জিজ্ঞাসা-১৩০৬২:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমার নাম মিল্লাত হোসেন, আমি ঢাকা ইব্রাহিমপুর এলাকা থেকে। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার মানুষ।
আমার দুটি প্রশ্ন ছিলো
দয়াকরে জানালে উপকার হতো
১. জামাতে নামাজের কি তাড়াতাড়ি / ছোট ছোট সূরা দিয়ে পড়লে কি জায়েজ হবে হলে এর পক্ষে কোন দলিল দিলে উপকার হতো, নাকি লম্বা সূরা দিয়ে পড়বো।
2. এশার নামাজ দেরিতে পড়ার ব্যপারে কোন দলিল / হাদিস থাকলে উপকার হতো।
তারিখ: ২৫/০৮/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মিল্লাত হোসেন ঢাকা থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, আপনার প্রশ্ন মোতাবেক দুই ভাগে উত্তর হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন: ১। জামাতে নামাজের কি তাড়াতাড়ি / ছোট ছোট সূরা দিয়ে পড়লে কি জায়েজ হবে হলে এর পক্ষে কোন দলিল দিলে উপকার হতো, নাকি লম্বা সূরা দিয়ে পড়বো।
উত্তর: ১। কোন ওয়াক্তে কোন সূরা দিয়ে নামাজ পড়া সুন্নত এ বিষয়ে আল-বুরহানে জিজ্ঞাসা- ১২৮৬২ নং শিরোনামে মাসয়ালাটি আলোচনা করা হয়েছে। তাই নতুন করে প্রয়োজন মনে করি না। লিংকটি শেয়ার করা ইনশাআল্লাহ।
দ্বিতীয় কথা হলো, ইমামের অন্যতম দায়িত্ব হলো,
সকল শ্রেণীর মানুষের প্রতি খেয়াল রেখে সালাত সংক্ষেপ করা। কেননা, জামাআতে শিশু, বৃদ্ধ, দুর্বল, রোগী, মাযূর ব্যক্তির ও বিভিন্ন হাযতগ্রস্ত লোক থাকতে পারে, তাছাড়া লঞ্চঘাট, বাস স্ট্যান্ড রেলস্টেশন এর মুসল্লিদের গাড়ি ছাড়ার সময় খেয়াল রাখা।
তাদের কারো যেন কষ্ট না হয়, তা লক্ষ রাখা। আবার সালাত যেন খুব তাড়াহুড়াও না হয়, তারও ভারসাম্য রক্ষা করা। তবে একাকী সালাত যত লম্বা হয় ততই ভালো। দলিল-
عَنْ مُعَاذِ بْنِ رِفَاعَةَ الزُّرَقِيُّ: أَنَّ رَجُلًا، مِنْ بَنِي سَلِمَةَ يُقَالُ لَهُ سَلِيمٌ أَتَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالَ: إِنَّا نَظَلُّ فِي أَعْمَالِنَا , فَنَأْتِي حِينَ نُمْسِي , فَنُصَلِّي فَيَأْتِي مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ , فَيُنَادَى بِالصَّلَاةِ , فَنَأْتِيهِ فَيُطَوِّلُ عَلَيْنَا. فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا مُعَاذُ لَا تَكُنْ فَتَّانًا , إِمَّا أَنْ تُصَلِّيَ مَعِي , وَإِمَّا أَنْ تُخَفِّفَ عَنْ قَوْمِكَ»
হযরত মুয়াজ বিন রিফাআ যুরকী রাঃ থেকে বর্ণিত। বনী সালামার এক ব্যক্তি যার নাম ছিল সালীম। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলেন। এসে বললেন, আমরা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকি। সন্ধ্যায় ফিরে এসে সালাত আদায় করি। তখন মুয়াজ বিন জাবাল আসে। এসে সালাতের জন্য আহবান করে। তখন আমরা নামায পড়তে আসি। তখন মুয়াজ নামায অনেক দীর্ঘায়িত করে। [ফলে আমাদের অনেক কষ্ট হয়, এ অভিযোগ শুনে] তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে মুয়াজ! ফিতনা সৃষ্টিকারী হইয়োনা, তুমি হয়তো আমার সাথে নামায পড়ো, অথবা তোমার কওমের সাথে সংক্ষেপে সালাত পড়। তাখরিজ: তাহাবী শরীফ-২৩৬২, আল-মু’জামুল কাবীর লিততাবরানী-৬৩৯১
প্রশ্ন:২। এশার নামাজ দেরিতে পড়ার ব্যপারে কোন দলিল / হাদিস থাকলে উপকার হতো।
উত্তর: ২। ঈশার নামাজ দেরিতে আদায় করা উত্তম। দলিল-
599 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا عَوْفٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو المِنْهَالِ، قَالَ: انْطَلَقْتُ مَعَ أَبِي إِلَى أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ، فَقَالَ لَهُ أَبِي: حَدِّثْنَا كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي المَكْتُوبَةَ؟ قَالَ: " كَانَ يُصَلِّي الهَجِيرَ - وَهِيَ الَّتِي تَدْعُونَهَا الأُولَى - حِينَ تَدْحَضُ الشَّمْسُ، وَيُصَلِّي العَصْرَ، ثُمَّ يَرْجِعُ أَحَدُنَا إِلَى أَهْلِهِ فِي أَقْصَى المَدِينَةِ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ - وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي المَغْرِبِ - قَالَ: وَكَانَ يَسْتَحِبُّ أَنْ يُؤَخِّرَ العِشَاءَ، قَالَ: وَكَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَهَا، وَالحَدِيثَ بَعْدَهَا، وَكَانَ يَنْفَتِلُ مِنْ صَلاَةِ الغَدَاةِ، حِينَ يَعْرِفُ أَحَدُنَا جَلِيسَهُ، وَيَقْرَأُ مِنَ السِّتِّينَ إِلَى
৫৭২। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... আবু মিনহাল (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সঙ্গে আবু বারযা আসলামী (রাযিঃ)-এর নিকট গেলাম। আমার পিতা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফরয নামাযসমূহ কোন সময় আদায় করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যোহরের নামায যাকে তোমরা প্রথম নামায বলে থাক, সূর্য ঢলে পড়লে আদায় করতেন। আর তিনি আসরের নামায এমন সময় আদায় করতেন যে, আমাদের কেউ সূর্য সজীব থাকতেই মদীনার শেষ প্রান্তে নিজ পরিজনের কাছে ফিরে আসতে পারত। মাগরিব সম্পর্কে তিনি কি বলেছিলেন, তা আমি ভুলে গেছি। তারপর আবু বারযা (রাযিঃ) বলেন, ইশার নামায একটু বিলম্বে আদায় করাকে তিনি পছন্দ করতেন। আর ইশার আগে ঘুমানো এবং পরে কথাবার্তা বলা তিনি অপছন্দ করতেন। আর এমন মুহূর্তে তিনি ফজরের নামায শেষ করতেন যে, আমাদের যে কেউ তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিকে চিনতে পারত। এ নামাযে তিনি ষাট থেকে একশ’ আয়াত তিলাওয়াত করতেন।
Narrated Abu-l-Minhal:
My father and I went to Abi Barza Al-Aslami and my father said to him, "Tell us how Allah’s Messenger (s) used to offer the compulsory congregational prayers." He said, "He used to pray the Zuhr prayer, which you call the first prayer, as the sun declined at noon, the `Asr at a time when one of US could go to his family at the farthest place in Medina while the sun was still hot. (The narrator forgot what Abu Barza had said about the Maghrib prayer), and the Prophet (s) preferred to pray the `Isha’ late and disliked to sleep before it or talk after it. And he used to return after finishing the morning prayer at such a time when it was possible for one to recognize the person sitting by his side and he (the Prophet) used to recite 60 to 100 ’Ayat’ (verses) of the Qur’an in it."
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৭২ (আন্তর্জাতিক নং ৫৯৯)
১২৮৬২ নং প্রশ্নের উত্তর লিংক শেয়ার করা হলো:
https://al-burhanbd.blogspot.com/2023/12/blog-post_51.html
والله اعلم بالصواب