمسة عشر يوماً أتم الصلاة
তাবিয়ি মুজাহিদ বলেন, ইবন উমার রা. যখন ১৫ দিন অবস্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন তখন সালাত পূর্ণরূপে (চার রাকআত) আদায় করতেন। তাখরিজ: ফিকহুস সুনান, হাদীস নং ৯৩৮
فهو لا يدري متى تنتهي هذه الإقامة فله القصر ويعتبر مسافرًا يقصر ويفطر في رمضان ولو مضى على هذا سنوات.
অর্থাৎ, শরয়ী সফরের দূরত্ব পরিমাণ পথ অতিক্রম করার পর কোন ব্যক্তির নিকট যদি এই যাত্রার মেয়াদকাল অনির্দিষ্ট হয়ে থাকে, তার এই সাময়িক অবস্থানের সমাপ্তি কবে ঘটতে যাচ্ছে- এবিষয়ে যদি সে ওয়াকিফবহাল না থাকে, তাহলে অনিশ্চয়তার দোলাচালে দোদুল্যমান থাকাকালীন এই সময়টুকু সে সালাতগুলো কসর করে আদায় করবে। এবং শরয়ী মানদণ্ডে সে মুসাফির হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ সে যোহর, আছর ও ইশা'র সালাতগুলো কসর করে আদায় করবে। অনুরূপভাবে পরবর্তীতে কাযা আদায় করে নেওয়ার শর্তে রমজান মাসে সিয়াম পালন না করারও অবকাশ তার রয়েছে। এভাবে কয়েক বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও তার উপর একই হুকুম বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ সে মুসাফির হিসেবেই বিবেচিত হবে। সূত্র: তাতবিকু মাউসিআতিল ফাতাবিল বাজিয়্যা, শায়েখ ইবনে বাজ রহ. এর ওয়েবসাইট থেকে
সারকথা হলো, এখানে নিয়তটা হল মূল বিষয়। অর্থাৎ তিনি যখন নিজের গ্রাম বা শহর বা সেনানিবাস ত্যাগ করেছেন, তখন ১৫ দিনের নিয়ত করে না থাকেন, ইচ্ছে করলে কর্তৃপক্ষ দুই/চার/দশ দিন যে কোন সময় ফিরে আনতে পারেন, এভাবে কয়েক বছর থাকলেও তিনি মুসাফির থাকবে।
والله اعلم بالصواب